গোসল ফরয অবস্থায় কাজ-কর্ম করা কি বৈধ?
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
প্রশ্ন:
গোসল ফরয অবস্থায় পানাহার, কাজ-কর্ম কিংবা চলাফেরা করলে কি গুনাহ হবে? অনেকে বলে ‘নাপাক শরীরে জমিনে পা-ও রাখা যাবে না’ –কথাটি কি সঠিক?
-আবদুল মুমিন
উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا ومصليا ومسلما
‘নাপাক শরীরে জমিনে পা-ও রাখা যাবে না’ –কথাটি সঠিক নয়, এর কোনো ভিত্তি নেই।
গোসল ফরয অবস্থায় পানাহার, কাজ-কর্ম ও চলাফেরা সবই জায়েয। এতে গুনাহ হবে না। -মিরকাতুল মাফাতিহ: ২/৪৩৪, তাতারখানিয়া: ১/২৯২
سُئِلَ أَبُو الضُّحَى ، أَيَأْكُلُ الْجُنُبُ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، وَيَمْشِي فِي الأَسْوَاقِ. – مصنف ابن ابي شيبة: 823 ط. عوامة.
‘‘আবুদ দুহা রহিমাহুল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হলো, যার উপর গোসল ফরয হয়েছে সে কি (গোসল না করে) খানা খেতে পারবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ (পারবে), (এমনকি) সে বাজারেও চলাফেরা করতে পারবে।’’ -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা: ৮২৩
তবে গোসল ফরয হওয়ার পর কোনো ওজর না থাকলে অবিলম্বে গোসল করে নেয়াই ভালো। তৎক্ষণাৎ গোসল না করলে অন্তত লজ্জাস্থান ধুয়ে নেওয়া এবং নামাযের অযুর মতো অযু করে নেওয়া মুস্তাহাব।
عن عبد الله بن عمر أنه قال : ذكر عمر بن الخطاب لرسول الله صلى الله عليه و سلم أنه تصيبه الجنابة من الليل فقال له رسول الله صلى الله عليه و سلم ( توضأ واغسل ذكرك ثم نم ). صحيح البخاري – البغا (1/ 110): 286
“উমর বিন খাত্তাব রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আরজ করলেন যে, অনেক সময় রাতে তাঁর গোসল ফরয হয় (তখন কী করণীয়?), রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন, অযু কর এবং গুপ্তাঙ্গ ধুয়ে নাও, তারপর ঘুমাও।” –সহীহ বুখারী: ২৮৬
عن عائشة قالت : كان النبي صلى الله عليه و سلم إذا أراد أن ينام وهو جنب غسل فرجه وتوضأ للصلاة. -صحيح البخاري – البغا (1/ 110): 284
“আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, গোসল ফরয হওয়া অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমাতে চাইতেন, গুপ্তাঙ্গ ধুয়ে নিতেন এবং নামাযের অযুর মতো অযু করে নিতেন।” –সহীহ বুখারী: ২৮৪
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ جُنُبًا، فَأَرَادَ أَنْ يَأْكُلَ أَوْ يَنَامَ، تَوَضَّأَ وُضُوءَهُ لِلصَّلَاةِ». -صحيح مسلم: 305
“আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন গোসল ফরয অবস্থায় থাকতেন, তখন কিছু খাওয়ার ইচ্ছা করলে কিংবা ঘুমাতে চাইলে নামাযের অযুর মতো অযু করে নিতেন।” -সহীহ মুসলিম: ৩০৫
অযু না করলে অন্তত কুলি করা এবং হাত মুখ ধুয়ে নেওয়া কাম্য। -মিরকাতুল মাফাতিহ: ২/৪৩৫
আর খাবারের সময় উভয় হাত ধুয়ে নেওয়া সব সময়ের জন্যই সুন্নত, কুলি করা আবশ্যক না। তবে গোসল ফরয হওয়ার পর কিছু খেতে কিংবা পান করতে চাইলে কুলি করে নিতে হবে। কুলি করা ছাড়া পানাহার ভালো নয়। -রদ্দুল মুহতার: ১/১৭৫, ২৯৪
উল্লেখ্য, গোসল ফরয অবস্থায় কুরআনে কারীম তিলাওয়াত করা যায় না, মসজিদেও প্রবেশ করা যায় না। তবে সকাল-সন্ধ্যার আযকার ও অন্যান্য মাসনুন দোয়া পড়া যায়। এ বিষয়ে নিচের ফতোয়াটি দেখতে পারেন:
মাসিক চলাকালে তিলাওয়াত ও যিকির আযকারের বিধান
فقط والله تعالى أعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
২২-০২-১৪৪৬ হি.
২৮-০৮-২০২৪ ঈ.