বর্ণবাদ

বর্ণবাদ : সভ্য পৃথিবীর অসভ্য রূপ

বর্ণবাদ : সভ্য পৃথিবীর অসভ্য রূপ

উস্তাদ এনায়েত কারিম হাফিযাহুল্লাহ

 

বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় বর্ণবাদ একটি বহুল আলোচিত বিষয়। বহু মানুষের শোষিত ও নিষ্পেষিত হবার সাথে রয়েছে বর্ণবাদের সরাসরি সংযোগ। বর্ণবাদ হলো, কোনো মানুষ বা তার সম্প্রদায়কে বর্ণ বা গায়ের রঙের (জাত-পাতের অন্যান্য মাত্রা-পার্থক্য যথাস্থানে বিবেচ্য) ভিন্নতার কারণে তাকে নীচু জাত মনে করা এবং তাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করে তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা, তাদেরকে নির্যাতন বা নিপীড়ন করা। বিষয়টিকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করার কিছু জটিলতা আছে। কিন্তু বিষয়টির সাথে এমন কিছু করুণ গল্প জড়িয়ে আছে, যা সংজ্ঞায়নের জটিলতা এড়িয়ে খুব সহজেই কথিত সভ্য দুনিয়ার ভদ্র মুখোশ উন্মোচন করে দেয়।

১৪ বছরের বালক, জর্জ স্টিনি। একজন আফ্রিকান আমেরিকান। ১৯৪৪ সালের ঘটনা; ৭ ও ১১ বছর বয়সী দুই শ্বেতাঙ্গ বালিকাকে হত্যার দায়ে তাকে ইলেক্ট্রিক চেয়ারে বসিয়ে ৫৩৮০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সাউথ ক্যারোলিনার কারাগার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার বিচার-প্রক্রিয়া ও রায় ছিলো চরম বৈষম্য ও অন্যায়ের একটি নমুনা। মামলার শুনানির দৈর্ঘ্য ছিলো মাত্র ২ ঘণ্টা। দুই ঘণ্টার শুনানি শেষে মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই তাকে মৃত্যুসাজা শুনানো হয়৷ তার মৃত্যুর ৭০ বছর পর সাউথ ক্যারোলিনার একটি আদালত তাকে নির্দোষ সাব্যস্ত করেছে, কারণ ঐ মামলার শুনানিতে বাদিপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি যে, সেই হত্যা করেছিলো। শুধু জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের কাছে সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে, এর ভিত্তিতেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অথচ পুলিশ সেই স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধও করেনি আর আদালতেও স্টিনি কোনো স্বীকারোক্তি দেয়নি। উপরন্তু হত্যার হাতিয়ারের ওজন ছিলো ১৯ কেজি যা ছোট্ট বালক স্টিনির পক্ষে উঠানোই সম্ভব ছিলো না, হত্যা তো দূরে থাক। দেখা গেলো, কেবল গায়ের রঙ কালো হবার কারণেই কোনো সাক্ষী-প্রমাণ যাচাই-বাছাই লাগেনি, বিচার নামের প্রহসন করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর তার মা-বাবাকে বের করে দেওয়া হয়েছে শহর থেকে। ৭০ বছর পরে সাউথ ক্যারোলিনার আদালত স্টিনিকে নির্দোষ সাব্যস্ত করেছে বটে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মাটি কি তার বর্ণবাদী আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে?

জেনে রাখা ভালো, এসব গল্প যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের দৈনন্দিন জীবনে গায়ের রং ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের পার্থ্যকের কারণে আফ্রিকান ও এশিয়ানরা  রীতিমতো প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক বৈষম্যের স্বীকার হতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অতীত ও বর্তমানের সাথে বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্য জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে।

স্যামুয়েল ফিলিপস বার্নার নামে এক বিজ্ঞানী বিবর্তনবাদ তত্ত্বের ওপর গবেষণা করতে আফ্রিকায় যান। তিনি মানুষ ও তার পূর্ববর্তী প্রজাতির মধ্যকার সম্পর্ক খুঁজছিলেন। তিনি ওটা বেংগা নামের একজন কালো মানুষের খোঁজ পান। বেংগার দুই সন্তান ছিলো। তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে দাস ব্যবসায়ীদের সাথে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাকে Bronx Zoo নামের একটি চিড়িয়াখানায় প্রদর্শন করা হয়! দুনিয়াকে সভ্যতার সবক শেখানো আমেরিকায় একজন মানুষের এই অবমাননা ঘটে মাত্র এক শতাব্দী আগে। হতভাগা ওটা বেংগাকে চিড়িয়াখানায় প্রদর্শনীতে দেখতে একদিন ৪০ হাজারেরও অধিক দর্শক জড়ো হয়৷

আমেরিকার আফ্রিকান কমিউনিটি এই খবরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। গোটা দেশে হৈচৈ শুরু হলে New York Times এর সেসময়কার একটি সংখ্যায় সম্পাদকীয়তে বলা হয়

“We do not quite understand all the emotion which others are expressing in the matter … It is absurd to make moan over the imagined humiliation and degradation Benga is suffering. The pygmies … are very low in the human scale, and the suggestion that Benga should be in a school instead of a cage ignores the high probability that school would be a place … from which he could draw no advantage whatever. The idea that men are all much alike except as they have had or lacked opportunities for getting an education out of books is now far out of date.”

[অনুবাদ: এ ব্যাপারে অন্যরা যেভাবে আবেগ দেখাচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। বেংগার ওপর করা কল্পিত অপমান ও অমর্যাদা নিয়ে বিলাপ করা অযৌক্তিক। পিগমিরা…. মানবিক মানদন্ডে খুবই নিচু পর্যায়ের, আর তাকে খাঁচায় না রেখে স্কুলে পাঠানোর কথা এই শক্ত সম্ভাবনাকে এড়িয়ে যাচ্ছে যে, স্কুল থেকে সে কোনো ফায়দা হাসিল করতেই পারবে না। সব মানুষ একই রকমের এবং তাদের মধ্যেকার পার্থক্যের কারণ প্রত্যেকের পাওয়া সুযোগসুবিধা এবং পড়াশোনার তারতম্য – এই ধারণা বহুদিন আগে পুরনো হয়ে গেছে।]

ওটা বেংগা তার বাকি জীবনের প্রায় পুরোটাই দাস হিসেবেই বেঁচে থাকেন। তীব্র অপমান ও মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করে ১৯১৬ সালের ২০ মার্চ একটি ধার করা পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আমেরিকার মতো ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও আফ্রিকা থেকে অপহরণ করে আনা মানুষদের দিয়ে ‘মানব চিড়িয়াখানা’ তৈরি করা হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু কিছু চালু ছিল গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক পর্যন্ত।

এ শুধু শতাব্দীকালের পুরনো ইতিহাস নয়। আজও আমেরিকা ও কথিত সভ্য দেশগুলোতে মানুষকে গায়ের রং ও জাত-পাতের ভিত্তিতে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। অতি সম্প্রতি ( মে ২৫,২০২০) আমেরিকার মিনিয়াপোলিস প্রদেশে ডেরেক চোভিন (Derek Chauvin) নামের এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ জর্জ ফ্লয়েড নামের এক আফ্রিকান-আমেরিকান নাগরিকের গলার ওপর প্রায় আট মিনিট হাঁটু চেপে ধরে রাখে, যার ফলে লোকটি মারা যায়।

২০১৯ সালের নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে একটি মসজিদে ব্রেন্টন ট্যারেন্ট নামের এক অস্ট্রেলিয়ান খৃস্টান জুমার নামাযরত মুসল্লিদের ওপর অতর্কিত গুলি করে অর্ধশতাধিক মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারী, শিশু আর প্রবীণরাও ছিলেন। তার মুসলিম হত্যার পেছনেও  বর্ণবাদী চিন্তা ও প্রেরণা কাজ করেছিলো। সে ছিলো একজন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী (white supremacist)। হামলার আগে প্রকাশিত ইশতেহার ও একাধিক টুইটবার্তায় বোঝা যায়, ট্যারেন্ট শ্বেতাঙ্গদের শ্রেষ্ঠত্ব ও আধিপত্যে বিশ্বাস করে এবং মুসলিম ও যারা অ-শ্বেতাঙ্গ তাদের অভিবাসনের ঘোরবিরোধী।। মসজিদে হামলার আগে সে একটি ভিডিও টুইট করেছিলো, যেখানে দেখা যায় সে গাড়ি চালাচ্ছে আর গান শুনছে যে গানে বসনিয়ার সেব্রেনিকা গণহত্যার যুদ্ধাপরাধী র‍্যাডোভান কারাডযিকের (Radovan Karadzic) প্রশংসা করা হয়েছে। সার্ব সেনা কর্তৃক বসনিয়ার মুসলমানদের ওপর চালানো ঐ গণহত্যায় ৮০০০ এরও অধিক মুসলিম শাহাদাত বরণ করেন।

আবারও বলে রাখি, এসব দু’একজন ব্যক্তির বিচ্ছিন্ন চিন্তা ও কার্যকলাপ নয়। ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সারা বিশ্বজুড়ে যে ঔপনিবেশিক লুটপাট চালিয়েছিল তার পিছনেও ছিল তাদের বর্ণবাদী চিন্তার প্রভাব। তারা মনে করতো সভ্য, শ্বেতাঙ্গ মানুষ হিসেবে অশ্বেতাঙ্গ মানুষদের সভ্য করে তোলা তাদের অধিকার।

আজও যুক্তরাজ্যে ‘ব্রিটেইন ফার্স্ট’ নামের একটি সংগঠন আছে, যারা যুক্তরাজ্যে এশিয়ান ও আফ্রিকানদের এবং বিশেষভাবে মুসলমানদের অভিবাসনের ঘোরবিরোধী। অথচ ব্রিটেইন আফ্রিকা আর এশিয়ায় লুটতরাজ চালিয়েই তার অর্থনীতি গড়ে তুলেছিল। ইউরোপের অন্যান্য দেশে এবং যুক্তরাষ্ট্রেও এমন অনেক দল আছে। গত কয়েক বছর ধরে জাতীয় রাজনীতি এবং সমাজে ক্রমান্বয়ে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্কিন বুদ্ধিজীবী নোয়াম চমস্কির একটি কথা এখানে প্রণিধানযোগ্য, তিনি বলেছেন, অভিবাসীরা আমাদের দেশে আসে কারণ আমরা (অর্থাৎ ইউরোপ-আমেরিকা) তাদের সমাজ ধ্বংস করে দিয়েছি।

ভারতের দলিতদের প্রসঙ্গ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভারতে সবমিলিয়ে প্রায় ২০ কোটিরও অধিক লোককে দলিত বলা হয়। সংস্কৃত ভাষায়, দলিত অর্থ হচ্ছে ভগ্ন বা “ছিন্নভিন্ন। হিন্দুসমাজের বর্ণাশ্রম প্রথায় মানুষকে চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে; ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্র। শুদ্ররা হিন্দুসমাজের অংশ হয়েও নানা বৈষম্যের শিকার হয়। আর দলিতদেরকে তো সমাজের অংশই মনে করা হয় না, তাদেরকে বলা হয় অস্পৃশ্য, যাদেরকে স্পর্শ করা যায় না, তাদেরকে এতই নীচুজাত মনে করা হয় যে স্পর্শ করলে পাপ হয় এবং জাত চলে যায়। আমরা মুসলমানরা অবশ্য মনে করি না যে, কেউ হিন্দু সমাজের অংশ হতে পারলে তার মর্যাদা বাড়বে। বরং মুশরিক হবার চেয়ে অপমান আর লজ্জার কিছু হতে পারে না। কিন্তু হিন্দু সমাজ যে তাদেরই ধর্মের ভাইদের অস্পৃশ্য ও নীচুজাত মনে করে তা থেকে তাদের সামাজিক কাঠামোর অসারতা বেশ ভালোভাবেই আন্দাজ করা যায়। বাংলাদেশেও দলিত সম্প্রদায়ের লোক আছে যাদের সাথে অন্য হিন্দুরা অমানবিক আচরণ করে থাকে।

মানুষ যখন আল্লাহর দাসত্বের মর্যাদা ভুলে মেকি শ্রেষ্ঠত্বের কথা আওরায় তখন সমাজে অন্যায় অনাচার সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। দুর্বলরা একঘরে হয়ে শোষণ ও বঞ্চণার শিকার হয়। অথচ মানুষ আদিতে কী ছিলো?  আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা ইরশাদ করেন,

هَلْ أَتَىٰ عَلَى ٱلْإِنسَٰنِ حِينٌ مِّنَ ٱلدَّهْرِ لَمْ يَكُن شَيْـًٔا مَّذْكُورًا(1)إِنَّا خَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ مِن نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَٰهُ سَمِيعًۢا بَصِيرًا (2)إِنَّا هَدَيْنَٰهُ ٱلسَّبِيلَ إِمَّا شَاكِرًا وَإِمَّا كَفُورًا (3)

“মহাকালের মধ্য হতে মানুষের উপর কি এমন একটা সময় অতিবাহিত হয়নি যখন সে উল্লেখ করার যোগ্য কোন বস্তুই ছিল না? আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সংমিশ্রিত শুক্রবিন্দু থেকে তাকে পরীক্ষা করার জন্য, এজন্য তাকে করেছি শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির অধিকারী। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে।” (সুরা দাহর : ৭৬:১)

মানুষের মর্যাদা তার গায়ের রঙ বা নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ে নির্ধারিত হয় না। মানুষের মর্যাদা তার চিন্তা ও আচরণের তথা ইমান-আখলাকের শুদ্ধতায়। আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা ইরশাদ করেন,

يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَٰكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَٰكُمْ شُعُوبًا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓا۟ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ ٱللَّهِ أَتْقَىٰكُمْۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ

হে মানুষ! তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই লোকই অধিক সম্মানীয় যে লোক অধিক মুত্তাক্বী। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সব খবর রাখেন। (সুরা হুজরাত : ৪৯:১৩)

জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত:

عَنْ جَابِرٍ بْنِ عَبْدِ اللهِ  قَالَ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَلَا إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ أَلَا لَا فَضْلَ لِعَرَبِيٍّ عَلَى عَجَمِيٍّ وَلَا لِعَجَمِيٍّ عَلَى عَرَبِيٍّ وَلَا لِأَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ وَلَا أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ إِلَّا بِالتَّقْوَى

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায়ী হজ্জের ভাষণে বলেছেন, “হে লোক সকল! শোনো, তোমাদের প্রতিপালক এক, তোমাদের পিতা এক। শোনো, আরবীর উপর অনারবীর এবং অনারবীর উপর আরবীর, কৃষ্ণকায়ের উপর শ্বেতকায়ের এবং শ্বেতকায়ের উপর কৃষ্ণকায়ের কোন শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নেই। শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা আছে তো কেবল ‘তাক্বওয়ার’ কারণেই।” (মুসনাদু আহমাদ : ২৩৪৮৯, শুআবুল ঈমান, বায়হাকি : ৫১৩৭)

বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান বর্ণবাদের প্রকৃত সমাধান রয়েছে ইসলামে। ইসলাম মানুষকে যাবতীয় অজ্ঞতা ও মূর্খতার শিকল থেকে মুক্ত করে একমাত্র আল্লাহর দাসত্বের দিকে মানুষকে আহবান করে। কথিত সভ্য পৃথিবী  আজও মানব সমাজের যেসব মৌলিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান পেশ করতে পারে না, ইসলাম সেসবের কেবল সমাধানই পেশ করেনি, ইসলামি সমাজে তা বাস্তবায়নও করে দেখিয়েছে।

অথচ দুনিয়া আজ যে নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তা কখনো কখনো নিউইয়র্ক আর প্যারিসের সুরম্য অট্টালিকার চাকচিক্যের আড়ালে চাপা পড়ে যায়। কিন্তু লাখো মানুষের আর্তনাদ যে সভ্যতার প্রতিদিনকার জ্বালানি, তা একদিন ধ্বসে পড়বেই।

Back to top button