বিবিধফাতওয়া  নং  ৫৮

প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোনের মধ্যে পারস্পরিক আচার আচারণ কেমন হওয়া উচিত?

প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোনের মধ্যে পারস্পরিক আচার আচারণ কেমন হওয়া উচিত?

প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোনের মধ্যে পারস্পরিক আচার আচারণ কেমন হওয়া উচিত?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোনের মধ্যে পারস্পরিক আচার আচারণ কেমন হওয়া উচিত? আমার পরিচিত দুই ভাই-বোন বয়সে বড় ছোট হলেও দু’জনই প্রাপ্তবয়স্ক। তাদের মাঝে কখনো দুষ্টুমি ও খুনসুটিও হয়। অনেক সময় শরীরের স্পর্শও হয়। এক্ষেত্রে ইসলাম কতটুকু দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে, আশা করি বিস্তারিত জানাবেন।

আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন

প্রশ্নকারী- মুহাম্মাদ

 

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله وحده والصلاة والسلام على من لا نبي بعده اما بعد.

ইসলামের দৃষ্টিতে ভাই-বোনসহ সকল মাহরাম নারী পুরুষের পরস্পর চলা-ফেরা, কথা-বার্তা ভদ্র ও মার্জিত হওয়া জরুরি। যৌনতার ইঙ্গিতবাহী কিংবা কু-চিন্তা উদ্রেককারী খুনসুটিও তাদের পরস্পরে বৈধ নয়। বোন ভাইয়ের সামনে নিজেকে যথা সম্ভব শালীন পোশাকে ঢেকে রাখবে। মাথায় ওড়না রাখবে। এমন ঢিলে ঢালা পোশাক পরিধান করবে, যাতে শরীরের কোনো অঙ্গের গঠন ফুটে না ওঠে। ভাইয়ের কর্তব্য দৃষ্টি সংযত রাখা। তাকালে মাহরামের যে সমস্ত অঙ্গ দেখা জায়েয, শুধু সেদিকে দৃষ্টি রাখা।

ইমাম শা’বি রহ. ও ইকরিমা রহ. বলেন,

لا تضع خمارها عند العم والخال.

“নারী তার চাচা বা মামার সামনে ওড়না ছাড়া থাকবে না।” -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১৭৫৮০

ভাইয়ের সামনে ওড়না ছাড়া থাকা যাবে কি না, এ প্রসঙ্গে হাসান বসরী রহ. বলেন,

والله ما لها ذاك.

“আল্লাহর কসম, তার জন্য এই সুযোগ নেই।” -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১৭৫৬৮

ইমাম যুহরি রহ. বলেন,

أما أن تسلخ الخمار فلا.

“মাহরামের সামনে ওড়না খুলে রাখার সুযোগ নেই।” -মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ১২৮৩০

তাঊস রহ. থেকেও এমন বর্ণনা রয়েছে। -মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ১২৮৩১

শা’বি রহ. থেকে আরো বর্ণিত আছে,

أنه كره أن ينظر إلى شعر كل ذي محرم.

“যেকোনো মাহরাম মহিলার চুলের দিকে তাকানো তিনি অপছন্দ করতেন।” -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১৭৫৬৮

অবশ্য কু-চিন্তা উদ্রেকের আশংকা না থাকলে, ভদ্রোচিত-খুনসুটি করতে সমস্যা নেই এবং এ অবস্থায় মাহরামের ওই সমস্ত অঙ্গ স্পর্শ হয়ে গেলেও সমস্যা নেই, যে সব অঙ্গ দেখা জায়েয। যে অঙ্গ দেখা জায়েয নয়, তা স্পর্শও জায়েয নয়। আর কু-চিন্তা উদ্রেকের আশংকা থাকলে, স্পর্শ করা বা দৃষ্টি দেয়া, সবই নাজায়েয।

উল্লেখ্য, মাহরামের যে সমস্ত অঙ্গ দেখা জায়েয, তা হল চেহারা, হাত, পা, মাথা, চুল, গলা, গর্দান ও হাঁটুর নিচের অংশ। আরও দেখুন, শরহু মুখতাসারিত ত্বহাবি: ৮/৫৩৬, ফাতাওয়া কাযিখান: ৩/২৯৪, বাদায়েউস সানায়ে, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ: ৫/১২০, আলমুহিতুল বরুহানি, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ: ৫/৩৩০, আলবাহরুর রায়েক, দারুল কিতাবিল ইসলামি: ৮/২১৯,

قفط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২০-১১-৪১ হি.

১২-০৭-২০ ইং

আরো পড়ূন
কাউকে বোন ডাকলে তিনি কি আপন বোনের মত মাহরাম হয়ে যান?

পালিত কন্যা কি মাহরাম হবে?

Related Articles

Back to top button