হালাল-হারাম:ফাতওয়া  নং  ১৩৫

কোনো কোম্পানির হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করার বিধান কী?

কোনো কোম্পানির হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করার বিধান কী?

কোনো কোম্পানির হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করার বিধান কী?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

একটি কোম্পানি যার প্রধান আয়ের উৎস সুদ না, কিন্তু তারা বিভিন্ন সময় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় ফলে তাদেরকে সুদ দিতে হয় অথবা ব্যাংকে তাদের টাকা থাকে যা থেকে তারা কিছু সুদ আয় হিসেবে পায় অথবা তারা কোনো বন্ডে বা ঋণপত্রতে ইনভেস্ট করে যেখান থেকে মাসিক বা বাৎসরিক সুদ পায়। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এমন কোম্পানিতে অ্যাকাউন্টেন্ট বা হিসাবরক্ষক পদে এবং হিসাবরক্ষক ছাড়া অন্য কোনো পদে – যার সাথে সুদের লেনদেনের কোনো সম্পর্ক নেই – চাকরি করার বিধান কী?

বিনীত

সাজ্জাদুল ইসলাম

 

উত্তর:  

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রশ্নোক্ত বিবরণ থেকে অনুমিত হচ্ছে, মৌলিকভাবে কোম্পানির প্রোডাক্ট, কার্যক্রম ও আয় বৈধ এবং হালাল। তবে কোম্পানি অল্প বিস্তর সুদেও জড়িত। যদি এমনটাই হয়ে থাকে তাহলে কোম্পানির এমন সব সেক্টরে কাজ করা জায়েয হবে যেগুলোতে সুদের লেনদেন নেই এবং শরীয়তবিরোধী কোনো কাজও করতে হয় না।

আর অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে চাকরি করা জায়েয হবে, যদি সুদি হিসাব নিকাশ থেকে বিরত থাকা যায়। সুদের হিসাব নিকাশকারীর উপর হাদিসে লা’নত বর্ষণ করা হয়েছে। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত-

لعن رسول الله -صلى الله عليه وسلم- آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه وقال هم سواء.

“সুদ গ্রহীতা, সুদ দাতা, সুদি লেন-দেনের লেখক ও তার স্বাক্ষীদ্বয়: সকলের উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেছেন এবং বলেছেন, এরা সকলেই সমান।” -সহীহ মুসলিম : ৪১৭৭

যদি সুদের হিসাব নিকাশ থেকে বিরত থাকা না যায়, তাহলে এ পদ বাদ দিয়ে অন্য কোনো সেক্টরে কাজ করুন, যেখানে সুদের লেনদেন বা হিসাব নিকাশ করতে হয় না এবং অন্য কোনো শরীয়তবিরোধী কাজও করতে হয় না।

চাকরি কোম্পানির যে সেক্টরেই করেন, বেতন যদি সরাসরি সুদের অর্থ থেকে দেয়ার বিষয়টি জানতে পারেন, তাহলে তা গ্রহণ করা জায়েয হবে না। অন্য হালাল আয় থেকে দিতে হবে কিংবা অন্তত এমন অর্থ থেকে দিতে হবে, যাতে হারামের সংমিশ্রণ থাকলেও হালালের পরিমাণই বেশি।

উল্লেখ্য, আপনার কোম্পানির আয়ের মূল উৎস সুদ না, আপনি প্রশ্নে শুধু এতটুকুই উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কোম্পানিটি ঠিক কীভাবে আয় করে সেটার বিস্তারিত বিবরণ দেননি। এখন কোম্পানিগুলো বিভিন্নভাবে হারামে জড়িত হয়ে থাকে। বিস্তারিত বললে তাদের আয়ের মূল উৎস আসলেই হালাল কিনা এবং কারবারগুলো জায়েয কি না, জানা যেত। অন্যথায় বাহ্যত যদিও আপনার কাছে মনে হচ্ছে তারা হালালভাবেই উপার্জন করছে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্নও হতে পারে। তাই কোম্পানির বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বিজ্ঞ কোনো মুফতী সাহেব থেকে বিষয়টি জেনে নিলে সবচেয়ে ভালো হবে। -রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৮৫-৩৮৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ৫/৩৪২, ফাতাওয়া রহিমিয়া: ৯/২৮৯, ফাতাওয়া উসমানী: ৩/৩৬২-৩৬৩, ফাতাওয়া বিন্নুরি টাউন: এখানে ক্লিক করুন

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৩-০৫-১৪৪২ হি.

১৯-১২-২০২০ ইং

আরও পড়ুন ব্যবসা করার উদ্দেশ্য কি কিস্তিতে লোন নেয়া যাবে ?

Related Articles

Back to top button