বিবিধফাতওয়া  নং  ৪৭২

ফরয বিয়ে না করে রোযা রাখার বিধান

ফরয বিয়ে না করে রোযা রাখার বিধান

ফরয বিয়ে না করে রোযা রাখার বিধান

ফরয বিয়ে না করে রোযা রাখার বিধান

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

 প্রশ্নঃ

কারো উপর যদি বিয়ে করা ফরয হয় এবং বিয়ে না করলে গুনাহে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে এমতাবস্থায় সে যদি বিয়ে না করে রোযা রাখে তাহলে কি তার গুনাহ হবে?

-জাফর আহমাদ

উত্তরঃ

স্বাভাবিক অবস্থায় বিয়ে সুন্নতে মুআক্কাদা। কিন্তু যদি বিয়ে না করলে গুনাহে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় এবং বিয়ের সামর্থ্য থাকে, তাহলে বিয়ে ফরয হয়ে যায়। এই অবস্থায় রোযা রাখার দ্বারা ‍গুনাহ থেকে বাঁচা সম্ভব হলে বিয়ে ফরয নয়। -আন-নাফাকাতু আলাল-ইয়াল, ইবনু আবিদ দুনয়া: ১/৩৩২-৩৩৫ বর্ণনা নং: ১৭১-১৭৪ (দারু ইবনিল কাইয়িম); আল-মুগনী: ৭/৪ (মাকতাবাতুল কাহেরা); রদ্দুল মুহতার: ৩/৬ (দারুল ফিকর); ইলাউস সুনান: ৮/৩৬৩৪ (দারুল ফিকর)

তবে এক্ষেত্রেও সামর্থ্য থাকলে বিয়ে করে নেয়া কাম্য। সামর্থ্যবান যুবকদের জন্য কোনো ওযর ব্যতীত বিয়ে দেরি করা ঠিক নয়। হাদীসে রোযার মাধ্যমে যৌনশক্তি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ মূলত তাদেরকে দেয়া হয়েছে, যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

يا معشر الشباب، من استطاع منكم الباءة فليتزوج، فإنه أغض للبصر، وأحصن للفرج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم، فإنه له وجاء. -صحيح البخاري (1905) صحيح مسلم (1400(

“হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে অবনত রাখতে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাযত করতে সর্বাধিক কার্যকর। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোযা রাখতে থাকে। রোযা তার প্রবৃত্তিকে দমন করবে।” -সহীহ বুখারী: ১৯০৫; সহীহ মুসলিম: ১৪০০

উপর্যুক্ত হাদীসের বর্ণনাকারী সাহাবী ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

«لو لم يبق من أجلي إلا عشرة أيام، وأعلم أني أموت في آخرها يوما، لي فيهن طول النكاح، لتزوجت مخافة الفتنة». -رواه سعيد بن منصور في «سننه» (1/ 164 رقم: 493 ط. الدار السلفية، الهند) من طريق أبي عوانة، عن المغيرة، عن إبراهيم مرسلا، وأخرج الطبراني في «المعجم الكبير» (9/ 239 رقم:9172 ط. مكتبة ابن تيمية) نحوه من طريق المسعودي، عن أبي حصين، عن عبد الله بن باباه. قال الهيثمي في «مجمع الزوائد» (4/ 251) : «المسعودي ثقة، ولكنه اختلط، وبقية رجاله رجال الصحيح».

“যদি আমার জীবনের দশ দিন বাকি থাকে, দশম দিনে আমি মারা যাবো তা জানা থাকে এবং তখন আমার বিয়ে করার সামর্থ্য থাকে, তাহলে আমি গুনাহের ভয়ে বিয়ে করে নিবো।” -সুনানে সাঈদ বিন মানসুর: ৪৯৩; মুজামে কাবীর, তাবারানী: ৯১৭২

সাঈদ বিন জুবায়ের রহিমাহুল্লাহ বলেন,

قال لي ابن عباس: «هل تزوجت»؟ قلت: لا، قال: «فتزوج فإن خير هذه الأمة أكثرها نساء». -رواه البخاري (7/3 رقم: 5069 ط. دار طوق النجاة) ووقع في رواية عبد الرزاق (7/ 147 رقم: 12581 ط. المجلس العلمي- الهند) : «أخذ ابن عباس بلحيتي حين نبتت، فقال: «أسعيد، تزوجت؟» قلت: لا، وما ذاك في نفسي اليوم…». وفي رواية البيهقي  (7/124 رقم: 13450 ط. دار الكتب العلمية) : « تزوج، فإن خيرنا كان أكثرنا نساء، يعني النبي صلى الله عليه وسلم». وصحح الحافظ ابن حجر إسناد عبد الرزاق في «المطالب العالية» (8/ 273 ط. دار العاصمة)

“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি বিয়ে করেছো? (অপর বর্ণনায় এসেছে, আমার যখন সদ্য দাড়ি উঠে তখন ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা আমার দাড়ি ধরে বলেন, হে সাঈদ! তুমি কি বিয়ে করেছ?) আমি বললাম, না। ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বললেন, বিয়ে কর। কেননা এই উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তির (অর্থাৎ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) স্ত্রী-সংখ্যা অন্যদের সবার চেয়ে বেশি ছিল।” –সহীহ বুখারী: ৭/৩ হাদীস: ৫০৬৯ (দারু তওকীন নাজাহ); মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ৭/১৪৭ বর্ণনা নং: ১২৫৮১ (আল-মাজলিসুল ইলমী, ভারত); সুনানে বাইহাকী: ৭/১২৪ হাদীস: ১৩৪৫০ (দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৬-১২-১৪৪৫ হি.

২৩-০৬-২০২৪ ঈ.

Related Articles

Back to top button