বিবিধফাতওয়া  নং  ৫৪৭

হাত তালি দেওয়ার বিধান

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

 হাত তালি দেওয়ার বিধান কী?

 

উত্তর:

যিকিরের সময় হাত তালি দেয়া, যেমনটা অনেক ভণ্ড পীর ও তার মুরিদরা করে থাকে, এটা বিদআত ও নাজায়েয। জাহেলি যুগে মুশরিকরা এভাবে ইবাদত করতো। আল্লাহ তাআলা তাদের নিন্দা করে বলেন,

وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ عِنْدَ الْبَيْتِ إِلَّا مُكَاءً وَتَصْدِيَةً فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُونَ. -الأنفال: 35

“বাইতুল্লাহর নিকট তাদের সালাত শিস দেওয়া ও তালি বাজানো ছাড়া কিছুই নয়। সুতরাং (হে কাফেরগণ!) তোমরা যে কুফরী করতে, তার জন্য এখন শাস্তি ভোগ কর।” –সূরা আনফাল ০৮: ৩৫

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ (৭২৮ হি.) বলেন,

فمن اتخذ الغناء والتصفيق عبادة وقربة فقد ضاهى المشركين في ذلك وشابههم. -مجموع الفتاوى (11/ 596 ط. مجمع الملك فهد)

“যে ব্যক্তি (কাওয়ালী) গান ও হাত তালিকে ইবাদত হিসেবে গ্রহণ করে, সে মুশরিকদের সাদৃশ্য অবলম্বন করলো। -মাজমুউল ফাতাওয়া: ১১/৫৯৬ (মাজমাউল মালিক ফাহাদ) আরো দেখুন, তালবীসে ইবলীস, পৃ: ২৩০ (দারুল ফিকর); ইগাসাতুল লাহাফান: ১/২৪৪ (মাকতাবাতুল মাআরিফ)

আর সভা-সমাবেশ ও আচার-অনুষ্ঠানে আনন্দের সময় হাত তালি দেয়া কাফেরদের রীতি। তাই এটাও বর্জনীয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

من تشبه بقوم فهو منهم. –رواه أبو داود (4031) وقال ابن تيمية في “اقتضاء الصراط المستقيم” (1/ 269 ط. دار عالم الكتب) : “وهذا إسناد جيد.” وقال العراقي في “تخريج أحاديث الإحياء” (ص: 318 ط. دار ابن حزم) : سند صحيح.

“যে ব্যক্তি কোনো জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।” -সুনানে আবু দাউদ: ৫১৪২; আরো দেখুন, নাইলুল আওতার: ৩/১৭৮; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৯৫ (দারুল ফিকর); আল-লাজনাতুদ দায়িমা: ৬/৩১০ ফাতাওয়া নং: ৭৭৭৪ (রিয়াসাতু ইদারাতিল বুহুস); মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে বায: ৪/১৫১; কেফায়াতুল মুফতী: ৯/১১৬ (দারুল ইশাআত, করাচি)

উল্লেখ্য, মুসলিমদের জন্য জীবনের সকল ক্ষেত্রে কাফের-মুশরিকের রীতি বর্জন করে ইসলামের বিধান পালন করা কর্তব্য। আর ইসলামের বিধান হলো আশ্চর্যজনক কিছু দেখলে সুবহানাল্লাহ বলা। আনন্দের সময় আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করা এবং আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার বলা। নিজের কোনো বিষয় দেখে ভালো লাগলে ‘মাশাআল্লাহ, লা-হাওলা ওয়া-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলা।’ অন্যের কোনো কিছু দেখে মুগ্ধ হলে ‘বারাকাল্লাহ ফিকা’ (আল্লাহ তোমার মাঝে বরকত দান করুন) বলা।  -সূরা কাহাফ, ১৮:৫০; তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৫/১৫৮ (দারু তাইবাহ); সহীহ বুখারী: ১/২৯, ৬৫; ৪/১৩৯ হাদীস: ৮৯, ২৮৫, ৩৩৪৮ (দারু তাওকিন নাজাহ); সহীহ মুসলিম: ১/২০১, ২৮২; ২/১১১১ হাদীস: ২২২, ৩৭১, ১৪৭৯ (দারু ইহয়ায়িত তুরাস); সুনানে ইবনে মাজাহ ৪/৫৪২, ৭১৩ হাদীস: ৩৫০৯, ৩৮০৩ (দারুল রিসালাহ); মুসনাদে আহমদ: ২৫/৩৫৫ হাদীস: ১৫৯৮০ (আর-রিসালাহ); শরহে মুসলিম: ৩/৯৫ (দারু ইহয়ায়িত তুরাস); ফাতহুল বারী: ১০/৫৯৯ (দারুল ফিকর)

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি উফিয়া আনহু

২৪-১০-১৪৪৬ হি.

২৩-০৪-২০২৫ ইং

আরও পড়ুনঃ রেশমি পোশাক পরিধানের বিধান

Related Articles

Back to top button