স্ত্রীর ভরণ পোষণ ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা স্বামীর দায়িত্ব
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
প্রশ্ন:
আমার এক বড় আপু একটি সমস্যায় পড়েছেন। তিনি বিবাহিতা এবং দুটি বাচ্চার মা। তিনি অনেক দিন যাবত তাঁর বাবার বাসায়ই থাকেন। শশুরের বাসায় যেতে চান, কিন্তু তাঁর শাশুড়ী তাকে বাসায় ঢুকতে দেয় না। বিষয়টি তাঁর স্বামীকে বললে তিনি উত্তর দেন, এটা আমার বাড়ি না, আমার বাবার বাড়ি। তারা অনুমতি না দিলে আমি কী করতে পারি? সম্প্রতি তাঁর শাশুড়ী তাঁর স্বামীকে বলেছে, তোমার স্ত্রী যদি আমাদেরকে দুই লাখ টাকা দেয়, তাহলে বাসায় ঢুকতে দেবে। তাঁর শশুরের পরিবার মোটামুটি ইসলাম মেনে চলে। এমনকি তাঁর শাশুড়ী বেশ ভালো পর্দাও করে। এখন আপু জানতে চান, শরিয়ত এ ব্যাপারে কী বলে?
প্রশ্নকারী- মোঃ হাবিবুল হক খন্দকার
উত্তর:
আপনি যে বোনের বিবরণ দিলেন, তাঁর ভরণ পোষণ ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব তাঁর স্বামীর। স্বামীর বাবা যতক্ষণ জীবিত আছেন, ততক্ষণ তাঁর বাড়ির মালিকও বাবা নিজেই। পুত্রবধুকে সেই বাড়িতে থাকার অনুমতি দেবেন কি, দেবেন না, এটা তার এখতিয়ার। তিনি যদি তার বাড়িতে থাকার অনুমতি না দেন, তাহলে স্বামীকে অবশ্যই অন্য কোনো জায়গায় ভাড়ায় হলেও তার স্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা তার ওপর ফরজ দায়িত্ব এবং স্ত্রীর পাওনা অধিকার। তা আদায় না করলে তিনি গুনাহগার হবেন।
শাশুড়ি যে দুই লাখ টাকা দাবি করছেন, তা যদি বাবার বাড়িতে থাকার জন্য শরঈ কোনো চুক্তির অধীনে দাবি করেন, যেমন ভাড়া বাবদ, তাহলে তাও পরিশোধ করবেন এই বোনের স্বামী তথা শাশুড়ির ছেলে। ছেলেকে বাদ দিয়ে তার স্ত্রীর কাছে টাকা চাওয়ার বৈধ কোনো সূত্র নেই।
অবশ্য আপনার প্রশ্নের বিবরণ থেকে যথেষ্ট সংশয় হচ্ছে, এটি অসৎ মানুষের যৌতুক দাবির কৌশল কি না। কিছু লোক আছে, যারা বাহ্যিকভাবে দ্বীনদার হিসেবে পরিচিত হওয়ার কারণে কিংবা সামাজিক কারণে সরাসরি যৌতুক চাইতে পারে না। কিন্তু বস্তুত তাদের অন্তরের অবস্থা এতই জটিল ও বদ দ্বীন, যার কারণে তারা যৌতুকের মতো নিকৃষ্টতম হারামের লোভ থেকেও নিজেদেরকে সংবরণ করতে পারে না। তখন তারা এরকম কলা কৌশলে যৌতুক আদায়ের চিন্তা করে। বাস্তব যদি তাই হয়, তাহলে তা জঘন্য রকম অপরাধ। তা থেকে বিরত হয়ে তওবা করা তাদের কর্তব্য।
فقط. والله تعالى اعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
৪ ই যুলকা’দাহ, ১৪৪১ হি.
২৬ শে জুন, ২০২০ ইং
আরো পড়ূন
স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার মোহর ও অন্যান্য সম্পদের বিধান