ফাতওয়াফাতওয়া  নং  ৫১০

হারাম সম্পদ জিহাদের কাজে ব্যয় করার বিধান

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন: হারাম ভাবে উপার্জিত অর্থ কি জিহাদের কাজে ব্যয় করা যাবে?

-তারেক মাসউদ

 

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

হাদীস শরীফে এসেছে,

عن أبي هريرة رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من تصدق بعدل تمرة من كسب طيب، ولا يقبل الله إلا الطيب، وإن الله يتقبلها بيمينه، ثم يربيها لصاحبه، كما يربي أحدكم فلوه، حتى تكون مثل الجبل» -صحيح البخاري: 1410

“হযরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সাদাকা করবে, (আল্লাহ তা কবুল করবেন)। আল্লাহ একমাত্র হালাল মালই কবুল করেন। তিনি তাঁর ডান হাত দিয়ে তা কবুল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে তা প্রতিপালন করে বড় করেন, যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সাদাকা পাহাড় বরাবর হয়ে যায়।” -সহীহ বুখারী: ১৪১০

আরেক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

من جمع مالا حراما، ثم تصدق به، لم يكن له فيه أجر، وكان إصره عليه. -أخرجه ابن حبان، وقال الشيخ شعيب: إسناده حسن … وأخرجه الحاكم … وصححه، ووافقه الذهبي

“যে ব্যক্তি হারাম সম্পদ উপার্জন করে তা সাদাকা করলো, সে কোনো সাওয়াব পাবে না; বরং এর গুনাহ তার উপরই বর্তাবে।” -সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩২১৬

মুসলিমদের জন্য ফরয হলো, সামর্থ্যানুযায়ী নিজেদের হালাল সম্পদ জিহাদে খরচ করা।

আল্লাহ তাআলা হারাম কবুল করেন না। তবে একান্ত কেউ যদি হারাম পথে উপার্জন করেই ফেলে, তাহলে তার প্রথম কর্তব্য তাওবা করা এবং হারাম সম্পদ যাদের থেকে গ্রহণ করেছে তাদেরকে কিংবা তাদের না পাওয়া গেলে তাদের ওয়ারিশদেরকে ফিরিয়ে দেয়া। সর্বাত্মক চেষ্টার পরও যদি তাদের খুঁজে না পাওয়া যায়, কিংবা ‍উপার্জনটি যদি ব্যাংকের সুদ বা এ জাতীয় কিছু হয় যেখানে প্রকৃত মালিকের হদিস পাওয়া সম্ভব নয়, তাহলে সাওয়াবের নিয়ত ব্যতীত শুধু হারামের দায়ভার থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে মূল মালিকের পক্ষ হতে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত গরীবদের মাঝে সাদাকা করে দেয়া অথবা মুসলিমদের জনকল্যাণমূলক কোনো কাজে বা জিহাদের কাজে ব্যয় করা। যাতে মালিক তার সম্পদ না পেলেও এর সাওয়াবটুকু পেয়ে যান।

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ বলেন,

ومن أراد التخلص من الحرام والتوبة ولا يمكن رده إلى أصحابه فلينفقه في سبيل الله عن أصحابه فإن ذلك طريق حسنة إلى خلاصه مع ما يحصل له من أجر الجهاد. -مجموع الفتاوى 28/421422، الناشر: مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف، المدينة النبوية، المملكة العربية السعودية

“যে ব্যক্তি হারাম থেকে দায়মুক্ত হতে চায় এবং তওবা করতে চায়; অথচ তা মালিকের নিকট পৌঁছানো সম্ভব নয়, তাহলে সে যেন তা মালিকের পক্ষ থেকে জিহাদের পথে খরচ করে। এটা দায়মুক্তির উত্তম পথ এবং এতে সে জিহাদে অংশ গ্রহণেরও সাওয়াব হবে।” -মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৪২১-৪২২

আরও দেখুন:

ফতোয়া নং ৩০২ অসৎ পন্থায় উপার্জিত অর্থ সদকা করার বিধান কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a6-%e0%a6%98%e0%a7%81%e0%a6%b7/%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a7%8e-%e0%a6%aa%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a5%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%89%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%a4-%e0%a6%85%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5/

ফতোয়া নং ৪১৪ জনকল্যাণমূলক কাজে হারাম অর্থ ব্যয়: একটি সংশয় নিরসন

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a6%95%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a3%e0%a6%ae%e0%a7%82%e0%a6%b2%e0%a6%95-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae/

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-০৩-১৪৪৬ হি.

০২-১০-২০২৪ ঈ.

 

Related Articles

Back to top button