পবিত্রতা-ওযু-গোসলসালাতফাতওয়া  নং  ৩৪৫

মবিল যুক্ত কাপড় পরে নামায আদায়ের বিধান

মবিল যুক্ত কাপড় পরে নামায আদায়ের বিধান

মবিল যুক্ত কাপড় পরে নামায আদায়ের বিধান

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্নঃ

আমার এক ভাই সাইকেল মিস্ত্রী। কাজ করার সময় তাঁর কাপড়ে প্রায়ই মবিল লেগে যায়। তিনি কি সেই কাপড় পরিধান করে নামায পড়তে পারবেন? মবিল ছাড়া অন্য কোনও তেল যুক্ত কাপড় পরিধান করে কি নামাজ পড়তে পারবেন? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম।

নাম- হাফিজ

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

জি, মবিল বা অন্য কোনও তেল যুক্ত কাপড় পরিধান করে নামায পড়লে নামায হয়ে যাবে। তবে আল্লাহ তাআলার নির্দেশ হচ্ছে,

يَابَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ -الأعراف: 31

“হে আদম-সন্তান! তোমরা প্রত্যেক নামাযে নিজেদের শোভার বস্তু গ্রহণ করো।” -সূরা আরাফ (০৮) : ৩১

আয়াতের তাফসীরে ইমাম ইবনে কাসীর রহ. বলেন,

والزينة: اللباس، وهو ما يواري السوأة، وما سوى ذلك من جيد البز والمتاع -فأمروا أن يأخذوا زينتهم عند كل مسجد.ولهذه الآية، وما ورد في معناها من السنة، يستحب التجمل عند الصلاة. -تفسير ابن كثير (3/ 405 دار طيبة الطبعة: الثانية 1420هـ(

“যীনাত (শোভার বস্তু) হলো পোশাক, যা সতর ঢাকে এবং এছাড়াও উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ। মুসলিমদের মসজিদে আসার সময় সাজসজ্জা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। এই আয়াত ও এই অর্থে বর্ণিত হাদীসসমূহের কারণে নামাযের সময় উত্তম বেশ-ভূষা অবলম্বন করা মুস্তাহাব।” -তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৩/৪০৫

এজন্য উত্তম হচ্ছে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করে নামায আদায় করা।

অবশ্য কোনও তেল যদি দুর্গন্ধযুক্ত হয়, যেমন কেরোসিন, তাহলে তা নিয়ে মসজিদে যাওয়া মাকরূহ। এতে ফেরেশতা ও মুসল্লীদের কষ্ট হয়। হাদীসে এসেছে,

من أكل من هذه البقلة فلا يقربن مساجدنا حتى يذهب ريحها. يعنى الثوم. -صحيح البخاري، رقم: 853 ط. دار طوق النجاة، صحيح مسلم، رقم: 1277؛ ط. دار الجيل بيروت + دار الأفاق الجديدة ـ بيروت

“যে ব্যক্তি এই রসুন খায়, দুর্গন্ধ দূর না হওয়া পর্যন্ত সে যেন আমাদের মসজিদসমূহের কাছেও না আসে।” –সহীহ মুসলিম: ১২৭৭

অপর হাদীসে এসেছে,

من أكل من هذه الشجرة المنتنة فلا يقربن مسجدنا فإن الملائكة تأذى مما يتأذى منه الإنس. -صحيح مسلم، رقم: 1280؛ ط. دار الجيل بيروت + دار الأفاق الجديدة ـ بيروت

“যে ব্যক্তি এ দুর্গন্ধযুক্ত সবজিটি খায়, সে যেন আমাদের মসজিদের কাছেও না আসে। কারণ, যে জিনিসের দ্বারা মানুষ কষ্ট পায়, সেটি দ্বারা ফেরেশতারাও কষ্ট পায়।” –সহীহ বুখারী: ৮৫৩; সহীহ মুসলিম: ১২৮০

শামী রহ. বলেন,

قال الإمام العيني في شرحه على صحيح البخاري: علة النهي أذى الملائكة وأذى المسلمين  …. ويلحق بما نص عليه في الحديث كل ما له رائحة كريهة مأكولا أو غيره. –رد المحتار: 1/661

“সহীহ বুখারীর ভাষ্যগ্রন্থে ইমাম আইনী রহ. বলেন, (রসুন খেয়ে মসজিদে আসতে) নিষেধ করার কারণ হলো তাতে ফেরেশতা ও মুসলমানদের কষ্ট হয়। …. দুর্গন্ধযুক্ত সকল জিনিসের হুকুমও এটাই, চাই তা খাদ্যবস্তু হোক বা অন্য কিছু।” -ফাতাওয়া শামী: ১/৬৬১

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

আরও পড়ুনঃ ইমাম সাহেব দ্রুত নামায পড়ালে করণীয় কী?

Related Articles

Back to top button