সুদের টাকা নিয়ে দান করে দেয়া উত্তম? না, একদম না নেয়াই উত্তম?
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
প্রশ্ন:
আমি সরকারকে তাগুত মনে করি তারপরও বিশেষ কারণে সরকারি চাকরি করছি। এখন আমার প্রশ্ন হলো, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন থেকে বাধ্যতামূলক কিছু টাকা জি.পি.এফ ফান্ডে কেটে নেওয়া হয় বা কেউ ইচ্ছে করলে বেশিও কাটাতে বা রাখতে পারে। এই টাকার উপর ১৩% হারে সুদ দেওয়া হয় তবে সুদ মুক্ত করার ব্যবস্থাও আছে। যেহেতু এটা সুদ সেহেতু আমি নিবো না। কিন্তু অনেকে বলে, সুদের টাকা আলাদা হিসাব করে যে সকল স্থানে খরচ করা যায় (যেমন: এতিম বাচ্চাদের লালনপালন, বাথরুম বানিয়ে দেওয়া, জিহাদ ইত্যাদি) ওসব জায়গায় খরচ করতে। এখন সুদ মুক্ত করা ঠিক হবে? নাকি সুদ আলাদা হিসাব করে যে সকল স্থানে খরচ করা যায় সে সকল স্থানে খরচ করবো?
বিঃদ্রঃ এই টাকাগুলো চাকরি শেষ হলে পাবো। শুরু থেকেই টাকাগুলো আমার নামে জমা থাকবে। আর আমি এই ভয় করি যে, যদি চাকরি শেষ হওয়ার আগেই আমি মরে যাই তাহলে আমার পরিবার সুদের টাকা গুলো আলাদা হিসাব করে দিবে কিনা?
প্রশ্নকারী-বেলাল
উত্তর:
বাধ্যতামূলক জমা করা অর্থের ওপর যে লাভ দেয়া হয়, তাকে সুদ বলা হলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তা সুদ নয়। এটা চাকুরের প্রাপ্ত বৈধ অর্থ। সুতরাং আপনি তা নিজেও ভোগ করতে পারবেন কিংবা ইচ্ছা করলে জিহাদ বা অন্য কোনো নেক কাজে দান করতে পারবেন।
অবশ্য স্বেচ্ছায় জমা করা অর্থের ওপর যে সুদ আসে, সেটা প্রকৃতই সুদ হিসেবে গণ্য হবে। তাই স্বেচ্ছায় জমাকৃত অংশে সুদের অপশন বন্ধ করা জরুরি। কেননা একজন মুসলিমের জন্য সুদি চুক্তি করা বা সুদি একাউন্ট খোলা এবং সুদি লেনদেন করা জায়েয নয়, যদিও যার সাথে লেনদেন করা হচ্ছে সে কাফের বা তাগুত হয় এবং তা জিহাদ বা অন্য কোন নেক কাজে দান করার নিয়তে হয়। ইতিমধ্যে স্বেচ্চায় জমাকৃত অংশে যদি কোনো সুদ জমা হয়ে থাকে, সেটা উঠিয়ে হারাম থেকে দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে তা গরিবদের দান করে দিন। -সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩২১৬ ইমদাদুল আহকাম: ৩/৪৯৯ জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৩/২৮৫-২৮৭
উল্লেখ্য ব্যাংক যেহেতু সুদি প্রতিষ্ঠান, এজন্য একান্ত বাধ্য না হলে তাতে টাকা জমা রাখাও শরীয়তে জায়েয নয়। কারণ, এতে সুদি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা হয়। এ বিষয়ে আপনি https://fatwaa.org/2020/07/26/1486/ এ লিংক হতে সাইটে প্রকাশিত ৭৪ নং ফতোয়াটি দেখে নিতে পারেন।
আর আপনি যেহেতু সরকারকে তাগুত মনে করেন তাই কোন সরকারী চাকরি মাকরুহ আর কোনটা হারাম বা কুফর, তাও আশা করি আপনার জানা থাকার কথা। এবিষয়ে ‘সরকারী বেতন হালাল কি?’ শিরোনামে ১২ নং ফাতওয়াটি [https://fatwaa.org/2020/05/03/912/] এবং ‘সরকারি চাকরি করা কি বৈধ?’ শিরোনামের প্রবন্ধটি [https://fatwaa.org/2020/04/15/767/] দেখতে পারেন ইনশাআল্লাহ।
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি
০৭-০১-১৪৪২ হি.
২৭-০৮-২০২০ ইং