হালাল-হারাম:

ইসলামী ব্যাংকে মুদারাবার বিধান

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

আমি দীর্ঘ দিন থেকে ইসলামী ব্যাংকে মুদারাবা লেনদেন করে আসছি৷ কিছু দিন আগে জনৈক আলেম সাহেবকে বলতে শুনলাম, ইসলামী ব্যংকে মুদারাবা ব্যবসায় শেয়ার নেওয়া বৈধ নয়৷ কারণ সেখানে লভ্যাংশ নির্ধারিত না থাকলেও ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা বা অপশন নেই৷ অথচ ব্যবসায় লাভ-লস দুটোই থাকে৷

এখন আমার জানার বিষয় হলো, এভাবে মুদারাবা করা বৈধ হবে কি না? এবং এ যাবত যে লভ্যাংশ নিয়েছি তা কি বৈধ ছিল?

-আব্দুর রউফ

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী, এদেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ শরীয়াহ পদ্ধতি অনুসরণ করে না। ফলে ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন থেকে আয়কৃত মুনাফা সন্দেহমুক্ত নয়। অতএব ইসলামী ব্যাংকসহ সকল ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে বেঁচে থাকা জরুরি এবং এটিই দীন ও ঈমানের জন্য নিরাপদ। একজন মুমিনের জীবনে হালাল হারামের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

হাদীস শরীফে এসেছে,

إن الحلال بين، وإن الحرام بين، وبينهما مشتبهات لا يعلمهن كثير من الناس، فمن اتقى الشبهات استبرأ لدينه، وعرضه، ومن وقع في الشبهات وقع في الحرام… –صحيح البخاري: 52، ومسلم: 1599 واللفظ له.

“নিশ্চয় হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। উভয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে। আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে, সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে।” –সহীহ মুসলিম: ১৫৯৯, সহীহ বুখারী: ৫২

আপনার প্রতি নসীহা হলো, বিলম্ব না করে ব্যাংকের সাথে মুআমালা গুটিয়ে নিবেন এবং ব্যাংক থেকে আয়কৃত মুনাফা সাওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীব মিসকিনদের মাঝে দান করে দিবেন। মুসলিমদের কোনো জনকল্যাণমূলক কাজেও দান করা যাবে। যদি জিহাদের পথে খরচ করতে পারেন আরও ভালো। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ (৭২৮ হি.) বলেছেন, এমন অর্থ থেকে মুক্তি লাভের উত্তম পথ হচ্ছে, তা জিহাদের পথে খরচ করা। তিনি বলেন,

“ومن أراد التخلص من الحرام والتوبة ولا يمكن رده إلى أصحابه فلينفقه في سبيل الله عن أصحابه فإن ذلك طريق حسنة إلى خلاصه مع ما يحصل له من أجر الجهاد”. اهـ مجموع الفتاوى 28/422

“যে ব্যক্তি হারাম থেকে দায়মুক্ত হয়ে চায় এবং তওবা করতে চায়; অথচ তা মালিকের নিকট পৌঁছানো সম্ভবপর নয়, তাহলে সে যেন তা মালিকের পক্ষ থেকে জিহাদের পথে খরচ করে। এটা দায়মুক্তির উত্তম পথ এবং এতে সে জিহাদে অংশ গ্রহণেরও সাওয়াব পাবে।” -মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৪২১-৪২২, আরো দেখুন ফাতাওয়া উসমানি: ৩/২৭৬, ১২৮-১৪০

এ বিষয়ে আরো জানার জন্য দেখুন,

ফাতওয়া: ২৮৫- প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকগুলোর মুদারাবা পদ্ধতির লেনদেন কতটুকু শরীয়াহ সম্মত?

ফাতওয়া: ১৫৪- ইসলামী ব্যাংকগুলো মুদারাবার নামে যেভাবে টাকা দিয়ে থাকে তা কি জায়েয?

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-০৩-১৪৪৬ হি.

০২-১০-২০২৪ ঈ.

 

Related Articles

Back to top button