কোনো মেয়ে কি ইউটিউব চ্যানেলে ভয়েস দিতে পারবে?
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
প্রশ্ন:
ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো মেয়ে কি তার ইউটিউব চ্যানেলে নিজের ভয়েস দিতে পারবে?
প্রশ্নকারী- সুমাইয়া আক্তার
উত্তর:
নারীর আওয়াজ ফিতনার কারণ। তাই নারীর প্রতি শরীয়তের নির্দেশনা হল, প্রয়োজন ছাড়া পরপুরুষের সাথে কথা না বলা এবং গাইরে মাহরামকে নিজের আওয়াজ না শোনানো। একারণে ইবাদত বন্দেগির ক্ষেত্রেও শরীয়তে এ বিষয়টির প্রতি লক্ষ রাখা হয়েছে। যেমন আযান দেয়ার দায়িত্ব নারীদের দেয়া হয়নি। নারীদের সকল নামাযের কেরাত নিম্নস্বরে পড়তে হয়। হজের তালবিয়া পুরুষগণ উচ্চ আওয়াজে পড়ে, কিন্তু নারীদের পড়তে হয় নিম্ন আওয়াজে। -আহকামুল কুরআন, জাসসাস: ৩/৪১২; তাফসীরে রাযী: ২৫/১৬৭; সহীহ বুখারী: ১২০৩; সহীহ মুসলিম: ৪২৩; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ: ১৪৮২২; ১৪৮২৮; শরহু সহীহিল বুখারী: ইবনে বাত্তাল: ৩/১৯৩; মওসুওয়্যাহ ফিকহিয়্যাহ: ১৩/২৬৩; বাহরুর রায়েক: ১/ ২৭৭; ফাতাওয়া শামী: ১/৪০৬
তাই মেয়েদের জন্য ইউটিউব চ্যানেলে ভয়েস দেয়া জায়েয হবে না। আর যদি এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে আকর্ষণীয় ও কোমল কণ্ঠ দেয়া হয়, তবে তো তা আরও বেশি নিন্দনীয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يَانِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا. -سورة الأحزاب: 32
“হে নবী পত্নীগণ! তোমরা সাধারণ নারীদের মতো নও; যদি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। সুতরাং তোমরা কোমল কণ্ঠে কথা বলো না, পাছে অন্তরে ব্যাধি আছে এমন ব্যক্তি লালায়িত হয়ে পড়ে। আর তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বলো।” -সূরা আহযাব: ৩২; ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৯/৪৩৭
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ [النور: 31]
“এবং নারীরা যেনো সজোরে পদক্ষেপ না রাখে, যাতে তাদের গোপন সৌন্দর্য জানা হয়ে যায়।” –সূরা নূর: ৩১
ইমাম জাসসাস (রহ) বলেন,
روى أبو الأحوص عن عبد الله قال: “هو الخلخال”، وكذلك قال مجاهد: “إنما نهيت أن تضرب برجليها ليسمع صوت الخلخال”….. فيه دلالة على أن المرأة منهية عن رفع صوتها بالكلام بحيث يسمع ذلك الأجانب; إذ كان صوتها أقرب إلى الفتنة من صوت خلخالها; ولذلك كره أصحابنا أذان النساء; لأنه يحتاج فيه إلى رفع الصوت والمرأة منهية عن ذلك. -أحكام القرآن للجصاص ط العلمية (3/ 412)
“আবুল আহওয়াস (রহ) আব্দুল্লাহ (রাযি) থেকে বর্ণনা করেন, এখানে সৌন্দর্য দ্বারা উদ্দেশ্য নুপূর। এমনিভাবে মুজাহিদ (রহ) ও বলেছেন, ‘এখানে নারীদেরকে এমন সজোরে পা ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে, যাতে পরপুরুষরা নুপূরের আওয়াজ শুনতে পায়।’….. এখানে একথার প্রমাণ রয়েছে যে, নারীর জন্য কথার আওয়াজ এরূপ উচ্চ করা নিষেধ, যা পরপুরুষ শুনতে পায়। কারণ নারীকণ্ঠের আওয়াজ, তার নুপূরের আওয়াজ অপেক্ষা ফিতনার অধিক সম্ভাবনাময়।…” –আহকামুল কুরআন, জাসসাস: ৩/৪১২
فقط والله تعالى أعلم بالصواب.
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
০৭-০৫-১৪৪৪ হি.
০২-১১-২০২২ ঈ.