পণ্য ক্রয়ের বিপরীতে লটারি করে পুরস্কার দেওয়ার বিধান
প্রশ্ন: ধরুন, এক আতর ব্যবসায়ী তার বিক্রি বাড়াতে চায়। সে ক্রেতাদের জন্য একটি অফার ঘোষণা করলো, কেউ ৫০০ টাকার আতর কিনলে (যার স্বাভাবিক মূল্যও ৫০০ টাকা) তাকে একটি টোকেন দেওয়া হবে। মাস শেষে সকল টোকেনের উপর লটারি হবে এবং প্রথম তিনজন ক্রেতাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। ঈদের মৌসুমে বিভিন্ন মার্কেটে এমন দেখা যায়।
জানার বিষয় হলো, এ পদ্ধতিটি জায়েয? না, নাজায়েয?
-আবদুস সাত্তার
উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد!
প্রশ্নোক্ত পদ্ধতির লেনদেন সম্পর্কে উলামায়ে কেরামের মতানৈক্য রয়েছে। তবে নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী কিছু শর্ত সাপেক্ষে তা জায়েয।
০১. অফারের কারণে পণ্যের দাম বৃদ্ধি না করে স্বাভাবিক বাজার মূল্যে বিক্রি করতে হবে। স্বাভাবিক দাম থেকে মূল্য বাড়িয়ে ধরলে তা জুয়ার অন্তর্ভু্ক্ত হবে এবং নাজায়েয হবে।
০২. অফারটিকে ভেজাল পণ্য বিপণনের মাধ্যম না বানাতে হবে। লোভনীয় অফার দিয়ে ভেজাল পণ্য বিক্রি করা সুস্পষ্ট প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত, যা শরীয়তে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
০৩. অফারযুক্ত পণ্যটি ক্রেতাকে বাস্তব প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যেই ক্রয় করতে হবে। শুধু পুরস্কার জেতার উদ্দেশ্যে ক্রয় করলে তা জুয়ার সদৃশ হবে যা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
প্রশ্নোক্ত লেনদেনে উপর্যুক্ত শর্তগুলো পাওয়া গেলে অফারযুক্ত পণ্যটি ক্রয় করা এবং লটারির মাধ্যমে বিক্রেতা কর্তৃক কোনো পুরস্কার দেওয়া এবং ক্রেতার জন্য তা গ্রহণ করা জায়েয। অন্যথায় জায়েয হবে না। -বুহুস ফি কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআসিরা (আহকামুল জাওয়ায়েয): ২/১৫৮-১৫৯, জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৪/৫৬৬-৫৬৭
উল্লেখ্য, এভাবে লোভনীয় অফার দিয়ে ক্রেতা আকৃষ্ট করা শরীয়তে পছন্দনীয় ও আদর্শ কোনো পদ্ধতি নয়। এক্ষেত্রে পছন্দনীয় পদ্ধতি হলো, মূল্যে ছাড় দেওয়া কিংবা পণ্যের মান ও পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া।
فقط، والله تعالى أعلم بالصواب
-আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
২৩-০১-১৪৪৬ হি.
৩০-০৭-২০২৪ ঈ.