বিবিধফাতওয়া  নং  ৪৪৩

জিন জাতির অস্তিত্ব অবিশ্বাস করা কি কুফর?

জিন জাতির অস্তিত্ব অবিশ্বাস করা কি কুফর?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

 

প্রশ্ন: কেউ জিন জাতির অস্তিত্ব বিশ্বাস না করলে কী তার ঈমান চলে যাবে?

-মুহাম্মাদ তানভীর হাসান

 

উত্তর: কুরআনে কারীমের প্রায় দুই ডজন আয়াতে আল্লাহ জিন জাতি সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা করেছেন এবং জিন জাতির নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা অবতীর্ণ করেছে, যার নাম ‘সূরাতুল জিন’। কুরআনুল কারীমের ৭২ নং সূরা এটি। অনেক অয়াতে সুস্পষ্ট বলেছেন, তিনি জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। সূরা আররহমানে ইরশাদ করেন,

{وَخَلَقَ الْجَانَّ مِنْ مَارِجٍ مِنْ نَارٍ} [الرحمن: 15]

“তিনি জিনদেরকে সৃষ্টি করেছেন নির্ধূম অগ্নি শিখা দ্বারা।” -আররহমান (৫৫): ১৫

সূরা যারিয়াতে ইরশাদ করেন,

{وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ} [الذاريات: 56]

“আমি জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার ইবাদত করবে।” –সূরা যারিয়াত ৫১: ৫৬

আরও দেখুন: সূরা আনআম ০৬: ১০০, ১২৮ ও ১৩০; সূরা আরাফ ০৭: ৩৮ ও ১৭৯; সূরা কাহ্ফ ১৮: ৫০; সূরা নামল ২৭: ১৭ ও ৩৯; সূরা সাবা ৩৪: ১২, ১৪ ও ৪১; সূরা ফুসসিলাত ৪১: ২৫ ও ২৯; সূরা আহকাফ ৪৬: ১৮ ও ২৯; সূরা জিন ৭২: ০১ ও ০৬ নং আয়াত।

সুতরাং জিন জাতিকে অস্বীকার করার অর্থ এই আয়াতগুলো সব অস্বীকার করা। যেখানে কুরআনে কারীমের একটি হরফ অস্বীকার করলে ঈমান থাকে না, সেখানে যে এতগুলো আয়াত আস্বীকার করবে, তার ঈমান কি করে থাকবে? ইমাম ইবনে কুদামা রহিমাহুল্লাহ (৬২০ হি.) বলেন,

ولا خلاف بين المسلمين في أن من جحد من القرآن سورة أو آية أو كلمة أو حرفا متفقا عليه أنه كافر. -لمعة الاعتقاد (ص: 21 ط. وزارة الأوقاف السعودية)

 

“এ বিষয়ে মুসলিমদের মাঝে কোনো দ্বিমত নেই যে, কেউ কুরআনের কোনো একটি সূরা, একটি আয়াত, একটি শব্দ বা একটি সর্বস্বীকৃত বর্ণ অস্বীকার করলেও কাফের হয়ে যাবে।” -লুমআতুল ইতিকাদ, পৃ: ২১ (ওযারাতুল আওকাফ, সৌদি)

ইমাম ইবনে হাযম রহিমাহুল্লাহ (৪৫৬ হি.) বলেন,

وأجمع المسلمون كلهم على ذلك … فمن أنكر الجن أو تأول فيهم تأويلا يخرجهم به عن هذا الظاهر فهو كافر. –الفصل[1] في الملل والأهواء والنحل (5/ 9 ط. مكتبة الخانجي)

“সকল মুসলিম জিন জাতির অস্তিত্বের ব্যাপারে একমত। …. সুতরাং যে জিন জাতিকে অস্বীকার করবে কিংবা তাদের ব্যাপারে এমন কোন ব্যাখ্যা করবে, যা (কুরআনে বর্ণিত ও মুসলিমদের ঐকমত্যে প্রতিষ্ঠিত) এই বাহ্যিকরূপের পরিপন্থী, সে কাফের হয়ে যাবে।” -আলফাসল: ৫/৯ (মাকতাবাতুল খানাজী)

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৫-১৪৪৫ হি.

০৮-১২-২০২৩ ঈ.

[1] فبعد تتبع الأصل اللغوي للفظة “الفصل” من كتب اللغة المعتمدة، ومن خلال الأدلة التي قمت بسردها آنفا، بما فيها نَصّيْ الحميدي الذي نقله عن ابن حيان، و المقري العارف بالتاريخ الأدبي والعلمي للأندلس، أقول: إن الصواب في عنوان موسوعة ابن حزم هو: “الفَصل بين أهل الأهواء والنحل”، أو “الفَصل بين أهل الآراء والنحل”، أو “الفَصل بين الملل والأهواء والنحل”، وذلك بفتح الفاء وتسكين الصاد.

تحقيق عنوان كتاب ابن حزم ” الفصل في الملل والاهواء والنحل”

আরও পড়ুন, ফাতওয়া নং ২৪৫:  অন্তরে ঈমান মুখে কুফরি বাক্য উচ্চারণের হুকুম কী?

Related Articles

Back to top button