ফাতওয়াবিবিধফাতওয়া  নং  ৪০২

হজের জন্য ব্যাংকে টাকা জমানোর হুকুম

হজের জন্য ব্যাংকে টাকা জমানোর হুকুম

হজের জন্য ব্যাংকে টাকা জমানোর হুকুম

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্নঃ

হজের জন্য ব্যাংকে টাকা জমানোর হুকুম কী? যদি না জায়েয হয় তাহলে টাকা কীভাবে জমাবো?

-আবদুল্লাহ মুহাম্মদ

উত্তরঃ

ব্যাংকে টাকা রাখার দ্বারা কয়েক ধরনের নাজায়েয কাজে জড়াতে হয়;

এক. ব্যাংক একটি সুদি প্রতিষ্ঠান, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। ব্যাংকে টাকা রাখা কিংবা ব্যাংকের সাথে কোনও ধরনের লেনদেন করার অর্থ খোদাদ্রোহী প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করা; অথচ তা বিলুপ্ত করা মুসলিমদের আবশ্যিক কর্তব্য।

দুই. সুদি চুক্তির গুনাহ; চাই সুদ নেয়ার চুক্তি হোক বা দেয়ার চুক্তি হোক। পরবর্তীতে সুদ দেওয়া নেওয়া না হলে সুদের গুনাহ থেকে তো বাঁচা যাবে, কিন্তু সুদের চুক্তির গুনাহ থেকে বাঁচার উপায় নেই।

তিন. ব্যাংকে জমাকৃত টাকা পরবর্তীতে সুদি লেনদেনে ব্যবহার করা হয়। এভাবে নিজের টাকা হারাম কাজে ব্যবহৃত হওয়ার অবকাশ দেওয়া নাজায়েয।

এসব কারণে স্বাভাবিক অবস্থায় (বাধ্য হয়ে যাওয়া ছাড়া) ব্যাংকে টাকা রাখা কিংবা ব্যাংকের সাথে কোনও ধরনের লেনদেন করা নাজায়েয। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ”. –المائدة: 2

“আর তোমরা সৎকর্মে ও পরহেযগারিতে পরস্পরকে সাহায্য কর, পাপ কাজে ও জুলুমে একে অপরের সাহায্য করো না।” -সূরা মায়েদা, ০৫: ০২

কেউ রেখে থাকলে দ্রুত সেই টাকা উঠিয়ে এই গুনাহ থেকে খালেস দিলে তাওবা করবে এবং অতিরিক্ত মুনাফা পেয়ে থাকলে সেটা নিজে ভোগ করবে না; বরং গরীব মিসকীনদের দান করে দিবে কিংবা কোনও জনকল্যাণমূলক কাজে খরচ করবে।-ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়া ২/১৯৪-১৯৫, মাকতাবা ফকীহুল উম্মত, দেওবন্দ; ইমদাদুল ফাতাওয়া (জাদিদ) ৭/৪৯ ও ২১৭-২১৮; কেফায়াতুল মুফতি ৮/৬৫;  আহসানুল ফাতাওয়া ৭/১৪, যাকারিয়া; মুনতাদাল আসয়িলা ৫/১৬৫-১৬৬

হ্যাঁ, ব্যাংকে টাকা না রাখলে যদি তা চুরি-ডাকাতি কিংবা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, কিংবা দীনি ও দুনিয়াবি কোন জরুরি কর্ম ব্যাংকের মধ্যস্থতা ছাড়া সমাধা করা সম্ভব না হয়, তাহলে ব্যাংকে টাকা রাখা কিংবা একাউন্ট খোলা জায়েয হবে।

এমন প্রয়োজন দেখা দিলে প্রথমে কোনও ইসলামী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্ট খুলে প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করবে। এটা সম্ভব না হলে, সেভিংস একাউন্ট করতে পারবে। তবে সেভিংস একাউন্টে যে অতিরিক্ত অর্থ আসবে, তা নিজে ভোগ করবে না। গরীবদের সাদাকা করে দিবে অথবা জন্যকল্যাণমূলক কাজে খরচ করবে। -ইমদাদুল ফাতাওয়া ৭/৪৯ ও ২১৭; ফাতাওয়া উসমানি ৩/২৬৮, ২৭০, ২৮২; মুনতাদাল আসয়িলা ৫/১৬৫-১৬৬ (প্রশ্ন নং ৮০৫), ৫/১৫৬ (প্রশ্ন নং ৪৫৭) মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা ৬, ১১৩, ১১৪, ১২৮, ১২৯

উল্লেখ্য, প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে রাখলে গুনাহ হলেও, তা যদি নিজের হালাল টাকা হয়, তা দিয়ে হজ করলে হজে কোনও সমস্যা হবে না।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৬-০১-১৪৪৫ হি.

০৪-০৮-২০২৩ ঈ.

আরও পড়ুনঃ পরিবহন বিল বাড়িয়ে লেখা কি বৈধ হবে?

Related Articles

Back to top button