প্রবন্ধ-নিবন্ধ
Trending

উশর: একটি বিস্মৃত ফরয জরুরি মাসায়েল | মাওলানা উযায়ের আহমদ হাফিযাহুল্লাহ

উশর: একটি বিস্মৃত ফরয জরুরি মাসায়েল

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

উশর: একটি বিস্মৃত ফরয

জরুরি মাসায়েল

 

রচনা

মাওলানা উযায়ের আহমদ হাফিযাহুল্লাহ

সম্পাদনা

মুফতি আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি হাফিযাহুল্লাহ

 

সূচিপত্র

ভূমিকা.. 1

উশরের গুরুত্ব ও ফযীলত. 4

উশরী ও খারাজী জমির পরিচয়. 13

মাসআলা:-১  জমি দুই ধরনের: উশরী ও খারাজী.. 13

কোনো কাফের উশরী জমি ক্রয় করলে তা খারাজী হয়ে যায়. 17

খারাজী জমির মালিক ইসলাম গ্রহণ করলে জমি খারাজীই থাকে… 18

বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের জমি উশরী? না, খারাজী?. 20

জমির খাজনা দেয়ার দ্বারা উশর আদায় হয় না.. 23

উশরের জন্য কোনো নেসাব নেই. 32

সব ধরনের ফল ও ফসলের উপরই ‍উশর আসে.. 33

নিজে নিজে গজানো ঘাস, বাঁশ ও ফলহীন গাছে উশর আসে না.. 36

উশরী জমি থেকে সংগ্রহকৃত মধুতে উশর আসে.. 38

বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা ছাদে লাগানো ফলগাছে উশর আসে না.. 39

উশরের পরিমাণ. 40

উভয় প্রকার পানি দ্বারা সিঞ্চিত জমির হুকুম. 41

চাষাবাদের খরচ বাবদ কোনো অংশ বাদ যাবে না.. 42

ঋণ থাকলেও উশর ওয়াজিব হয়. 43

নাবালেগ ও পাগল ব্যক্তির জমিতেও উশর আসে.. 43

ওয়াকফিয়া জমিতেও উশর আসে.. 44

ফল-ফসল পাকার আগে বিক্রি করলে উশর কে দেবে?. 44

উশরী জমি ভাড়া নিলে উশর কে দেবে?. 46

বর্গাচাষের ক্ষেত্রে উশর কে দেবে?. 47

জমিতে বছরে একাধিক বার ফসল হলে কয়বার উশর দিতে হবে?. 48

ফল-ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলে উশরের হুকুম. 49

জমির মালিক উশর না দিয়ে মারা গেলে করণীয়. 49

উশরের মাসরাফ কারা?. 50

ফসলের মূল্য দ্বারাও উশর দেয়া যায়. 51

কেউ অন্যের জমি বিনামূল্যে চাষাবাদ করলে উশর কে দেবে?. 52

ফল-ফসল কাটার আগে নিজেরা কিছু খেলে তাতে উশর আসে না.. 53

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

ভূমিকা

আল্লাহ তাআলা ইসলামের মাধ্যমে মানবজাতিকে এক সুষম অর্থনীতি দান করেছেন। ইসলামের বিধান অনুযায়ী যাকাত, উশর[1], খারাজ[2], মীরাস, গনীমত ও ফাই[3] বণ্টন হলে কেউই অভাবী থাকতো না এবং সুদভিত্তিক পুঁজিবাদের আকাশ পাতাল আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য হতে মানুষ মুক্তি লাভ করতো।

এ বিষয়টির দিকেই ইঙ্গিত করে আল্লাহ তাআলা বলেন,

مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ كَيْ لَا يَكُونَ دُولَةً بَيْنَ الْأَغْنِيَاءِ مِنْكُمْ.[4] -الحشر: 7

“আল্লাহ তাঁর রাসূলকে অন্য জনপদবাসীদের থেকে ফাই হিসেবে যে সম্পদ দিয়েছেন, তা আল্লাহর, তাঁর রাসূলের, (রাসূলের) আত্মীয়বর্গের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের ও মুসাফিরদের প্রাপ্য, যাতে সম্পদ তোমাদের মধ্যকার কেবল বিত্তবানদের মধ্যেই আবর্তিত না হয়।” -সূরা হাশর ৫৯:০৭

উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

ما من أحد من المسلمين إلا له في هذا الفيء نصيب إلا عبد مملوك، ولئن بقيت ليبلغن الراعي نصيبه من هذا الفيء في جبال صنعاء. -مصنف ابن أبي شيبة (33649)، الأموال للقاسم بن سلام (41)[5]

“গোলাম ব্যতীত প্রত্যেক মুসলিমেরই এই মালে ফাইতে অংশ রয়েছে। যদি আমি জীবিত থাকি, তাহলে (ইয়ামানের) সানআর পাহাড়ে (পশুচারণকারী) রাখালের নিকটও ফাই হতে তার অংশ পৌঁছে যাবে।” -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, আসার নং ৩৩৬৪৯; আল-আমওয়াল, ইমাম আবু উবাইদ কাসেম বিন সাল্লাম, আসার নং ৪১

যখন ইসলামী হুকুমত ছিল এবং ইসলামী নীতি অনুযায়ী সম্পদ বণ্টন হয়েছে, তখন মুসলিম জাহানে বাস্তবেই এমনটি ঘটেছিল। ‘খলিফায়ে রাশেদ’ উমর বিন আব্দুল আযীয রহিমাহুল্লাহ এর যমানায় এক ব্যক্তি সাদাকার অর্থ নিয়ে ঘুরে ঘুরে ঘোষণা করছিলেন, কিন্তু সাদাকা নেয়ার মতো কাউকেই পাচ্ছিলেন না।[6] বস্তুত এটা ছিল নবীজীরই ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতিফলন, যা তিনি বহু আগেই করে গিয়েছিলেন। আদী বিন হাতেম রাযিয়াল্লাহু আনহু কাফের অবস্থায় নবীজীর দরবারে এলে নবীজী তাঁকে ইসলামের দাওয়াত দেন এবং বলেন, “যদিও তুমি এখন মুসলিমদের দারিদ্র্য ও অভাব-অনটন দেখছো, কিন্তু তাদের এমন সময় আসবে, যখন এক ব্যক্তি সাদাকা নিয়ে ঘুরবে, সাদাকা গ্রহণ করার মতো কাউকে পাবে না।” -সহীহ বুখারী: ৩৫৯৫; ফাতহুল বারী: ১৩/৮৩[7]

কিন্তু আজ এসব কেবলই ইতিহাস। মুসলিমরা আজ ইসলাম থেকে বিমুখ হয়ে কুফরী মতবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ‘খেলাফত আলা মিনহাজিন নবুওয়্যাহ’ (নববী আদর্শের ইসলামী হুকুমত ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা) ভুলে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের ধোঁকায় পতিত হয়েছে। জিহাদ ও শাহাদাতের নেশা ছেড়ে দুনিয়ার আরাম-আয়েশের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেছে। তাই আল্লাহ তাআলা আমাদের উপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দিয়েছেন। আমরা শরীয়ত ভিত্তিক শাসনের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কাফেরদের থেকে গনীমত-ফাই লাভ তো দূরের কথা, আজ কাফেররাই মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর সম্পদ অবাধে লুট করছে। শরীয়ত কায়েম না থাকার দরুন মানুষ শরীয়তের সৌন্দর্য কী বুঝবে, তারা তো শরীয়তের বিধানগুলোও আজ ভুলতে বসেছে।

ইসলামের অনেক বিস্মৃত বিধানের মতো একটি বিস্মৃতপ্রায় বিধান হলো উশর, যা উসুল করে মাসরাফ অনুযায়ী ব্যয় করা ইসলামী হুকুমতের অন্যতম কর্তব্য। কিন্তু ইসলামী হুকুমত না থাকায় আজ বলতে গেলে কেউই উশর আদায় করে না। আলেমগণ কুরআন-সুন্নাহ এবং ফিকহের কিতাবে উশরের মাসআলা পড়লেও জনসাধারণ তাঁদের মুখে এ ব্যাপারে কোনো কথা শুনতে পান না বলা যায়। উশরের মতো ইসলামের একটি মৌলিক বিধানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যেই এই সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধের অবতারণা। এ প্রবন্ধে আমরা প্রথমে উশরের গুরুত্ব ও ফযীলত নিয়ে কিছু আলোচনা করবো, তারপর উশরের প্রয়োজনীয় মাসায়েল বর্ণনা করবো ইনশাআল্লাহ।

উশরের গুরুত্ব ও ফযীলত

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيهِ إِلَّا أَنْ تُغْمِضُوا فِيهِ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ وَاللَّهُ يَعِدُكُمْ مَغْفِرَةً مِنْهُ وَفَضْلًا وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ. -البقرة: 267، 268

“হে মুমিনগণ! তোমরা যা কিছু উপার্জন করেছো এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা কিছু উৎপন্ন করেছি, তার উৎকৃষ্ট জিনিসসমূহ থেকে একটি অংশ (আল্লাহর পথে) ব্যয় করো। আর এরূপ মন্দ জিনিস (আল্লাহর নামে) দেয়ার নিয়ত করো না, যা (অন্য কেউ তোমাদেরকে দিলে ঘৃণার কারণে) তোমরা চক্ষু বন্ধ না করে তা গ্রহণ করবে না। মনে রেখো, আল্লাহ বেনিয়ায, সর্বপ্রকার প্রশংসা তাঁরই। শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্র্যের ভয় দেখায় এবং তোমাদেরকে অশ্লীলতার আদেশ করে, আর আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় মাগফিরাত ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আল্লাহ অতি প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।” -সূরা বাকারা ০২: ২৬৭-২৬৮

অনেক মুফাসসির বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন’ এর অর্থ হলো, তোমরা যে সম্পদ দান করবে, তার বিনিময় আল্লাহ তোমাদের দুনিয়াতেই ফিরিয়ে দিবেন।[8] -তাফসীরে তাবারী: ৫/৫৭১; তাফসীরে ইবনে আবী হাতেম: ২/৫৩১; তাফসীরে ইবনে কাসীর: ১/৬৯৯; তাফসীরে আবুস সাউদ: ১/২৬২; রুহুল মাআনী: ২/৪০; তাফসীরে রাযী: ৭/৫৭

যেমন আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন,

وَمَا أَنْفَقْتُمْ مِنْ شَيْءٍ فَهُوَ يُخْلِفُهُ. -سبأ: 39

“তোমরা যা কিছুই ব্যয় কর, তিনি তদস্থলে অন্য জিনিস দিয়ে দেন।” –সূরা সাবা ৩৪: ৩৯

হাদীসে এসেছে,

ما نقصت صدقة من مال. -صحيح مسلم (2588)

“সাদাকার দ্বারা সম্পদ কমে না।” -সহীহ মুসলিম: ২৫৮৮

হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম আবুল ওয়ালিদ বাযী (৪৭৪ হি.) রহিমাহুল্লাহ বলেন,

يريد – والله أعلم – أن الصدقة لا تنقص المال؛ لأن ما ينفق في الصدقة فالعوض عنه من الأجر وهو مع ذلك سبب لتنمية المال وحفظه. -المنتقى شرح الموطإ (7/ 324 ط. مطبعة السعادة ودار الكتاب الإسلامي)

“অর্থাৎ সাদাকার দ্বারা সম্পদ হ্রাস পায় না। কেননা এর বিনিময়ে সাওয়াব অর্জন হওয়ার পাশাপাশি তা সম্পদের প্রবৃদ্ধি ও সুরক্ষারও কারণ হয়।” -আল-মুনতাকা: ৭/৩২৪

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,

وَهُوَ الَّذِي أَنْشَأَ جَنَّاتٍ مَعْرُوشَاتٍ وَغَيْرَ مَعْرُوشَاتٍ وَالنَّخْلَ وَالزَّرْعَ مُخْتَلِفًا أُكُلُهُ وَالزَّيْتُونَ وَالرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ كُلُوا مِنْ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ[9] وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ. -الأنعام: 141

“আল্লাহ সেই সত্তা, যিনি উদ্যানসমূহ সৃষ্টি করেছেন, যার মধ্যে কতক (লতাযুক্ত, যা) মাচা আশ্রিত এবং কতক মাচা আশ্রিত নয় এবং (সৃষ্টি করেছেন) খেজুর গাছ, বিভিন্ন স্বাদের খাদ্যশস্য, যায়তুন ও আনার, যা পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ আবার সাদৃশ্যবিহীনও। যখন এসব গাছ ফল দেয়, তখন তার ফল থেকে খাবে এবং )ফল আহরণ ও) ফসল উত্তোলনের দিন আল্লাহর হক আদায় করবে, অপচয় করবে না, নিশ্চয় আল্লাহ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।” -সূরা আনআম ০৬: ১৪১

ইমাম কাসানী রহিমাহুল্লাহ (৫৮৭ হি.) বলেন,

قال عامة أهل التأويل: إن الحق المذكور هو العشر، أو نصف العشر …  إلا أن مقدار هذا الحق غير مبين في الآية، فكانت الآية مجملة في حق المقدار، ثم صارت مفسرة ببيان النبي صلى الله عليه وسلم بقوله «ما سقته السماء ففيه العشر وما سقي بغرب، أو دالية ففيه نصف العشر». -بدائع الصنائع (2/53)

“অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে আয়াতে উল্লেখিত হক দ্বারা উদ্দেশ্য উশর বা নিসফে উশর। …. তবে আয়াতে এই হকের পরিমাণ নির্ধারিত করা হয়নি। তাই আয়াতটি পরিমাণের ক্ষেত্রে ‘মুজমাল’ (অস্পষ্ট) ছিল। পরবর্তীতে নবীজীর নিম্নোক্ত বাণীতে এর স্পষ্ট বিবরণ এসেছে ‘যে ফল ও ফসল বৃষ্টির পানিতে সিঞ্চিত হয়, তাতে ‘উশর’ তথা এক-দশমাংশ এবং যা বড় বালতি বা চাকার[10] মাধ্যমে সেচ দেওয়া হয়, তাতে ‘নিসফে উশর’ তথা বিশ ভাগের এক ভাগ ওয়াজিব’।” -বাদায়েউস সানায়ে: ২/৫৩

আয়াতের তাফসীরে অনেক মুফাসসিরই উশরের প্রসঙ্গটি আলোচনা করেছেন। তবে তাওযীহুল কুরআনের বক্তব্যটি সহজ ও বিন্যস্ত বিধায় আমরা এখানে তা তুলে ধরছি। আল্লামা তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ বলেন,

“এর দ্বারা উশর বোঝানো হয়েছে, যা শস্যাদিতে ওয়াজিব হয়। মক্কী জীবনে এর নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ স্থির ছিল না; বরং ফসল কাটার দিন মালিকের উপর ফরয ছিল, সে যেন নিজ বিবেচনায় তা থেকে উপস্থিত গরীব-মিসকীনদের কিছু দিয়ে দেয়। মদীনায় হিজরতের পর এ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিধান আসে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তফসীল বর্ণনা করেন যে, যে ফসল বৃষ্টির পানিতে উৎপন্ন হয়, তার এক-দশমাংশ এবং যা সেচের পানিতে উৎপন্ন হয়, তার বিশের একাংশ গরীবদের হক।[11] আয়াতে বলা হয়েছে ফসল কাটার দিনই এ হক আদায় করা চাই।” -তাওযীহুল কুরআন (বাংলা অনুবাদ): ১/৪৫৯

আরও দেখুন: আহকামুল ‍কুরআন, তাহাবী: ১/৩৩১; আহকামুল কুরআন, জাসসাস: ৩/১২-১৩; তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৩/৩৪৯

আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের আদেশ অনুযায়ী সাহাবা-তাবেয়ীগণ উশর আদায় করতেন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের ফল-ফসলে অকল্পনীয় বরকত দান করেন। ইমাম আবু দাউদ রহিমাহুল্লাহ উশরের হাদীস বর্ণনা করার পর বলেন,

شبرت قثاءة بمصر ثلاثة عشر شبرا، ورأيت أترجة على بعير بقطعتين قطعت وصيرت على مثل عدلين. سنن أبي داود، ت الأرنؤوط: 3/47

“আমি মিসরে একটি কাকড়ি (শসা জাতীয় সবজি) মেপেছি, যা তেরো বিঘত (সাড়ে ছয় হাত) লম্বা ছিল এবং একটি লেবু দেখেছি, যা দুই টুকরা করে একটি উটের পিঠের ‍দুই দিকে দুটি বোঝা সদৃশ বোঝাই করা ছিল।” -সুনানে আবু দাউদ: ৩/৪৭

সুনানে আবু দাউদের ভাষ্যকার আল্লামা খলীল আহমদ সাহারানপুরী রহিমাহুল্লাহ (১৩৪৬ হি.) বলেন,

ولعل هذا إشارة إلى عظيم البركة في المال الذي يؤدى منه الزكاة، فيبارك فيه بركة كثيرة. -بذل المجهود: 6/412

“ইমাম আবু দাউদ সম্ভবত ইশারা করছেন সেই ব্যাপক বরকতের দিকে, যা সম্পদের যাকাত আদায় করার দ্বারা অর্জিত হয়। ফলে সম্পদে ব্যাপক প্রাচুর্য দান করা হয়।” -বাযলুল মাজহুদ: ৬/৪১২

ফসলের কিছু অংশ সাদাকা করার ফযীলত নিচের হাদীসে বর্ণিত পূর্ববর্তী উম্মতের একজন নেককার ব্যক্তির ঘটনা থেকেও বুঝে আসে। আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

بينا رجل بفلاة من الأرض، فسمع صوتا في سحابة: اسق حديقة فلان، فتنحى ذلك السحاب، فأفرغ ماءه في حرة، فإذا شرجة من تلك الشراج قد استوعبت ذلك الماء كله، فتتبع الماء، فإذا رجل قائم في حديقته يحول الماء بمسحاته، فقال له: يا عبد الله ما اسمك؟ قال: فلان – للاسم الذي سمع في السحابة – فقال له: يا عبد الله لم تسألني عن اسمي؟ فقال: إني سمعت صوتا في السحاب الذي هذا ماؤه يقول: اسق حديقة فلان، لاسمك، فما تصنع فيها؟ قال: أما إذ قلت هذا، فإني أنظر إلى ما يخرج منها، فأتصدق بثلثه، وآكل أنا وعيالي ثلثا، وأرد فيها ثلثه. -صحيح مسلم (2984)

“এক ব্যক্তি কোনো এক মরুপ্রান্তরে ছিল, এমতাবস্থায় একটি মেঘখণ্ড হতে আওয়াজ শুনতে পেল যে, অমুকের বাগানে পানি দাও। সঙ্গে সঙ্গে ওই মেঘখণ্ডটি একদিকে যেতে লাগল। অতঃপর এক পাথুরে ভূমিতে বৃষ্টি বর্ষণ করল। ওই স্থানের নালা সমূহের একটি নালা ওই পানি সম্পূর্ণরূপে ধারণ করে নিলো। তখন সে লোকটি পানির অনুসরণ করে চলল। যেতে যেতে সে এক ব্যক্তিকে তার বাগানে দাঁড়িয়ে কোদাল দিয়ে পানি ফেরাতে দেখতে পেল। সে তাকে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! তোমার নাম কী? সে বলল, আমার নাম অমুক। বাগানের মালিক সেই নামই বললো, যা সে মেঘখণ্ডের মাঝে শুনতে পেয়েছিল। অতঃপর বাগানের মালিক তাকে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার নাম জিজ্ঞেস করলে কেন? জবাবে সে বলল, যে মেঘ হতে এ পানি বর্ষিত হয়েছে, তার মাঝে আমি এ আওয়াজ শুনতে পেয়েছি, তোমার নাম নিয়ে বলছে যে, অমুকের বাগানে পানি দাও। তুমি এ বাগানের ক্ষেত্রে কী আমল কর? মালিক বলল, যেহেতু তুমি জিজ্ঞেস করছো (তাই বলছি), আমি এ বাগানের উৎপাদিত ফসলের এক-তৃতীয়াংশ সাদাকা করি, এক-তৃতীয়াংশ আমি ও আমার পরিবার-পরিজন মিলে খেয়ে থাকি এবং এক-তৃতীয়াংশ এতে ফিরিয়ে দেই (অর্থাৎ চাষাবাদ ও বাগানের পরিচর্যার কাজে ব্যয় করি)।” –সহীহ মুসলিম: ২৯৭৪

পক্ষান্তরে ফসল থেকে গরীব-মিসকীনদের হক আদায় না করলে, দুনিয়া-আখিরাতে কত কঠিন শাস্তি হতে পারে, তাও আল্লাহ তাআলা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে,

إِنَّا بَلَوْنَاهُمْ كَمَا بَلَوْنَا أَصْحَابَ الْجَنَّةِ إِذْ أَقْسَمُوا لَيَصْرِمُنَّهَا مُصْبِحِينَ (17) وَلَا يَسْتَثْنُونَ (18) فَطَافَ عَلَيْهَا طَائِفٌ مِنْ رَبِّكَ وَهُمْ نَائِمُونَ (19) فَأَصْبَحَتْ كَالصَّرِيمِ (20) فَتَنَادَوْا مُصْبِحِينَ (21) أَنِ اغْدُوا عَلَى حَرْثِكُمْ إِنْ كُنْتُمْ صَارِمِينَ (22) فَانْطَلَقُوا وَهُمْ يَتَخَافَتُونَ (23) أَنْ لَا يَدْخُلَنَّهَا الْيَوْمَ عَلَيْكُمْ مِسْكِينٌ (24) وَغَدَوْا عَلَى حَرْدٍ قَادِرِينَ (25) فَلَمَّا رَأَوْهَا قَالُوا إِنَّا لَضَالُّونَ (26) بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ (27) قَالَ أَوْسَطُهُمْ أَلَمْ أَقُلْ لَكُمْ لَوْلَا تُسَبِّحُونَ (28) قَالُوا سُبْحَانَ رَبِّنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ (29) فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ يَتَلَاوَمُونَ (30) قَالُوا يَاوَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا طَاغِينَ (31) عَسَى رَبُّنَا أَنْ يُبْدِلَنَا خَيْرًا مِنْهَا إِنَّا إِلَى رَبِّنَا رَاغِبُونَ (32) كَذَلِكَ الْعَذَابُ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ (33). -القلم: 17 – 33

“আমি তাদেরকে (অর্থাৎ মক্কাবাসীকে) পরীক্ষায় ফেলেছি, যেমন পরীক্ষায় ফেলেছিলাম (এক) বাগানওয়ালাদেরকে, যখন তারা শপথ করে বলেছিল, ভোর হওয়া মাত্র তারা বাগানের ফসল কাটবে। (একথা বলার সময়) তারা ইনশাআল্লাহ বলছিল না। অতঃপর ঘটল এই যে, তারা যখন নিদ্রিত ছিল, তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সেই বাগানে হানা দিল এক উপদ্রব, ফলে বাগানটি ভোরবেলা হয়ে গেল কাটা ক্ষেতের মতো। ভোর হতেই তারা একে অন্যকে ডাকল, তোমরা ফসল কাটতে চাইলে ভোর বেলায়ই ক্ষেতে চল। অতঃপর তারা চুপিসারে একে অন্যকে এই বলতে বলতে রওয়ানা হলো যে, আজ যেন কোনো মিসকীন এ বাগানে ঢুকতে না পারে এবং তারা দ্রুতবেগে বের হয়ে পড়লো শক্তিমত্তার সাথে। অতঃপর যখন বাগানটি দেখলো, বলে উঠলো, আমরা নিশ্চয়ই রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি। (কিছুক্ষণ পর বললো) না বরং সব লুট হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে যে সবচেয়ে ভালো ছিল, সে বললো, আমি কি (তখন) তোমাদেরকে বলিনি যে, তোমরা তাসবীহ পড়ছো না কেন? তখন তারা বললো, আমরা আমাদের প্রতিপালকের তাসবীহ (তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা) করছি। নিশ্চয়ই আমরা জালিম ছিলাম। অতঃপর তারা একে অন্যের দিকে মুখ করে পরস্পরকে দোষারোপ করতে লাগলো। তারপর সকলে (একযোগে) বললো, হায় আফসোস! নিশ্চয়ই আমরা অবাধ্য হয়ে গিয়েছিলাম। অসম্ভব কিছু নয়, আমাদের প্রতিপালক এ বাগানের পরিবর্তে আমাদেরকে আরও উৎকৃষ্ট কিছু দান করবেন। আমরা অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হচ্ছি। শাস্তি এমনই হয়ে থাকে। আর নিশ্চয়ই আখিরাতের শাস্তি আরও গুরুতর; যদি তারা জানতো।” -সূরা কালাম ৬৮: ১৭-৩৩

‘শাস্তি এমনই হয়ে থাকে, আর নিশ্চয়ই আখিরাতের শাস্তি আরও গুরুতর’ এই আয়াতাংশের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসীর রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“অর্থাৎ যারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করে, আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতে কৃপণতা করে, ফকির-মিসকীনদের হক আদায় না করে এবং আল্লাহ তাআলার নেয়ামতের নাশুকরী করে, তাদের শাস্তি এরূপই হয়ে থাকে। এটা তো দুনিয়ার শাস্তি যা তোমরা শুনলে, আখিরাতের শাস্তি আরো কঠিন।”[12] -তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৮/১৯৭

হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রহিমাহুল্লাহ (১৩৬২ হি.) বলেন,

عشر فرض ہےمثل زكوة كے قرآن سے اور حديث اور اجماع سے اور قياس سے اس ے سمجھ لينا چاہئے كہ اس ميں كوتاہى يا غفلت كرنا كيسى چيز ہے – (امداد الفتاوى: 4/89)

“যাকাতের মতো উশরও কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াস দ্বারা প্রমাণিত ফরয। এ থেকে বুঝে নেয়া উচিত, উশর আদায়ে ক্রটি বা গাফলতি করা কতটা মারাত্মক বিষয়।” -ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৪/৮৯

***

উশর: জরুরি মাসায়েল

     উশরী ও খারাজী জমির পরিচয়

মাসআলা:-১  জমি দুই ধরনের: উশরী ও খারাজী

ক. উশরী জমি: মুসলিমের জমির ক্ষেত্রে আসল হলো উশরী হওয়া। যে এলাকার লোকজন স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছে (এবং তাদের এলাকা ইসলামী হুকুমতের অধীনে চলে এসেছে), সে এলাকার জমি উশরী জমি বলে গণ্য হবে। এমনিভাবে যেসব এলাকা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিজয় করা হয়েছে, আর তার জমি মুসলিমদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়েছে, তাও উশরী জমি বলে গণ্য হবে।[13]

খ. খারাজী জমি: যিম্মী কাফেরদের জমির ক্ষেত্রে আসল হলো খারাজী হওয়া। যেসব এলাকা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিজয় হয়েছে, কিন্তু এলাকার জমি মুসলিমদের মধ্যে বণ্টন করা হয়নি, বরং জমি স্থানীয় কাফেরদের মালিকানায় রাখা হয়েছে কিংবা অন্য কোনো কাফের গোত্রের মাঝে বণ্টন করে দেয়া হয়েছে, তা খারাজী জমি বলে গণ্য হবে। এমনিভাবে যেসব এলাকা সন্ধির মাধ্যমে বিজয় হয়েছে এবং সন্ধিচুক্তিতে জমি যিম্মি কাফেরদের মালিকানায় বহাল রাখার শর্ত করা হয়েছে, সেসব এলাকার জমিও খারাজী জমি বলে গণ্য হবে।[14]

ইমাম আবু ইউসুফ রহিমাহুল্লাহ (১৮২ হি.) বলেন,

كل أرض أسلم أهلها عليها، وهي من أرض العرب أو أرض العجم فهي لهم وهي أرض عشر … وأيما دار من دور الأعاجم قد ظهر عليها الإمام وتركها في أيدي أهلها؛ فهي أرض خراج، وإن قسمها بين الذين غنموها فهي أرض عشر. ألا ترى أن عمر بن الخطاب رضي الله عنه ظهر على أرض الأعاجم وتركها في أيديهم فهي أرض خراج. وكل أرض من أراضي الأعاجم صالح عليها أهلها وصاروا ذمة فهي أرض خراج. -الخراج، ص: 82

“যে আরবী বা অনারবী ভূমির অধিবাসীগণ (স্বেচ্ছায়) ইসলাম গ্রহণ করেছে, তা তাদেরই মালিকানাধীন থাকবে এবং তা উশরী জমি হবে। ইমামুল মুসলিমীন যে অনারবী ভূমি বিজয় করে তার অধিবাসীদের হাতে (অর্থাৎ যিম্মি কাফেরদের হাতে) রেখে দেন তা খারাজী হবে, আর যদি তা বিজয়ীদের মাঝে (অর্থাৎ মুসলিমদের মাঝে) বণ্টন করে দেন তাহলে উশরী হবে। উমর বিন খাত্তাব রাযিয়াল্লাহু আনহু অনারবী ভূমি বিজয় করে অধিবাসীদেরই হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাই তা ছিল খারাজী জমি। যে সকল অনারবী ভূমির অধিবাসীরা জমি তাদের মালিকানায় থাকায় শর্তে সন্ধি করে (ইসলামী হুকুমতের অধীনে) যিম্মী হবে তা খারাজী জমি হবে।” -আল-খারাজ, পৃ: ৮২

উশরী জমিতে অবস্থাভেদে উশর (দশ ভাগের একভাগ) কিংবা নিসফে উশর (বিশ ভাগের একভাগ) ওয়াজিব হবে, যার বিস্তারিত বিবরণ সামনে আসছে। আর খারাজী জমিতে খারাজ ওয়াজিব হবে।

খারাজ দুই প্রকার: খারাজে মুকাসামা ও খারাজে ওজীফা

এক. খারাজে মুকাসামা: এক্ষেত্রে ইসলামী হুকুমত উৎপাদিত ফসলের কিছু অংশ (যেমন এক-চতুর্থাংশ বা এক-পঞ্চমাংশ) খারাজরূপে নির্ধারণ করে দেয়। এর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ থাকে না, বরং ইসলামী হুকুমত জমির চাষাবাদ খরচ ও উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ ইত্যাদি বিবেচনা করে কৃষকদের জন্য যতটুকু সহনীয় মনে করে ততটুকু নির্ধারিত করে দিবে। তবে তা ফসলের অর্ধেক থেকে বেশি হতে পারবে না।[15]

ইমাম কাসানী রহিমাহুল্লাহ (৫৮৭ হি.) বলেন,

وأما خراج المقاسمة فهو أن يفتح الإمام بلدة فيمن على أهلها ويجعل على أراضيهم خراج مقاسمة، وهو أن يؤخذ منهم نصف الخارج أو ثلثه أو ربعه. -بدائع الصنائع: 2/63

“খারাজে মুকাসামা হলো, ইমামুল মুসলিমীন কোনো ভূখণ্ড বিজয়ের পর অনুগ্রহবশত জমি অধিবাসীদের মালিকানায় বহাল রাখেন এবং জমিতে খারাজে মুকাসামা নির্ধারণ করে দেন। খারাজে মুকাসামার পরিমাণ হলো, ফসলের অর্ধেক কিংবা এক-তৃতীয়াংশ অথবা এক-চতুর্শাংশ গ্রহণ করা।” -বাদায়িউস সানায়ি: ২/৬৩

দুই. খারাজে ওজীফা: এক্ষেত্রে ইসলামী হুকুমত কোনো ভূখণ্ড বিজয় করার পর সেখানকার জমির উপর (ফসলের উপর নয়) সুনির্দিষ্ট পরিমাণ খারাজ নির্ধারিত করে দেন। উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু ইরাক বিজয়ের পর যিম্মি কাফেরদের প্রতি জারীব (১৩৬৬ বর্গমিটার[16] বা একবিঘার কাছাকাছি)[17] ভূমিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ খারাজ নির্ধারিত করে দিয়েছিলেন।[18]

ইমাম সারাখসী রহিমাহুল্লাহ (৪৮৩ হি.) বলেন,

وأما خراج الأرض فالأصل فيه حديث عمر – رضي الله عنه – فإنه وضع على كل أرض تصلح للزرع على الجريب درهما وقفيزا وعلى جريب الكرم عشرة دراهم وعلى جريب الرطبة خمسة دراهم واعتمد في ما صنع السنة أيضا فإن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «منعت العراق قفيزها ودرهمها» فيما ذكر من أشراط الساعة. –المبسوط للسرخسي (10/ 79)

“জমির খারাজের ক্ষেত্রে দলীল হলো উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু এর ঘটনা। তিনি চাষোপযোগী প্রতি জারীব ভূমিতে এক দিরহাম এবং (উৎপাদিত ফসল হতে)[19] এক কাফীয (এক সা[20] অর্থাৎ ৩ কেজি ২৭০ গ্রামের কিছু বেশি)[21] নির্ধারিত করে দিয়েছিলেন। আঙ্গুরের এক জারীব ভূমিতে দশ দিরহাম এবং তরি-তরকারির[22] ভূমিতে পাঁচ দিরহাম নির্ধারিত করেছিলেন। এক্ষেত্রে উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কিয়ামতের আলামতস্বরূপ বর্ণিত হাদীস ‘ইরাকবাসী (তাদের ভূমির খারাজস্বরূপ নির্ধারিত) কাফীয ও দিরহাম প্রদান বন্ধ করে দিবে’[23] [সহীহ মুসলিম: ২৮৯৬] -এর উপরই নির্ভর করেছিলেন।” -মাবসুতে সারাখসী: ১০/৭৯

কোনো কাফের উশরী জমি ক্রয় করলে তা খারাজী হয়ে যায়

মাসআলা:-২ কোনো কাফের যদি মুসলিম থেকে উশরী জমি ক্রয় করে, তাহলে তা খারাজী হয়ে যাবে।[24] পক্ষান্তরে কোনো মুসলিম যদি কোনো কাফের থেকে খারাজী জমি কিনে, তবে তা খারাজীই থাকবে। সাহাবায়ে কেরাম আহলে যিম্মা থেকে খারাজী জমি কিনতেন এবং নির্ধারিত খারাজ আদায় করতেন; উশর নয়।[25]

ইমাম কাসানী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

إن الذمي لو اشترى أرض عشر من مسلم فعليه الخراج عنده، …… ولو اشترى مسلم من ذمي أرضا خراجية فعليه الخراج، ولا تنقلب عشرية. -بدائع الصنائع (2/54-55)

“কোনো যিম্মী কোনো মুসলিম থেকে উশরী জমি কিনলে ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ এর মতে তাতে খারাজ ওয়াজিব হবে। পক্ষান্তরে কোনো মুসলিম কোনো যিম্মী থেকে খারাজী জমি কিনলে তার উপর খারাজই ধার্য থাকবে, তা উশরী জমিতে পরিণত হবে না।” -বাদায়িউস সানায়ি: ২/৫৪-৫৫

 

 

খারাজী জমির মালিক ইসলাম গ্রহণ করলে জমি খারাজীই থাকে

মাসআলা:-৩ খারাজী জমির মালিক যিম্মী কাফের ইসলাম গ্রহণ করলেও জমি যথারীতি খারাজীই থেকে যাবে; উশরী হবে না।[26]

ইবনে আবী শাইবা রহিমাহুল্লাহ (২৩৫ হি.) বর্ণনা করেন,

عن أبي عون محمد بن عبيد الله الثقفي، عن عمر، وعلي، قالا: «إذا أسلم وله أرض وضعنا عنه الجزية وأخذنا خراجها». -مصنف ابن أبي شيبة: 33613 وقال العلامة العثماني في إعلاء السنن (12/431) : هذا مرسل صحيح. وأخرج ابن أبي شيبة (21950) أيضا عن طارق بن شهاب؛ أن دهقانة من أهل نهر الملك أسلمت، فقال عمر: ادفعوا إليها أرضها تؤدي عنها الخراج. وقال الشيخ عوامة في تعليقه على المصنف : نهر الملك: كورة واسعة في بغداد بعد نهر عيسى، وقال العلامة العثماني في إعلاء السنن (12/430) : هذا سند صحيح. اهـ

“উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু ও আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, কোনো যিম্মী ইসলাম গ্রহণ করলে যদি তার জমি থাকে, আমরা তার থেকে জিযিয়া মওকুফ করে দিব এবং জমির খারাজ গ্রহণ করব।” -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ: ৩৩৬১৩

 

বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের জমি উশরী? না, খারাজী?

মাসআলা:-৪ বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের যে সকল জমি যুগ যুগ ধরে মুসলিমদের মালিকানায় চলে আসছে এবং মাঝে তা কাফেরের মালিকানায় থাকার কোনো প্রমাণ নেই, তা উশরী জমি বলেই বিবেচিত হবে এবং তাতে উশরই ওয়াজিব হবে।

হাকিমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহিমাহুল্লাহর ফাতাওয়া সংকলন ‘ইমদাদুল ফাতাওয়া’য় এসেছে,

عشری زمین کی تحقیق

سوال(۸۶۳) : قدیم ۲/۵۹ – عشری زمین کے متعلق جو کچھ حضور کی تحقیق ہو مفصل تحر یر فرمائی جاوے؟

الجواب: حاصل مقام کا یہ ہے کہ جو زمینیں اس وقت مسلمانوں کی ملک میں ہیں اور اُن کے پاس مسلمانوں ہی سے پہونچی ہیں ۔ ارثاً اوشراءً وهلم جراً وہ زمینیں عشری ہیں اور جو در میان میں کوئی کافر مالک ہوگیا تھا وہ عشر ی نہ رہی  اور جس کا حال کچھ معلوم نہ ہو اور اس وقت مسلمانوں کے پاس ہے یہی سمجھاجاوے گا کہ مسلمانوں ہی سے حاصل ہوئی ہے بدلیل الاستصحاب پس وہ بھی عشری ہوگی وقدرالعشر معروف فقط (إمداد الفتاوى: 4/63-64)

“প্রশ্ন: উশরী জমি সম্পর্কে হযরতের তাহকীক বিস্তারিত লিখে দেয়ার অনুরোধ করছি!

উত্তর: এ মাসআলার সারমর্ম হলো, বর্তমানে যেসব জমি মুসলমানদের মালিকানায় আছে এবং উক্ত জমি তাদের কাছে উত্তরাধিকার, ক্রয় বা অন্য কোনো সূত্রে কোনো মুসলিম থেকেই এসেছে, সেগুলো উশরী জমি। পক্ষান্তরে কোনো কাফের মাঝে যে জমির মালিক হয়েছিল তা খারাজী হবে। যে জমির পূর্বের অবস্থা জানা নেই, কিন্তু বর্তমানে মুসলমানের মালিকানায় আছে ‘ইসতেসহাবে হাল’ (অর্থাৎ বর্তমান অবস্থা থেকে পূর্বের অবস্থা নির্ণয় করার)[27] ভিত্তিতে ধরা হবে যে, তা মুসলমানদের থেকেই এসেছে। তাই এমন জমিও উশরী হবে। আর উশরের পরিমাণ সুবিদিত।” -ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৪/৬৩-৬৪

আল্লামা জালালুদ্দীন থানেশ্বরী (৯৬০ হি.)[28] রহিমাহুল্লাহ, আকাবিরে দেওবন্দের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব শায়েখ রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী (১৩২৩ হি.) রহিমাহুল্লাহ, মুফতী শফী রহিমাহুল্লাহ (১৩৯৬ হি.) ও মুফতী রশীদ আহমদ লুধিয়ানভী রহিমাহুল্লাহ -এর মতও এটাই। দেখুন, মাআরিফুস সুনান: ৫/২১৯;[29] জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৩/৩৪৯-৩৫৩;[30] আহসানুল ফাতাওয়া: ৪/৩৮০[31]

ভারতের আলেমগণের ফিকহি বোর্ড ইসলামী ফিকহ একাডেমি (IFA) এর ‘উশর-খারাজ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় নিম্মোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়েছে,

أولا: خطأ القول بعدم وجوب العشر والخراج في أراضي المسلمين الزراعية في الهند.

ثانيا: أراضي الهند تكون عشرية في الصور التالية بإجماع المشاركين:

(أ) الأراضي التي أقطعتها الحكومة المسلمة المسلمينَ، وهي ما يتوارثها المسلمون.

(ب) الأراضي التي أسلم أهلها طوعا قبل قيام الحكومة المسلمة، ومنذ ذلك الوقت لا يزال توجد هذه الأراضي عند المسلمين.

(ج) الأراضي التي توجد عند المسلمين منذ زمن طويل، ولا يثبت كونها خراجية تاريخا….. (قرارات الندوة الفقهية السادسة المنعقدة في ولاية تامل نادو في الفترة: 17-20 رجب، 1414 هـ، بعنوان: نظام العشر والخراج في الإسلام وحكم أراضي الهند وباكستان).

“এক. হিন্দুস্থানের ফসলী জমিতে উশর-খারাজ কোনোটাই ওয়াজিব না হওয়ার মতটা ভুল।

দুই. সেমিনারে অংশগ্রহণকারী আলেমদের সর্বসম্মতিক্রমে হিন্দুস্থানের জমি নিম্নোক্ত সুরতগুলোতে উশরী বলে গণ্য হবে:

(ক) যেসব জমি ইসলামী হুকুমত মুসলমানদের প্রদান করেছিল। তারপর থেকে ধারাবাহিক সূত্রে সেগুলো মুসলমানদের হাতেই রয়েছে।

(খ)  ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার পূর্বেই যেসব জমির মালিক স্বেচ্ছায় মুসলিম হয়ে গিয়েছিল এবং তখন থেকে শুরু করে (বর্তমানেও) তা মুসলমানদের কাছেই রয়েছে।

(গ) যেসব জমি দীর্ঘদিন যাবৎ মুসলমানদের মালিকানায় রয়েছে এবং ঐতিহাসিকভাবে সেগুলো খারাজী হওয়া প্রমাণিত নয়।” -১৪১৪ হিজরীতে তামিলনাড়ুতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ফিকহী সেমিনারের সিদ্ধান্তবলী

সে হিসেবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অধিকাংশ জমিই উশরী।[32] তাই আমরা এ প্রবন্ধে আপাতত শুধু উশরের মাসায়েল আলোচনা করবো। সহজ ও সংক্ষিপ্ত করার উদ্দেশ্যে খারাজের মাসায়েল আলোচনা করবো না।

জমির খাজনা দেয়ার দ্বারা উশর আদায় হয় না

মাসআলা:-৫ বর্তমান সরকার জমির যে খাজনা নিয়ে থাকে, তা দ্বারা উশর আদায় হবে না। কেননা তারা সেগুলো না উশর হিসেবে আদায় করে, আর না উশরের মাসরাফে ব্যয় করে।  তাই মুসলিমদেরকে; যাকাতের মতোই নিজ নিজ জমির উশর, নিজ দায়িত্বে উশরের মাসরাফে দান করতে হবে।

থানভী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

عشر وخراج حقوق شرعیہ میں سے ہے، پس جس طرح انکم ٹیکس سے زکوۃ ساقط نہیں ہوتی ، اسی طرح سرکاری محصول سے یہ حقوق بھی ساقط نہ ہوں گے. -امداد الفتاوى، جديد: 4/98

“উশর-খারাজ শরয়ী হক, সুতরাং ইনকাম ট্যাক্স দ্বারা যেমনিভাবে যাকাত আদায় হয় না তেমনি সরকারি খাজনা দ্বারাও উশর-খারাজ আদায় হবে না।” -ইমদাদুল ফতোয়া: ৪/৯৮

মুফতি শফী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

جب اوپر معلوم  ہو گيا كہ عشرِ زمين زكوة كى طرح ايك مالى عبادت ہے ، اور اس كا مصرف بھى وہى ہے، جو زكوة كا مصرف ہے، تو اس سے يہ بھى معلوم ہو گيا كہ كوئى حكومت، خواه وه مسلم  ہو يا غير مسلم ،اگر زمينداروں يا كاشتكاروں سے كوئى سركارى ٹیکس وصول كرتى ہے، تو اس ٹیکس كى ادائيگى سے عشر ادا نہىں ہوگا، بلكہ مسلم مالكان كے ذمہ واجب ہوگا كہ وه بطور خود عشر نكاليں، اور اس كے مصرف پر خرچ كريں.  -جواھر الفقہ:  3/370

“উপরের আলোচনা থেকে যখন জানা গেল, জমির উশর যাকাতের মতোই একটি আর্থিক ইবাদত এবং উশরের মাসরাফও অবিকল যাকাতের মাসরাফ, সুতরাং তা থেকে এটাও বুঝা গেল যে, কোনো মুসলিম কিংবা অমুসলিম সরকার জমিদার ও কৃষক থেকে যে খাজনা অথবা টেক্স উসুল করে, তা দ্বারা উশর আদায় হবে না। বরং মুসলিম মালিকদের ওয়াজিব দায়িত্ব হচ্ছে, তারা নিজ থেকে উশরের মাসরাফে উশর আদায় করবে।” –জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৩/৩৭০

আরও দেখুন, ফতোয়া উসমানি: ২/১২৭

একটি সংশয় নিরসন: ফিকহে হানাফীর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব ‘ফাতাওয়া শামী’তে বলা হয়েছে,

فإن أرضها ليست أرض خراج أو عشر[33]

‘দারুল হারবের ভূমি খারাজীও নয়, উশরীও নয়।’ -ফাতাওয়া শামী: ২/৩১৮

এ থেকে কেউ কেউ বুঝেছেন, যেসব মুসলিম রাষ্ট্র বর্তমানে কুফরী শাসনের অধীনে থাকার কারণে দারুল হারবে পরিণত হয়েছে, সেগুলোতেও উশর-খারাজ কোনোটাই ফরয হবে না। অথচ যে সকল আয়াত ও হাদীসে উশরের আদেশ দেয়া হয়েছে, তাতে ইসলামী হুকুমত থাকার শর্ত করা হয়নি। বরং প্রবন্ধে উল্লেখিত উশর সংক্রান্ত প্রথম আয়াতটি তো নাযিলই হয়েছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় থাকাকালীন,[34] যখন মক্কা নিঃসন্দেহে দারুল হারব; যদিও তখন উশরের পরিমাণ নির্ধারিত ছিল না। ফল আহরণ ও ফসল কাটার দিন সাহাবায়ে কেরাম পূর্ববর্তী উম্মতের নেককার ব্যক্তিদের ন্যায় এবং আরবের স্বাভাবিক প্রথা অনুযায়ী উপস্থিত গরীব-মিসকীনদের কিছু অংশ দিয়ে দিতেন।[35] পরবর্তীতে নবীজী মদীনায় হিজরত করলে উশরের পরিমাণ হাদীসে নির্ধারিত করে দেয়া হয়।[36]

তাছাড়া ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, উশর ফরয হওয়ার দলীল হলো কুরআন-সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস এবং তা ফরয হওয়ার সবব তথা কারণ হলো, ‘আরদে নামী’ তথা উৎপাদনশীল জমি এবং শর্ত হলো, ফসলের মালিক হওয়া।[37] তাই যে জমিতে ফসল উৎপাদিত হয় তা উশর-খারাজ উভয়টি থেকেই মুক্ত হতে পারে না।[38]

আর নিঃসন্দেহে দারুল হারবের জমিতেও উশর ফরয হওয়ার উল্লেখিত দলীল, সবব ও শর্ত পাওয়া যায়। তাই শক্তিশালী দলীল-প্রমাণ ব্যতীত দারুল হারবে উশর-খারাজ কোনোটাই ওয়াজিব হবে না বলার সুযোগ নেই।

বস্তুত ফাতাওয়া শামীর পূর্বোক্ত বক্তব্যে দারুল হারবের জমি দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আসলী দারুল হারব যা কখনো মুসলিমদের অধীনে আসেনি এবং মুসলমানরা সেখানে কখনো নিয়মতান্ত্রিক বসবাস ও জমি লাভ করেনি। স্বভাবতই এমন দারুল হারবের জমি মুসলমানদের মালিকানাধীন হবে না, বরং কাফেরদের মালিকানায় হবে, তাই তাতে উশর-খারাজ কোনোটাই ওয়াজিব হবে না। পক্ষান্তরে যে সব রাষ্ট্র কখনো ইসলামী হুকুমতের অধীনে ছিল, বর্তমানে তা কুফরী শাসনের অধীনে থাকলেও মুসলিমদের মালিকানাধীন ভূমিগুলোতে উশর বা খারাজ ওয়াজিব হবে।[39] ইমাম সারাখসী রহিমাহুল্লাহ (৪৮৩ হি.) এর রচিত ‘শারহুস সিয়ারিল কাবীরের’ বক্তব্য দেখলে বিষয়টি একেবারেই স্পষ্ট হয়ে যায়, তাই আমরা অনুবাদসহ পুরো বক্তব্যটি উল্লেখ করছি-

ولو أن عسكرا من المسلمين لهم منعة وعزة دخلوا أرض الحرب فأقاموا فيها حينا حتى زرع منهم ناس زروعا فأدركت زروعهم، فحصدوها وأخرجوها إلى دار الإسلام، فإن كان البذر الذي بذروه من بذر لهم أدخلوه من أرض الإسلام، فذلك الزرع كله لهم. لأن العشر والخراج إنما يجب في أراضي المسلمين، وهذه أراضي أهل الحرب، وأراضي أهل الحرب ليست بعشرية ولا خراجية.

وإن كان البذر الذي بذر في الأرض من حنطة، أصلها من أرض العدو، فأقام على ذلك وحصده وداسه، وأخرجه إلى دار الإسلام، فإنه يؤخذ منه مقدار البذر الذي كان من طعامه هذا، فيجعل في الغنيمة، والباقي يكون له ولا يكون الكل غنيمة، وإن خرج من بذر الغنيمة. -شرح السير الكبير: 5/306-307 ط. دار الكتب العلمية، الطبعة الأولى: 1417 هـ 1997 مـــ. و ص: 2166-2167 ط. الشركية الشرقية: 1971 مـــ

“যদি শক্তিধর কোনো মুসলিম বাহিনী দারুল হারবে প্রবেশ করে বেশ কিছুদিন অবস্থান করে, ফলে বাহিনীর কিছু সদস্য চাষাবাদ করে এবং ফসল পাকার পর তা কর্তন করে দারুল ইসলামে নিয়ে আসে, তাহলে যদি তারা নিজেদের বীজ দিয়ে চাষ করে থাকে যা তারা দারুল ইসলাম থেকে নিয়ে গিয়েছিল, তবে পুরো ফসল তাদেরই হবে। (এ থেকে উশর-খারাজ নেয়া হবে না) কেননা উশর-খরাজ ওয়াজিব হয় মুসলিমদের ভূমিতে। আর এগুলো তো হারবীদের ভূমি। হারবীদের ভূমি উশরীও, না খারাজীও না।

আর যদি তারা শত্রুর ভূমিতে উৎপন্ন গম বীজরূপে ব্যবহার করে ফসল ফলায় এবং তা কেটে ও মাড়িয়ে দারুল ইসলামে নিয়ে আসে, তাহলে তাদের থেকে বীজের পরিমাণ গম নিয়ে তা গনীমতের অন্তর্ভুক্ত করা হবে, অবশিষ্ট গমের মালিক তারাই হবে, পুরো গম গনীমত হবে না, যদিও গনীমতের বীজ থেকেই তা উৎপন্ন হয়েছে।” -শারহুস সিয়ারিল কাবীর: ৫/৩০৬-৩০৭

আরও দেখুন ইলাউস সুনান: ১২/৪৪৯-৪৫০[40], আহসানুল ফাতাওয়া: ৪/৩৮১[41]

এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করার পর ইসলামী ফিকহ একাডেমির (IFA) নায়েবে সদর মাওলানা বুরহানুদ্দীন সাম্ভলী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

زمين كى پيداوار ميں حقوق واجب ہونے پر قرآن وسنت كى آيات وصحيح روايات ونصوص كے تقاضہ كو محض كسى فقہى نص، بالخصوص جبكہ وہ محتمل المعانى اور محل اختلاف بهى ہو، كى بيناد پر نظر انداز كر دينا بڑى ہى عجيب بات ہوگى- (جديد فقہى مباحث:  4/40)

“জমি থেকে উৎপাদিত ফল-ফসলে আল্লাহ তাআলার হক ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহ এর আয়াত ও সহীহ বর্ণনাকে শুধু ফিকহের কিতাবের কোনো বক্তব্যের ভিত্তিতে বাদ দিয়ে দেয়া বড়ই আশ্চর্যের কথা; বিশেষত সেই ফিকহী নস যদি হয় একাধিক অর্থের সম্ভাবনাময় ও মতভেদপূর্ণ।” -জাদীদ ফিকহি মাবাহিস: ৪/৪০ (দারুল ইশাআত করাচি)

উশরের জন্য কোনো নেসাব নেই

মাসআলা:-৬ উশর ওয়াজিব হওয়ার জন্য কোনো নেসাব নেই। তাই উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ কম বেশি যাই হোক; তার উশর আদায় করতে হবে।[42]

আব্দুর রাযযাক রহিমাহুল্লাহ (২১১ হি.) সিমাক রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন,

كتب عمر بن عبد العزيز: «أن يؤخذ مما أنبتت الأرض من قليل، أو كثير العشر». -مصنف عبد الرزاق  (7196)

“উমর বিন আব্দুল আযীয রহিমাহুল্লাহ (গভর্নরদের কাছে প্রেরিত চিঠিতে) লিখেন, জমিতে উৎপন্ন ফসল কম হোক বেশি হোক তা থেকে যেন উশর নেয়া হয়।” -মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ৭১৯৬[43]

ইমাম আবু ইউসুফ রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وإذا كانت الأرض من أرض العشر، فإن أبا حنيفة رضي الله عنه كان يقول: في كل قليل وكثير أخرجت من الحنطة والشعير والزبيب والتمر والذرة وغير ذلك من أصناف الغلة، العشر ونصف العشر. والقليل والكثير في ذلك سواء وإن كانت حزمة من بقل. وكذلك حدثنا أبو حنيفة عن حماد عن إبراهيم. -اختلاف أبي حنيفة وابن أبي ليلى ص: 124

“আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ এর মতে উশরী জমিনে উৎপাদিত গম, যব, কিশমিশ, খেজুর, ভু্ট্টা ইত্যাদি ফল ও ফসলে উশর বা নিসফে উশর ফরয হবে। ফল ও ফসলের পরিমাণ কমবেশি যাই হোক, যদিও তা এক আঁটি হয়। আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ হাম্মাদ বিন আবি সুলাইমানের সূত্রে (প্রখ্যাত তাবেয়ী) ইবরাহীম নাখায়ী রহিমাহুল্লাহ এর মাযহাব এমনটাই বর্ণনা করেছেন।” -ইখতিলাফু আবি হানিফা ওয়া ইবনি আবি লাইলা, পৃ: ১২৪

সব ধরনের ফল ও ফসলের উপরই ‍উশর আসে

মাসআলা:-৭ সব ধরনের ফল ও ফসলের উপর ‍উশর ওয়াজিব হয়। ধান-গমের মতো স্থায়িত্বশীল শস্যে যেমন ওয়াজিব হয়, শাক-সবজি ও তরি-তরকারির মতো পচনশীল জিনিসেও ওয়াজিব হয়।[44]

ফাতাওয়া হিন্দিয়াতে বলা হয়েছে,

وَيَجِبُ الْعُشْرُ عِنْدَ أَبِي حَنِيفَةَ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى – فِي كُلِّ مَا تُخْرِجُهُ الْأَرْضُ مِنْ الْحِنْطَةِ وَالشَّعِيرِ وَالدُّخْنِ وَالْأَرْزِ، وَأَصْنَافِ الْحُبُوبِ وَالْبُقُولِ وَالرَّيَاحِينِ وَالْأَوْرَادِ وَالرِّطَابِ وَقَصَبِ السُّكَّرِ وَالذَّرِيرَةِ وَالْبِطِّيخِ وَالْقِثَّاءِ وَالْخِيَارِ وَالْبَاذِنْجَانِ وَالْعُصْفُرِ، وَأَشْبَاهِ ذَلِكَ مِمَّا لَهُ ثَمَرَةٌ بَاقِيَةٌ أَوْ غَيْرُ بَاقِيَةٍ قَلَّ أَوْ كَثُرَ هَكَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ. -الفتاوى الهندية (1/ 186)

“আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ এর মতে জমিতে উৎপাদিত সব রকমের ফল-ফসলেই উশর ওয়াজিব। গম, ভুট্টা, বাজরা, ধান, সর্ব প্রকার শস্য তরকারি ও ফুল, গোলাপ, আখ, তরমুজ, কাকড়ি, শসা, বেগুন, কুসুম এবং এধরনের আরও যা আছে সব কিছুতেই উশর ওয়াজিব; চাই তা বেশি হোক বা কম হোক, স্থায়িত্বশীল হোক না হোক। ফাতাওয়া কাজীখানেও এমনই এসেছে।” –আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া: ৫/১০৯

উল্লেখ্য, উশরের সম্পর্ক ফসলের সাথে, ব্যক্তির সাথে নয়। তাই জমিনে ফসল হলেই উশর দিতে হবে, যদিও ব্যক্তি আর্থিকভাবে সচ্ছল না হয় এবং নেসাবের মালিক না হওয়ায় তার উপর যাকাত, কুরবানী ও সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব না হয়।[45]

নিজে নিজে গজানো ঘাস, বাঁশ ও ফলহীন গাছে উশর আসে না

মাসআলা:-৮ নিজে নিজে গজানো ঘাস, বাঁশ ও ফলহীন গাছে উশর ওয়াজিব হবে না।[46] তবে আয়ের উদ্দেশ্যে কাঠবাগান,[47] ফুলবাগান[48] কিংবা বাঁশবাগান করা হলে প্রতিবার কাটার পর[49] উশর দিতে হবে। তেমনই বিক্রয় বা গবাদি পশুকে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে ঘাস চাষ করলেও উশর দিতে হবে।[50]

আল্লামা দামাদ আফেন্দী রহিমাহুল্লাহ (১০৭৮ হি.) বলেন,

(ولا شيء في حطب وقصب فارسي وحشيش) لأنه لا تقصد بهما استغلال الأرض غالبا، فلو اتخذها مشجرة أو مقصبة أو منبتا للحشيش ففيه العشر. -مجمع الأنهر في شرح ملتقى الأبحر: 1/ 216

“(নিজে নিজে উৎপন্ন) লাকড়ির গাছ, বাঁশ এবং ঘাসে উশর ওয়াজিব হবে না। কেননা সাধারণত এগুলো দিয়ে জমি থেকে আয় করা উদ্দেশ্য হয় না (বরং এগুলো এমনি এমনি জমিনে জন্মে থাকে)। তবে জমিকে কাঠবাগান, বাঁশঝাড় বা ঘাস উৎপাদনের মাঠ বানানো হলে উশর ওয়াজিব হবে।” -মাজমাউল আনহুর: ১/১২১৬

উশরী জমি থেকে সংগ্রহকৃত মধুতে উশর আসে

মাসআলা:-৯ উশরী জমি থেকে সংগ্রহকৃত মধুতেও উশর দিতে হবে; মধু যে পরিমাণই হোক।[51]

ইমাম মুহাম্মাদ রহিমাহুল্লাহ (১৮৯ হি.) বলেন,

نحل في أرض خراج فليس فيه شيء، وإن كان في أرض العشر ففيه العشر. -الجامع الصغير، ت الدكتور محمد بوينوكالن، ص: 86

“খারাজী জমিতে মধু হলে কিছু দিতে হবে না। উশরী জমিতে হলে উশর দিতে হবে।” -আল-জামিউস সাগীর, পৃ: ৮৬

বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা ছাদে লাগানো ফলগাছে উশর আসে না

 

মাসআলা:-১০ শুধু বাগান বা ক্ষেতে উৎপাদিত ফল-ফসলে উশর ওয়াজিব হবে।[52] বাড়ির আঙ্গিনা,[53] ছাদ[54] কিংবা বাড়ির অভ্যন্তরে কোনো জায়গায় লাগানো ফলগাছ ও শাক-সবজিতে উশর দিতে হবে না।[55] তবে চাষের জমিতে ফলগাছ থাকলে ফলের উশর দিতে হবে।[56]

আল্লামা বাযযাযী রহিমাহুল্লাহ (৮২৭ হি.) বলেন,

والشجرة المثمرة إن كانت في الدار لا عشر فيها، بخلاف الكائنة في الأراضي لأن المساكن مع ما يتبعها عفو، لا الأراضي. –الفتاوى البزازية: 1/61

 “ফলদার বৃক্ষ যদি বাড়িতে হয়, তাতে উশর ওয়াজিব হবে না। কিন্তু (ফসলী) জমিতে হলে উশর ওয়াজিব হবে। কেননা বাসস্থান ও তার অধীন জায়গার উশর মাফ, জমির উশর মাফ ‍নয়।” -আল-ফাতাওয়াল বাযযাযিয়্যাহ: ১/৬১

উশরের পরিমাণ

মাসআলা:-১১ সরাসরি বৃষ্টি, নদী কিংবা ঝর্ণার পানিতে ফলিত ফসলের উশর তথা দশভাগের একভাগ (১০%) সাদাকা করতে হবে। আর যেসব জমিতে টিউবওয়েল, মেশিন বা অন্য কোনো মাধ্যমে শ্রম কিংবা অর্থ দিয়ে পানি সেচ করতে হয়, সেসব জমিতে উৎপাদিত ফসলের নিসফে উশর তথা বিশ ভাগের একভাগ (৫%) সাদাকা করতে হবে।[57]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

فيما سقت السماء والعيون أو كان عثريا[58] العشر، وما سقي بالنضح[59] نصف العشر. -صحيح البخاري (1483)

 “বৃষ্টি ও প্রবাহিত পানি দ্বারা সিক্ত ভূমিতে উৎপাদিত অথবা পানির কাছে হওয়ায় সেচ ছাড়া এমনিতেই উৎপন্ন ফসলের দশভাগের একভাগ দিতে হবে। আর উট দ্বারা (পানি তুলে) সেচ দেওয়া জমির ফসলের বিশ ভাগের একভাগ দিতে হবে।” -সহীহ বুখারী: ১৪৮৩

উভয় প্রকার পানি দ্বারা সিঞ্চিত জমির হুকুম

মাসআলা:-১২ উভয় প্রকার পানি দ্বারা সিঞ্চিত জমি যদি অধিকাংশ সময় বৃষ্টি, নদী বা ঝর্ণার পানি দ্বারা সিঞ্চিত হয় তাহলে দশভাগের একভাগ দিতে হবে। আর যদি অধিকাংশ সময় পানি তুলে সেচ দিতে হয়, তাহলে বিশ ভাগের একভাগ দিতে হবে।[60]

আতা রহিমাহুল্লাহ (১১৪ হি.) বলেন,

  إن كان يسقى بالعين أكثر مما يسقى بالدلو، ففيه العشر، وإن كان يسقى بالدلو، أكثر مما يسقى بالعين، ففيه نصف العشر. -مصنف ابن أبي شيبة (10190(

“অধিকাংশ সময় যদি ঝর্ণার পানিতে সেচ হয়, তাহলে দশ ভাগের একভাগ। আর অধিকাংশ সময় যদি সেচের পানিতে চাষ হয়, তাহলে বিশ ভাগের একভাগ।” -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ১০১৯০

উল্লেখ্য, যেসব ফল বা ফসল পর্যায়ক্রমে পাকে, একবারে সবটা পাকে না, তার ক্ষেত্রে প্রতিবার ফল আহরণ বা ফসল উত্তোলনের পর উপর্যুক্ত মূলনীতি অনুযায়ী দশ ভাগের এক ভাগ বা বিশ ভাগের এক ভাগ উশর আদায় করবে।[61]

 

চাষাবাদের খরচ বাবদ কোনো অংশ বাদ যাবে না

মাসআলা:-১৩ পুরো ফসলের উশর বা নিসফে উশর আদায় করতে হবে। চাষাবাদের খরচ বাবদ কোনো অংশ বাদ দেয়া যাবে না।[62]

ইমাম মুহাম্মদ রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وكل شيء أخرجته الأرض مما فيه العشر لا يحسب فيه أجر العمال ولا نفقة البقر. -الجامع الصغير، ت الدكتور محمد بوينوكالن، ص: 85

“জমিতে উৎপন্ন যেসব ফল ও ফসলে উশর ওয়াজিব হয় তা থেকে শ্রমিক-খরচ এবং গরু (তথা হালচাষের) খরচ (আলাদা) হিসাব করা যাবে না।” -আল জামিউস সগীর, পৃ: ৮৫

ঋণ থাকলেও উশর ওয়াজিব হয়

মাসআলা:-১৪ ঋণ থাকা সত্ত্বেও উশর ওয়াজিব হবে। তাই উশর হিসেব করার সময় ঋণের অংশ ফসল থেকে বিয়োগ করা যাবে না।[63]

ইমাম সারাখসী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وإذا أخرجت الأرض العشرية طعاما، وعلى صاحبها دين كثير، لم يسقط عنه العشر. -المبسوط (3/4)

“উশরী জমির মালিক অনেক ঋণগ্রস্ত হলেও জমিতে শস্য উৎপাদন হলে তার থেকে উশর মাফ হবে না।” -মাবসুতে সারাখসী: ৩/৪

নাবালেগ ও পাগল ব্যক্তির জমিতেও উশর আসে

মাসআলা:-১৫ নাবালেগ ও পাগল ব্যক্তির জমিতে উৎপাদিত ফসলেরও উশর দিতে হবে।[64]

ওয়াকফিয়া জমিতেও উশর আসে

মাসআলা:-১৬ ওয়াকফিয়া জমিতে উৎপাদিত ফসলেরও উশর দিতে হবে।[65]

ইমাম সারাখসী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وإن كانت الأرض لمكاتب، أو صبي، أو مجنون وجب العشر في الخارج منها عندنا ….. وكذلك الخارج من الأراضي الموقوفة على الرباطات والمساجد يجب فيها العشر عندنا.-المبسوط للسرخسي: 3/4

“আমাদের মাযহাব মতে … নাবালেগ ও পাগলের জমির ফসলেও উশর ওয়াজিব হবে। এমনিভাবে … ওয়াকফকৃত জমির ফসলেও উশর ওয়াজিব হবে।” -মাবসুতে সারাখসী: ৩/৪

ফল-ফসল পাকার আগে বিক্রি করলে উশর কে দেবে?

মাসআলা:-১৭ পাকার পর ফল-ফসল বিক্রি করলে[66] বিক্রেতাকে উশর দিতে হবে। পাকার আগে বিক্রি করলে ক্রেতাকে উশর দিতে হবে, যদিও ক্রেতা বিক্রেতার অনুমতিতে তা ক্ষেতে বা গাছেই রেখে দেয়।[67]

ইমাম সারাখসী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وإن باع أرضا عشرية بما فيها من الزرع فإن كان الزرع قد بلغ فالعشر على البائع؛ … وإن لم يبلغ الزرع فالعشر على المشتري في قول أبي حنيفة ومحمد رحمهما الله تعالى. -المبسوط: 3/ 48

“ফসলসহ উশরী জমি বিক্রি করলে, যদি ফসল পাকার পর বিক্রি করে তবে বিক্রেতার উপর উশর ওয়াজিব হবে। আর পাকার আগে বিক্রি করলে আবু হানিফা ও মুহাম্মদ রহিমাহুল্লাহ এর মতে ক্রেতার উপর উশর ওয়াজিব হবে।” -মাবসুত: ৩/৪৮

উশরী জমি ভাড়া নিলে উশর কে দেবে?

মাসআলা:-১৮ চাষাবাদের জন্য অর্থের বিনিময়ে অন্যের জমি ভাড়া নিলে, ভাড়া গ্রহণকারী চাষীর উপর উশর ওয়াজিব হবে, জমির মালিকের উপর নয়।[68]

বর্গাচাষের ক্ষেত্রে উশর কে দেবে?

মাসআলা:১৯ বর্গাচাষের ক্ষেত্রে জমির মালিক ও চাষী উভয়কে নিজ নিজ অংশ হতে উশর দিতে হবে।[69]

জমিতে বছরে একাধিক বার ফসল হলে কয়বার উশর দিতে হবে?

মাসআলা:-২০ উশরের সম্পর্ক যেহেতু ফসলের সাথে, তাই এক জমিতে বছরে যতবার ফসল হবে, ততবারই ফসলের উশর দিতে হবে[70] এবং সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও চাষ না করলে উশর ওয়াজিব হবে না।[71]

ইমাম কাসানী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

والحول ليس بشرط لوجوب العشر، حتى لو أخرجت الأرض في السنة مرارا يجب العشر في كل مرة، لأن نصوص العشر مطلقة عن شرط الحول، ولأن العشر في الخارج حقيقة، فيتكرر الوجوب بتكرر الخارج. –بدائع الصنائع (2/ 62)

“উশর ওয়াজিব হওয়ার জন্য বছর অতিক্রান্ত হওয়া শর্ত নয়। তাই বছরে একাধিকবার ফসল হলে প্রতিবার উশর ওয়াজিব হবে। কেননা উশরের আদেশ সম্বলিত আয়াত-হাদীসে বছর অতিক্রান্তের শর্ত নেই। তাছাড়া উশর ওয়াজিব হয় বাস্তবে ফসল উৎপাদিত হলে (তাই যেমনিভাবে সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ফসল উৎপাদন না করলে উশর ওয়াজিব হয় না তেমনিভাবে) বারবার ফসল হলে উশরও বারবারই ওয়াজিব হবে।” -বাদায়িউস সানায়ি: ২/৬২

অন্যত্র বলেন,

ولو كانت الأرض عشرية فتمكن من زراعتها فلم تزرع لا يجب العشر، لعدم الخارج حقيقة. -بدائع الصنائع (2/ 54)

“যদি উশরী জমিনে অবকাশ থাকা সত্ত্বেও চাষাবাদ করা না হয়, তাহলে বাস্তবে ফসল না হওয়ায় উশর ওয়াজিব হবে না।” -বাদায়িউস সানায়ি: ২/৫৪

ফল-ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলে উশরের হুকুম

মাসআলা:-২১ ক্ষেত থেকে বা মাড়াইয়ের স্থান থেকে ফল-ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলে কিংবা চুরি হয়ে গেলে বা গরু-ছাগলে খেয়ে ফেললে, উশর মাফ হয়ে যাবে। ফল-ফসলের কিছু অংশ নষ্ট হলে সেই অংশের উশর বাদ যাবে।[72]

ইমাম আবুল কাসেম সমরকন্দী রহিমাহুল্লাহ (৫৫৬ হি.) বলেন,

إذا فات غلة الأرض أو الكرم بآفة لا شيء عليه. -الملتقط، ص: 75

“কোনো আপদের কারণে জমির ফসল বা আঙ্গুর ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেলে তাতে কিছুই ওয়াজিব হবে না।” -আল মুলতাকাত, পৃ: ৭৫

ইমাম আবু ইয়াকুব জুরজানী রহিমাহুল্লাহ (৫২২ হি.) বলেন,

وما تلف من البيدر وغيره سقط العشر بقدره. -خزانة الأكمل: 1/274

“শস্য মাড়াইয়ের স্থান বা অন্য কোথাও ফসল নষ্ট হয়ে গেলে সেই অনুপাতে উশর মাফ হয়ে যাবে।” -খিযানাতুল আকমাল: ১/২৭৪

জমির মালিক উশর না দিয়ে মারা গেলে করণীয়

মাসআলা:-২২ উশর আদায় না করে কেউ মারা গেলে যদি ফসলগুলো বিদ্যমান থাকে, তাহলে তা থেকে উশর আদায় করতে হবে।[73]

ইমাম কাসানী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

لو مات من عليه العشر والطعام قائم يؤخذ منه. -بدائع الصنائع (2/56)

“যার উপর উশর ওয়াজিব সে ফসল বিদ্যমান থাকা অবস্থায় মারা গেলে ফসল থেকে উশর নেয়া হবে।” –বাদায়িউস সানায়ি: ২/৫৬

উশরের মাসরাফ কারা?

মাসআলা:-২৩ যাকাতের মাসরাফই উশরের মাসরাফ। যাদেরকে যাকাত দেয়া যায়, তাদেরকে উশরও দেয়া যাবে। যাদেরকে যাকাত দেয়া যায় না, তাদেরকে উশরও দেয়া যাবে না।[74]

উল্লেখ্য, যাকাতের মাসরাফ হলো এমন ব্যক্তি যার নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা সমপরিমাণ সম্পদ নেই। যাকাত-উশর আদায় হওয়ার জন্য এমন দরিদ্র ব্যক্তিকে যাকাত বা উশরের মালিক বানিয়ে দেয়া জরুরি। তাই মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ বা জনকল্যাণমূলক কাজে যাকাত-উশর দান করলে তা আদায় হবে না।[75]

কাজীখান রহিমাহুল্লাহ (৫৯২ হি.) বলেন,

ويصرف العشر إلى من يصرف إليه الزكاة. -فتاوى قاضيخان: 1/169

“যাদেরকে যাকাত দেয়া যায় উশর তাদেরকে দেয়া যাবে।” -ফাতাওয়ায়ে কাজীখান: ১/১৬৯

কাসানী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

أما ركنه فهو التمليك؛ … فلا تتأدى … بما ليس بتمليك رأسا من بناء المساجد ونحو ذلك. -بدائع الصنائع (2/ 65)

“উশরের রুকন হলো (দরিদ্র ব্যক্তিকে) মালিক বানিয়ে দেয়া। … তাই মসজিদ নির্মাণ বা এরকম অন্য কোনো (দীনি) কাজে উশর ব্যয় করলে তা আদায় হবে না, যাতে (দরিদ্রকে) মালিক বানানো হয় না।” -বাদায়িউস সানায়ি: ২/৬৫

তাই উশর; নেসাবের মালিক নয় এমন গরীব ব্যক্তিকে দিতে হবে। মাদরাসা বা জিহাদী সংগঠনে দিতে চাইলে এমন কোথাও দিতে হবে, যেখানে গুরাবা বা যাকাত ফান্ড আছে এবং বলে দিতে হবে, এটি উশর। যেন তারা তা উপযুক্ত খাতে খরচ করতে পারেন।

ফসলের মূল্য দ্বারাও উশর দেয়া যায়

মাসআলা:২৪ ফসল কিংবা ফসলের মূল্য; যে কোনোটি দ্বারাই উশর আদায় করা যায়। যেমন কারো জমিতে যদি দশ মণ ধান হয় এবং তাতে যদি সেচ দেয়া না লাগে, তাহলে এক মণ ধান কিংবা এর মূল্য উশর হিসেবে আদায় করতে পারবে। আর সেচ দেয়া লাগলে আধা মণ ধান বা তার মূল্য উশর হিসেবে দিতে পারবে।[76]

ইমাম কাসানী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

يجوز أداء قيمته عندنا. -بدائع الصنائع: 2/63

“আমাদের মতে ফসলের মূল্য দিয়ে উশর আদায় করা জায়েয।” -বাদায়িউস সানায়ি: ২/৬৩

কেউ অন্যের জমি বিনামূল্যে চাষাবাদ করলে উশর কে দেবে?

মাসআলা:-২৫ কোনো মুসলিম তার উশরী জমি অন্য কোনো মুসলিমকে বিনামূল্যে চাষ করার জন্য দিলে, যিনি চাষাবাদ করবেন, উশর তার উপর ওয়াজিব হবে। পক্ষান্তরে কোনো কাফেরকে দিলে উশর জমির মালিকের উপর ওয়াজিব হবে, কাফেরের উপর নয়।[77] কারণ, উশর একটি ইবাদত। আর কাফের কোনো ইবাদত আদায়ের যোগ্য নয়। তাই জমির মালিককেই তা আদায় করতে হবে, যাতে উৎপাদিত ফসলে গরীবদের যে হক নির্ধারিত রয়েছে তা বিনষ্ট না হয়।

ইবনুল হুমাম রহিমাহুল্লাহ (৮৫৯ হি.) বলেন,

إذا استعارها وزرع يجب العشر على المستعير بالاتفاق خلافا لزفر. هذا إذا كان المستعير مسلما، فإن كان ذميا فهو على رب الأرض بالاتفاق. -فتح القدير (2/ 250(

“জমি ধার নিয়ে চাষাবাদ করলে ধারগ্রহীতা যদি মুসলিম হয় তাহলে সর্বসম্মতিক্রমে উশর ধারগ্রহীতার উপর ওয়াজিব। পক্ষান্তরে ধারগ্রহীতা কাফের হলে উশর জমির মালিকের উপর ওয়াজিব।” -ফাতহুল কাদীর: ২/২৫০

ফল-ফসল কাটার আগে নিজেরা কিছু খেলে তাতে উশর আসে না

মাসআলা:-২৬ মানুষের অভ্যাস হচ্ছে, ফল পরিপক্ক হওয়ার পর যখন একসঙ্গে সব ফল সংগ্রহ করে, তার আগেই বাগান থেকে কিছু কিছু ফল সংগ্রহ করে নিজে খায় এবং পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, অতিথি ও পাড়া প্রতিবেশীদের খাওয়ায়। এভাবে ইসরাফ ও অতিরঞ্জন ব্যতীত ন্যায়সঙ্গতভাবে নিজে যা খায় এবং অন্যদের খাওয়ায়, তাতে উশর দিতে হয় না। ফসল ঘরে তোলার পর অবশিষ্ট অংশের উশর আদায় করলেই হয়।[78]

বাগানের ফল খাওয়ার উপযুক্ত হলে বাগানে ফলের মোট পরিমাণ আন্দাজ করার জন্য ইসলামী হুকুমত যাদেরকে নিয়োগ দেবে, তাদের প্রতি হাদীসে নির্দেশনা এসেছে,

«إذا خرصتم فخذوا ودعوا الثلث، فإن لم تدعوا الثلث، فدعوا الربع». -أخرجه النسائي (2491) وأبو داود (1605) والترمذي (643) وابن أبي شيبة في المصنف (10662) والبزار (2305) والطحاوي في شرح معاني الآثار (3097) وابن الجارود (352) وابن خزيمة (2319) وابن حبان (3280) في صحاحهم، والحاكم (1464) وقال البزار: “ّولا نعلم يروي هذا الحديث، عن سهل إلا عبد الرحمن بن نيار، وهو معروف.” وصححه الحاكم ووافقه الذهبي، وصححه أيضا ابن الملقن في البدر المنير (5/ 547) قائلا: عبد الرحمن هذا وثقه أبو حاتم بن حبان، فإنه ذكره في «ثقاته»، وأخرج الحديث في «صحيحه» من جهته، وكذلك الحاكم صحح إسناده، فقد عرف حاله كما قاله البزار، ولله الحمد. وقول النووي في «شرح المهذب» : “إسناد هذا الحديث صحيح، إلا عبد الرحمن بن مسعود بن نيار الراوي عن سهل بن أبي حثمة، فلم يتكلموا فيه بجرح ولا تعديل، ولا هو مشهور، ولم يضعفه أبو داود” فيه ما ذكرناه من كونه ثقة. وقال الشيخ عوامة في تعليقه على المصنف: في إسناده عبد الرحمن بن مسعود بن نيار، تقدم قول البزار فيه، ووثقه ابن حبان (5/104) وهو مقتضى صنيع ابن خزيمة وتصحيح الحاكم والذهبي لحديثه، وباقي رجاله ثقات.

“যখন তোমরা (ফলের পরিমাণ) অনুমান কর, তখন (দুই-তৃতীয়াংশ হিসাবে) ধর এবং এক-তৃতীয়াংশ (হিসাব থেকে) বাদ দাও। যদি এক-তৃতীয়াংশ বাদ দিতে না পার তবে (কমপক্ষে) এক-চতুর্থাংশ বাদ দাও।[79] -সুনানে নাসায়ী: ২৪৯১; সুনানে আবু দাউদ: ১৬০৫; জামে তিরমিযী: ৬৪৩; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ: ১০৬৬২; মুসনাদে বাযযার: ২৩০৫; শারহু মাআনিল আসার, তাহাবী: ৩০৯৭; আল-মুনতাকা, ইবনুল জারুদ: ৩৫২; সহীহ ইবনে খুযাইমাহ: ২৩১৯; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩২৮০; মুস্তাদরাকে হাকেম: ১৪৬৪

অর্থাৎ ফলের কিছু অংশ সাধারণত মালিক নিজেরা খেয়ে থাকে এবং আত্মীয়-স্বজন ও মেহমানদের খাইয়ে থাকে। তাই আন্দাজের সময় এ রকম একটা পরিমাণ বাদ দিয়ে বাকিটা হিসাবে ধরতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যাতে পরবর্তীতে ফল কাটার সময় যখন উশর আদায় করা হবে, তখন খাওয়া ও খাওয়ানোর অংশটা বাদ দিয়ে বাকি অংশের উশর আদায় করা যায়।

ইমাম তাহাবী রহিমাহুল্লাহ (৩২১ হি.) সাঈদ বিন মুসাইয়িব রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন,

بعث عمر بن الخطاب رضي الله عنه سهل بن أبي حثمة يخرص على الناس، فأمره، إذا وجد القوم في نخلهم، أن لا يخرص عليهم ما يأكلون. -شرح معاني الآثار: 3098 قال الإمام العيني في نخب الأفكار (8/179) : إسناده صحيح.

  “উমর বিন খাত্তাব রাযিয়াল্লাহু আনহু সাহল বিন আবি হাসমাহ রাযিয়াল্লাহু আনহুকে খেজুরের পরিমাণ অনুমান করতে প্রেরণ করেন। তখন তাকে আদেশ দেন, লোকদেরকে খেজুর বাগানে পেলে যেন তাদের ভক্ষণকৃত অংশের হিসাব না করে।” -শরহু মাআনিল আসার: ৮/১৭৯

এরপর ইমাম তাহাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

الحطيطة المذكورة في هذا الحديث إنما هي … ما يأكل من الثمرة أهلها قبل أوان أخذ الزكاة منها. فأمر الخراص أن يلقوا مما يخرصون المقدار المذكور في هذا الحديث لئلا يحتسب به على أهل الثمار في وقت أخذ الزكاة منهم. شرح معاني الآثار 2/39)

“উশর নেয়ার সময় হওয়ার পূর্বে মালিকরা যে ফল খেয়ে থাকে, হাদীসে সে অংশ হিসাব থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে। অনুমানকারীদের উল্লেখিত পরিমাণ হিসাব থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে যেন উশর নেয়ার সময় মালিকদের সাথে সেই অংশের হিসাব না করা হয়।” –শারহু মাআনিল আসার: ২/৩৯

***

 

[1] উশরের শাব্দিক অর্থ এক-দশমাংশ। তবে শরয়ী পরিভাষায় উশর বলা হয় জমিনে উৎপাদিত ফল বা ফসলের যাকাতকে, যার পরিমাণ অবস্থাভেদে কখনো দশ ভাগের এক ভাগ এবং কখনো বিশ ভাগের এক ভাগ হয়।

جاء في الموسوعة الفقهية (30/101) : العشر لغة : الجزء من عشرة أجزاء، … وفي الاصطلاح يطلق العشر على … زكاة الخارج من الأرض.

[2] খারাজ বলা হয় বাৎসরিক খাজনাকে যা ইসলামী হুকুমত প্রধানত যিম্মি কাফেরদের জমির উপর আরোপ করে।

جاء في الموسوعة (19/52) : ويطلق الخراج أيضا على الإتاوة أو الضريبة التي تؤخذ من أموال الناس، فيقال خارج السلطان أهل الذمة، إذا فرض عليهم ضريبة يؤدونها له كل سنة.

[3] গনীমত বলা হয় কাফেরদের থেকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদকে আর ফাই বলা হয় যুদ্ধ ব্যতীত প্রাপ্ত সম্পদকে, যেমন জিযিয়া, খারাজ, কাফের বাদশাহর হাদিয়া ইত্যাদি।

قال في الهندية: الغنيمة اسم لما يؤخذ من أموال الكفرة بقوة الغزاة وقهر الكفرة، والفيء: ما أخذ منهم من غير قتال كالخراج والجزية. -رد المحتار: 4/ 137

[4]  قال الإمام ابن كثير رحمه الله في تفسيره: وقوله: {كي لا يكون دولة بين الأغنياء منكم} أي: جعلنا هذه المصارف لمال الفيء لئلا يبقى مأكلة ىتغلب علىها الأغنىاء ويتصرفون فيها، بمحض الشهوات والآراء، ولا يصرفون منه شيئا إلى الفقراء. (تفسير ابن كثير: 8/ 67)

[5]  الأموال للقاسم بن سلام (ص: 22): 41 – … عن مالك بن أوس بن الحدثان، عن عمر، نحو الحديث الذي ذكرناه، قال: ثم قرأ: {واعلموا أنما غنمتم من شيء فأن لله خمسه وللرسول ولذي القربي واليتامي والمساكين وابن السبيل} [الأنفال: 41] هذه لهؤلاء {إنما الصدقات للفقراء والمساكين والعاملين عليها والمؤلفة قلوبهم وفي الرقاب والغارمين وفي سبيل الله وابن السبيل} [التوبة: 60] هذه لهؤلاء {ما أفاء الله علي رسوله من أهل القري فلله وللرسول ولذي القربي واليتامي والمساكين وابن السبيل} [الحشر: 7] وللفقراء والمهاجرين، أو قال: {للفقراء المهاجرين الذين أخرجوا من ديارهم وأموالهم} [الحشر: 8] {والذين تبوءوا الدار والإيمان من قبلهم} {والذين جاءوا من بعدهم} قال: فاستوعبت هذه الآية الناس، فلم يبق أحد من المسلمين إلا له فيها حق أو قال حظ إلا بعض من تملكون من أرقائكم، وإن عشت إن شاء الله ليؤتين كل مسلم حقه أو قال: حظه حتى يأتي الراعي بسرو حمير، ولم يعرق فيه جبينه.

[6] : قال الحافظ ابن حجر في «فتح الباري» (13/83) : «أخرج يعقوب ابن سفيان في تاريخه من طريق عمر بن أسيد بن عبد الرحمن بن زيد بن الخطاب بسند جيد، قال: «لا والله، ما مات عمر بن عبد العزيز حتي جعل الرجل يأتينا بالمال العظيم، فيقول: اجعلوا هذا حيث ترون في الفقراء، فما يبرح حتى يرجع بماله يتذكر من يضعه فيهم، فلا يجد، فيرجع به، قد أغنى عمر بن عبد العزيز الناس». …. وسببه بسط عمر العدل وإيصال الحقوق لأهلها حتى استغنوا».

 : [7]أخرج الإمام البخاري (3595) عن عدي بن حاتم، قال: بينا أنا عند النبي صلى الله عليه وسلم إذ أتاه رجل فشكا إليه الفاقة، ثم أتاه آخر فشكا إليه قطع السبيل، فقال: «يا عدي، هل رأيت الحيرة؟» قلت: لم أرها، وقد أنبئت عنها، قال «فإن طالت بك حياة، لترين الظعينة ترتحل من الحيرة، حتى تطوف بالكعبة لا تخاف أحدا إلا الله»، – قلت فيما بيني وبين نفسي: فأين دعار طيئ الذين قد سعروا البلاد -، ولئن طالت بك حياة لتفتحن كنوز كسرى»، قلت: كسرى بن هرمز؟ قال: «كسرى بن هرمز، ولئن طالت بك حياة، لترين الرجل يخرج ملء كفه من ذهب أو فضة، يطلب من يقبله منه فلا يجد أحدا يقبله منه، وليلقين الله أحدكم يوم يلقاه، وليس بينه وبينه ترجمان يترجم له، فليقولن له: ألم أبعث إليك رسولا فيبلغك؟ فيقول: بلى، فيقول: ألم أعطك مالا وأفضل عليك؟ فيقول: بلى، فينظر عن يمينه فلا يرى إلا جهنم، وينظر عن يساره فلا يرى إلا جهنم» قال عدي: سمعت النبي صلى الله عليه وسلم، يقول: «اتقوا النار ولو بشقة تمرة فمن لم يجد شقة تمرة فبكلمة طيبة» قال عدي: فرأيت الظعينة ترتحل من الحيرة حتى تطوف بالكعبة لا تخاف إلا الله، وكنت فيمن افتتح كنوز كسرى بن هرمز ولئن طالت بكم حياة، لترون ما قال النبي أبو القاسم: صلى الله عليه وسلم يخرج ملء كفه.

 

[8]  قال الإمام الألوسي : وَفَضْلًا أي: رزقا وخلفا- وهو المروي عن ابن عباس رضي الله تعالى عنهما- فتكون المغفرة إشارة إلى منافع الآخرة، وهذا إشارة إلى منافع الدنيا. وفي الحديث «ما من يوم يصبح فيه العباد إلا ملكان ينزلان يقول أحدهما اللهم أعط منفقا خلفا ويقول الآخر: اللهم أعط ممسكا تلفا» وقدم منافع الآخرة لأنها أهم عند المصدق بها، وقيل: المغفرة والفضل كلاهما في الآخرة. اهـ -روح المعاني (2/ 40)

قال الإمام الرازي : وأما معنى الفضل فهو الخلف المعجل في الدنيا، وهذا الفضل يحتمل عندي وجوها … والثالث: وهو أحسن الوجوه: أنه مهما عرف من الإنسان كونه منفقا لأمواله في وجوه الخيرات مالت القلوب إليه فلا يضايقونه في مطالبه، فحينئذ تنفتح عليه أبواب الدنيا، ولأن أولئك الذين أنفق ماله عليهم يعينونه بالدعاء والهمة فيفتح الله عليه أبواب الخير. -مفاتيح الغيب أو التفسير الكبير (7/ 57)

وقال العلامة السمرقندي : وفضلا يعني خلفا في الدنيا. اهـ -بحر العلوم (1/ 179)

وقال الإمام الماتريدي : (وَاللَّهُ يَعِدُكُمْ مَغْفِرَةً مِنْهُ) بالصدقة، و (وَفَضْلًا) ذكرًا في الدنيا. ويحتمل قوله: (وَاللَّهُ يَعِدُكُمْ مَغْفِرَةً مِنْهُ) في الآخرة، و (وَفَضْلًا) في الدنيا، يعني خَلَفًا. وقيل: (مَغْفِرَةً) لفحشائكم، و (وَفَضْلًا) لفقركم. اهـ -تأويلات أهل السنة (2/ 260)

وقال الإمام القرطبي: والفضل هو الرزق في الدنيا والتوسعة والنعيم في الآخرة، وبكل قد وعد الله تعالى. اهـ -تفسير القرطبي (3/ 329)

وقال الإمام أبو السعود رحمه الله: {وفضلا} أي خلَفاً مما أنفقتم زائداً عليه في الدنيا وفيه تكذيبٌ للشيطان. -تفسير أبي السعود (1/262)

وقال العلامة السعدي : {وفضلا} وإحسانا إليكم في الدنيا والآخرة، من الخلف العاجل، وانشراح الصدر ونعيم القلب والروح والقبر، وحصول ثوابها وتوفيتها يوم القيامة، وليس هذا عظيما عليه. اهـ -تيسير الكريم الرحمن (ص: 115)

[9]  قال الإمام الجصاص: فإن قيل إنما أوجب الله تعالى هذا الحق فيما ذكر يوم حصاده، وذلك لا يكون إلا بعد استحكامه ومصيره إلى حال تبقى ثمرته، فأما ما أخذ منه قبل بلوغ وقت الحصاد من الفواكه الرطبة فلم يتناوله اللفظ، ومع ذلك فإن الزيتون والرمان لا يحصدان، فلم يدخلا في عموم اللفظ. قيل له: الحصاد اسم للقطع والاستيصال، قال الله تعالى: [حتى جعلناهم حصيدا خامدين]. وقال النبي صلى الله عليه وسلم يوم فتح مكة: «ترون أوباش قريش احصدوهم حصدا». فيوم حصاده هو يوم قطعه، فذلك قد يكون في الخضر وفي كل ما يقطع من الثمار عن شجرة سواء كان بالغا أو أخضر رطبا. وأيضا قد أوجب الآية العشر في ثمر النخل عند جميع الفقهاء بقوله تعالى: [وآتوا حقه يوم حصاده] فدل على أن المراد يوم قطعه لشمول اسم الحصاد لقطع ثمر النخل. (أحكام القرآن: 4/178)

وقال الإمام الرازي : البحث الرابع: قال أبو مسلم: لفظ الثمرات يقع في الأغلب على ما يحصل على الأشجار، ويقع أيضا على الزروع والنبات، كقوله تعالى: كلوا من ثمره إذا أثمر وآتوا حقه يوم حصاده. اهـ -مفاتيح الغيب أو التفسير الكبير (19/ 97)

وقال أيضا: البحث الثالث: قوله تعالى: وآتوا حقه يوم حصاده بعد ذكر الأنواع الخمسة وهو العنب والنخل والزيتون والرمان يدل على وجوب الزكاة في الكل وهذا يقتضي وجوب الزكاة في الثمار كما كان يقوله أبو حنيفة رحمه الله.

فإن قالوا: لفظ الحصاد مخصوص بالزرع فنقول: لفظ الحصد في أصل اللغة غير مخصوص بالزرع والدليل عليه أن الحصد في اللغة عبارة عن القطع وذلك يتناول الكل. اهـ -مفاتيح الغيب أو التفسير الكبير (13/ 164)

[10]   : قال الفيومي: والدالية: دلو ونحوها، وخشب يصنع كهيئة الصليب ويشد برأس الدلو، ثم يؤخذ حبل يربط طرفه بذلك وطرفه بجذع قائم على رأس البئر، ويسقى بها، فهي فاعلة بمعنى مفعولة، والجمع: الدوالي، وشذ الفارابي وتبعه الجوهري، ففسرها بالمنجنون. (المصباح المنير في غريب الشرح الكبير 1/ 199)

وقال العلامة الشامي : في المغرب: الدولاب بالفتح المنجنون التي تديرها الدابة، والناعورة ما يديرها الماء، والدالية جذع طويل يركب تركيب مداق الأرز، وفي رأسه مغرفة كبيرة يستقى بها. اهـ. وفي القاموس: الدالية: المنجنون، والناعورة: شيء يتخذ من خوص يشد في رأسه جذع طويل، والمنجنون: الدولاب يستقى عليه. اهـ. (رد المحتار) (2/ 328)

 [11]: قال الإمام الطحاوي: قال الله عز وجل: {وآتوا حقه يوم حصاده} فاختلف أهل العلم في هذه الآية، فقال بعضهم: هي آية محكمة، والحق المذكور فيها هو الواجب في الزرع من العشر، ومن نصف العشر، وممن قال بذلك منهم: مالك بن أنس حدثنا يونس، قال: أخبرنا ابن وهب، قال: قال مالك في قول الله عز وجل: ” {وآتوا حقه يوم حصاده} إن ذلك الزكاة “، والله أعلم، وقد سمعت من يقول ذلك قال أحمد: وقد روي هذا القول، عن ابن عباس على اختلاف. … وقد روي هذا عن محمد بن الحنفية على اختلاف… وقد روي هذا القول عن غير واحد من التابعين سوي محمد بن علي. اهـ -أحكام القرآن (1/ 331)

قال الإمام السمرقندي: قال الفقيه: الذي قال: إنه صار منسوخا يعني: أداؤه يوم الحصاد بغير تقدير صار منسوخا، ولكن أصل الوجوب لم يصر منسوخا. وبين النبي صلي الله عليه وسلم التقدير، وهو العشر أو نصف العشر. اهـ -تفسير السمرقندي = بحر العلوم (1/ 489)

قال الإمام الجصاص (370هـ) رحمه الله تعالى في أحكام القرآن ط العلمية (3/ 12-13): قوله تعالى: {وهو الذي أنشأ جنات معروشات وغير معروشات} إلى قوله: {وآتوا حقه يوم حصاده} … ذكر الله تعالى الزرع والنخل والزيتون والرمان ثم قال: {كلوا من ثمره إذا أثمر وآتوا حقه يوم حصاده} وهو عطف على جميع المذكور، فاقتضى ذلك إيجاب الحق في سائر الزروع والثمار المذكورة في الآية.

وقد اختلف في المراد بقوله تعالى: {وآتوا حقه يوم حصاده} فروي عن ابن عباس وجابر بن زيد ومحمد ابن الحنفية والحسن وسعيد بن المسيب وطاوس وزيد بن أسلم وقتادة والضحاك: أنه العشر ونصف العشر. وروي عن ابن عباس رواية أخرى ومحمد ابن الحنفية والسدي وإبراهيم: نسخها العشر ونصف العشر.

… قال أبو بكر: قد تقدم ذكر اختلاف السلف في معنى قوله تعالى: {وآتوا حقه يوم حصاده} وفي بقاء حكمه أو نسخه، والكلام بين السلف في ذلك من ثلاثة أوجه: أحدها: هل المراد زكاة الزرع والثمار وهو العشر ونصف العشر أو حق آخر غيره؟ وهل هو منسوخ أو غير منسوخ؟ فالدليل على أنه غير منسوخ اتفاق الأمة على وجوب الحق في كثير من الحبوب والثمار وهو العشر ونصف العشر، ومتى وجدنا حكما قد استعملته الأمة ولفظ الكتاب ينتظمه ويصح أن يكون عبارة عنه، فواجب أن يحكم أن الاتفاق إنما صدر عن الكتاب وأن ما اتفقوا عليه هو الحكم المراد بالآية، وغير جائز إثباته حقا غيره ثم إثبات نسخه بقوله عليه السلام: “فيما سقت السماء العشر” ; إذ جائز أن يكون ذلك الحق هو العشر الذي بينه النبي صلى الله عليه وسلم فيكون قوله: “فيما سقت السماء العشر” بيانا للمراد بقوله تعالى: {وآتوا حقه يوم حصاده} كما أن قوله: “في مائتي درهم خمسة دراهم” بيان لقوله تعالى: {وآتوا الزكاة} [البقرة:43] وقوله: {أنفقوا من طيبات ما كسبتم ومما أخرجنا لكم من الأرض} [البقرة:267] وغير جائز أن يكون قوله: {وآتوا حقه يوم حصاده} منسوخا بالعشر ونصف العشر; لأن النسخ إنما يقع بما لا يصح اجتماعهما، فأما ما يصح اجتماعهما معا فغير جائز وقوع النسخ به، ألا ترى أنه يصح أن يقول: وآتوا حقه يوم حصاده وهو العشر؟ فلما كان ذلك كذلك لم يجز أن يكون منسوخا به. … فثبت أن هذا الحق هو العشر ونصف العشر الذي بينه عليه السلام. اهـ

وقال أيضا (ص 17): ويحتج لأبي حنيفة في ذلك بقوله تعالى: {وآتوا حقه يوم حصاده} وذلك عائد إلى جميع المذكور، فهو عموم فيه وإن كان مجملا في المقدار الواجب; لأن قوله: {حقه} مجمل مفتقر إلى البيان، وقد ورد البيان في مقدار الواجب وهو العشر أو نصف العشر. اهـ

وقال الإمام ابن كثير: وقال آخرون: هذا كله شيء كان واجبا، ثم نسخه الله بالعشر ونصف العشر. حكاه ابن جرير عن ابن عباس، ومحمد بن الحنفية، وإبراهيم النخعي، والحسن، والسدي، وعطية العوفي. واختاره ابن جرير، رحمه الله. قلت: وفي تسمية هذا نسخا نظر؛ لأنه قد كان شيئا واجبا في الأصل، ثم إنه فصل بيانه وبين مقدار المخرج وكميته. قالوا: وكان هذا في السنة الثانية من الهجرة، فالله أعلم. اهـ -تفسير القرآن العظيم: (3/ 349)

وقال العلامة الشنقيطي: وقال ابن كثير: في القول بالنسخ نظر، لأنه قد كان شيئا واجبا في الأصل، ثم إنه فصل بيانه، وبين مقدار المخرج وكميته، قالوا: وكان هذا في السنة الثانية من الهجرة، والله أعلم، انتهي من ابن كثير. ومراده أن شرع الزكاة بيان لهذا الحق لا نسخ له. اهـ -أضواء البيان في إيضاح القرآن بالقرآن (1/ 494)

[12] : قال الله تعالى: {كذلك العذاب} أي: هكذا عذاب من خالف أمر الله، وبخل بما آتاه الله وأنعم به عليه، ومنع حق المسكين والفقراء وذوي الحاجات، وبدل نعمة الله كفرا {ولعذاب الآخرة أكبر لو كانوا يعلمون} أي: هذه عقوبة الدنيا كما سمعتم، وعذاب الآخرة أشق. (تفسير ابن كثير ت سلامة 8/ 197)

[13]  : قال الإمام السرخسي: وكل بلدة أسلم أهلها طوعا فهي أرض عشرية، لأن ابتداء الوظيفة فيها على المسلم، والمسلم لا يبدأ بالخراج صيانة له عن معنى الصغار، فكان عليه العشر. وكل بلدة افتتحها الإمام عنوة وقسمها بين الغانمين فهي أرض عشرية لما بينا. وكذلك المسلم إذا جعل داره بستانا، أو أحيا أرضا ميتة فهي أرض عشرية. -المبسوط (3/7)

قال الحصكفي: (أرض العرب) وهي من حد الشام والكوفة إلى أقصى اليمن (وما أسلم أهله) طوعا (أو فتح عنوة وقسم بين جيشنا والبصرة) أيضا بإجماع الصحابة (عشرية) لأنه أليق بالمسلم.

قال الشامي: (قوله وما أسلم أهله) أي والأرض التي أسلم أهلها وذكر الضمير هنا وفيما سيأتي مراعاة للفظ ما نهر (قوله عنوة) بالفتح قال الفارابي: وهو من الأضداد يطلق على الطاعة والقهر وهو المراد هنا نهر (قوله وقسم بين جيشنا) احترز به عما إذا قسم بين قوم كافرين غير أهله، فإنه خراجي كما في النتف، ولو قال: بيننا لشمل ما إذا قسم بين المسلمين غير الغانمين، فإنه عشري لأن الخراج لا يوظف على المسلم ابتداء ذكره القهستاني در منتقى (قوله والبصرة أيضا) والقياس أن تكون خراجية عند أبي يوسف لأنها بقرب أرض الخراج، لكنه ترك القياس بإجماع الصحابة – رضي الله تعالى عنهم – در منتقى وغيره. وحاصله: أنه سيأتي أن ما أحياه مسلم يعتبر قربة عند أبي يوسف وعند محمد يعتبر الماء والمعتمد الأول والبصرة أحياها المسلمون لأنها بنيت في أيام عمر بن الخطاب – رضي الله تعالى عنه – وهي في حيز أرض الخراج فقياس قول أبي يوسف أن تكون خراجية (قوله لأنه أليق بالمسلم) أي لما فيه من معنى العبادة وكذا هو أخف حيث يتعلق بنفس الخارج، وهذا علة لما أسلم أهله أو قسم بين جيشنا، وأما أرض العرب فلأنه لم ينقل عنه – صلى الله عليه وسلم – ولا عن أحد من الخلفاء أخذ خراج من أراضيهم وكما لا رق عليهم لا خراج على أراضيهم نهر وتمامه في الفتح. (الدر المختار ورد المحتار: 4/176)

[14]  : قال الإمام الكاساني: وأما الخراجية فمنها الأراضي التي فتحت عنوة وقهرا فمن الإمام عليهم وتركها في يد أربابها، فإنه يضع على جماجمهم الجزية إذا لم يسلموا، وعلى أراضيهم الخراج، أسلموا أو لم يسلموا، ….... وكذا إذا منَّ عليهم وصالحهم من جماجمهم وأراضيهم على وظيفة معلومة من الدراهم أو الدنانير أو نحو ذلك، فهي خراجية ….. وكذا إذا أجلاهم ونقل إليها قوما آخرين من أهل الذمة، لأنهم قاموا مقام الأولين. -بدائع الصنائع (2/58)

وقال الحصكفي: (وما فتح عنوة و) لم يقسم بين جيشنا إلا مكة سواء (أقر أهله عليه) أو نقل إليه كفار أخر (أو فتح صلحا خراجية) لأنه أليق بالكافر.

قال الشامي: (قوله إلا مكة) فإنها وإن فتحت عنوة، لكنها عشرية لأنها من جزيرة العرب كما مر (قوله سواء أقر أهله عليه إلخ) أشار إلى أن قول المصنف تبعا للكنز، وأقر أهله عليه ليس بشرط في كونها خراجية بل الشرط عدم قسمتها صرح بذلك في شرح الطحاوي كما في النهر، ولم يقيد كونها خراجية بأن تسقى بماء الخراج لأنه لا فرق بينه وبين ما إذا سقيت بماء العشر كما إذا قسمت بين المسلمين، فإنها عشرية، وإن سقيت بماء الخراج، وإنما التفصيل في الفرق بين ما يسقى بماء العشر أو بماء الخراج في الأرض المحياة لمسلم التي لم تقسم، ولم يقر أهلها عليها كما حققه في البحر تبعا للفتح وغيره ويأتي بتمامه (قوله لأنه أليق بالكافر) لأنه يشبه الجزية لما فيه من معنى العقوبة ولأن فيه تغليظا حيث يجب وإن لم يزرع بخلاف العشر لتعلقه بعين الخارج لا بالأرض. (الدر المختار ورد المحتار: 4/177)

[15]  : قال العلامة الحصكفي: وينبغي أن لا يزاد على النصف ولا ينقص عن الخمس.

قال العلامة الشامي تحته: هذا في خراج المقاسمة ولم يقيد به لانفهامه من التعبير بالنصف والخمس فإن خراج الوظيفة ليس فيه جزء معين تأمل. قال في النهر: وسكت عن خراج المقاسمة، وهو إذا من الإمام عليهم بأراضيهم ورأى أن يضع عليهم جزءا من الخارج كنصف أو ثلث أو ربع، فإنه يجوز ويكون حكمه حكم العشر ومن حكمه أن لا يزيد على النصف وينبغي أن لا ينقص عن الخمس قاله الحدادي اهـ وبه علم أن قول الشارح: وينبغي مذكور في غير محله لأن الزيادة على النصف غير جائزة كما مر التصريح به في قوله ولا يزاد عليه وكأن عدم التنقيص عن الخمس غير منقول فذكره الحدادي بحثا، لكن قال الخير الرملي: يجب أن يحمل على ما إذا كانت تطيق، فلو كانت قليلة الريع كثيرة المؤن ينقص، إذ يجب أن يتفاوت الواجب لتفاوت المؤنة كما في أرض العشر. (الدر المختار ورد المحتار: 4/188)

[16]  : قال الشيخ عوامة في تعليقه علي المصنف لابن أبي شيبة (7/57): والجريب: هنا مساحة من الأرض تعدل ما يسمى بالإردبِّ، وتقدَّر بعرفنا اليوم: 1366.0416 مترا مربعا. اهـ

[17]  : قال المفتي محمد شفيع: جريب …. ہمارے ملك كے مروجہ بيگہ كے قريب ہے- (جواھر الفقہ: 3/375)

[18]   : قال العلامة الحصكفي: (وهو) أي الخراج ( نوعان خراج مقاسمة إن كان الواجب بعض الخارج كالخمس ونحوه ، وخراج وظيفة إن كان الواجب شيئا في الذمة يتعلق بالتمكن من الانتفاع بالأرض كما وضع عمر رضي الله عنه على السواد لكل جريب) هو ستون ذراعا في ستين بذراع كسرى سبع قبضات، وقيل المعتبر في كل بلدة عرفهم، وعرف مصر التقدير بالفدان فتح وعلى الأول المعول بحر (يبلغه الماء صاعا من بر أو شعير ودرهما ) عطف على صاع من أجود النقود زيلعي (ولجريب الرطبة خمسة دراهم ولجريب الكرم أو النخل متصلة) قيد فيهما (ضعفها). (الدر المختار مع رد المحتار: 4/185)

: [19] قال الإمام الكاساني: الخراج نوعان خراج وظيفة وخراج مقاسمة أما خراج الوظيفة فما وظفه عمر – رضي الله عنه – ففي كل جريب أرض بيضاء تصلح للزراعة قفيز مما يزرع فيها ودرهم القفيز صاع والدرهم وزن سبعة، والجريب أرض طولها ستون ذراعا وعرضها ستون ذراعا بذراع كسرى يزيد على ذراع العامة بقصبة وفي جريب الرطبة خمسة دراهم وفي جريب الكرم عشرة دراهم هكذا وظفه عمر بمحضر من الصحابة ولم ينكر عليه أحد ومثله يكون إجماعا. (بدائع الصنائع:2/62)

[20]  : قال العلامة الشامي: والقفيز صاع. (رد المحتار: 4/189)

[21]  : قال المتفي محمد شفيع: ايك صاع = اسي تولہ كے سير سے ساڑهے تين سير (جواھر الفقہ: 3/389) وراجع أيضا: مجلة الكوثر الشهرية، الرابطة: https://www.alkawsar.com/bn/article/432/ )

[22]  : قال الإمام ابن نجيم : والرطاب هو القثاء والبطيخ والباذنجان وما يجري مجراه. (البحر الرائق: 5/ 116 وراجع أيضا: جواھر الفقہ: 3/375)

[23]  : أخرج الإمام مسلم (2896) عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلي الله عليه وسلم: «منعت العراق درهمها وقفيزها، ومنعت الشام مديها ودينارها، ومنعت مصر إردبها ودينارها، وعدتم من حيث بدأتم، وعدتم من حيث بدأتم، وعدتم من حيث بدأتم» شهد على ذلك لحم أبي هريرة ودمه.

قال الإمام الطحاوي : وقد كان رسول الله صلى الله عليه وسلم على علم أن العراق ستكون، وأن كنوز كسرى ستفتح على المسلمين من بعده، وأخبر أصحابَه مع ذلك أن أهل العراق سيمنعون قفيزهم ودرهمهم الواجبين عليهم خراجا لأرضيهم. (أحكام القرآن للطحاوي: 2/28)

[24]  : جاء في الأصل للإمام محمد بن الحسن الشيباني: قلت: أرأيت المسلم يشتري من الذمي أرضاً من أرض الخراج أيجب عليه فيها العشر؟ قال: لا، ولكن عليه الخراج. وبلغنا ذلك عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه. قلت: أرأيت ذمياً اشْترى أرضاً من أرض العشر أيجب عليه فيها العشر؟ قال: لا، ولكن عليه الخراج في قول أبي حنيفة. قلت: ولم؟ قال: لأنه لا يكون على الكافر عشر. (الأصل للشيباني، ط قطر: 2/ 135)

[25]  : قال صاحب الهداية: «ويجوز أن يشتري المسلم أرض الخراج من الذمي ويؤخذ منه الخراج لما قلنا) ، وقد صح أن الصحابة اشتروا أراضي الخراج وكانوا يؤدون خراجها. فدل على جواز الشراء وأخذ الخراج وأدائه للمسلم من غير كراهة».

وقال الإمام ابن الهمام: قال المصنف: (وقد صح أن الصحابة اشتروا أراضي الخراج وكانوا يؤدون خراجها) قال البيهقي: قال أبو يوسف: القول ما قال أبو حنيفة أنه كان لابن مسعود وخباب بن الأرت والحسين بن علي ولشريح أرض الخراج فدل على انتفاء كراهة تملكها. حدثنا مجالد بن سعيد عن عامر عن عتبة بن فرقد السلمي أنه قال لعمر بن الخطاب – رضي الله عنه -: إني اشتريت أرضا من أرض السواد، فقال: عمر: أنت فيها مثل صاحبها. (الهداية مع فتح القدير: 6/40-41)

[26]  : قال الإمام برهان الدين المرغيناني: ومن أسلم من أهل الخراج أخذ منه الخراج على حاله، لأن فيه معنى المؤنة، فيعتبر مؤنة في حالة البقاء، فأمكن إبقاؤه على المسلم. (الهداية ص: 398)

قال ابن الهمام رحمه الله: قال البيهقي: وأخبرنا أبو سعيد، حدثنا أبو العباس الأصم، حدثنا الحسن بن علي بن عفان، حدثنا يحيى بن آدم قال: حدثنا حسن بن صالح عن قيس بن مسلم عن طارق بن شهاب قال: أسلمت امرأة من أهل نهر الملك، فكتب عمر بن الخطاب – رضي الله عنه -: إن اختارت أرضها، وأدت ما على أرضها من الخراج فخلوا بينها وبين أرضها، وإلا فخلوا بين المسلمين وبين أرضهم. فقال علي: إن أقمت في أرضك رفعنا عنك الخراج عن رأسك، وأخذناها من أرضك، وإن تحولت عنها فنحن أحق بها. وقال ابن أبي شيبة: حدثنا حفص بن غياث عن محمد بن قيس عن أبي عون محمد بن عبيد الله الثقفي عن عمر وعلي قالا: إذا أسلم وله أرض وضعنا عنه الجزية، وأخذنا خراجها. قال المصنف (فدل على جواز الشراء، وأخذ الخراج، وأدائه للمسلم من غير كراهة) …….. لا كما يقول بعض المتقشفة – رحمه الله – عليهم ورحمنا بهم من كراهة ذلك؛ لما روي «أنه – عليه الصلاة والسلام – رأى شيئا من آلات الحراثة فقال: ما دخل هذا بيت قوم إلا ذلوا» ظنا منهم أن الذل بالتزام الخراج، وليس كذلك، بل المراد أن المسلمين إذا اشتغلوا بالزراعة واتبعوا أذناب البقر قعدوا عن الغزو فكر عليهم عدوهم فجعلوهم أذلة لا ما ذكروه، إذ لا شك في أنه يجوز للمسلم التزام ما لا يجب عليه ابتداء؛ ألا ترى أنه لو تكفل بجزية ذمي جاز بلا كراهة.  وروى عبد الرزاق وابن أبي شيبة: حدثنا الثوري عن قيس بن مسلم عن طارق بن شهاب أن دهقانة من أرض نهر الملك أسلمت، فقال عمر: ادفعوا إليها أرضها تؤدي عنها الخراج. وقال ابن أبي شيبة وعبد الرزاق في مصنفيهما: حدثنا هشيم بن بشير عن شيبان بن الحكم عن زبير بن عدي أن دهقانا أسلم على عهد علي – رضي الله عنه. -فتح القدير للكمال ابن الهمام (6/ 40)

[27]  : قال العلامة الزرقاء في شرح القواعد الفقهية (ص: 89) : الاستصحاب عبارة عن الحكم على أمر ثابت في وقت بثبوته في وقت آخر. وهو نوعان: الأول: جعل الأمر الثابت في الماضي مستصحبا للحال. …. الثاني: جعل الأمر الثابت في الحال مستصحبا ومنسحبا للماضي، وهو المسمى بالاستصحاب المعكوس، وبتحكيم الحال.

[28]  : هو الشيخ الصالح المعمر جلال الدين محمود العمري التهانيسري، أحد كبار المشايخ، حفظ القرآن واشتغل بالعلم، وجد في البحث والإشتغال حتى صار أبدع أبناء العصر، ثم درس وأفاد زماناً طويلاً وأفتى وصنف وخرج. (كذا في نزهة الخواطر: 4/324)

: [29]قال الإمام الكشميري : بلغني عن الشيخ الكنكوهي: أنه أفتى بأن مالك الأرض إذا لم يعلم أن أرضه انتقلت إليه من أيدي الكفار، وكانت في يده، فعليه العشر. (معارف السنن: 5/219 ومثله في العرف الشذي: 2/110)

[30]  : قال المفتي محمد شفيع رحمه الله: خلاصہ يہ كہ جوزمينيں سندھ  ،پنجاب يا ہندوستان كے كسى دوسرے  علاقہ ميں مسلمانوں كے اندر نسلا بعد نسل متوارث  چلى آرہى ہيں، اور كسی غير مسلم مالك سے ان كى خريدنے  كا كوئى ثبوت موجود  نہين ہے، تو بطوراستصحاب حال كے ان زمينوں كا پہلا مالك مسلمان ہى كو سمجها جاۓ  گا، اگرچہ اس علاقہ كى عام زمينوں  پر غيرمسلم  مالكان سابق كى ملكيت برقرار رکھنا، اول فتح ميں معروف ومشہور ہو، كيونكہ ايسے علاقوں ميں بھی مسلمانوں  کا  پہلا مالك زمين بن جانا، ان جند صورتون كی ذريعہ ممكن ہے، جوابھی بيان كی گئی ہيں،محض اس بنا پر كہ اس خطہ كی عام زمينيں ہندو مالكان كی ملكيت ہيں كسی مسلمان كی مملوكہ زمين كی ملكيت كو مشتبہ نہيں كہا جاسكتا ۔

حضرت شاه جلال تھانيسرى رحمہ الله عليہ كارسالہ”احكام الاراضى” جس كاذكراس كتاب كے باب اول ميں تفصيل كے ساتھ آيا ہے، اور اس كے مضامين كی پوری تلخيص بھی اس كتاب مين لے لی گئی ہے، اس رسالہ كا اصل موضوع بحث ہی يہ ہے، كہ جس خطہ ميں جو زمينيں مسلمان زمين داروں كے مالكانہ قبضہ مين نسلا بعد نسل چلى آئی ہيں، ان كی  ملكيت كو صرف اس بنياد پر مشتبہ نہيں كہا جاسكتا كہ اس علاقہ كی ابتداء فتح كی وقت غير مسلم مالكان اراضی كا قبضہ  مالكانہ بدستور قائم ركھا گيا تها، پھر مسلمان اس كے  ابتدائی مالك كيسےبن گۓ، وجہ اس كی تفصيل كےساتھ ابھی گزر چكی ہے كہ اس ميں منجملہ بہت سے احتمالات كے ايك يہ احتمال بھی ہے كہ كسی خطہ كی زمينيں غير آباد اور لاوارث ره گئيں، اس لیے  وه ملك بيت المال ميں داخل ہوگئيں، پھر بيت المال كی طرف سے عطاء جاگير كے طور پر يا قيمة فروخت كے  ذريعہ اس كا  پہلا مالك كوئی مسلمان بنا ہو.

[31]   : قال المفتي رشيد أحمد اللدهيانوي رحمه الله بعد تفصيل الكلام في أراضي الهند والسند: غرضیکہ تقریباً تیرہ سو سال کے انقلابات کے بعد کسی زمین کی  صحیح  حقیقت کا حال  معلوم کرنا ممکن نہیں ، لہٰذا  حضرت  تھانوی قدس سرہ کی تحقیق  ہی حق ہے ، مگر یہ حکم  ان زمینوں کا ہے جو عرصۂ دراز سے نسلا بعد نسلِ  مملوکہ چلی  آتی ہیں ۔( احسن الفتاوی: 4/380)

[32]  : وقال العلامة تقي العثماني دامت بركاتهم في «فتاواه» (2/127)

پاکستان کے عشری وخراجی زمینوں کا حکم

سوال:۔عشر کس زمین پر واجب ہے؟ سرکار جو خراج لیتی ہے کیا اس زمین پر عشر واجب رہتا ہے اور کتنا ہوتا ہے؟ مزارع اور زمیندار میں سے ہر ایک الگ الگ دے یا ایک پر لازم ہے؟ عشر مدرسہ یا مسجد کو دینا جائز ہے اگر دینا جائز ہو تو ملازمین مدرسہ کو دینا اور کتب بائے مدرسہ خریدنا جائز ہے؟ عشر دینے سے زکوٰۃ ادا ہوجاتی ہے؟

جواب :۔پاکستان کے بیشتر اراضی عشری ہیں، جن زمینوں کا خراجی ہونا کسی خاص دلیل سے ثابت نہ ہو ان کو عشری ہی سمجھنا چاہیئے، لہٰذا اگر وہ بارانی ہو یعنی صرف بارش سے سیراب ہوتی ہو تو اس کی پیداوار میں سے دسواں حصہ اور اگر نہری ہو یعنی ان کی آب پاشی پر محنت یا خرچ کرنا پڑتا ہو تو بیسواں حصہ بطور عشر نکالنا واجب ہے، اس عشر کا حکم زکوٰۃ کا سا ہے، لہٰذا اسے مصارف زکوٰۃ ہی میں صرف کیا جاسکتا ہے، حکومت جو ٹیکس وصول کرتی ہے اس سے عشر ادا نہیں ہوتا، عشر الگ نکالنا ضروری ہے۔ واللہ اعلم                   

احقر محمد تقی عثمانی عفی عنہ

الجواب صحیح

بندہ محمد شفیع عفا اللہ عنہ

 

 

[33]  : تمام المسألة كما قال العلامة الحصكفي : (وجد مسلم أو ذمي … معدن نقد و) نحو (حديد …. في أرض خراجية أو عشرية … خمس) مخففا أي: أخذ خمسه، لحديث «وفي الركاز الخمس»، وهو يعم المعدن كما مر.

وقال الشامي: المراد بالعشرية والخراجية ما تكون وظيفتها العشر أو الخراج، سواء كانت بيد أحد أو لا، فتشمل المفازة وغيرها بدليل ما قدمناه عن الخانية من أن أرض الجبل عشرية، فيكون المراد: الاحتراز بها عن دار الحرب، ويدل عليه أنه في متن درر البحار عبر بمعدن غير الحرب، فعلم أن المراد معدن أرضنا، ولهذا قال القهستاني بعد قوله في أرض خراج أو عشر: الأخصر في أرضنا سواء كانت جبلا أو سهلا مواتا أو ملكا. واحترز به عن داره وأرضه وأرض الحرب اهـ. ثم رأيت عين ما قلته في شرح الشيخ إسماعيل حيث قال: ويحتمل أن يكون احترازا عما وجد في دار الحرب، فإن أرضها ليست أرض خراج أو عشر. (الدر المختار ورد المحتار: 2/318)

[34]  : قال الإمام ابن كثير رحمه الله في تفسيره: تفسير سورة الأنعام، وهي مكية، قال العوفي وعكرمة وعطاء، عن ابن عباس: أنزلت سورة الأنعام بمكة. وقال الطبراني: حدثنا علي بن عبد العزيز، حدثنا حجاج بن منهال، حدثنا حماد بن سلمة، عن علي بن زيد، عن يوسف بن مهران، عن ابن عباس، قال: نزلت سورة الأنعام بمكة ليلا جملة، حولها سبعون ألف ملك يجأرون حولها بالتسبيح. وقال سفيان الثوري، عن ليث، عن شهر بن حوشب، عن أسماء بنت يزيد قالت: نزلت سورة الأنعام على النبي صلى الله عليه وسلم جملة واحدة وأنا آخذة بزمام ناقة النبي صلى الله عليه وسلم، إن كادت من ثقلها لتكسر عظام الناقة. (تفسير ابن كثير: 3/237)

[35]  : قال الإمام الشاطبي: كان المسلمون قبل الهجرة آخذين بمقتضى التنزيل المكي على ما أداهم إليه اجتهادهم واحتياطهم؛ فسبقوا غاية السبق حتى سموا “السابقين” بإطلاق …. إن التنزيل المكي أمر فيه بمطلق إنفاق المال في طاعة الله، ولم يبين فيه الواجب من غيره، بل وكل إلى اجتهاد المنفق، ولا شك أن منه ما هو واجب، ومنه ما ليس بواجب، والاحتياط في مثل هذا المبالغة في الإنفاق في سد الخلات وضروب الحاجات، إلى غاية تسكن إليها نفس المنفق … لكن لما كان هذا الميدان لا يسرح فيه كل الناس قيد في التنزيل المدني حين فرضت الزكوات، فصارت هي الواجبة انحتاما، مقدرة لا تتعدى إلى ما دونها، وبقي ما سواها على حكم الخيرة. (الموافقات 5/ 242)

وقال العلامة طاهر بن عاشور  : وقد أجمل الحق اعتمادا على ما يعرفونه، وهو حق الفقير، والقربى، والضعفاء، والجيرة. فقد كان العرب، إذا جذوا ثمارهم، أعطوا منها من يحضر من المساكين والقرابة. وقد أشار إلى ذلك قوله تعالى: فانطلقوا وهم يتخافتون أن لا يدخلنها اليوم عليكم مسكين. فلما جاء الإسلام أوجب على المسلمين هذا الحق وسماه حقا كما في قوله تعالى: والذين في أموالهم حق معلوم للسائل والمحروم  وسماه الله زكاة في آيات كثيرة، ولكنه أجمل مقداره وأجمل الأنواع التي فيها الحق، ووكلهم في ذلك إلى حرصهم على الخير، وكان هذا قبل شرع نصبها ومقاديرها، ثم شرعت الزكاة وبينت السنة نصبها ومقاديرها. (التحرير والتنوير:  8 /120)

وقال المفتي محمد شفيع: اور امام تفسیر ابن كثير … اور ابن عربی اندلسی  … کے  نزديك  وجوب  زكوة  كا اصل  حكم   مکہ  میں   نازل  ہو چکا  تها   سورۂمزمل  كی  آيت   زكوة     كےحكم   پر  مشتمل  ہے، جو  باتفاق  مكی ہے،  البتہ  مقدار زكوة     اور نصاب كا تعين  وغيره      ہجرت     كے بعد ہوا،  اور   اس آيت    سے   صرف     اتنا معلوم  ہوتا   ہے کہ  زمین  کی   پيداور  پر الله  تعالى       كی  طرف  سے    كوئى   حق  عائد  کیا  گیا  ہے، اس  کی مقدار كى تعىىن اس  میں  مذكور  نہیں، اس لئے بحق مقدار يہ آيت مجمل ہے، اور مکہ  معظمہ  میں  اس تعىىن  مقدار كى يہاں  ضرورت بهى اس لئے نہ  تهى کہ وہاں  مسلماوں كو يہ اطمنيان  حاصل نہ تها کہ زمینوں  اور باغوں  کی پيداوار  سہولت  كے ساتھ  حاصل   كرسکیں، اس  لئے  اس زمانہ میں تو  رواج وہى رہا جو پہلے  سے نيك  لوگوں میں   چلا  آتا تها ،  کہ کھيتى  كاٹنے ياپهل توڑنے كےوقت جو غريب  غرباء وہاں جمع ہو جاتے ان كو كچھ ديدتے تهے، كوئى خاص مقدار معين نہ تهى، اسلام سے پہلے  دوسرے امتوں  میں بهى کھىتى اور پهلوں میں اس طرح  كا  صدقہ دینے  كا رواج قرآن كريم كى آيت «إنا بلونا هم كما بلونا أصحاب الجنة»میں مذكور ہے، ہجرت كے دو سال بعد جس طرح دوسرے اموال كے نصاب اور مقدار زكوةکی تفصيلات رسول الله صلىَ الله علىہ وسلم  نے بوحى إلہى بيان فرمائى، اسى طرح زمین كى زكوة كا بيان فرمايا، جو حضرت معاذ بن جبل اور ابن عمر اور جابر بن عبد الله رضى الله عنہم كى روايت سے تمام كتب حديث میں منقول ہے«ماسقت السماء ففيه العشر وما سقي بالسانية فنصف العشر»یعنی بارانی زمینوں میں جہاں آبپاشى كا كوئى ساماں نہیں صرف بارش پرپيداوار كا مدار ہے’ ان زمینوں كى پيداوار كا دسواں حصہ بطور زكوة نکالناواجب ہے، اور جو زمینيں کنووں سے سيراب كى  جاتى ہیں ،اں كى پيداوار كا بيسواں حصہ واجب ہے- (معارف القرآن:  3/60)

وقال الشيخ سعيد أحمد بالنبوري رحمه الله : جاننا چاہۓكہ مكى دور ميں مال كى زكات اورزرعى پيداور كا عشر واجب تها، مگر اس وقت ان كى كوئى خاص شرح مقرر نہيں كى تهى،  مدنى دور ميں ان كى تفصيلات نازل ہوئیں، مكى دور ميں تو انفاق كا حكم تها، اور زرعى پيداور كى بارے ميں يہ حكم تها كہ جب كهيت كى كٹائى كا وقت آئے اور پھلوں كى تڑائى كا وقت آئے توغريبوں كواپنى صوابديد سے كچھ ديديا كرے. –هدايت القران: 2/510

[36]  : قال الإمام ابن كثير في تفسيره: وقوله تعالى: {وآتوا حقه يوم حصاده} قال ابن جرير: قال بعضهم: هي الزكاة المفروضة. حدثنا عمرو، حدثنا عبد الصمد، حدثنا يزيد بن درهم قال: سمعت أنس بن مالك يقول: {وآتوا حقه يوم حصاده} قال: الزكاة المفروضة. وقال علي بن أبي طلحة، عن ابن عباس: {وآتوا حقه يوم حصاده} يعني: الزكاة المفروضة، يوم يكال ويعلم كيله. وكذا قال سعيد بن المسيب. وقال العوفي، عن ابن عباس: {وآتوا حقه يوم حصاده} وذلك أن الرجل كان إذا زرع فكان يوم حصاده، لم يخرج مما حصد شيئا فقال الله: {وآتوا حقه يوم حصاده} وذلك أن يعلم ما كيله وحقه، من كل عشرة واحدا، ما يلقط الناس من سنبله. ……….. وقال آخرون: هذا كله شيء كان واجبا، ثم نسخه الله بالعشر ونصف العشر. حكاه ابن جرير عن ابن عباس، ومحمد بن الحنفية، وإبراهيم النخعي، والحسن، والسدي، وعطية العوفي. واختاره ابن جرير، رحمه الله.

قلت: وفي تسمية هذا نسخا نظر؛ لأنه قد كان شيئا واجبا في الأصل، ثم إنه فصل بيانه وبين مقدار المخرج وكميته. قالوا: وكان هذا في السنة الثانية من الهجرة، فالله أعلم.(تفسير ابن كثير ت سلامة 3/ 348-349)

[37]  : قال العلامة الحصكفي رحمه الله: (ويجب الخراج في أرض الوقف) إلا المشتراة من بيت المال إذا وقفها مشتريها فلا عشر ولا خراج شرنبلالية معزيا للبحر وكذا لو لم يوقفها كما ذكرته في شرح الملتقى.

وقال العلامة الشامي تحته: (قوله فلا عشر ولا خراج) لم يذكر في البحر العشر وإنما قال بعدما حقق: أن الخراج ارتفع عن أراضي مصر لعودها إلى بيت المال بموت ملاكها قال: فإذا اشتراها إنسان من الإمام بشرطه شراء صحيحا ملكها، ولا خراج عليها، فلا يجب عليه الخراج لأن الإمام قد أخذ البدل للمسلمين فإذا وقفها وقفها سالمة من المؤن، فلا يجب الخراج فيها وتمامه فيما كتبناه في التحفة المرضية في الأراضي المصرية اهـ. نعم ذكر العشر في تلك الرسالة فقال: إنه لا يجب أيضا لأنه لم ير فيه نقلا. قلت: ولا يخفى ما فيه لأنهم قد صرحوا بأن فرضية العشر ثابتة بالكتاب والسنة والإجماع والمعقول، وبأنه زكاة الثمار والزروع وبأنه يجب في الأرض الغير الخراجية، وبأنه يجب فيما ليس بعشري ولا خراجي كالمفاوز والجبال، وبأن سبب وجوبه الأرض النامية بالخارج حقيقة، بأنه يجب في أرض الصبي والمجنون والمكاتب لأنه مؤنة الأرض، وبأن الملك غير شرط فيه بل الشرط ملك الخارج، فيجب في الأراضي الموقوفة لعموم قوله تعالى – {أنفقوا من طيبات ما كسبتم ومما أخرجنا لكم من الأرض} [البقرة: 267]- وقوله تعالى – {وآتوا حقه يوم حصاده} [الأنعام: 141]- وقوله – صلى الله عليه وسلم – «ما سقت السماء ففيه العشر وما سقي بغرب أو دالية ففيه نصف العشر» ولأن العشر يجب في الخارج لا في الأرض، فكان ملك الأرض وعدمه سواء كما في البدائع. ولا شك أن هذه الأرض المشتراة وجد فيها سبب الوجوب وهو الأرض النامية وشرطه وهو ملك الخارج، ودليله وهو ما ذكرنا وقول المتن: يجب العشر في مسقى سماء وسيح إلخ فالقول بعدم الوجوب في خصوص هذه الأرض يحتاج إلى دليل خاص، ونقل صريح ولا يلزم من سقوط الخراج المتعلق بالأرض سقوط العشر المتعلق بالخارج على أنه قد ينازع في سقوط الخراج، حيث كانت من أرض الخراج أو سقيت بمائة بدليل أن الغازي الذي اختط له الإمام دارا لا شيء عليه فيها فإذا جعلها بستانا، وسقاها بماء العشر، فعليه العشر أو بماء الخراج فعليه الخراج كما يأتي مع أن الواقع الآن في كثير من القرى أو المزارع الموقوفة أنه يؤخذ منها للميرى النصف أو الربع، أو العشر وقد نبهنا على ذلك في باب العشر من كتاب الزكاة. (الدر المختار ورد المحتار: 4/ 178)

[38]   : قال الإمام ابن الهمام رحمه الله: والأرض لا تخلو عن وظيفة مقررة فيها شرعا. (فتح القدير 2/ 254)

وقال العلامة الشامي: وعلى فرض سقوط الخراج لا يسقط العشر، فإن الأرض المعدة للاستغلال لا تخلو من إحدى الوظيفتين.  (رد المحتار: 2/327)

قال الإمام ابن تيمية رحمه الله: إذا زرع الجندي إقطاعة فعليه فيه الزكاة، ومذهب سائر الأئمة أنه لا بد في الأرض من عشر أو خراج، وهل يجتمعان؟ قال أبو حنيفة: لا، فلو كان على مصر خراج كما كان في أول الإسلام كان في وجوب العشر عليها نزاع، فأما اليوم فلا خراج عليها، لأن الأرض الخراجية عند أبي حنيفة هي التي يملكها صاحبها، وعليه خراجها، وهو لخراج الذي ضربه عمر على ما فتح من الأرض عنوة وأقرها في أيدي أربابها بالخراج الذي ضربه، فأما الجند فلا يملكون الأرض اليوم، فلا خراج عليهم، فيكون عليهم العشر بلا نزاع. -(مختصر الفتاوى المصرية ص: 276)

وقال أيضا: لا تخلو الأرض من عشر أو خراج باتفاق المسلمين. … فمن قال: إن أرض مصر اليوم لا عشر عليها عند أبي حنيفة فقد أخطأ، لأن الجند لا يملكونها ولا الفلاحون، ولم يضرب على المقطع خراج في خدمته، وإذا تركت الأرض المملوكة بلا عشر ولاخراج كان هذا مخالفا لإجماع المسلمين. (مختصر الفتاوى المصرية: ص: 273)

[39]  : قال العلامة المفتي محمد شفيع رحمه الله:

اصل بات يہ كہ خود يہ مسئلہ غور طلب ہے كہ اراضي دار الحرب كے عشرى اور خراجي دونوں سے خارج ہونے كا مطلب كيا ہے؟

غور كرنے پر شرح سير كى عبارت سے حقيقت بالكل واضح ہو جاتى ہے وه يہ ہےكہ دار الحرب سے اس جگہ وه دار الحرب مراد ہے جو اصل سے دار الحرب ہے، اس پر نہ كسى وقت مسلمانوں كى حكومت رہى نہ وہاں مسلمانوں كے باقاعده بسنے اور زمينيں خريدنے كا كوئى تصور ہے، ايسے دار الحرب كى زمينيں ظاہر ہے كہ مسلمانوں كى ملك نہيں ہوں گى، بلكہ اہل حرب كفار كى ملكيت ہوں گى، جو احكام شرعيہ فرعيہ كے مخاطب نہيں اس لیے  ايسے دار الحرب كى زمينيں نہ عشرى ہيں نہ خراجى-

شرح سير كي عبارت اس مضمون كے لیے  بالكل واضح ہے اور اس كے الفاظ ذيل پر مكرر نظر كى جاۓ-

لأن العشر والخراج إنما يجب في أراضي المسلمين، وهذه أراضي أهل الحرب، وأراضي أهل الحرب ليست بعشرية ولا خراجية.

اس عبارت ميں اراضى المسلمين سے مراد وه اراضى ہيں جو اسلامى حكومت واقتدار ميں داخل ہيں، خواه ملكيت كسى غير مسلم كى ہو، كيونكہ يہ بات اپنى جگہ متيقن ہے كہ خراج ابتداءً كسى مسلمان كى ملكيت پر نہيں لگايا جا سكتا، اس لیے  اس جگہ اراضى المسلمين سے اراضى حكومت مسلمہ مراد ہونا واضح ہے-

ليكن يہ ظاہر ہے كہ يہ حكم ايسے ہى خطہ ملك كے لیے  ہو سكتا ہے، جہاں ابتداء سے مسلمانوں كى كوئى ملكيت نہيں ہے، ہندوستان كا معاملہ اس سے بالكل مختلف ہے، وه تقريبا آٹھ سو برس دار الاسلام رہا ہے، يہاں لاکھوں مسلمان اپنى اپنى زمينوں كے آج تك مالك چلے آتے ہيں، غير مسلم اقتدار كے وقت اگر چہ ملك كو دار الحرب كہا جاۓ گا، ليكن يہ دار الحرب أصلى دار الحرب سے مختلف ہوگا، جو دار الاسلام كے بعد پھر دار الحرب بن گيا ہے، كہ اس ميں املاك مسلمانوں كى موجود ہيں-

اس لیےشرح سير اور شامى باب الركاز كى روايات اس پر منطبق نہيں، بلكہ جب يہاں مسلمانوں كى ملكيت ميں زمينيں ہيں، تو اس پر احكام عشر وخراج كے عائد ہوں گے، شرح سير كي عبارت خود اس كے لیے  كافي دليل ہے. (جواھر الفقہ: 3/357-358)

: [40] قال العلامة ظفر أحمد العثماني : والظاهر أن القول بكون أرض الحرب ليست بعشرية ولا خراجية مبني على القول: بأن العقار لا تثبت فيه يد المالك حقيقة، بل اليد للملك، فأرض أهل الحرب لا عشر فيها: لكونها بيد ملكهم، وملكهم مغنوم، فما في يده مغنوم أيضا، والعشر إنما يوظف على ما هو بيد المسلم، ولا خراج، لأن خراج الأرض لا يجب إلا على من هو من أهل دار الإسلام، لأنه حكم من أحكام المسلمين، وحكم المسلمين لا يجرى إلا على من هو من أهل دار الإسلام ، فعلى قياس قول أبي يوسف: ينبغي وجوب العشر في أرض المسلم في أرض الحرب إذا أسلم عليها، لأنه لا يقول بكون أرضه وداره فيئا للمسلمين إذا ظهروا على الدار، بل يقول بثبوت يد المالك عليهما حقيقة، والعشر زكاة الأرض فيجب عليهما كوجوب الزكاة في ما بيده من النقود المنقولة، وقد عرفت في باب : «من أسلم على شيء فهو له» أن قول أبي يوسف هو الصحيح الراجح عندنا، لقوة دليله، وكونه أرفق بالناس، فكذلك وجوب العشر في أرض من أسلم في أرض الحرب هو الراجح. وبالأولى يجب في أرض من كان فيها من أبناء الفاتحين الذين فتحوها عنوة أو من أبناء من أسلم هناك، والدار دار الإسلام، ثم استولى الكفار على الدار، ولم يتعرضوا لما بأيديهم من الدور والعقارات، لم أره صريحا، ولكنه مقتضى قول أبي يوسف رحمه الله الراجح عندنا في الباب، ولعل الله يحدث بعد ذلك أمرا، وهو أعلم بالصواب. ثم اطلعت على قول أبي يوسف صريحا في كتاب الخراج له، ونصه: قال أبو يوسف: وسئلت يا أمير المؤمنين عن قوم من أهل الحرب أسلموا على أنفسهم وأرضهم ما الحكم في ذلك؟ فإن دماءهم حرام وما أسلموا عليه من أموالهم فلهم، وكذلك أرضهم لهم، وهي أرض عشر بمنزلة المدينة حيث أسلم أهلها مع رسول الله صلى الله عليه وسلم، وكانت أرضهم أرض عشر.

[41]  : قال الشيخ المفتي رشيد أحمد اللدهيانوي رحمه الله: بعض حضرات کو شامیہ باب الرکاز کی عبارت ، فإن أرضها أى دارالحرب ليست أرض خراج وعشر،سےمغالطہ لگا ہے  کہ یہ دار الحرب میں رہنے والے مسلمانوں کی اراضی کا حکم ہے  کہ ان پر نہ عشر ہے نہ خراج،حالانکہ مقصود یہ ہے کہ اہل حرب کی اراضی پر عشر یا خراج نہیں ،کیونکہ وہ احکام شرع کے مکلف نہیں ،چنانچہ  شمس الائمہ  سرخسی کے  عبارت اس مراد کی وضاحت کر رہی ہے ،ونصه أن العشروالخراج إنما يجب في أراضي المسلمين، وهذه أراضي أهل العرب ليست بعشرية ولاخراجية -شرح السير الكبير303ج4 (احسن الفتاوی: 4/381)

[42]  : قال العلامة المفتي محمد شفيع رحمه الله: عشر كا ضابطہ شرعى امام اعظم ابو حنيفہ كے نزديك يہ ہے كہ پيداوار كم ہو، يا زيادہ ہر حال ميں اس كا عشر  نكالنا واجب ہے، اس كے لیے  زكوة كى طرح كوئى خاص نصاب نہيں جس سے كم ہونے پر عشر ساقط ہو جاۓ۔(جواھر الفقہ: 3/367-368، ومثله في امداد الفتاوى: 4/86)

قال الراقم عفا الله عنه: وأما قول الشامي في «رد المحتار» (2/326( تبعا  «للنهر الفائق» : «يجب فيما دون النصاب بشرط أن يبلغ صاعا وقيل نصفه» فلم نجده في غيرهما من معتبرات المذهب، بل بنص أبي يوسف المذكور آنفا يشعر بخلافه، فإن حزمة من بقل قد لا يبلغ وزنُه صاعا، على أنها صورة نادرة جدا، لأن الخارج في المزارع والبساتين لا بد أن يبلغ ذلك وأكثرَ، فأعرضنا عن ذكره اتباعا لأكابرنا وتسهيلا لقُرَّاءنا، والله أعلم.

[43] فتح القدير للكمال ابن الهمام (2/ 243): وفيه من الآثار أيضا ما أخرج عبد الرزاق أخبرنا معمر عن سماك بن الفضل عن عمر بن عبد العزيز قال: فيما أنبتت من قليل وكثير العشر، وأخرج نحوه عن مجاهد وعن إبراهيم النخعي، وأخرجه ابن أبي شيبة أيضا عن عمر بن عبد العزيز ومجاهد وعن النخعي، وزاد في حديث النخعي: حتى في كل عشر دستجات بقل أستجة. اهـ

[44]  : قال الإمام الجصاص رحمه الله: والحجة لأبي حنيفة في إيجاب الحق في جميع الأصناف خلا من ذكرنا، قول الله تعالى: {يا أيها الذين أمنوا أنفقوا من طيبات ما كسبتم ومما أخرجنا لكم من الأرض}. وعمومه يوجب الحق في كل خارج إلا ما قام دليله. ويدل عليه أيضًا قوله تعالى: {والنخل والزرع مختلفا أكله والزيتون والرمان متشبهًا وغير متشابه كلوا من ثمره إذا أثمر وأتوا حقه يوم حصاده}، وذلك عام في كل ثمرة في جميع ما يقع فيه الحصاد. (شرح مختصر الطحاوي للجصاص: 2/288)

وقال الإمام ابن العربي رحمه الله: وقال أبو حنيفة: تجب في كل ما تنبته الأرض من المأكولات من القوت والفاكهة والخضر، وبه قال عبد الملك بن الماجشون في أصول الثمار دون البقول……… وأما أبو حنيفة فجعل الآية مرآته فأبصر الحق، وقال: إن الله أوجب الزكاة في المأكول قوتا كان أو غيره وبين النبي صلى الله عليه وسلم ذلك في عموم قوله: «فيما سقت السماء العشر». وقد أشرنا في مسائل الخلاف إلى مسالك النظر فيها في كتاب الإنصاف والتخليص. وقد آن تحديد النظر فيها كما يلزم كل مجتهد. فالذي لاح بعد التردد في مسالكه أن الله سبحانه لما ذكر الإنسان بنعمه في المأكولات التي هي قوام الأبدان وأصل اللذات في الإنسان، عليها تنبني الحياة، وبها يتم طيب المعيشة عدد أصولها تنبيها على توابعها، فذكر منها خمسة: الكرم، والنخل، والزرع، والزيتون، والرمان. فالكرم والنخل: يؤكل في حالين فاكهة وقوتا. والزرع يؤكل في نوعين: فاكهة وقوتا. والزيت: يؤكل قوتا واستصباحا. والرمان: يؤكل فاكهة محضة. وما لم يذكر مما يؤكل لا يخرج عن هذه الأقسام الخمسة. فقال تعالى: هذه نعمتي فكلوها طيبة شرعا بالحل طيبة حسا باللذة، وآتوا الحق منها يوم الحصاد. (أحكام القرآن لابن العربي ط العلمية: 2/283)

وقال ابن أبي شيبة: حدثنا وكيع، عن أبي حنيفة، عن حماد، عن إبراهيم، قال: في كل شيء أخرجت الأرض زكاة ، حتى في عشر دستجاتٍ: دستجة بقل. (مصنف ابن أبي شيبة: 10125)

وفي الأصل: قلت: فإن زرع فيها بقلاً أو بطيخاً أو خياراً أو قثاءً أو حبوباً أو نحو ذلك أو قرعًا هل يجب في شيء من هذا العشر؟ قال: نعم، يؤخذ العشر من هذا كله. وهذا كله قول أبي حنيفة. وقال أبو يوسف ومحمد: ليس في الخُضَر التي ليست لها ثمرة باقية عشر، نحو الرَّطْبَة والبقول كلها والبطيخ والقثاء وما أشبه ذلك. (الأصل للشيباني، ط: قطر، 2/ 131)

[45]  : جاء في الأصل للإمام محمد: أرأيت إن كان صاحب الركاز محتاجاً إلى جميع ذلك هل يسعه فيما بينه وبين الله تعالى أن لا يرفعه إلى الإمام ولا يؤدي خمسه؟ قال: نعم. قلت: أرأيت إن أصاب الرجل ركازاً فأعطى الخمس منه أباه أو أمه أو جده أو جدته وهم محتاجون أيجزيه؟ قال: نعم. قلت: ولم وهذا لا يجزي في الزكاة ولا في عشر الأرض؟ قال: ليس هذا بمنزلة الزكاة ولا عشر الأرض. (الأصل: 2/139)

وقال العلامة الحصكفي: (ترك السلطان) أو نائبه (الخراج لرب الأرض) أو وهبه له ولو بشفاعة (جاز) عند الثاني وحل له لو مصرفا وإلا تصدق به به يفتى، … (ولو ترك العشر لا) يجوز إجماعا ويخرجه بنفسه للفقراء سراج.

قال العلامة الشامي:  (قوله وحل له لو مصرفا) … وفي القنية ويعذر في صرفه إلى نفسه إن كان مصرفا كالمفتي، والمجاهد والمعلم والمتعلم والذاكر والواعظ عن علم، ولا يجوز لغيرهم، وكذا إذا ترك عمال السلطان الخراج لأحد بدون علمه. اهـ. (قوله لا يجوز إجماعا) لعل وجهه أن العشر مصرفه مصرف الزكاة لأنه زكاة الخارج، ولا يكون الإنسان مصرفا لزكاة نفسه بخلاف الخراج، فإنه ليس زكاة ولذا يوضع على أرض الكافر هذا ما ظهر لي. (الدر المختار ورد المحتار: 4/ 193)

جاء في فتاوى جامعة العلوم الإسلامية بنوري تاون: واضح  رہے  کہ عشر کا مدار زمین کی پیداوار پر ہے، اس کے لیے شریعت نے کوئی نصاب مقرر نہیں کیا، بلکہ زمین کی کل پیداوار پر عشر کی ادائیگی کو لازم قرار دیا ہے، جس کی تفصیل یہ ہے کہ :اگر عشری زمین سال کے اکثر حصہ میں قدرتی آبی وسائل (بارش، ندی، چشمہ وغیرہ) سے سیراب کی جائے تو اس میں عشر (یعنی کل پیداوارکا دسواں حصہ) واجب ہوتا ہے، اور اگر وہ زمین مصنوعی آب رسانی کے آلات ووسائل (مثلاً ٹیوب ویل یا خریدے ہوئے پانی (جس میں راج بہائے کا پانی بھی شامل ہے) سے سیراب کی جائے تو اس میں نصفِ عشر (یعنی کل پیداوار کا بیسواں حصہ) واجب ہوتا ہے۔ ’’عشر‘‘ (دسواں حصہ )یا ’’نصف عشر‘‘(بیسواں حصہ)کل پیداوار پر لازم ہوتا ہے، عشریانصف عشر  ادا کرنے سے پہلے قرض وغیرہ دیگر اخراجات کی رقم   بھی الگ نہیں کی جاتی۔

لہذاصورتِ مسئولہ میں اگر کوئی شخص غریب ہے، یتیم ہے، اور اس کا گزارہ فقط زرعی زمین پر ہے، تب بھی ایسے شخص پر زمین کی پیداوار ہونے کی صورت میں  کل پیداوار کاعشر یانصف عشر اوپر ذکر کردہ تفصیل کے مطابق لازم ہو گا۔

فقط واللہ اعلم (دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن فتوی نمبر 144211201027 )

[46]  : وفي الأصل: قلت: أرأيت الرجل تكون له أرض من أرض العشر فتنبت فيها الطَّرْفَاء أو القَصَب الفارسي  أو غيره هل فيه شيء؟ قال: لا. قلت: ولم؟ قال: لأن هذا حطب. قلت: وكذلك الحشيش والشجر الذي ليس له ثمرة مثل السَّممُر وشبهه؟ قال: نعم. (الأصل: 2/133)

[47]  : قال الإمام برهان الدين المرغيناني: قال أبو حنيفة رحمه الله في قليل ما أخرجته الأرض وكثيره العشر سواء سقى سيحا أو سقته السماء إلا الحطب والقصب والحشيش….. أما الحطب والقصب والحشيش فلا تستنبت في الجنان عادة بل تنقى عنها حتى لو اتخذها مقصبة أو مشجرة أو منبتا للحشيش يجب فيها العشر والمراد بالمذكور القصب الفارسي. (الهداية: 1/107-108)

[48]  : وفي الأصل: أرأيت الرياحين كلها والبقول والرِّطاب القليل من ذلك والكثير فيه العشر ونصف العشر؟ قال: نعم في قول أبي حنيفة. قلت: أرأيت الوَسِمَة هل فيها عشر إذا كانت في أرض العشر؟ قال: نعم في قول أبي حنيفة. قلت: وكذلك الزعفران والورد؟ قال: نعم. قلت: وكذلك قصب السكر؟ قال: نعم. قلت: ولم وهو قصب؟ قال: لأنه بمنزلة الثمرة. وهذا كله قول أبي حنيفة ……. قلت: أرأيت الحنطة والحُلْبَة والشعير والتين والزيتون والزبيب والذرة والسمسم والأرز وجميع الحبوب فعليه العشر إذا كان في أرض العشر؟ قال: نعم. (الأصل: 2/133-134)

وجاء في قرارات المجمع الفقه الإسلامي بالهند المذكورة سالفة: يجب العشر على الأعشاب وثمر الأشجار وعلى كل ما تخرجه الأرض، إذا كان القصد من زرعه إنماء الأرض وكسب المنافع، فيجب العشر على جميع الأشياء الغذائية والفواكه والثمار والأزهار، ولا يجب العشر على الأعشاب والأشجار النابتة طبيعيا إذا لم يكن القصد منها الانتفاع.

[49]  : جاء في القرارات: ويجب العشر في الأشجار التي لا تقصد بها الثمار، بل تستخدم في الأثاث والمباني والإيقاد مثل الصنوبر والساج والساسم، إذا اختصت الأراضي بمثل هذه الأشجار التي يكون القصد منها الانتفاع، ويخرج منها العشر حين قطعها بعد اكتمالها مهما طالت المدة في اكتمال هذه الأشجار.

[50]  : وفي الأصل: قلت: أرأيت الرجل تكون له الأرض من أرض العشر وفيها رَطْبَة، وهي تُقْطَع كل أربعين ليلة، أيؤخذ منها العشر كلما قطعت؟ قال: نعم في قول أبي حنيفة. قلت: ولم؟ قال: لأن العشر في كل ما خرج منها. هذا قول أبي حنيفة. (الأصل للإمام محمد، ط: قطر، 2/131، وقال محققه في الحاشية: الرطبة: نوع من العلف، كما في المغرب)

وفي التاتارخانية: قال أبو حنيفة: كل شيء أخرجته الأرض مما تستمنى به الأرض، ….. ففيه العشر، إلا الحطب والحشيش والتبن والسعف ……….. وفي المنتقى: قال إبراهيم بن هراسة: سألت محمداً عن أرض عشر فيه شجر ليس له ثمر مثل التوت، والخلاف، أو بالقصب وما أشبهها، فكان يقطع في كل سنة، ويبيع يجب فيه العشر عند أبي حنيفة، وإنه حسن، وفي الخانية: وكذا لو جعل فيها القت للدواب، وفي البنابيع: إذا استغل أرضه بقوائم الخلاف ويقطع في كل ثلاث سنين أو أربع وفيه غلة عظيمة فإنه يجب فيه العشر. والحشيش يريد به الذي ينبت بغير زراعة، ألا ترى أن الرطبة حشيشة يجب فيه العشر. (الفتاوى التاتارخانية: 3/275)

وقال الحصكفي:(إلا فيما) لا يقصد به استغلال الأرض (نحو حطب وقصب) فارسي (وحشيش) وتبن وسعف وصمغ وقطران وخطمي وأشنان وشجر قطن وباذنجان وبزر بطيخ وقثاء وأدوية كحلبة وشونيز حتى لو أشغل أرضه بها يجب العشر اهـ.

قال الشامي: (قوله: إلا فيما لا يقصد إلخ) أشار إلى أن ما اقتصر عليه المصنف كالكنز وغيره ليس المراد به ذاته بل لكونه من جنس ما لا يقصد به استغلال الأرض غالبا وأن المدار على القصد حتى لو قصد به ذلك وجب العشر كما صرح به بعده……..

(قوله: حتى لو أشغل أرضه بها يجب العشر) فلو استنما أرضه بقوائم الخلاف وما أشبهه أو بالقصب أو الحشيش وكان يقطع ذلك ويبيعه كان فيه العشر غاية البيان ومثله في البدائع وغيرها قال في الشرنبلالية وبيع ما يقطعه ليس بقيد ولذا أطلقه قاضي خان اهـ (الدر المختار ورد المحتار 2/327)

وقال العلامة المفتي محمد شفيع: چوتھى شرط يہ هے كہ پيداوار كوئى ايسى چيز ہو، جس كو اگانے اور پيدا كرنے كا رواج ہو، اور عادة اس كى كاشت كركے نفع اٹھايا جاتا ہو، خود رو گاس يا بيكار قسم كے خود رو درخت اگر كسى زمين ميں ہو جائيں، تو ان ميں بھى عشر نہيں، گھانس اور بانس كو اگر آمدنى كى غرض سے اگايا گيا ہو، تو  ان ميں بھى عشر ہے، اور ويسے ہى كوىئ درخت اگ گيا ہے تو نہيں- بدائع (جواھر الفقہ: 3/365)

[51]  : عن عمر بن شعيب عن أبيه عن جده قال: جاء هلال أحد بني متعان إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم بعشور نحل له، وكان سأله أن يحمي واديا يقال له: سلبة، فحمى له رسول الله صلى الله عليه وسلم ذلك الوادي، فلما ولي عمر بن الخطاب رضي الله عنه كتب سفيان بن وهب إلى عمر بن الخطاب يسأله عن ذلك، فكتب عمر: “إن أدى إليك ما كان يؤدي إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم من عشور نحله، فاحم له سلبة، وإلا فإنما هو ذباب غيث يأكله من يشاء”. (سنن أبي داود: 1600، وقال ابن عبد البر في الاستذكار  : 3/240حديث حسن. وقال الحافظ ابن حجر في فتح الباري : 3/348 : إسناده صحيح إلى عمرو، وترجمة عمرو قوية على المختار، …..).

وقال الحصكفي: (يجب) العشر (في عسلِ) وإن قل (أرضٍ غير الخراج) ولو غير عشرية كجبل ومفازة بخلاف الخراجية لئلا يجتمع العشر والخراج. (وكذا) يجب العشر (في ثمرة جبل أو مفازة إن حماه الإمام) لأنه مال مقصود لا إن لم يحمه لأنه كالصيد.

وقال الشامي: (قوله: أرض غير الخراج) أشار إلى أن المانع من وجوبه كون الأرض خراجية؛ لأنه لا يجتمع العشر والخراج فشمل العشرية، وما ليست بعشرية ولا خراجية كالجبل، والمفازة لكن قدمنا عن الخانية، وغيرها أن الجبل عشري ………. (قوله: إن حماه الإمام) الضمير عائد إلى المذكور وهو العسل والثمرة والظاهر أن المراد الحماية من أهل الحرب والبغاة وقطاع الطريق لا عن كل أحد فإن ثمر الجبال مباح لا يجوز منع المسلمين عنه. (الدر المختار ورد المحتار: 2/ 325(

[52]  : جاء في الأصل: قال: ولو أن لرجل قرية فيها بيوت ومنازل ودور في أرضه من أرض خراج، كان فيها بيوت ومنازل يستغلها أو لم يكن، فليس فيها خراج. وكذلك لو كانت من أرض العشر وله فيها قرية لم يكن في القرية ولا في أرضها خراج، كان يستغلها أو لم يكن يستغلها عليه في نخلها، ولا في شجرها عشر ولا خراج.

قال: ولو أن رجلاً له دار في مصر من الأمصار من الخِطَط، فجعل فيها بستاناً، أو غرس فيها نخلاً وأخرجها من منزله، إنه لا عشر، وإن جعل الدار كلها بأسرها بستاناً وأَصلُها من الخِطَط كان فيها العشر. وبهذا القول كله نأخذ. (الأصل: 7/562)

جاء في الموسوعة الفقهية: ذهب الحنفية إلى سقوط الخراج عن الأرض الخراجية بعد أن يبني عليها من هي بيده أبنية وحوانيت، ولا يجب الخراج على الأرض إلا إذا جعلها بستانا أو مزرعة؛ لأن الخراج يتعلق بنماء الأرض وغلتها. (الموسوعة الفقهية الكويتية: 19/86)

[53]  : قال الشيخ رشيد أحمد اللدهيانوي: اگر مكان رہائشى ہے مگر اس كے صحن ميں باغ لگا ليا تو اس پر عشر يا خراج واجب نہيں، قال في التنوير: وأخذ خراج من دار جعلت بستانا. الخ، وفي الشامية: قيد بجعلها بستانا؛ لأنه لو لم يجعلها بستانا وفيها نخل تغل أكرارا لا شيء فيها بحر، وكذلك ثمر بستان الدار؛ لأنه تابع لها كما في قاضي خان قهستاني. (احسن الفتاوى: 4/367)

[54]  : قال الإمام قاضيخان: إذا كان له دار خطت في مصر من أمصار المسلمين، جعلها بستانا، أو غرس فيها نخلا وأخرجها من منزله، ليس فيها شيء، لأن ما بقي من الأرض تبع للدار. (فتاوى قاضيخان: 1/167)

وفي قرارات المجمع الفقه الإسلامي بالهند المذكورة سابقة: لا يجب العشر على الخضراوات في الأراضي المعطلة المجاورة للمنازل وعلى سقف البيوت.

[55]  : جاء في الهندية : ولو كان في دار رجل شجرة مثمرة لا عشر فيها. كذا في شرح المجمع لابن الملك. (الفتاوى الهندية: 1/186)

وقال الشامي: وخرج ثمرة شجر في دار رجل، ولو بستانا في داره؛ لأنه تبع للدار كذا في الخانية ط عن القهستاني. (رد المحتار: 2/ 325(

[56]  : قال الإمام قاضيخان: رجل في داره شجرة مثمرة لا عشر فيه، وإن كانت البلدة عشرية، بخلاف ما إذا كانت في الأراضي. (فتاوى قاضيخان: 1/169)

في فتاوى بنوري تاون : کھیت میں اگائی گئی سبزیاں خواہ تھوڑی ہوں یا زیادہ، منڈی میں فروخت کرنے کے لیے ہوں یا گھر کے استعمال کےلیے ہوں ان پر عشر یا نصف عشر واجب ہے، البتہ گھر میں موجود درخت کے پھل یا گھر کی کیاری میں لگی سبزیوں پر عشر واجب نہیں؛ لہذا کھیت سے لاتے وقت ان کا وزن کرلیا کریں؛ تاکہ عشر کا حساب لگایا جاسکے۔

الفتاوی الہندیہ میں ہے:

ویجب العشر عند أبي حنیفة في کل ما تخرجه الأرض من الحنطة … والبقول والریاحین والأوراد والرطاب … قلّ أو کثر، هکذا فی قاضیخان. ولو كان في دار رجل شجر مثمرة لا عشر فیه”. ( الفتاوى الهندية، 1/ 186)

فقط والله أعلم

فتوی نمبر : 144111201437

دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن

[57]  : قال العلامة الحصكفي: (و) يجب (نصفه في مسقي غرب) أي دلو كبير (ودالية) أي دولاب لكثرة المؤنة وفي كتب الشافعية أو سقاه بماء اشتراه وقواعدنا لا تأباه.

وقال الشامي تحته: (قوله: وقواعدنا لا تأباه) كذا نقله الباقاني في شرح الملتقى عن شيخه البهنسي؛ لأن العلة في العدول عن العشر إلى نصفه في مستقى غرب ودالية هي زيادة الكلفة كما علمت وهي موجودة في شراء الماء ولعلهم لم يذكروا ذلك؛ لأن المعتمد عندنا أن شراء الشرب لا يصح وقيل إن تعارفوه صح وهل يقال عدم شرائه يوجب عدم اعتباره أم لا تأمل نعم لو كان محرزا بإناء فإنه يملك فلو اشترى ماء بالقرب أو في حوض ينبغي أن يقال: بنصف العشر؛ لأن كلفته ربما تزيد على السقي بغرب أو دالية. -الدر المختار ورد المحتار: (2/ 328)

[58]  قال الإمام الكشميري: – قوله : (وكان عثريا) وهو من العثور، وهو الشجر الذي لا يحتاج إلى سقي، بل يشرب الماء بعروقه، كالشجر على شط الأنهار. اهـ -فيض الباري على صحيح البخاري (3/148)

وقال الإمام رشيد أحمد الكنكوهي : [قوله أو كان عثريًا] هذا بالثاء المثلثة من فوق، واختلفوا في معناها والصواب أن العثري ما على طرف النهر أو العين أو البحر إلى غير ذلك فيجذب الماء بعروقها ولا يحتاج في إيصال الماء إليه إلى سقي وجهد. اهـ -الكوكب الدري علي جامع الترمذي (2/ 15)

[59] قَوْلُهُ بِالنَّضْحِ بِفَتْحِ النُّونِ وَسُكُونِ الْمُعْجَمَةِ بَعْدَهَا مُهْمَلَةٌ أَيْ بِالسَّانِيَةِ وَهِيَ رِوَايَةُ مُسْلِمٍ وَالْمُرَادُ بِهَا الْإِبِلُ الَّتِي يُسْتَقَي عَلَيْهَا وَذَكَرَ الْإِبِلَ كَالْمِثَالِ وَإِلَّا فَالْبَقرُ وَغَيْرُهَا كَذَلِكَ فِي الْحُكْمِ. –فتح الباري: 3\349

[60]  : قال الإمام الكاساني: ولو سقي الزرع في بعض السنة سيحا، وفي بعضها بآلة، يعتبر في ذلك الغالب، لأن للأكثر حكم الكل. -بدائع الصنائع (2/62)

وقال الحصكفي: ولو سقي سيحا وبآلة اعتبر الغالب. (الدر المختار مع رد المحتار: 2/328)

: [61] جاء في فتاوى رشيديه:

ام کا عشر کس طرح ادا کیا جائے؟

سوال:انبہ کتنی مقدار سے لائق عشر کے ہیں اگر انبہ کا عشردیا جاوے تو برابر تول کردیا جائے یا شمارسے خواہ کم وزائد ہو جائز ہے یا نہیں؟

جواب:جب جس قدر توڑے جاویں اس قدر کا عشر دینا چاہیے اگر چھوٹے بڑے ہوں تو وزن سے دینا جاہیے اور برابر ہوں تو شمار سے ۔ فقط (فتاوى رشيديہ، ص:   466)

[62]  : قال الكاساني: ولا يحتسب لصاحب الأرض ما أنفق على الغلة من سقي، أو عمارة، أو أجر الحافظ، أو أجر العمال، أو نفقة البقر؛ لقوله – صلى الله عليه وسلم – «ما سقته السماء ففيه العشر وما سقي بغرب، أو دالية، أو سانية ففيه نصف العشر» ، أوجب العشر ونصف العشر مطلقا عن احتساب هذه المؤن ولأن النبي – صلى الله عليه وسلم – أوجب الحق على التفاوت لتفاوت المؤن ولو رفعت المؤن لارتفع التفاوت. (بدائع الصنائع: 2/62)

قال الشامي: (قوله: بلا رفع مؤن) أي يجب العشر في الأول ونصفه في الثاني بلا رفع أجرة العمال ونفقة البقر وكري الأنهار وأجرة الحافظ ونحو ذلك. درر. (ردالمحتار: 2/ 328(

قال الإمام ابن الهمام : (قوله لا يحتسب فيه أجر العمال ونفقة البقر) وكري الأنهار وأجرة الحارس وغير ذلك، يعني: لا يقال بعدم وجوب العشر في قدر الخارج الذي بمقابلة المؤنة بل يجب العشر في الكل، ومن الناس من قال: يجب النظر إلى قدر قيم المؤنة فيسلم له بلا عشر ثم يعشر الباقي؛ لأن قدر المؤنة بمنزلة السالم بعوض كأنه اشتراه؛ ألا يرى أن من زرع في أرض مغصوبة سلم له قدر ما غرم من نقصان الأرض وطاب له كأنه اشتراه. ولنا ما تقدم من قوله – عليه الصلاة والسلام – «فيما سقي سيحا» إلخ حكم بتفاوت الواجب لتفاوت المؤنة، فلو رفعت المؤنة كان الواجب واحدا وهو العشر دائما في الباقي لأنه لم ينزل إلى نصفه إلا للمؤنة، والفرض أن الباقي بعد رفع قدر المؤنة لا مؤنة فيه، فكان الواجب دائما العشر، لكن الواجب قد تفاوت شرعا مرة العشر ومرة نصفه بسبب المؤنة فعلمنا أنه لم يعتبر شرعا عدم عشر بعض الخارج، وهو القدر المساوي للمؤنة أصلا. (فتح القدير 2/250)

[63]  : وفي الأصل: قلت: أرأيت الرجل يكون عليه الدين يحيط بقيمة أرضه هل عليه عشر فيما خرج من أرضه؟ قال: نعم. (الأصل، للشيباني، ط: قطر: 2/ 134)

وقال الحصكفي: ويجب مع الدين. (الدر المختار ورد المحتار: 2/326)

[64]  : وفي الأصل: قلت: أرأيت المكاتب إذا كانت له أرض العشر هل يجب عليه فيها العشر؟ قال: نعم. قلت: وكذلك الصبي والمرأة والمجنون والمعتوه الذي لا يفيق؟ قال: نعم، كل هذا سواء، وفي أرضهم العشر. (الأصل، للشيباني ط قطر 2/134)

[65]  : قال الحصكفي: وفي أرض صغير ومجنون ومكاتب ومأذون ووقف. (الدر المختار ورد المحتار: 2/326)

[66]  : قال الإمام ابن قدامة الحنبلي رحمه الله: ويصح تصرف المالك في النصاب قبل الخرص، وبعده، بالبيع والهبة وغيرهما. فإن باعه أو وهبه بعد بدو صلاحه، فصدقته على البائع والواهب. وبهذا قال الحسن، ومالك، والثوري، والأوزاعي، … وإنما وجبت على البائع؛ لأنها كانت واجبة عليه قبل البيع … ويتخرج أن تجب الزكاة على المشتري، على قول من قال: إن الزكاة إنما تجب يوم حصاده، لأن الوجوب إنما تعلق بها في ملك المشتري، فكان عليه. (المغني: 3/ 13)

[67]  : وفي كتاب الأصل للإمام محمد: قلت: أرأيت رجلاً باع أرضاً من أرض العشر وفيها زرع قد أدرك، على من عشرها وقد باع الزرع مع الأرض، أعلى المشتري أو على البائع؟ قال: عشر الزرع على البائع. قلت: لم؟ قال: لأن البائع باعه بعدما وجب فيها العشر. قلت: أرأيت إن باعها والزرع بَقْل على من العشر، عشر الزرع إذا ما حصد؟ قال: على المشتري. قلت: ولم؟ قال: لأنه باعه قبل أن يبلغ. (الأصل، ط: قطر، 2/130)

وقال الإمام الكاساني رحمه الله: ولو باع الأرض العشرية وفيها زرع قد أدرك مع زرعها أو باع الزرع خاصة فعشره على البائع دون المشتري، لأنه باعه بعد وجوب العشر وتقرره بالإدراك. ولو باعها والزرع بقل فإن قصله المشتري للحال فعشره على البائع أيضا لتقرر الوجوب في البقل بالقصل. وإن تركه حتى أدرك فعشره على المشتري في قول أبي حنيفة ومحمد. (بدائع الصنائع: 2/ 56)

قال العلامة الحصكفي: ولو باع الزرع إن قبل إدراكه فالعشر على المشتري ولو بعده فعلى البائع.

وقال العلامة الشامي: هذا إذا باع الزرع وحده، وشمل ما إذا باعه وتركه المشتري بإذن البائع حتى أدرك فعندهما عشره على المشتري، وعند أبي يوسف عشر قيمة القصيل على البائع، والباقي على المشتري كما في الفتح.  (الدر المختار ورد المحتار: 2/333)

وقال الشيخ أشرف علي التهانوي رحمه الله: پکنے سے پہلے کھیت بیچ ڈالا تو اس کا عشر مشتری کے ذمہ ہے اور اگر پکنے کے بعد بیچا تو بائع کے ذمہ ہے یہی حکم پھل کا ہے. (امداد الفتاوی: 4/87)

باغ کا عشر کس پر واجب ہوگا؟ بیچنے والے پر یا خریدار پر؟

سوال: ہم پاکستان میں کینو (پھل) کا کاروبار کرتے ہیں، اس کی تفصیل یہ ہے ۔باغ مالک کے پاس جا کر اس کا پھل پسند کرتے ہیں اس طرح کہ ہم آپ کا باغ مثلاً 5 لاکھ روپئے میں خریں گے ، پھر ہم مزدوروں اور گاڑی کو بھیج کر پھل توڑ لیتے ہیں،پھل ہماری فیکٹری میں آتا ہے ۔ ہم اس کو دھو کر اور پا لش کر کے پیک کر لیتے ہیں۔ اس کے بعد ہم پھل کو ایکسپورٹ ( export )کرتے ہیں اور کچھ مقامی منڈیوں میں فروخت کرتے ہیں۔حضرت پوچھنا یہ ہے کہ ہمیں اس صورت میں باغ کا عشر ادا کرنا ہوگا اور عشر کس طرح ادا کیا جائے گا ؟

جواب نمبر: 149739

بسم الله الرحمن الرحيم

صورت مسئولہ میں اگر آپ باغ پھل پکنے سے پہلے خرید رہے ہیں تو خریدار پر ہی عشر واجب ہوگا اور اگر پھل پکنے کے بعد خرید رہے ہیں تو عشر باغ کے مالک پر ہوگا اور عشر ادا کرنے کا طریقہ یہ ہے کہ باغ میں جس قدر پھل ہو اس کو توڑنے کے بعد اس میں سے دسواں حصہ فقراء اور مساکین کو دے دیا جائے گا۔ ولو باع الزرع إن قبل إدراکہ فالعشر علی المشتري، ولو بعدہ فعلی البائع (۳/۲۷۶، باب العشر، کتاب الزکاة، الدر مع رد المحتار) ”وإذا باع الأرض العشریة وفیہا زرع قد أدرک مع زرعہا أو باع الزرع خاصة فعشرہ علی البائع دون المشتري، ولو باعہا والزرع بقل إن فصلہ المشتري في الحال یجب علی البائع ولو ترکہ حتی أدرک فعشرہ علی المشتري کذا في شرح الطحاوي (۱/۱۸۷، باب زکاة الزروع والثمار، کتاب الزکاة، الفتاوی الہندیة)

واللہ تعالیٰ اعلم

دارالافتاء،

دارالعلوم دیوبند

پھل پکنے سے پہلے فروخت کردیا تو عشر مشتری پر ہے

سوال

مٹر کی پھلی بن گئی تھی،  لیکن ابھی پکی نہیں تھی کہ مالک نے فروخت کر دی، اور مشتری نے پکنے کے بعد کاٹ کر فروخت کر دی۔ اب عشر بائع اول پر لازم ہوگا یا ثانی پر؟ اگر ثانی پر ہو گا تو اول پر مٹر کی رقم میں سے زکاۃ ادا کرنا ہوگی؟

جواب

مذکورہ صورت میں چوں کہ مٹر مشتری کی ملکیت میں پکے ہیں؛ لہذا عشر مشتری پر لازم ہوگا نہ کہ بائع پر ۔ بائع جو رقم لے چکا ہے، اگر وہ رقم دیگر اموال کے ساتھ مل کر نصاب کے برابر ہے، یا بائع پہلے سے صاحبِ نصاب چلا آرہاہے تو جس قدر رقم زکاۃ کی ادائیگی کے دن اس کی ملکیت میں ہوگی بائع اس رقم کی زکاۃ اداکرے گا۔

فتوی نمبر : 144102200325

دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن

. [68] قال الراقم عفا الله عنه: وهذا قول أبي يوسف ومحمد، وإنما اختير هذا للفتوى لقلة كراء الأراضي الزرعية في هذه البلاد، فلو أُلزم رب الأرض العشرَ – كما هو قول الإمام أبي حنيفة رحمه الله – لم يبق له كبير شيء، ولهذا اختاره الشيخ أشرف علي التهانوي رحمه الله في أراضي الهند واختاره المفتي محمد شفيع رحمه الله في أراضي باكستان.

قال الحصكفي: والعشر على المؤجر كخراج موظف، وقالا: على المستأجر كمستعير مسلم. وفي الحاوي: وبقولهما نأخذ.

وقال الشامي: (قوله وبقولهما نأخذ) قلت: لكن أفتى بقول الإمام جماعة من المتأخرين كالخير الرملي في فتاواه وكذا تلميذ الشارح الشيخ إسماعيل الحائك مفتي دمشق وقال: حتى تفسد الإجارة باشتراط خراجها أو عشرها على المستأجر كما في الأشباه، وكذا حامد أفندي العمادي، وقال في فتاواه: قلت: عبارة الحاوي القدسي لا تعارض عبارة غيره، فإن قاضي خان من أهل الترجيح، فإن من عادته تقديم الأظهر والأشهر، وقد قدم قول الإمام، فكان هو المعتمد، وأفتى به غير واحد منهم زكريا أفندي شيخ الإسلام وعطاء الله أفندي شيخ الإسلام، وقد اقتصر عليه في الإسعاف والخصاف. اهـ.

قلت: لكن في زماننا عامة الأوقاف من القرى والمزارع لرضا المستأجر بتحمل غراماتها ومؤنها يستأجرها بدون أجر المثل بحيث لا تفي الأجرة، ولا أضعافها بالعشر أو خراج المقاسمة، فلا ينبغي العدول عن الإفتاء بقولهما في ذلك؛ لأنهم في زماننا يقدرون أجرة المثل بناء على أن الأجرة سالمة لجهة الوقف ولا شيء عليه من عشر وغيره، أما لو اعتبر دفع العشر من جهة الوقف وأن المستأجر ليس عليه سوى الأجرة، فإن أجرة المثل تزيد أضعافا كثيرة كما لا يخفى، فإن أمكن أخذ الأجرة كاملة يفتى بقول الإمام وإلا فبقولهما لما يلزم عليه من الضرر الواضح الذي لا يقول به أحد، والله تعالى أعلم. (الدر المختار ورد المحتار 2/334)

وقال الشيخ أشرف علي التهانوي بعد ذكر عبارة الشامي المذكورة : اس عبارت سے معلوم ہوا کہ اگر موجر پوری اجرت لے اور مستاجر کے پاس بہت کم بچے تو عشر موجر کے ذمّہ ہے اور اگر موجر اُجرت کم لے اور مستاجر کے پاس زیادہ بچے تو مستاجر کے ذمہ ہے؛ چونکہ ہمارے دیار میں اُجرت کم لی جاتی ہے؛ اسی لیے میں وجوب عشر علی المستاجر پر فتویٰ دیا کرتا ہوں ،ہاں اگر کسی جگہ پوری اُجرت لی جاوے جس میں زمیندار عشر بخوبی ادا کرسکتا ہو تو اس وقت وجوب عشر علی الموجر پر فتویٰ ہوگا۔ (امداد الفتاوى، جديد: 4/63)

وقال المفتي محمد شفيع: اس سے معلوم ہوا كہ اگر كسى شخص نے اپنى زمين كو نقد رپييہ كے عوض كرايہ يا مقاطعہ پر د ديا، تو اس كى پيداوار كا عشر بقول مفتى بہ مالك زمين كے ذمہ نہيں، بلكہ مقاطعہ دار كے ذمہ ہے، جو زمين ميں كاشت كر كے پيداوار  حاصل كرتا ہے- (جواھر الفقہ: 3/365-366)

[69]  : قال الشامي: والحاصل أن العشر عند الإمام على رب الأرض مطلقا وعندهما كذلك لو البذر منه ولو من العامل فعليهما وبه ظهر أن ما ذكره الشارح هو قولهما اقتصر عليه لما علمت من أن الفتوى على قولهما بصحة المزارعة فافهم، لكن ما ذكر من التفصيل يخالفه ما في البحر والمجتبى والمعراج والسراج والحقائق الظهيرية وغيرها من أن العشر على رب الأرض عنده عليهما عندهما من غير ذكر التفصيل وهو الظاهر لما في البدائع من أن المزارعة جائزة عندهما والعشر يجب في الخارج والخارج بينهما فيجب العشر عليهما (.(رد المحتار:  2/335(

وقال الشيخ المفتي محمد شفيع: اگر زمين دوسرے شخص كو مزارعت يعنى بٹائى پر دى ہے كہ پىداوار مىں اىك معىن حصہ مالك زمىن كا اور دوسرا معىن حصہ كاشتكار كا، مثلا دونوں نصفا نصف ہوا، ىا اىك تہائى ہو، اور دو تہائى ہو، اس صورت مىں عشر دونوں پر اپنے اپنے حصہ پىداوار كے مطابق لازم ہوگا- بدائع.(جواھر الفقہ: 3/367)

: [70] وفى الأصل: قلت: أرأىت الرجل له أرض من أرض العشر فىزرعها وىحصد زرعها قبل أن تمضى ستة أشهر أىؤخذ منه العشر؟ قال: نعم. (الأصل للإمام محمد، ط: قطر، 2/131)

وقال الشامى: لو أخرجت الأرض مرارا وجب فى كل مرة لإطلاق النصوص عن قىد الحول، ولأن العشر فى الخارج حقىقة، فىتكرر بتكرره، وكذا خراج المقاسمة؛ لأنه فى الخارج فأما خراج الوظىفة فلا ىجب فى السنة إلا مرة؛ لأنه لىس فى الخارج بل فى الذمة بدائع. اهـ. (رد المحتار: 2/ 326(

[71]  : قال الحصكفي: تمكن ولم يزرع وجب الخراج دون العشر. (الدر المختار ورد المحتار: 2/332)

[72]  : قال العلامة ابن نجيم: وأما ما يسقطه فهلاك الخارج من غير صنعه، وبهلاك البعض يسقط بقدره. (البحر الرائق: 2/255، ومثله في الفتاوى الهندية: 1/186)

وقال الحصكفي: ويسقطان بهلاك الخارج. اهـ

وقال الشامي: أي: العشر وخراج المقاسمة لتعلقهما بعين الخارج. (الدر المختار ورد المحتار: 2/332)

وقال في موضع آخر: وما تلف بغير صنعه بعد حصاده أو سرق وجب العشر في الباقي لا غير. (رد المحتار: (2/ 331)

وقال الشيخ رشيد أحمد اللدهانوي: اگر عشرى زمىن كى فصل كٹنے سے پہلے ىا اس كے بعد ضائع ہو گئى، ىا چورى ہو گئى، تو عشر ساقط ہو جا ‌‌ۓگا. (أحسن الفتاوى: 4/364)

[73]  : وفي الأصل: قلت: أرأيت الرجل يموت وله أرض من أرض العشر، وقد أدركت غلتها ووجب فيها العشر، أيؤخذ منها العشر؟ قال: نعم. (كتاب الأصل: للإمام محمد، ط: قطر: 2/131)

: [74] وفى الأصل: قلت: أرأىت الرجل إذا كانت له أرض من أرض العشر فأعطى عشر ما خرج من أرضه أباه أو أمه أو ابنه أىجزىه ذلك فىما بىنه وبىن الله تعالى؟ قال: لا. قلت: فإن أعطاه أخاه أو أخته أو ذا رحم محرم غىر ولد أو والد أو جد أو جدة أو ولد وولد ولد هل ىجزىه ذلك؟ قال: نعم، وهو فى ذلك بمنزلة الزكاة. (الأصل للشىبانى ط قطر 2/ 138)

وقال الحصكفى: باب المصرف أى مصرف الزكاة والعشر، وأما خمس المعدن فمصرفه كالغنائم (هو فقىر، وهو من له أدنى شىء) أى دون نصاب أو قدر نصاب غىر نام مستغرق فى الحاجة. (ومسكىن من لا شىء له). (الدر المختار ورد المحتار: 2/339 ومثله فى جواھر الفقہ: 3/369)

[75]  : قال الله تعالى: [إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِىنِ وَالْعَامِلِىنَ عَلَىهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِى الرِّقَابِ وَالْغَارِمِىنَ وَفِى سَبِىلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِىلِ فَرِىضَةً مِنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِىمٌ حَكِىمٌ] (سورة التوبة: 60)

وقال الإمام الجصاص : الألف واللام هنا للجنس فهى شاملة لجمىعها وهذا ىدل على أن جمىع الصدقات مصروفة إلى الفقراء وأنها إنما تستحق بالفقر لا غىر وأن ما ذكر الله تعالى من أصناف من تصرف إلىهم الصدقة فى قوله تعالى إنما الصدقات للفقراء والمساكىن إنما  ىستحق منهم من ىأخذها صدقة بالفقر دون غىره وإنما ذكر الأصناف لما ىعمهم من أسباب الفقر دون من لا ىأخذها صدقة من المؤلفة قلوبهم والعاملىن علىها فإنهم لا ىأخذونها صدقة وإنما تحصل فى ىد الإمام صدقة للفقراء ثم ىصرف إلى المؤلفة قلوبهم والعاملىن ما ىعطون على أنه لىس بصدقة لكن عوضا من العمل ولدفع أذىتهم عن أهل الإسلام أو لىستمالوا به إلى الإىمان. (أحكام القرآن للجصاص: 2/ 177)

وأخرج الإمام البخارى (1458) ومسلم (19) عن ابن عباس رضى الله عنهما: أن رسول الله صلى الله علىه وسلم لما بعث معاذا رضى الله عنه على الىمن، قال: «إنك تقدم على قوم أهل كتاب، فلىكن أول ما تدعوهم إلىه عبادة الله، فإذا عرفوا الله، فأخبرهم أن الله قد فرض علىهم خمس صلوات فى ىومهم ولىلتهم، فإذا فعلوا، فأخبرهم أن الله فرض علىهم زكاة من أموالهم وترد على فقرائهم».

 

[76]   : قال الإمام الكاسانى: وأما صفة الواجب فالواجب جزء من الخارج؛ لأنه عشر الخارج، أو نصف عشره وذلك جزؤه إلا أنه واجب من حىث إنه مال لا من حىث إنه جزء عندنا حتى ىجوز أداء قىمته عندنا وعند الشافعى الواجب عىن الجزء ولا ىجوز غىره وهى مسألة دفع القىم وقد مرت فىما تقدم. (بدائع الصنائع: 2/63)

[77]  : قال الإمام محمد : فإن أعارها صاحبها كان العشر على المستعىر. (الأصل ط قطر: 7/ 560)

وقال الفقيه أبو الليث السمرقندي: ولو أن رجلا أعار أرضه من مسلم فالعشر على المستعير، وقال زفر: العشرعلى المعير. ولو أعارها من كافر فالعشر على المعير في القولين جميعا. (عيون المسائل، ص: 37)

ونقل الإمام أبو يعقوب الجرجاني عن المنتقى: لو منح أرضه كافرا ليزرعها فعشره على المسلم. (خزانة الأكمل: 1/273)

وقال شمس الأئمة السرخسي: أما أذا أعار أرضه من مسلم فالعشر على المستعير في الخارج عندنا. وقال زفر – رحمه الله تعالى -: على المعير … فإن كان أعار الأرض من ذمي فالعشر على المعير؛ لأن العشر صدقة لا يمكن إيجابها على الكافر والمعير صار مفوتا حق الفقراء بالإعارة من الكافر فكان ضامنا للعشر. (المبسوط للسرخسي: 3/5)

وقال أيضا:(قال) – رحمه الله تعالى -: رجل له أرض عشرية فمنحها لمسلم فزرعها فالعشر على المستعير …(قال: ولو منحها لرجل كافر) فعشرها على رب الأرض. (المبسوط للسرخسي 3/45)

وقال العلامة الحصكفى: والعشر على المؤجر كخراج موظف، وقالا: على المستأجر كمستعىر مسلم.

وقال الشامى: (قوله: كمستعىر مسلم) وأوجبه زفر على المعىر؛ لأنه لما أقام المستعىر مقامه لزمه كالمؤجر. قلنا: حصل للمؤجر الأجر الذى هو كالخارج معنى بخلاف المعىر وقىد بالمسلم؛ لأنه لو استعارها ذمى فالعشر على المعىر اتفاقا لتفوىته حق الفقراء بالإعارة من الكافر. كذا فى شرح درر البحار. (الدر المختار ورد المحتار: 2/ 334)

[78]  : جاء فى التفاوى التاتارخانىة: وفى «المنتقى» قال أبو ىوسف: لىس على الرجل فىما أكل من ثمر نخله عشر.

وفى الفتاوى العتابىة: وروى عنه أنه ىترك له ما ىكفىه وعىاله، فإن أكل من كفاىته لا ىضمن. م. وقال أبو حنىفة: آخذهم بكل شىء منه ولا أحسبه لهم مما أكلوا شىئاً، وقال محمد: ما أكل ىحسب علىه من تسعة أعشاره، فالرواىات اتفقت أن ما بعد الكفاىة له ولعىاله ىحسب من تسعة أعشاره، وإنما الخلاف فى مقدار الكفاىة، والله أعلم.

جامع الجوامع: وما هلك بعد الوجوب بلا فعله سقط عنه عشره وبفعله ىجب، وما أكل أو أطعم بالمعروف لا شىء فىه.(الفتاوى التاتارخانىة: 3/286)

وقال العلامة ىوسف بن عمر الكادوى: ووذكر الفقىه أبواللىث فى نوازله أنه قال النصىر: سألت الحسن عن رجل كرمه ثلاث مائة صاع فجعل ىأكل قلىلا قلىلا، حتى أكل كله على المعروف؟ قال: لىس علىه شيء، وكذلك البر إذا أكله كله على الصحراء، قال الفقىه: روى عن أبى حنىفة مثل قول الحسن، وبه نأخذ. (جامع المضمرات والمشكلات فى شرح القدورى: 2/381 ط. دار الكتب العلمىة، ومثله فى الفتاوى التاتارخانىة: 3/286 والمحىط البرهانى: 3/284 ط. إدارة القرآن)

وقال الإمام الماتريدي في تفسيره عند تفسير قوله تعالي: [كُلُوا مِنْ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ] فجعل الحق الواجب فيه يوم يحصد، فيجوز أن يكون عفي عما قبل ذلك. فإن كان هذا هو التأويل، فهو – والله أعلم – معني ما روي عن النبي صلي الله عليه وسلم، ولو لم يكن قوله تعالي: (كلوا من ثمره إذا أثمر) عفوا عن صدقة ما يؤكل منه ما كان في ذلك فائدة، لأن الثمرة تؤكل ولا تصلح لغير ذلك إلا للوجه الذي ذكرنا، وهو أنهم كانوا يحرمونها ولا ينتفعون بها، فقال عز وجل: كلوا وانتفعوا به، ولا تضيعوه. وإذا كان قوله: (كلوا من ثمره) عفوا عن صدقة ما يؤكل منه، ظهرت فائدة الكلام، وهو علي هذا التأويل – والله أعلم – ما روي أن النبي صلي الله عليه وسلم قال: “إذا خرصتم فخذوا ودعوا الثلث، فإن لم تدعوا الثلث فالربع “. وعن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه عن النبي صلي الله عليه وسلم قال: “ليس في العرايا صدقة ” … وعن مكحول قال: قال رسول الله صلي الله عليه وسلم: “خفضوا علي الناس في الخرص؛ فإن في المال العرية والوصية”. فدلت هذه الأحاديث علي أنه لا صدقة فيما يؤكل من الثمر رطبا إذا لم يكن فيما يأكلون إسراف. وقدر النبي صلي الله عليه وسلم لذلك الثلث أو الربع، وذلك – والله أعلم – يشبه ما دلت عليه الآية علي تأويل من جعل الحق زكاة؛ لأن الله تعالي قال: (ولا تسرفوا إنه لا يحب المسرفين)؛ فاحتمل أن يكون أيضا معني ذلك: ولا تسرفوا في الأكل، فيجحف ذلك بأهل الصدقة، ويحتمل أن يكون ذلك نهيا عن الإسراف في جميع الأشياء، علي ما ذكرنا من قبل. (تأويلات أهل السنة 4/ 284)

وقال العلامة يوسف البنوري: يستفاد من كلام صاحب البدائع: أن صاحب الثمر لو أكل من ثمره أو أطعم غيره يضمن عشره عند أبي حنيفة، ولا يضمن عند أبي يوسف، ذهابا إلي أن ترك الثلث أو الربع في الحديث لأجل هذا، فأحتج بحديث سهل بن أبي حثمة. قال الشيخ – أي: الإمام الكشميري – : وبالجملة الأكل بالمعروف من ثمره جائز لصاحب الثمر من غير أن يكون فيه العشر عند أبي يوسف، وبذلك أفتي الفقيه أبو جعفر الهندواني بأن المالك جاز له أن يأكل بالمعروف قبل الخرص.  (معارف السنن: 5/252)

وقال الإمام ابن قدامة المقدسي: فصل: وعلى الخارص أن يترك في الخرص الثلث أو الربع، توسعة على أرباب الأموال، لأنهم يحتاجون إلى الأكل هم وأضيافهم، ويطعمون جيرانهم وأهلهم وأصدقاءهم وسؤالهم. ويكون في الثمرة السقاطة، وينتابها الطير وتأكل منه المارة، فلو استوفى الكل منهم أضر بهم. وبهذا قال إسحاق، ونحوه قال الليث، وأبو عبيد. والمرجع في تقدير المتروك إلى الساعي باجتهاده، فإن رأي الأكلة كثيرا ترك الثلث، وإن كانوا قليلا ترك الربع؛ …… فإن لم يترك لهم الخارص شيئا، فلهم الأكل بقدر ذلك، ولا يحتسب عليهم به. نص عليه، لأنه حق لهم، فإن لم يخرج الإمام خارصا فاحتاج رب المال إلى التصرف في الثمرة، فأخرج خارصا، جاز أن يأخذ بقدر ذلك. ذكره القاضي. وإن خرص هو وأخذ بقدر ذلك، جاز ويحتاط في أن لا يأخذ أكثر مما له أخذه. –المغني: (3/ 16)

وقال شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله: ويأمر النبي صلى الله عليه وسلم الخارصين أن يدعوا لأهل الأموال الثلث أو الربع لا يؤخذ منه عشر ويقول: {إذا خرصتم فدعوا الثلث فإن لم تدعوا الثلث فدعوا الربع وفي رواية فإن في المال العرية والوطية والسابلة} يعني أن صاحب المال يتبرع بما يعريه من النخل لمن يأكله وعليه ضيف يطئون حديقته يطعمهم ويطعم السابلة وهم أبناء السبيل وهذا الإسقاط مذهب الإمام أحمد وغيره من فقهاء الحديث. -مجموع الفتاوى (25/ 57)

وجاء في الدرر السنية : سئل الشيخ محمد بن عبد الوهاب، رحمه الله تعالى: عما يدعه الخارص … إلخ؟

فأجاب: وأما ترك الخارص الثلث أو الربع، فأرجح الأقوال عندي، قول أكثر أهل العلم: أنه غير مقدر، بل يترك له قدر ما يأكله ويخرجه رطباً باجتهاد الخارص؛ وعلى هذا وردت الأدلة ويصدق بعضها بعضاً.

وأجاب ابنه الشيخ عبد الله: يؤمر الخارص أن يدع الثلث أو الربع لأهل النخيل يأكلونه ويهدون منه ويتصدقون، وبعض أهل العلم يقول: يدع لأهل النخيل قدر حاجتهم، كل إنسان على قدر حاجته، فما كان يحتاجه للأكل قبل الجذاذ ويهديه لأقاربه ونحوهم، أو يتصدق به فلا زكاة فيه، وما عدا ذلك ففيه الزكاة. -الدرر السنية في الأجوبة النجدية (5/ 196)

وقال الشيخ محمد بن إبراهيم: يجب على ولي الأمر أن يحرض الذين يتولون الخرص على عدم الظلم والزيادة؛ بل يجب أن يترك في الخرص أرب المال الثلث أو الربع لحديث سهل بن أبي حثمة أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: “إذا خرصتم فخذوا ودعوا الثلث، فإن لم تدعوا الثلث فدعوا الربع” رواه الخمسة إلا ابن ماجه. وقد ذكر العلماء رحمهم الله أن الشرع جاء بهذا توسعة على رب المال لأكله هو وأضيافه وجيرانه، فإن أكل هذا المتروك فذلك، وإن لم يأكله أو بعضه أخرج زكاته. -فتاوى ورسائل سماحة الشيخ محمد بن إبراهيم بن عبد اللطيف آل الشيخ (4/52)

وقال أيضا (4/53) عمن استدل بالحديث السابق على أن الاستقصاء في الخرص مخالف للسنة، قال: ما ذكره صحيح لا إشكال فيه، والحديث الذي استدل به جار على قواعد الشريعة ومحاسنها .وذلك: لأن الثمار ينوبها أشياء، من أكل وهدية وصدقة، وغير ذلك مما جرت به العادة في كل زمان ومكان، فجاءت السنة بالتخفيف عن صاحب الثمرة، وأن يترك له من ثمرته مقدار ما ذكره .واتباع السنة في هذا وغيره هو المتعين على ولاة الأمر أن يفعلوه بأنفسهم، وأن يحملوا الرعية عليه.

[79]  : قال العلامة يوسف البنوري رحمه الله: وأعدل الأقوال في نقل مذهب أبي حنيفة وأصحابه لفظ ابن قدامة في المغني (3/14) : وقال أهل الرأي: الخرص ظن وتخمين، لا يلزم به حكم، وإنما كان الخرص تخويفا للأكرة لئلا يخونوا، فأما أن يلزم به حكم، فلا. (معارف السنن: 5/248)

Related Articles

Back to top button