আত্মীয় স্বজন অসদাচরণ করলে কী করণীয়?
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
প্রশ্নঃ
আমার কোনো আত্মীয় যদি আমার সাথে মন্দ আচারণ করে এবং এ কারণে আমি তার সাথে সম্পর্ক না রাখি, তাহলে অন্যান্য ইবাদত বন্দেগি করার পরও কি আমি لا يدخل الجنة قاطع (আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না) এই হাদিসের গন্ডির মধ্যে পড়বো?
উমায়ের
উত্তর:
জী ভাই, আত্মীয় স্বজন যদি মন্দ আচরণ করে, তবুও তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। আপনি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের যে হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন, তার ব্যাখ্যায় আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে সহীহ বুখারীরই আরেকটি হাদীসে এসেছে,
عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ الْوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ وَلَكِنْ الْوَاصِلُ الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا. -روه البخاري في صححه: 5991
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ভালো আচরণের বিনিময়ে ভালো আচরণকারী আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায়কারী নয়; বরং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায়কারী তো সে-ই, যে সম্পর্ক ছিন্ন করা হলেও তা বজায় রাখে।” -সহীহ বুখারী : ৫৯৯১
অন্য একটি হাদীসে এসেছে,
صِلْ مَنْ قَطَعَكَ وَأَعْطِ مَنْ حَرَمَكَ وَأَعْرِضْ عَمَّنْ ظَلَمَكَ. رواه احمد في مسنده:17334
“যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তুমি তার সাথে সম্পর্ক জুড়ে রাখ। যে তোমাকে বঞ্চিত করে, তুমি তাকে দান কর। যে তোমার ওপর জুলুম করে, তুমি তা উপেক্ষা কর।” -মুসনাদে আহমাদ : ১৭৩৩৪
তবে ভালো আচরণ এবং সম্পর্ক বজায় রাখার অর্থ এই নয় যে, তাদের নাফরমানি করতে দেখেও চুপ থাকতে হবে। বরং এক্ষেত্রে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি হিকমতের সাথে তাদেরকে নাফরমানি থেকে ফিরিয়ে আনারও চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالْإِحْسَانِ وَإِيتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ইনসাফ, দয়া এবং আত্মীয়-স্বজনকে (তাদের হক) প্রদান করার আদেশ দেন এবং অশ্লীলতা, মন্দ কাজ এবং জুলুম করা থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন যাতে উপদেশ গ্রহণ কর।” –সূরা নাহল (১৬) : ৯০
فقط. والله تعالى اعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
৬ ই যুলকা’দাহ, ১৪৪১ হি.
২৮ শে জুন, ২০২০ ইং