তাগুতের আদালতে বিচারপ্রার্থী হওয়ার বিধান
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
প্রশ্নঃ
কুরআনে তাগুতের কাছে বিচার নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আমাদের দেশে তো এখন ইসলামী হুকুমত নেই। তাহলে আমরা সন্ত্রাসীদের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হলে কিংবা জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়াদির জন্য কোথায় বিচারপ্রার্থী হবো?
-আবু হানিফা
উত্তরঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
রাষ্ট্রীয় বিচার ব্যবস্থা যেহেতু শরীয়াহ সম্মত নয়, এজন্য কোনো বিষয়ে মুসলিমদের পরস্পর বিবাদ হলে, তাদের সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের ফরয দায়িত্ব হল, বিজ্ঞ আলেমদের শরণাপন্ন হওয়া এবং এবিষয়ে শরীয়তের ফায়সালা কী, তা জেনে সে অনুযায়ী আমল করা। প্রয়োজনে যেসব এলাকায় মুসলিমদের সামাজিক বা পঞ্চায়েত কমিটি আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া। শরীয়াহ সম্মত বিচার বাস্তবায়নে সামর্থ্য অনুযায়ী সার্বিক সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসা পঞ্চায়েত কমিটিসহ এলাকার সকল মুসলিমের দায়িত্ব। বিশেষত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব এখানে সবচেয়ে বেশি।-গিয়াসুল উমাম, পৃ: ৩৯১ (মাকতাবাতু ইমামিল হারামাইন); আয-যাখিরাহ, ইমাম করাফী (৬৮৪ হি.): ১০/৪৪ (দারুল গারবিল ইসলামী); আল-হিলাতুন নাজেযাহ, পৃ: ২৭০-২৭২ (মাকতাবায়ে রযি, দেওবন্দ); ইমদাদুল মুফতীন: ২/৮৯৪ (দারুল ইশায়াত)।
তবে এটা তখনই সম্ভব, যখন উভয় পক্ষই শরীয়াহ সম্মত বিচার চায় অথবা পঞ্চায়েত ও নেতৃস্থানীয় লোকদের; সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপর বিচার বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা থাকে। পক্ষান্তরে আমি শরীয়াহ বিচার চাইলেও, প্রতিপক্ষ যখন শরীয়াহ বিচার চাইবে না বা বিচারের মুখোমুখি হতে চাইবে না এবং পঞ্চায়েত ও সমাজের নেতৃবর্গের শরীয়াহ বিচার বাস্তবায়নের সক্ষমতাও থাকবে না, তখন বাধ্য হয়ে জুলুম থেকে বাঁচার জন্য বা নিজের হক আদায়ের জন্য কিছু শর্ত সাপেক্ষে তাগুতের আদালতে বিচার চাওয়া জায়েয। শর্তগুলো হচ্ছে;
১. শরীয়াহ বিচারই যে উত্তম, পূর্ণাঙ্গরূপে এই বিশ্বাস লালন করা।
২. প্রতিপক্ষের উপর জুলুম না করা।
৩. আমার জন্য যদি এমন কোনো হকের ফায়সালা হয়, যা আমার নয়, তাহলে তা প্রকৃত হকদারকে ফিরিয়ে দেওয়া।
আরও জানার দেখুন;
১৯৩. নিরপরাধ কোনো মুসলিমকে মুক্ত করার জন্য তাগুতের কোর্টে কেইস লড়ার হুকুম কী?
২৩৫. বর্তমান তাগুতি আদালতে কি বিচার চাওয়া যাবে?
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
১৭-৭-৪৪
০৯-২-২৩