কাতারের মাঝখানে ফাঁকা রাখার হুকুম কী?
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
প্রশ্ন:
বর্তমানে করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেক মসজিদে তিন ফুট বা এক ফুট ফাঁক রেখে সালাত আদায় করতে দেখা যাচ্ছে, শরীয়ার দৃষ্টিতে এর হুকুম কী?
প্রশ্নকারী- যাবীহুল্লাহ
উত্তর:
স্বাভাবিক অবস্থায় এভাবে কাতারের মাঝে ফাঁকা রেখে দাঁড়ানো মাকরূহে তাহরীমি। বর্তমান পরিস্থিতিতেও তা মাকরূহ হবে কি না, এবিষয়ে সমকালীন আলেমদের মাঝে দ্বিমত রয়েছে। কেউ বলছেন, এই পরিস্থিতিতে ফাঁকা রেখে দাঁড়ানোর অবকাশ আছে। পরিস্থিতির কারণে তা মাকরূহ হবে না। অন্যরা বলছেন, না, এই পরিস্থিতিতে রুগী ও রোগের উপসর্গ বহনকারীরা যেহেতু মসজিদে যাবে না; বরং শরীয়ত যাদেরকে সুস্থ গণ্য করে, কেবল তারাই মসজিদে যাবে, সুতরাং মসজিদে উপস্থিত সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য শুধু শুধু অমূলক সংশয়ের ভিত্তিতে, নববি যামানা থেকে চলে আসা; কাতারে মিলে মিশে দাঁড়ানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ শরঈ বিধানটি ত্যাগ করার সুযোগ নেই। করলে তা মাকরূহ হবে। দলিলের দিক থেকে আমরা দ্বিতীয়োক্ত মতটি অগ্রগণ্য মনে করি।
তবে সাধারণ মুসল্লিদের জন্য এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষ রাখা জরুরি,
১. যাঁরা প্রথমোক্ত মতটি পোষণ করেন, তাঁরাও নির্ভরযোগ্য আলেম। সুতরাং কেউ তাঁদের মতের ওপর আমল করতে চাইলে সেটার অবকাশ আছে। এটা নিয়ে তর্কবিতর্ক ও বাড়াবাড়ি করার সুযোগ নেই।
২. জামাতের কাতারে কিভাবে দাঁড়াবে, তা এককভাবে আমল করা সম্ভব নয়। বরং এটি একটি সমষ্টিগত আমল। সুতরাং মসজিদের ইমাম ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হল, নির্ভরযোগ্য আলেমদের সঙ্গে পরামর্শ করে; শরীয়তের দলিলের আলোকে যেটা অগ্রগণ্য সেটাই গ্রহণ করা এবং মসজিদে সেই আলোকে সালাতের ব্যবস্থাপনা করা।
৩. কিন্তু কোনো মসজিদে যদি প্রথমোক্ত মতের ভিত্তিতে কাতারে ফাঁকা রেখেই সালাতের ইন্তেজাম চালু থাকে, তাহলে গোড়া থেকে তা পরিবর্তনের ফিকির না করে, শুধু দু’একজনের জন্য ফাঁকা বন্ধ করে দাঁড়ানো এবং অন্যদেরকে তা করানোর চেষ্টা করা ঠিক নয়। এতে মসজিদে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, যা আদৌ কাম্য নয়। সুতরাং একারণেও যদি কেউ ফাঁকা রেখে দাঁড়ায়, তার সালাতও মাকরূহ হবে না ইনশাআল্লাহ। এবিষয়ে ‘করোনা মহামারি: মসজিদ, জুমআ ও জামাতে পাবন্দি-শরীয়াহর নির্দেশনা’ শিরোনামে মোটামুটি বিস্তারিত একটি ফতোয়া প্রকাশিত হয়েছে। ফতোয়া নং ১৭। সেটি দেখলে আশা করি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরো কিছু জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
فقط. والله تعالى اعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
২ ই যুলকা’দাহ, ১৪৪১ হি.
২৪ শে জুন, ২০২০ ইং
আরো পড়ূন
জামাআতের সাথে নামায আদায়ের জন্য সর্বনিম্ন কয়জন মুসল্লী থাকতে হবে?