ভুলবশত সাহু সিজদা দিয়ে ফেললে কি নামায নষ্ট হয়ে যায়?
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
প্রশ্নঃ
একবার আমাদের ইমাম সাহেব এশার নামাযে বাহ্যিক কোনও কারণ ছাড়াই সাহু সেজদা দেন। নামাযের পর তিনি জানান, তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর অন্য সূরা পড়ে ফেলেছেন, তাই সাহু সেজদা দিয়েছেন। আমরা বললাম, এমন হলে তো সাহু সেজদা দিতে হয় না। তখন এ নিয়ে বেশ তর্ক-বিতর্ক হয়। কোনো কোনো মুসল্লি বললেন, ইমাম ঠিকই করেছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা ঠিক হয়নি। আমার জানার বিষয় হলো, ইমাম সাহেবকে আমাদের জিজ্ঞেস করা ঠিক হয়েছে কি না? আর আমাদের নামাযে কি কোনও সমস্যা হবে? নামায কি পুনরায় পড়তে হবে?
প্রশ্নকারী- মুহাম্মাদ ফেরদৌস
উত্তরঃ
ফরয নামাযের তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য কোনও আয়াত কিংবা সূরা না পড়াই নিয়ম। তবে কেউ পড়ে ফেললে সাহু সিজদা দিতে হবে না। তথাপিও না জেনে সাহু সিজদা দিয়ে দিলে নামায সহীহ হয়ে যাবে। সুতরাং আপনাদেরকে পুনরায় উক্ত নামায আদায় করতে হবে না।
-ফতোয়া শামী: ১/৪৫৯; মাবসুত: ১/২২৯; খিযানাতুল আকমাল: ১/১৭৯; হালবাতুল মুজাল্লি: ২/১৮১-১৮২; ফাতহুল কাদীর: ১/৩৯১
উল্লেখ্য শরয়ী কোন বিষয়ে সংশয় হলে, তা আদবের সাথে প্রশ্ন করে আলেমদের থেকে জেনে নেয়াই কাম্য। সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম এমনটিই করতেন।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْصَرَفَ مِنَ اثْنَتَيْنِ، فَقَالَ لَهُ ذُو اليَدَيْنِ: أَقَصُرَتِ الصَّلاَةُ، أَمْ نَسِيتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَصَدَقَ ذُو اليَدَيْنِ» فَقَالَ النَّاسُ: نَعَمْ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى اثْنَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ كَبَّرَ، فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ. – صحيح البخاري: 1\44، رقم: 714، الناشر: دار طوق النجاة (مصورة عن السلطانية بإضافة ترقيم ترقيم محمد فؤاد عبد الباقي) الطبعة: الأولى، 1422هـ
“আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে) দুই রাকাত আদায় করে সালাম ফিরিয়ে ফেললেন। (নামায শেষ হলে) যুলইয়াদাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করলেন, নামায কমানো হয়েছে, না আপনি ভুলে গেছেন ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সাহাবীদের) জিজ্ঞেস করলেন, “যুলইয়াদাইন কি ঠিক বলছে?” লোকেরা বললো “জি, ঠিক বলেছেন।” অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও দুই রাকাত আদায় করলেন….।” সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭১৪
তবে যে বিষয়টি কারও নিশ্চিত জানা নেই, তার জন্য সে বিষয়ে তর্কে জড়ানো অন্যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ ۚ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَـٰئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا. الإسراء:36
“যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই, তুমি সে বিষয়ের পেছনে পড়ো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও হৃদয় প্রত্যেকটি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।” (সূরা ইসরা ১৭:৩৬)
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
২৫-০৩-১৪৪৪ হি.
২২-১০-২০২২ ঈ.
আরও পড়ুনঃ মবিল যুক্ত কাপড় পরে নামায আদায়ের বিধান