নারীদের জন্য নাকফুল পরার হুকুম কী?
পিডিএফ ডাউলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
প্রশ্ন:
নারীদের জন্য নাকফুল পরার হুকুম কী? পরা কি বৈধ? বৈধ হলে পরা কি জরুরি? না পরলে কি কোনো ক্ষতির আশংকা আছে?
প্রশ্নকারী- মাওলানা আব্দুর রহমান
উত্তর:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে নারীরা কানের দুল পরতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে বাধা দিতেন না। সহীহ বুখারীর একটি হাদীসে এসেছে,
عن ابن عباس رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم صلى يوم العيد ركعتين لم يصل قبلها ولا بعدها ثم أتى النساء ومعه بلال فأمرهن بالصدقة فجعلت المرأة تلقي قرطها.
(كتاب اللباس،باب القرط للنساء، رقم: ۵۸۸۳، ج: ۲، ص: ۸۷۴،ط:المکتبۃ المظہریہ،کراچی)
“ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন … (নামায শেষে) নারীদের কাছে গেলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বেলাল রা.। তিনি নারীদেরকে সাদাকা করার নির্দেশ দিলেন। নারীরা তাদের কানের দুল খুলে দান করতে লাগলেন।” –সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৮৮৩
ফতোয়া কাজিখানে বলা হয়েছে,
ولابأس بثقب أذن الطفل لأنهم كانوا يفعلون ذلك فى الجاهلية ولم ينكر عليهم ذلك رسول الله صلى الله عليه وسلم.
-الخانية على هامش الهندية، كتاب الحظر والاباحة، باب مايكره من النظر والمس للأقارب والأجانب ومالايكره، فصل فى الختان،۳/۴۱۰،ط: دارالصادر
“মেয়েশিশুর কান ফোঁড়াতে অসুবিধা নেই। কারণ জাহেলি যুগে সবাই তা করত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে বাধা দেননি।” –ফতোয়া কাজিখান: ৩/৪১০
কান ফুঁড়িয়ে অলঙ্কার পরার বিষয়টি যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্বীকৃত, তখন তার উপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম নারীদের সাজ গ্রহণের উদ্দেশ্যে নাক ফুঁড়িয়ে নাকফুল পরাকেও জায়েয বলেছেন। আল্লামা শামী রহ. বলেন,
قلت: إن كان مما يتزين النساء به كما هو في بعض البلاد فهو فيها كثقب القرط اهـ ط. 6/420
‘(নাক ফোঁড়ানো) যদি নারীদের সজ্জার অংশ হয়, যেমনটি বিভিন্ন দেশে দেখা যায়, তাহলে এটি দুল পরার জন্য কান ফোঁড়ানোর মতোই (জায়েয)। -ফতোয়া শামি: ৬/৪২০
তবে নাকফুল পরা জরুরি নয় এবং এনিয়ে সমাজে যেসব রেওয়াজ চালু আছে, যেমন স্বামী থাকলে নাকফুল পরা জরুরি; না পরলে ক্ষতি হয়, এসব সম্পূর্ণ কুসংস্কার। শরীয়তে এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।
فقط، والله تعالى أعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
০৮-০৯-১৪৪২ হি.
২১-০৪-২০২১ ইং
আরও পড়ুন
নারীদের জামাআত ও ইমামতির বিধান কী?
——————————-
[1] এ ফতোয়াটি মূলত পুর্বপ্রকাশিত একটি ফতোয়ার সংশোধিত কপি। বিগত ২৬-০৭-১৪৪২ হি. ১১-০৩-২০২১ ইং প্রদত্ত সংশ্লিষ্ট ফতোয়াটিতে অসতর্কতাবশত কিছু ভুল হয়েছে। কেউ আগের ফতোয়াটি সংরক্ষণ করে থাকলে পরিবর্তন করে নিন। আল্লাহ আমাদের সকল ভুল ত্রুটি ক্ষমা করুন। ভবিষ্যতে এমন ভুল থেকে হেফাজত করুন। অনাকাঙ্খিত ভুলের জন্য দুঃখিত। -আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)