একাধিক রোযা ভাঙ্গলে কয়টি কাফফারা আসবে?
পিডিএফ ডাউলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
প্রশ্ন: ইচ্ছাকৃতভাবে একাধিক রোযা ভাঙ্গলে কয়টি কাফফারা আসবে?
-আবদুস সালাম
উত্তর:
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
الحمد لله، والصلاة والسلام على محمد وأصحابه، أما بعد:
রমযান মাসে রোযা রাখার পর ইচ্ছাকৃত খাবার বা পানীয় গ্রহণের মাধ্যমে রোযা ভঙ্গ করলে কাযা আদায় করার পাশাপাশি কাফফারাও আদায় করতে হবে। কাফফারা আদায় করার পর নতুন করে রোযা ভাঙলে আবারও কাফফারা দিতে হবে। কাফফারা আদায় না করে থাকলে সবগুলো রোযার জন্য একটি কাফফারাই যথেষ্ট; এক রমযানে ভেঙে থাকুক কিংবা একাধিক রমযানে। -কিতাবুল আসল: ২/১৫৩, মাবসূতে সারাখসী: ৩/৭৪-৭৫, ফাতাওয়ায়ে সিরাজিয়া: ১৬৮, ফাতাওয়ায়ে বাযযাযিয়া: ১/৬৮, ফাতাওয়ায়ে রাশীদিয়া: ২/১২০
তবে সহবাসের মাধ্যমে একাধিক রমযানের রোযা ভেঙে থাকলে; ফুকাহায়ে কেরামের কেউ কেউ প্রত্যেক রমযানের জন্য পৃথক পৃথক কাফফারা আদায়ের মত দিয়েছেন। তাই এই সুরতে প্রত্যেক রমযানের জন্য পৃথক কাফফারা আদায় করাই সতর্কতার দাবি। -আল-মুজতাবা: ২/২৭২-২৭৩, আদ্দুররুল মুখতার (রদ্দুল মুহতারের সাথে মুদ্রিত): ২/৪১৩, ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৪/২৫৩-২৫৪
উল্লেখ্য, বিনা ওজরে ইচ্ছাকৃত রমযানের রোযা ভাঙ্গা অনেক বড় গুনাহ। ভবিষ্যতে এ থেকে বিরত থাকা এবং পূর্বের কৃতকর্মের জন্য তাওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
بينا أنا نائم إذ أتاني رجلان، فأخذا بضبعي، فأتيا بي جبلا وعرا، فقالا لي: اصعد، حتى إذا كنت في سواء الجبل فإذا أنا بصوت شديد، فقلت: ما هذه الأصوات؟ قال: هذا عواء أهل النار، ثم انطلق بي، فإذا بقوم معلقين بعراقيبهم، مشققة أشداقهم تسيل أشداقهم دما، فقلت: من هؤلاء؟ فقيل: هؤلاء الذين يفطرون قبل تحلة صومهم. -رواه ابن خزيمة (1986) وابن حبان (7491) في صحيحهيهما، والحاكم في المستدرك، (2837) والنسائي في الكبرى (3273) والطبراني في المعجم الكبير (7666) وصححه الحاكم علي شرط مسلم، ووافقه الذهبي، قال الهيثمي في مجمع الزوائد (1/77) : رجاله رجال الصحيح. وقال المنذري: في الترغيب والترهيب (3/ 188): قال الحافظ ولا علة له.اهــــ
“আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, দুজন ব্যক্তি এসে আমার বাহু ধরে আমাকে একটি দুর্গম পাহাড়ের কাছে নিয়ে গেল। তারা বললো, আপনি এই পাহাড়ে চড়ুন। আমি যখন পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছলাম, প্রচণ্ড আওয়াজ শুনতে পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, এ আওয়াজ কিসের? তারা বললো, জাহান্নামীদের চিৎকার। এরপর তারা আমাকে নিয়ে চলল। তখন আমি এমন কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদের পায়ের গোড়ালি বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, তাদের মুখের পার্শ্বগুলো ক্ষতবিক্ষত এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। জানতে চাইলাম, এরা কারা? তারা বললো, এরা হলো ওই সকল লোক, যারা সময় হওয়ার পূর্বেই রোযা ভেঙ্গে ফেলত।” -সহীহ ইবনে খুযাইমাহ: ১৯৮৬; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৭৪৯১; মুস্তাদরাক-হাকেম: ২৮৩৭; তাবারানী-আল-মুজামুল কাবীর: ৭৬৬৬; মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ১/৭৭। হাফেজ আবু আব্দুল্লাহ হাকেম, ইমাম যাহাবী এবং হাফেয হাইসামী রহিমাহুমুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
فقط، والله تعالى أعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
১৩-০৮-১৪৪৬ হি.
১৩-০২-২০২৫ ঈ.
আরও পড়ুনঃ সফরের কারণে রোযা কমবেশ হলে করণীয়