প্রশ্ন: আমি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনসহ বিভিন্ন অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ার কাজ করি। অনেক সময় বিদেশগামীদের বয়স বাড়িয়ে ১৮/১৯ থেকে ২১/২২ বছর করতে হয়, যা সাধারণভাবে টাকা ছাড়া সম্ভব হয় না এবং খরচও বেশি পড়ে। তবে আমার পরিচিত কিছু অফিসকর্মীর মাধ্যমে আমি এসব কাজ তুলনামূলক কম খরচে ও দ্রুত করে দিতে পারি। অফিসকর্মীরা সরাসরি টাকা নেয় না, কারণ এতে তাদের চাকরির ঝুঁকি থাকে। ফলে আমি মাধ্যম হিসেবে যুক্ত হয়ে কাজ করাই এবং এতে আমারও কিছু আয় হয়।
এখন প্রশ্ন হলো—যেহেতু এতে ঘুষের মতো লেনদেন হয় তাই এখানে মধ্যস্থতা করে টাকা নেওয়া কি বৈধ হবে?
-মুহাম্মাদ খালিদ
উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ঘুষ যদিও অনেক ক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে লেনদেন করা হয়, যা নাজায়েয, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাগরিকরা তাদের বৈধ অধিকার আদায়ের জন্যও দিতে বাধ্য হয়। গ্রহণকারীর জন্য ঘুষ সর্বাবস্থায় হারাম হলেও যেসব ক্ষেত্রে দাতা তার বৈধ হক আদায়ের জন্য দিতে বাধ্য হন, সেসব ক্ষেত্রে তার জন্য ঘুষ দেয়া জায়েয হয়।
যেসব ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে ঘুষ প্রদান করা বৈধ, সেসব ক্ষেত্রে যদি প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় ছাড়া কেউ মধ্যস্থতা করে, তখন সে সেবা গ্রহীতার নিকট থেকে চুক্তি করে ন্যায্য পারিশ্রমিক নিতে পারে। এটি নাজায়েয নয়। তবে একজন মুসলিমের জন্য এজাতীয় কাজকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়। তাছাড়া কোনটি ন্যায্য অধিকার আর কোনটি ন্যায্য নয়, কোনটি ঘুষ প্রদানের বৈধ ক্ষেত্র, কোনটি অবৈধ ক্ষেত্র, এসব নির্ণয় করাও একজন সাধারণ মানুষের জন্য কঠিন। একই সঙ্গে প্রকারান্তরে এটি একটি আপাদ মস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রকাঠামোরও সহযোগিতার শামিল।
-সহীহ মুসলিম: ১০/২৩৩; ফাতহুল কাদীর: ৩/২৮২; আদদুররুল মুখতার (রদ্দুল মুহতারসহ): ৬/৪২৩; রদ্দুল মুহতার: ৫/৭২
فقط، والله تعالى أعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
০৬-০১-১৪৪৭ হি.
০২-০৭-২০২৫ ঈ.