জিহাদ-কিতাল:ফাতওয়া  নং  ১২৫

আক্রান্ত মুসলিম দেশের পার্শ্ববর্তী দেশের ওপর কখন জিহাদ করা ফরযে আইন হয়?

আক্রান্ত মুসলিম দেশের পার্শ্ববর্তী দেশের ওপর কখন জিহাদ করা ফরযে আইন হয়?

আক্রান্ত মুসলিম দেশের পার্শ্ববর্তী দেশের ওপর কখন জিহাদ করা ফরযে আইন হয়?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

কোনো মুসলিম ভূমিতে কুফফারদের আগ্রাসন হলে যদি ওই এলাকার লোকজন তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ না করে, তাহলে কি অন্যান্য মুসলিমদের ওপর জিহাদ ফরয হয়ে যাবে?

বিনীত

আব্দুল কাদের

 

উত্তর:

হ্যাঁ, ওই এলাকার লোকজন জিহাদ না করলে পার্শ্ববর্তী মুসলমানদের ওপর জিহাদ ফরজে আইন হয়ে যাবে। পার্শ্ববর্তীরাও না করলে বা সক্ষম না হলে তাদের পার্শ্ববর্তীদের ওপর এবং এভাবে পর্যায়ক্রমে পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলমানের ওপর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় সামর্থ্যবানদের মধ্যে যারা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে না, তারা সবাই গুনাহগার হবে।

আগ্রাসনের সময় জিহাদের বিধান সম্পর্কে ইবনু নুজাইম মিসরি রহ. (৯৭০ হি.) বলেন,

فيجب على جميع أهل تلك البلدة، وكذا من يقرب منهم إن لم يكن بأهلها كفاية، وكذا من يقرب ممن يقرب إن لم يكن ممن يقرب كفاية أو تكاسلوا وعصوا وهكذا إلى أن يجب على جميع أهل الاسلام شرقا وغربا. اهـ

“সে এলাকার সকলের ওপর জিহাদ ফরজ হয়ে যাবে। যদি তারা যথেষ্ট না হয়, তাহলে তাদের পার্শ্ববর্তীদের ওপর একই হুকুম বর্তাবে। যদি তাদের পার্শ্ববর্তী মুসলমানরাও যথেষ্ট না হয় অথবা (আল্লাহর) নাফরমানি করে অলসতা করে (জিহাদ না করে), তাহলে তাদের পার্শ্ববর্তীদের ওপর এই হুকুম বর্তাবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে পূর্ব থেকে পশ্চিম; সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলমানের ওপর জিহাদ ফরজ হয়ে যাবে।” -আলবাহরুর রায়েক: ১৩/২৮৯

ইবনু আবিদিন শামি রহ. (১২৫২ হি.) বলেন,

الجهاد إذا جاء النفير إنما يصير فرض عين على من يقرب من العدو، فأما من وراءهم ببعد من العدو فهو فرض كفاية عليهم، حتى يسعهم تركه إذا لم يحتج إليهم. فإن احتيج إليهم بأن عجز من كان يقرب من العدو عن المقاومة مع العدو أو لم يعجزوا عنها، لكنهم تكاسلوا ولم يجاهدوا: فإنه يفترض على من يليهم فرض عين كالصلاة والصوم، لا يسعهم تركه ثم وثم إلى أن يفترض على جميع أهل الإسلام شرقا وغربا على هذا التدريج. اهـ

“যদি শত্রুরা মুসলমানদের ওপর আক্রমণ চালায়, তাহলে (প্রথমত) জিহাদ ফরজে আইন হয় ওইসব মুসলমানের ওপর, যারা শত্রুর নিকটবর্তী। আক্রান্ত এলাকা থেকে যারা দূরে অবস্থান করছে, (শত্রু প্রতিহত করতে) যদি তাদের সাহায্যের প্রয়োজন না হয়, তাহলে তাদের ওপর জিহাদ করা (ফরজে আইন নয়; বরং) ফরজে কেফায়া। এ অবস্থায় তাদের জন্য জিহাদে শরীক না হওয়ার অবকাশ আছে। তবে যদি তাদের প্রয়োজন দেখা দেয়, যেমন শত্রুর নিকটে যারা রয়েছে, তারা শত্রু প্রতিরোধে অপারগ হল বা অপারগ হল না, কিন্তু অলসতাবশত জিহাদ করল না, তাহলে তাদের পার্শ্ববর্তীদের ওপর জিহাদ ফরজে আইন হয়ে যাবে; যেমন নামাজ-রোজা ফরজে আইন। তখন তাদের জন্য জিহাদ না করার অবকাশ থাকবে না। এভাবে তাদের পরের এবং তাদের পরের মুসলমানদের ওপর জিহাদ ফরজে আইন হতে থাকবে; পর্যায়ক্রমে পুর্ব থেকে পশ্চিম; সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলমানের ওপর জিহাদ ফরজে আইন হয়ে যাবে।” -রদ্দুল মুহতার: ৪/১২৪

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

 

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদী উফিয়া আনহু

০১-০৪-১৪৪২ হি.

১৭-১১-২০২০ ইং

আরো পড়ূন
বর্তমানে কী কী কারণে জিহাদ ফরযে আইন?

Related Articles

Back to top button