জিহাদ-কিতাল:ফাতওয়া  নং  ৩২২

বাবা জিহাদ নিয়ে কটাক্ষ করলে ছেলের করণীয় কী?

বাবা জিহাদ নিয়ে কটাক্ষ করলে ছেলের করণীয় কী?

বাবা জিহাদ নিয়ে কটাক্ষ করলে ছেলের করণীয় কী?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

আমার বাবা আমাকে কথায় কথায় ‘জঙ্গি’ বলেন। জিহাদ নিয়ে সমালোচনা করেন। পান থেকে চুন খসতেই আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলতে শুরু করেন। তোমরা জিহাদী, জিহাদ করে কি করছো, দেখছি না! ইত্যাদি । অথচ তিনি চরমোনাইর পীর সাহেবের মুরিদ। মুহতারামের কাছে আমার জানার বিষয় হলো, এই অবস্থায় আমি কী করতে পারি?

নাম- হাসান

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রথমত আপনার বাবার মতো একজন সাধারণ মুসলিমের সামনে দ্বীনকে যেভাবে উপস্থাপন করা দরকার, আপনি ঠিক সেভাবে উপস্থাপন করতে পারছেন কি না, না এখানে কোনও বিচ্যুতি ও অসঙ্গতি আছে, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে যে দাঈ ভাইরা বিষয়গুলো ভালো বুঝেন, তাদের সামনে এই বিষয়টি বিস্তারিত পেশ করে পরামর্শ নিন। আপনার আচরণ-উচ্চারণে কোনও অসঙ্গতি থাকলে সেটা সংশোধনের চেষ্টা করুন।

আমি এখানে শুধু জিহাদের দাওয়াত উপস্থাপন করার কথা বলছি না; বরং একজন দাঈ হিসেবে, ছেলে হয়ে বাবার কাছে কীভাবে বিষয়গুলো পেশ করতে হবে, কীভাবে একজন আদর্শ সন্তান হিসেবে নিজেকে বাবার সামনে তুলে ধরা দরকার, এই বিষয়গুলো ভালো করে বুঝে এবং সে অনুযায়ী নিজের ত্রুটি-বিচ্যুতি ও অসঙ্গতিগুলো সংশোধন করে বাবার সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করুন।

দ্বিতীয়ত, সর্বাবস্থায় আপনি বাবার সঙ্গে সদাচার করে যান। উত্তম সেবা ও সদাচার দিয়ে আগে তাঁর মন জয় করার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে নম্রভাবে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন, বাবা আমি দুর্বল কিংবা খারাপ হতে পারি, কিন্তু জিহাদ শরীয়তের একটি অকাট্য বিধান। আমার ভুল-ত্রুটির শাস্তি আমাকে দিতে পারেন। তা না করে আমার ভুলের কারণে জিহাদ নিয়ে কটাক্ষ করা আপনার ঈমানের জন্য ক্ষতিকর। ঠিক যেমন আমার ভুল -ত্রুটির কারণে নামায নিয়ে কটাক্ষ করা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর। প্রয়োজনে তিনি যে আলেমদের প্রতি ভালোবাসা ও আস্থা রাখেন, এমন কোনও আলেমের মাধ্যমে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করতে পারেন।

যতদিন তাঁর মধ্যে এই বুঝ না আসবে, ততদিন আপনি জিহাদ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তাঁর সামনে উত্থাপন করা থেকে বিরত থাকুন এবং এমন আচরণ-উচ্চারণ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন, যেগুলোর কারণে তিনি আপনার প্রতি বিরক্ত হয়ে শরীয়তের বিধানের সঙ্গে এমন অসংলগ্ন আচরণ করতে পারেন।

একই সঙ্গে দ্বীনের সঠিক বুঝ দানের জন্য; আল্লাহর রহমতের প্রতি আশা রেখে, সালাতুল হাজত পড়ে, আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে দোয়া করতে থাকুন। আল্লাহ একসময় তাকে সহীহ বুঝ দান করবেন ইনশাআল্লাহ।

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

আরও পড়ুনঃ অন্তরে ঈমান রেখে মুখে কুফরি বাক্য উচ্চারণের হুকুম কী?

Related Articles

Back to top button