ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো নামায পরবর্তী ওয়াক্তে আদায় করার বিধান
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
প্রশ্নঃ
বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা আছে, তাই একটি বিষয় জানতে চাচ্ছি, কখনও যদি কাজের সময় নামাযের ওয়াক্ত হয়ে যায় এবং তখন নামায আদায় না করতে পারি, তাহলে যদি পরবর্তী নামাযের সাথে এক সাথে পড়ে নিই, যেমন যোহরের নামায আসরের সময় একসাথে পড়ে নিই, এক্ষেত্রে কি আমার নামায সহীহ হবে?
-মুহাম্মাদ সুমন
উত্তরঃ
প্রত্যেক নামায সেই নামাযের ওয়াক্তে আদায় করা ফরয। সুতরাং এক ওয়াক্তের নামায অন্য ওয়াক্তে আদায় করার সুযোগ নেই। এটা অনেক বড় গুনাহ। এজন্য যত কাজই থাকুক, সব রেখে নামাযের সময় নামায আদায় করে নিতে হবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَوْقُوتًا. -النساء:103
নিশ্চয়ই নামায মুমিনদের ওপর এমন এক অবশ্য পালনীয় কাজ, যা সময়ের সাথে আবদ্ধ।” – (সূরা নিসা: ০৪:১০৩)
আয়াতের তাফসীরে ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহ. (৬০৬ হি.) বলেন,
واعلم أنه تعالى بين في هذه الآية أن وجوب الصلاة مقدر بأوقات مخصوصة اهـ. – التفسير الكبير (11/ 208، الناشر: دار إحياء التراث العربي – بيروت).
“জেনে রাখো, আল্লাহ তাআলা উক্ত আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, নামাযের ফরয বিশেষ সময়ের সাথে নির্ধারিত।” –তাফসীরে কাবীর: ১১/২০৮, (দারু ইহয়াইত তুরাস)।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة، فمن تركها فقد كفر. -جامع الترمذي ت بشار (4/ 310 رقم الحديث: 2621 دار الغرب الإسلامي) وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح.
“আমাদের এবং কাফেরদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল হলো, নামায। যে নামায ছেড়ে দিল সে কুফরী করলো।” –জামিউত তিরমিযী: ৪/৩১০ হাদীস নং: ২৬২১ (দারুল গরবিল ইসলামী)
অপর হাদীসে নবীজি ইরশাদ করেন,
خمس صلوات افترضهن الله على عباده، من أحسن وضوءهن وصلاهن لوقتهن، فأتم ركوعهن وسجودهن وخشوعهن كان له عند الله عهد أن يغفر له، ومن لم يفعل فليس له عند الله عهد إن شاء غفر له، وإن شاء عذبه. -مسند أحمد (37/377 ط الرسالة: رقم الحديث: 22704) سنن أبي داود (1/316 رقم الحديث: 425 دار الرسالة العالمية الطبعة الأولى، 1430 هـ)
“আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। যে ব্যক্তি সুন্দররূপে অযু করে ওয়াক্ত মতো পূর্ণাঙ্গ রূপে রুকু-সিজদা ও খুশু-খুযুর সাথে তা আদায় করবে, তাকে ক্ষমা করার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার প্রতিশ্রুতি থাকবে। আর যে তা করবে না, তার জন্য আল্লাহ তাআলার কোনও প্রতিশ্রুতি থাকবে না। আল্লাহ তাআলা চাইলে তাকে ক্ষমা করবেন, চাইলে শাস্তি দিবেন।” –মুসনাদে আহমদ: ৩৭/৩৭৭, হাদীস নং: ৩৩৮১৫ (মুআসসাসাতুর রিসালাহ); সুনানে আবু দাউদ: ১/৩১৬ হাদীস নং: ৪২৫ (দারুর রিসালাতিল আলামিয়্যাহ)
হ্যাঁ, কেউ যদি এমন কঠিন কোনও পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, যার ফলে নামায আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব না হয়, যেমন খন্দকের যুদ্ধে কঠিন আক্রমণের মুখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হয়েছিলো, তাহলে সে ক্ষেত্রে বিধান হল, ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেলেও পরের ওয়াক্তের নামাযের আগে আগে উক্ত নামায কাযা করে নেওয়া-জামিউত তিরমিযী: ১/২৪৭, হাদীস নং ১৮০ (দারুল গারবিল ইসলামী); রদ্দুল মুহতার: ২/৬২ (দারুল ফিকর)
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
০৫-০৭-১৪৪৪ হি.
২৮-০১-২০২৩ ঈ.
আরও পড়ুনঃ রুকু-সেজদায় অক্ষম হলে কীভাবে নামায পড়বে?