প্রশ্ন: হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ‘শারদীয় শুভেচ্ছা’ জানানোর হুকুম কী? কেউ যদি বলে—শারদীয় দুর্গাপূজা আমাদের সকলের মাঝে সুখ বয়ে আনুক— তবে তার এ বক্তব্যের বিধান কী? সে কি তাকফীরের যোগ্য গণ্য হবে?
রিফাত জিহাদ
উত্তর: দুর্গা পূজার মতো এমন আনুষ্ঠানিক ও প্রতীকি (শিরকের শেয়ার ও নিদর্শন স্তরের) মূর্তিপূজাকে শুভেচ্ছা জানানো কিংবা সুখ ও কল্যাণের বাহক মনে করা ও বলা নিঃসন্দেহে কুফর। তবে কোনো ব্যক্তি এমন কাজ করলে তাকে কাফের আখ্যায়িত করার জন্য যেসব ‘মাওয়ানে’ (তাকফীরের প্রতিবন্ধক) ও শর্তের প্রতি লক্ষ রাখা জরুরি, এ বিষয়গুলো যথাযথ অনুধাবন করা এবং বাস্তবে প্রয়োগ করা একজন বিজ্ঞ আলেমের পক্ষেই সম্ভব। একারণে এসব ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ কাউকে সুনির্দিষ্টভাবে তাকফীর করবে না; বরং বিজ্ঞ আলেমদের শরণাপন্ন হবে। -সুনানে বায়হাকী: ১৮৮৯৫; ফাতাওয়াল বুলকীনী: ২/৯০৯ (দারু ইবনিল কায়্যিম); আল-বাহরুর রায়েক: ৫/১৩৩ (দারুল কিতাবিল ইসলামী); মুয়ীনুল মুফতী লিত-তুমুরতাশী: পৃ: ২৪৭, ২৫৪ (দারুল বাশাইরিল ইসলামিয়া); রদ্দুল মুহতার: ৪/২০৮ (দারুল ফিকর)
তবে তাকে কাফের আখ্যায়িত করা থেকে বিরত থাকার অর্থ এটা নয় যে, তার এ অন্যায় কর্মের ব্যাপারে আমরা গাফেল হয়ে যাব এবং তাকে আর দশজন মুমিনের মতো স্বাভাবিক মনে করব। বরং তাকে এবং সমাজকে এধরনের কাজ থেকে বিরত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। তাকে সামাজিকভাবে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে, প্রয়োজনে বয়কট করতে হবে। তার সঙ্গে নতুন করে আত্মীয়তা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আগের আত্মীয়তা থাকলে আলেমদের মাধ্যমে তার ঈমানের বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে সে আত্মীয়তা থাকবে কি থাকবে না, সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ বাস্তবে যদি তার ঈমান নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে তার বিয়ে ভেঙ্গে যাবে। -লামাআতুত তানকীহ: ১/৩১৩ (দারুন নাওয়াদির); রদ্দুল মুহতার: ৪/২৪৭ (দারুল ফিকর); ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ২/২৮৩ (দারুল ফিকর); ইমদাদুল ফাতাওয়া: ১২/২৪৩
والله تعالى أعلم بالصواب
-আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
২২-০৪-১৪৪৭ হি.
১৫-১০-২০২৫
আরো পড়ুন-