কুরবানি-আকিকাফাতওয়া  নং  ২৯৭

সপ্তম দিনের পরে আকীকা দিলে কি তা আদায় হবে?

সপ্তম দিনের পরে আকীকা দিলে কি তা আদায় হবে?

সপ্তম দিনের পরে আকীকা দিলে কি তা আদায় হবে?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্নঃ

কেউ তার বাচ্চার জন্মের সপ্তম দিন আকীকা দিলো না। কয়েক বছর পরে দিলো। তাহলে কি তার আকীকা আদায় হবে?

প্রশ্নকারী-আবদুল হক

 

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

আকীকা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। হাদীস শরীফে এসেছে,

عن سمرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: الغلام مرتهن بعقيقته يذبح عنه يوم السابع، ويسمى، ويحلق رأسه…..

رواه الترمذي في سننه، 3/153 رقم:1522، وقال: هذا حديث حسن صحيح والعمل على هذا عند أهل العلم يستحبون أن يذبح عن الغلام العقيقة يوم السابع، فإن لم يتهيأ يوم السابع فيوم الرابع عشر، فإن لم يتهيأ عق عنه يوم حاد وعشرين، وقالوا: لا يجزئ في العقيقة من الشاة إلا ما يجزئ في الأضحية.

“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সকল শিশুই তার আকীকার বিনিময়ে বন্ধকস্বরূপ থাকে। জন্মের সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে আকীকা জবাই করতে হবে,তার নাম রাখতে হবে এবং মাথা মুণ্ডাতে হবে।” –সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১৫২২

মোল্লা আলী ক্বারী (রহ) উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন,

الغلام مرتهن” : بضم الميم وفتح الهاء أي مرهون بعقيقته: يعني أنه محبوس سلامته عن الآفات بها أو إنه كالشيء المرهون لا يتم الاستمتاع به دون أن يقابل بها لأنه نعمة من الله على والديه، فلا بد لهما من الشكر عليه، وقيل: معناه أنه معلق شفاعته لهما لا يشفع لهما إن مات طفلا ولم يعق عنه

“আকীকার বিনিময়ে বন্ধকস্বরূপ হওয়ার অর্থ, বিপদ-আপদ থেকে শিশুর নিরাপদ থাকা, আকীকার সাথে সম্পৃক্ত। অথবা সন্তান হলো বন্ধকি বস্তুর ন্যায়, আকীকা দেয়া ব্যতীত যা যথার্থ কল্যাণে আসে না । কেননা শিশু হলো পিতা-মাতার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ামত। অতএব তাদের জন্য আবশ্যক হলো নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। কেউ বলেন, এর অর্থ পিতা-মাতার জন্য বাচ্চার সুপারিশ করা আকীকার সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ কোনো শিশু তার আকীকা না করা অবস্থায় মারা গেলে পিতা-মাতার জন্য সুপারিশ করবে না।” -মিরকাত: ৭/২৬৮৭

ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ) বলেন,

وقد جعل الله سبحانه النسيكة عن الولد سببا لفك رهانه من الشيطان الذي يعلق به من حين خروجه إلى الدنيا وطعن في خاصرته فكانت العقيقة فداء وتخليصا له من حبس الشيطان له وسجنه في أسره ومنعه له من سعيه في مصالح آخرته التي إليها معاده. – تحفة المودود بأحكام المولود (ص: 74)

“আল্লাহ তায়ালা সন্তানের আকীকা করাকে শয়তান থেকে তার মুক্তির মাধ্যম বানিয়েছেন, যে শয়তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় থেকেই তার পেছনে লেগে থাকে এবং তার কোমরে আঘাত করে (যার দরুণ বাচ্চা তখন কান্না করে)। অতএব আকীকা হলো, বাচ্চাকে শয়তানের কবজা হতে এবং আখিরাতের জন্য তার পুণ্যকর্ম সাধনে শয়তানের বাধা হতে মুক্তির মাধ্যম।” -তুহফাতুল মাওদুদ: ৭৪

সুতরাং একজন দায়িত্বশীল ও সচেতন অভিভাবকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, বাচ্চার জন্মের সপ্তম দিনেই আকীকা করা। যদি সপ্তম দিনে করতে না পারে, তাহলে চৌদ্দতম দিনে। তা না পারলে একুশতম দিনে করলেও আকীকা আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু এর পরে করলে অনেকে বলেছেন, আকীকা আদায় হবে না, তবে কেউ কেউ বলেছেন, এর পরে করলেও আদায় হবে এবং এক্ষেত্রেও পরবর্তী যেকোনো সপ্তম দিনের খেয়াল রাখা কাম্য।

-সুনানে তিরমিজি: ১৫২২; বাযলুল মাজহুদ: ৯/৬০৯; ইলাউস সুনান: ১৭/১১৮; মাওসুয়াহ: ৩০/২৭৮-২৭৯

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৫-০৩-১৪৪৪ হি.

২২-১০-২০২২ ঈ.

আরও পড়ুনঃআকিকার গোশত কি সন্তান নিজে এবং তার পিতা-মাতা খেতে পারবে?

Related Articles

Back to top button