বিবিধফাতওয়া  নং  ৪০৭

বর্তমানে প্রচলিত জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণের বিধান

বর্তমানে প্রচলিত জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণের বিধান

বর্তমানে প্রচলিত জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণের বিধান

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্নঃ

বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্য বইগুলো হিন্দু ধর্মের আকীদা ও রীতি-নীতি, নাস্তিক্যবাদ ও কুফর শিরকে ভরপুর। যা দেখলে মনে হয়, মুসলিম শিশুদেরকে কীভাবে নাস্তিক মুরতাদ বানানো যায়, সেই লক্ষ্য পূরণে সরকার উঠে পড়ে লেগেছে। এই অবস্থায় আমার জানার বিষয় হলো,

০১. কুফরী বাক্য লেখা কিংবা পড়ার হুকুম কী?

০২. এই সিলেবাসে লেখাপড়া করার হুকুম কী?

-নিরব আহমদ

উত্তরঃ  

০১. কুফরী বাক্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করা, কুফরী বাক্যকে সমর্থন করা, ভালো মনে করা, কুফরী বাক্যের প্রতি সন্তুষ্ট হওয়া কিংবা সন্তুষ্টি প্রকাশ করা সবই কুফরী। একইভাবে মজা করে কিংবা ঠাট্টাচ্ছলে স্বেচ্ছায় কুফরী বাক্য উচ্চারণ করা কিংবা লেখাও কুফরী। -রদ্দুল মুহতার: ৪/২০৮, ২২৪ (দারুল ফিকর); আল-বাহরুর রায়েক ও মিনহাতুল খালেক: ৫/১৩৩ (দারুল কিতাবিল ইসলামী)

মুফতী রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী রহিমাহুল্লাহ আজ থেকে প্রায় দেড় শত বছর পূর্বে ইংরেজদের স্কুলে পড়া ও তাদের দাওয়াতী মিশনারির প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে কুফরী বাক্য উচ্চারণ করা সম্পর্কে দেওবন্দ ও সাহারানপুরসহ ভারতের ১৯ জন বিজ্ঞ আলেমের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি ফাতওয়া প্রদান করেন।

(سوال) عیسائي مذہب  کے پادریوں نے سہارنپور میں آکر نوجوان لڑکیوں کو تو اپنے مدرسوں میں داخل کرکے بہکانا اور بے دین کرنا اور مرتد بنانا شروع کیا ہی تھا ، اب ایک اور فریب وجہل کی راه نكالي وه يه كه مسلمانوں كي چھ چھ،  آٹھ  آٹھ،  دس دس،  بیس  بیس وغیرہ لڑکیوں اور عورتوں کو اپنے مذہب کی کتابیں پڑھانا شروع کیا ہے، اور وہ لڑکیاں اور عورتیں مطلق اپنے مذہب سے واقعة (واقف) نہیں، ان کو ہر اتوار کو پیسے اور تصویریں اور شیرینی کے لالچ دیۓ جاتے ہیں اور مسیح کو غزلوں اور بھجنوں میں خدا  اور خدا کا بیٹا گوایا جاتا ہے، اور لڑکیاں اور عورتیں خصوصا مسلمانوں کی تنخواہ کے لالچ میں کفر والحاد کے جملے بولتے ہوۓ بھی نہیں ڈرتیں، ایسے مکر وفریب سے پادریوں نے ملک پنجاب میں گذشتہ سالوں میں سات سو  لڑکیاں عیسائي کی ہیں، سہارنپور میں یہ بلا‌‌ۓ جانگز اور ایمان ربا اسی سال آئي ہے، نو  مدرسے خاص سہارنپور میں مسلمانوں میں جاری ہیں، اور مسلمانوں کی عورتیں اس وجہ سے کہ روپیہ کے لالچ میں آکرخود انتظام کر لیں گی اور لڑکیوں کو جمع کرکے بیدین بے ایمان کرنے کی ڈھنگ ہم کو بتلادیں گی۔ معلمہ مقرر کی گئيں، ان مدرسوں میں پڑھنا اور پڑھانا اور پڑھائی کے واسطے مکان دینا اور پڑھنے والیاں اور پڑھانے والیاں جو اس فعل بد سے راضی ہوں اور جو عورتیں شوہروں کے اس حکم خاص کو نہیں مانتیں اور جو شخص اپنے مکان اور اپنے اہل وعیال کو اس کام سے باز نہیں رکھتا اور اپنی لڑکیوں کا ایسے مدرسہ میں جانے سے مانع نہیں ہوتا عند الشر ع  کیا حکم رکھتے ہیں؟ مفصل بحوالۂ آیات و احادیث تحریر فرمایۓ۔  اجر عظیم اللہ سے پایۓ ۔ فقط۔

(جواب) کلمۂ کفر بولنا  عمدا اگرچہ اعتقاد اس پر نہ ہو کفر ہے۔ چناچہ رد المحتار میں لکھاہے۔ “قال في البحر: والحاصل: أن من تكلم بكلمة الكفر هازلا أو لاعبا كفر عند الكل ولا اعتبار باعتقاده كما صرح به (في) الخانية، ومن تكلم (بها) مخطئا أو مكرَها لا يكفر عند الكل، ومن تكلم (بها) عامدا (عالما) كفر عند الكل، ومن تكلم بها اختيارا جاهلا بأنها كفر ففيه اختلاف الخ. وفي الفتح: ومن هزل بلفظ كفر ارتد وان لم يعتقد به (وإن لم يعتقده)؛ للاستخفاف، فهو ككفر المعتاد (العناد). قال في رد المحتار: أي تكلم (به) باختياره غير قاصد معناه، وهذا لا ينافي ما مر من أن الإيمان هو التصديق فقط أو(مع) الإقرار؛ لأن التصديق وإن كان موجودا حقيقة لكنه زائل حكما؛ لأن الشارع جعل بعض المعاصي أمارة (على) عدم وجوده كالهزل المذكور، وكما لو سجد لصنم أو وضع مصحفا في قاذورة فإنه يكفر وإن كان مصدقا؛ لأن ذلك في حكم التكذيب كما أفاده في شرح العقائد. انتهى. رجل كفر بلسانه طائعا وقلبه مطمئن على الإيمان يكون كافرا ولا يكون عند الله مؤمنا، كذا في قاضي خان.

پس رویات سے صاف واضح ہے کہ جو کوئي حضرت عیسی عليه السلام کو ابن اللہ راگ میں گاوے یا کوئي کلمۂ کفریہ پادریوں کے کہلانے سے -جو صاحب مدارس کے لڑکے لڑکیاں کہتی ہیں- کہنےسےمرتد کافر ہوا۔  اور اس امر پر  رضا دینا بھی کفر ہے۔ قال في شرح العقائد وشرح القاري على الفقه الأكبر: الرضا بالكفر كفر. انتهى. اور ان سخت کلمات پر کچھ پرواہ نہ کرنا اور سہل جاننا بھی کفر ہے۔ الاستهانة بالمعصية بأن يعدها هنيئة (هينة) ويرتكبها من غير مبالاة بها ويجريها مجرى المباهات (المباحات) في ارتكابها كفر، كذا في شرح علي على الفقه الأكبر.

الحاصل اس مدرسے کے لڑکے لڑکیاں جو ایسے کلمات بولتے ہیں سب مرتد ہیں اور جو ان کو بخوشی ایسے کام کے واسطے وہاں بھیجتے ہیں دیدہ ودانستہ وہ بھی مرتد کافر ہیں، اور ان مدارس کی پڑھانے والیاں اور اس کے معین مکان وچندہ کے اگر اس فعل بد سے راضی ہیں سب کافر اور مرتد، اور جو اس امر کو برا جان کر دنیا کی طمع سے یہ کام کرتے ہیں یہ سب فاسق فاجر ہیں۔ سب اہل اسلام کو لازم ہے کہ ایسے لوگوں کو اور اپنے بچوں کو روکیں اور منع کریں۔ لقوله عليه السلام: من رأى منكرا فليغيره بيده، فان لم يستطع فبلسانه، فان لم يستطع فبقلبه، وليس وراء ذلك حبة خردل من إيمان. الحاصل جو شخص استطاعت کسی قسم کے منع کی رکھتا ہے  اور پھر منع نہ کرے تو اگر اس فعل کو مستحسن جانتا ہے یا سہل جانتا ہے تو کافر مرتد ہوا، اور جو برا جان کر منع نہ کرے گا وہ مداہن وفاسق ہوا ۔ فقط والله تعالي أعلم۔ كتبه الراجي رحمة ربه رشيد أحمد گنگوہی عفي عنه.

جواب صحيح ہے،  محمد مظهر،  مدرس مدرسه سهارنپور

الجواب حق والحق متبع، عنايت الہي سهارنپوری

الجواب صحيح، ابو الحسن

جواب صحيح ہے، عزيز حسن عفي عنه

جواب صحيح ہے، مشتاق أحمد عفي عنه

الجواب صحيح، حبيب الرحمن عفي عنه

الجواب صحيح ، محمد حسن، مدرس مدرسه ديوبند

الجواب حق، عبد الرحمن عفي عنه

أصاب المجيب، ذو الفقار علي عفي عنه

الجواب صحيح والمنكر فضيح، أحمد عفي عنه

جواب صحيح ہے، محمد امير باز خان

الجواب صحيح حق، محمد محمود عفي عنه، مدرس مدرسه دار العلوم ديوبند

الجواب صحيح، عزيز الرحمن ديوبندي، مدرس مدرسه عربي ميرٹھ، عفي عنه

هذا الجواب صحيح ، والله أعلم وعلمه أتم، محمد ابراهيم سنبھلي عفي عنه

الجواب صحيح، عبد المومن ديوبندي، عفي عنه

الجواب صحيح، محمد منصب علي عفي عنه

جواب صحيح ہے، محمد محمود حسن عفي عنه، مدرس مدرسه اسلاميہ ديوبند.

الحق اجرا‌ۓ کلمۃ الکفرکفر ہے۔ اور آیات کریمہ سے بھی یہ مضمون صراحۃ ثابت ہوتا ہے۔ وهي هذا: من كفر بالله من بعد إيمانه إلا من أكره وقلبه مطمئن بالإيمان ولكن من شرح بالكفر صدرا فعليهم غضب من الله ولهم عذاب عظيم. اس واسطے کہ آیات کریمہ میں صرف حالت اکراہ کا استثنا کیا ہے، اور ما سواۓ اس کے اجراۓ کلمۃ الکفر علی سبیل الا ختیار کفر میں داخل تھا ہی، اور ظاہر ہے کہ اشخاص مذکورہ کا راگ وغیرہ میں کلمات کفر کے زبان سے نکالنا قبیل اکراہ سے نہیں بلکہ با اختیار خود ہے، تو ضرور کفر میں داخل ہوگا، اور اعانت کفر اور تعلیم اس کی اسی قبیل سے ہے۔ والله اعلم بالصواب. الراقم: خليل أحمد ، عفي عنه، مدرس مدرسه عربي، سهارنپور۔

صح الجواب، قال الله تعالى في كتابه: وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ. والله أعلم. حرره الراجي عفو ربه القوي أبو الحسنات محمد عبد الحي، تجاوز الله عن ذنبه الجلي والخفي.

فتاوى رشيديه، ص: 195-198 ط. دار الاشاعت كراتشي

 

“প্রশ্ন: (ইতিপূর্বে) খ্রিস্টান পাদরিরা সাহারানপুরে এসে যুবতী মেয়েদেরকে তো তাদের স্কুলে ভর্তি করে প্রতারিত করা এবং বেদীন ও মুরতাদ বানানো শুরু করেছিলোই, এখন তারা ধোঁকা ও অজ্ঞতার নতুন আরেকটি পথ বের করেছে। তা হলো, মুসলমানদের ছয়জন, আটজন, দশজন, বিশজন করে করে মেয়ে ও নারীদের খ্রিস্টান ধর্মের বই পড়ানো শুরু করেছে। সে সকল মেয়ে ও নারীরা নিজ ধর্মের ব্যাপারে একেবারেই অজ্ঞ। তাদেরকে প্রতি রবিবার অর্থ, ছবি ও মিষ্টান্নের লোভ দেখিয়ে ঈসা আলাইহিস সালামকে সঙ্গীত ও স্তুতিতে খোদা ও খোদার পুত্র বলানো হয়। মুসলিম নারীরা অর্থের লোভে কুফরী বাক্য উচ্চরণ করতেও ভয় করে না। এভাবে প্রতারণা করে পাদরিগণ বিগত বছরগুলোতে পাঞ্জাবে সাতশত মেয়েকে খ্রিস্টান বানিয়েছে। এই জীবন বিধ্বংসী ও ঈমান বিনষ্টকারী ফিতনা সাহারানপুরে এ বছর এসেছে। শুধু সাহারানপুরে মুসলমানদের মাঝে নয়টি স্কুল বিদ্যমান। এসব স্কুলে মুসলিম নারীদের শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যেন তারা অর্থের লোভে নিজেরাই সব কিছু আঞ্জাম দেয় এবং মেয়েদেরকে একত্রিত করে বেদীন ও বেঈমান বানানোর পদ্ধতি বাতলে দেয়। এ সব স্কুলে পড়া, পড়ানো, অথবা পড়ানোর জন্য জায়গা দেয়ার বিধান কী? শিক্ষক-শিক্ষার্থী যারা এই অপকর্মের প্রতি সন্তুষ্ট, যেসব নারী স্বামীদের আদেশ অমান্য করে তাতে যাবে, যে ব্যক্তি নিজের পরিবার-পরিজনকে এমন কাজ থেকে বিরত রাখবে না, নিজের মেয়েদের এমন প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধা দিবে না, শরীয়তের দৃষ্টিতে তাদের বিধান কী? আয়াত ও হাদীসের উদ্ধৃতিতে বিস্তারিত লিখবেন। আল্লাহর কাছে বড় প্রতিদান পাবেন।

উত্তর: ইচ্ছকৃত কুফরী বাক্য বলা কুফর; যদিও ওই বাক্যের প্রতি বিশ্বাস না থাকে। ‘ফাতওয়া শামী’তে এসেছে, ‘আল-বাহরুর রায়েকে’ বলা হয়েছে, কেউ ঠাট্টাচ্ছলে কুফরী বাক্য উচ্চারণ করলে, সকলের ঐকমত্যে কাফের হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তার বিশ্বাস ধর্তব্য হবে না, যেমনটি ‘ফাতওয়া খানিয়া’তে সুস্পষ্টরূপে বলা হয়েছে। পক্ষান্তরে ভুলবশত কিংবা বলপ্রয়োগের কারণে বাধ্য হয়ে কুফরী বাক্য উচ্চারণ করলে কারও মতেই কাফের হবে না। যে ব্যক্তি (জেনে শুনে) স্বেচ্ছায় কুফরী বাক্য বলবে, সে সকলের ঐকমত্যে কাফের হয়ে যাবে। তবে বাক্যটি কুফরী হওয়ার ব্যাপারে তার জানা না থাকলে সে ক্ষেত্রে মতভেদ রয়েছে।’ ‘ফাতহুল কাদীরে’ এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঠাট্টাচ্ছলে কুফরী শব্দ বলবে, (দীনের প্রতি) অবজ্ঞার কারণে সে মুরতাদ হয়ে যাবে; যদিও সে যা বলেছে তাতে বিশ্বাসী না হয়। এটা ‘কুফরুল ইনাদ’ (হক বুঝেও হঠকারিতাবশত না মানার কুফরের) মতোই।’ ‘ফাতওয়া শামী’তে বলা হয়েছে, ‘অর্থাৎ, সে কুফরী শব্দ স্বেচ্ছায়ই উচ্চারণ করেছে, কিন্তু এর অর্থ উদ্দেশ্য নেয়নি (এক্ষেত্রেও কাফের হয়ে যাবে)। এটা পূর্বের কথার বিপরীত নয় যে, ঈমান শুধু সত্যায়ন ও স্বীকারোক্তির নাম। কেননা বাস্তবে সত্যায়ন থাকলেও এখানে তা ধর্তব্য নয়। কারণ শরীয়ত ঠাট্টাচ্ছলে কুফরী বাক্য বলার মতো কিছু গুনাহকে ঈমান না থাকার নিদর্শন হিসাবে নির্ণয় করেছে। যেমন ঠাট্টাচ্ছলে বলা; যা পূর্বে উল্লেখ করা হলো। তেমনি কেউ মূর্তিকে সিজদা করলে অথবা ভাগাড়ে কুরআন নিক্ষেপ করলে কাফের হয়ে যাবে, যদিও সে ইসলামে বিশ্বাসী হয়। কেননা এই কাজটি কুরআনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করারই নামান্তর, যেমনটি শরহে আকায়েদে বর্ণনা করা হয়েছে।’ ‘ফাতওয়া কাযীখানে’ বলা হয়েছে ‘কেউ স্বেচ্ছায় কুফরী বাক্য উচ্চারণ করলে কাফের হয়ে যাবে, যদিও তার অন্তর ঈমানে অবিচল থাকে। সে আল্লাহ তাআলার নিকট মুমিন হিসাবে গৃহীত হবে না।’

উপরের বর্ণনাসমূহ থেকে স্পষ্ট, যে কেউ হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে সঙ্গীতে আল্লাহর পুত্র বলবে অথবা পাদরিদের বলানোর কারণে কোনো কুফরী বাক্য বলবে, সে মুরতাদ-কাফের হয়ে যাবে। এ বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করাও কুফর। ‘শরহে আকায়েদ’ এবং মোল্লা আলী কারী রহিমাহুল্লাহ রচিত ‘শরহুল ফিকহুল আকবারে’ এসেছে, ‘কুফরের প্রতি সন্তুষ্টিও কুফর।’ এমন মারাত্মক কথাগুলোর ব্যাপারে কোনো পরোয়া না করা এবং এগুলোকে হালকা মনে করাও কুফর। ‘শরহুল ফিকহুল আকবারে’ বলা হয়েছে, ‘গুনাহকে হালকা ভাবা, বেপরোয়াভাবে তাতে লিপ্ত হওয়া এবং লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সেটাকে মুবাহ ও বৈধ বিষয়গুলোরই অনুরূপ জ্ঞান করা কুফর’।

সারকথা হল, এই স্কুলগুলোর ছেলে-মেয়েরা, যারা এসব কুফরী কথা বলে, সবাই মুরতাদ। যে জেনেশুনে এমন কাজের জন্য তাদেরকে সেখানে পাঠাবে সেও কাফের ও মুরতাদ। স্কুলগুলোর শিক্ষক এবং জমি ও চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে যারা এর সহায়তা করে তারা যদি এই অপকর্মের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে, তারাও কাফের ও মুরতাদ। আর যে এ কাজকে মন্দ মনে করে শুধু পার্থিব স্বার্থে তাতে লিপ্ত হয়, সে ফাসেক ও পাপিষ্ঠ। প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য, এমন লোকদের এবং নিজেদের সন্তানদের বাধা দেওয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের কেউ অন্যায় দেখলে যেন হাত দিয়ে তা প্রতিহত করে। যদি তা না পারে, সে যেন যবানের মাধ্যমে তা দূর করতে তৎপর হয়। যদি তাও না পারে, তবে সে যেন উক্ত মন্দ কাজকে মনে মনে ঘৃণা করে এবং পরিবর্তনের পরিকল্পনা করে। এর বাইরে সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান নেই।’

যে ব্যক্তি বাধা দেয়ার কোনো প্রকার সামর্থ্য রাখা সত্ত্বেও বাধা দিলো না, যদি সে ওই কাজকে ভালো মনে করে অথবা হালকা মনে করে, তাহলে সে কাফের-মুরতাদ হয়ে যাবে। আর যে মন্দ মনে করে বাধা না দিবে, সে শৈথিল্যবাদী ও ফাসেক বলে গণ্য হবে। আল্লাহ ভালো জানেন।

ফাতওয়া প্রদানকারী: রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী উফিয়া আনহু।

[বিজ্ঞ আলেমদের দস্তখত ও সংক্ষিপ্ত মন্তব্য]

উত্তর সহীহ। মুহাম্মাদ মাযহার। শিক্ষক, সাহারানপুর মাদরাসা।

উত্তরটি সত্য এবং সত্যই অনুসরণীয়। ইনায়াত ইলাহী সাহারানপুরী।

উত্তরটি সঠিক। আবুল হাসান।

উত্তর সঠিক। আযীয হাসান, উফিয়া আনহু।

উত্তর সঠিক। মুশতাক আহমদ, উফিয়া আনহু।

উত্তরটি সঠিক। হাবীবুর রহমান, উফিয়া আনহু।

উত্তরটি সঠিক। মুহাম্মাদ হাসান। শিক্ষক, দেওবন্দ মাদরাসা।

উত্তরটি সত্য। আবদুর রহমান, উফিয়া আনহু।

উত্তর প্রদানকারী সঠিক উত্তর দিয়েছেন। যুলফিকার আলী, উফিয়া আনহু।

উত্তরটি সঠিক এবং অস্বীকারকারী লাঞ্ছিত। আহমদ, উফিয়া আনহু।

উত্তরটি সঠিক। মুহাম্মাদ আমীর বায খান।

উত্তরটি সত্য, সঠিক। মুহাম্মাদ মাহমুদ, উফিয়া আনহু। শিক্ষক, দেওবন্দ মাদরাসা ।

উত্তরটি সঠিক। আযীযুর রহমান দেওবন্দী, উফিয়া আনহু। শিক্ষক, মাদরাসায়ে আরাবী মিরাঠ।

এই উত্তরটি সঠিক। আল্লাহ ভালো জানেন। তাঁর ইলমই পরিপূর্ণ। মুহাম্মাদ ইবরাহীম সাম্ভলী।

উত্তরটি সঠিক। আবদুল মুমিন দেওবন্দী, উফিয়া আনহু।

উত্তরটি সঠিক। মুহাম্মাদ মানসাব আলী দেওবন্দী, উফিয়া আনহু।

উত্তরটি সঠিক। মুহাম্মাদ মাহমুদ হাসান, উফিয়া আনহু। মাদরাসায়ে ইসলামিয়া, দেওবন্দ।

সঠিক কথা হলো, কুফরী বাক্য আওড়ানোও কুফর। এ বিষয়টি আয়াত থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয়। আল্লাহ ইরশাদ করেন:

مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ.

[“কেউ ঈমান আনার পর আল্লাহর সাথে কুফরী করলে এবং কুফরীর জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি; তবে তার জন্য নয়, যাকে কুফরীর জন্য বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার চিত্ত ঈমানে অবিচল।” –সূরা নাহল ১৬: ১০৬]

আয়াতে শুধু ইকরাহ (বাধ্যকরণের) অবস্থাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইকরাহ ব্যতীত সেচ্ছায় কুফরী বাক্য বলা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত ছিলই। স্পষ্ট যে, উল্লিখিত গান-সঙ্গীত ইত্যাদিতে কুফরী বাক্য উচ্চারণ ইকরাহের কারণে নয়; বরং স্বেচ্ছায়। তাই তা নিশ্চয়ই কুফরের অন্তর্ভুক্ত হবে। কুফরের সহযোগিতা এবং কুফর শিক্ষা দেয়ার বিধান একই। আল্লাহই সঠিক জানেন। লিখেছেন, খলীল আহমদ, উফিয়া আনহু। শিক্ষক, মাদরাসায়ে আরাবী সাহারানপুর।

উত্তর সঠিক হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ.

[“নেককাজ ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না। আর তোমরা আল্লাহর ভয় অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।” –সূরা মায়েদা ০৫: ০২]

আল্লাহ ভালো জানেন। লিখেছেন, আবুল হাসানাত মুহাম্মাদ আবদুল হাই।”

-ফাতাওয়ায়ে রশীদিয়া, পৃ: ১৯৫-১৯৮  )দারুল ইশাআত, করাচি(

হ্যাঁ, কেউ যদি কুফরী বাক্যের কুফর ও অসারতা বুঝানোর জন্য কথায় বা লিখায় কোনো কুফরী বাক্য উদ্ধৃত করে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।-আলবাহরুর রায়েক: ৫/১৩৪; রদ্দুল মুহতার: ৪/২২৪; ইকফারুল মুলহিদীন: ৫৯

উল্লেখ্য, যেকোনো কুফরী বাক্য লেখা কিংবা উচ্চারণ করা যদিও কুফরী, তবে কেউ কুফরী বাক্য উচ্চারণ করলে কিংবা লিখলেই তাকে কাফের আখ্যায়িত করা যায় না। বরং কাফের আখ্যায়িত করার জন্য কিছু শর্তের (شرائط التكفير) উপস্থিতি ও কিছু প্রতিবন্ধকের (موانع التكفير) অনুপস্থিতি নিশ্চিত হতে হয়, যা একজন বিজ্ঞ আলেমের পক্ষেই সম্ভব। কোনো বিজ্ঞ আলেমের সিদ্ধান্ত ছাড়া সাধারণ মানুষের জন্য এবিষয়ে অগ্রগামী হওয়া অন্যায় এবং নিজের ঈমানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

০২. কারও যদি শরীয়তের এই পরিমাণ ইলম এবং সামর্থ্য থাকে, যার ফলে সিলেবাসের হারাম ও কুফরী বিষয়গুলো চিহ্নিত করে, প্রতিষ্ঠানের ঈমান ও শরীয়াহ বিরোধী বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান ও পরীক্ষাসহ সকল স্তরে সেই সব হারাম ও কুফর শিরক থেকে বেঁচে থাকতে পারে, তার জন্য এমন সিলেবাসে পড়ালেখা করা নাজায়েয না হলেও অনুত্তম ও পরিত্যাজ্য অবশ্যই। পক্ষান্তরে যার এই পরিমাণ শরীয়তের ইলম অথবা সামর্থ্য নেই, তার জন্য এই সিলেবাসে পড়াশোনা করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এই অবস্থায় কেউ পড়াশোনা করলে, তাকে বিভিন্ন নাজায়েয কাজে যেমন জড়াতে হবে, তেমনি যেকোনো সময় নিজের অজান্তেই কুফর-শিরকে লিপ্ত হয়ে ঈমানও হারাতে হতে পারে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

এক হাদীসে এসেছে,

عن جابر بن عبد الله، أن عمر بن الخطاب، أتى النبي صلى الله عليه وسلم بكتاب أصابه من بعض أهل الكتب، فقرأه على النبي صلى الله عليه وسلم فغضب وقال: ” أمتهوكون فيها يا ابن الخطاب، والذي نفسي بيده لقد جئتكم بها بيضاء نقية، لا تسألوهم عن شيء فيخبروكم بحق فتكذبوا به، أو بباطل فتصدقوا به، والذي نفسي بيده لو أن موسى كان حيا، ما وسعه إلا أن يتبعني ” – مسند الإمام أحمد: 15156؛ الحديث حسنه الشيخ الألباني رحمه الله في إرواء الغليل (6\37) بشواهده، قال: الحديث قوي ، فإن له شواهد كثيرة. اهـ

“জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, উমর ইবনুল খাত্তাব রাযিয়াল্লাহু আনহু একদিন আহলে কিতাবের কারও থেকে পাওয়া একটা কিতাব নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন। এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কিতাবটি পড়ে শোনাতে লাগলেন। এতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাগান্বিত হয়ে উঠলেন এবং বললেন, দীনের ব্যাপারে কি তোমরা জ্ঞানশূন্য দিশাহীনতায় দিগ্বিদিক ছুটছো হে খাত্তাবের বেটা? ওই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কাছে আমি শুভ্র স্বচ্ছ ও পরিষ্কার দীন নিয়ে এসেছি। আহলে কিতাবের কাছে কোনো কিছুই জিজ্ঞেস করবে না। হতে পারে তারা সত্য বললে তোমরা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে বসবে কিংবা মিথ্যা বললেও বিশ্বাস করে বসবে। ওই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, স্বয়ং মূসা আলাইহিস সালামও যদি জীবিত থাকতেন, আমার অনুসরণ ছাড়া তাঁর কোনো গত্যন্তর থাকতো না।” –মুসনাদে আহমাদ: ১৫১৫৬

হাফেজ ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহ (৮৫২ হি.) বলেন,

وَالْأَوْلَى فِي هَذِهِ الْمَسْأَلَةِ التَّفْرِقَةُ بَيْنَ مَنْ لَمْ يَتَمَكَّنْ وَيَصِرْ مِنَ الرَّاسِخِينَ فِي الْإِيمَانِ فَلَا يَجُوزُ لَهُ النَّظَرُ فِي شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ بِخِلَافِ الرَّاسِخِ فَيَجُوزُ لَهُ وَلَا سِيَّمَا عِنْدَ الِاحْتِيَاجِ إِلَى الرَّدِّ عَلَى الْمُخَالِفِ وَيَدُلُّ عَلَى ذَلِكَ نَقْلُ الْأَئِمَّةِ قَدِيمًا وَحَدِيثًا مِنَ التَّوْرَاةِ وَإِلْزَامُهُمُ الْيَهُود -فتح الباري، الناشر: دار المعرفة – بيروت: 13/ 525

“এই মাসআলার বিশ্লেষণে উত্তম মত হল, যারা ইলম ও ঈমানে মজবুত এবং যারা মজবুত নয় উভয়ের মাঝে পার্থক্য করা। যারা মজবুত নয়, তাদের জন্য এগুলো পড়া জায়েয নয়। পক্ষান্তরে যাদের ইলম ও ঈমান মজবুত, তাদের জন্য পড়া জায়েয। বিশেষত যখন বাতিলের খণ্ডন করার প্রয়োজন পড়ে। এর প্রমাণ হল, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উলামায়ে কেরামের কর্ম। তাঁরা তাওরাতের উদ্ধৃতি দিয়ে ইহুদীদের খণ্ডন করেছেন।” –ফাতহুল বারী: ১৩/৫২৫

আরও দেখুন: কাশশাফুল কিনা: ১/৪৩৪; আল মাউসূআতুল ফিকহিয়্যাহ আল কুয়েতিয়াহ: ৩৪/১৮৫

আমাদের জানা মতে বস্তুত উপর্যুক্ত শর্ত পূরণ করে এই সিলেবাসে পড়া এবং ঈমান রক্ষা করার সম্ভাবনা নিতান্তই ক্ষীণ; বরং বলা ভালো অসম্ভব প্রায়। বাস্তবেও আমরা দেখছি, এই সিলেবাসে পড়ে অধিকাংশ ছেলে মেয়েই ইসলাম ও ইসলামী শরীয়াহর প্রতি বীতশ্রদ্ধ ও বিদ্বেষী হয়ে ওঠে। ইসলামের পরিবর্তে পশ্চিমাদের ঈমান বিধ্বংসী, আকীদা-বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা এবং সভ্যতা ও সংস্কৃতির একনিষ্ঠ ধারক, রক্ষক ও প্রচারকে পরিণত হচ্ছে। আলাদা দীনী তালীম তারবিয়াহ ও নেগরানি না থাকলে এই সিলেবাসের প্রতিটি শিক্ষার্থী ন্যূনতম যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তা হচ্ছে, ঈমান কুফর, হালাল হারাম ও ফরয ওয়াজিবের মতো শরীয়তের অনেক বিধানকে হালকা মনে করে, দীনী ইলম ও দীনদার শ্রেণিকে তুচ্ছ, সেকেলে ও পশ্চাৎপদ জ্ঞান করে, অপরদিকে নিজেদেরকে এবং নিজেদের চর্চিত জাগতিক জ্ঞানকে উত্তম মনে করে, যা কারও কারও ক্ষেত্রে ঈমান ভঙ্গ পর্যন্ত গড়ায় নাউযুবিল্লাহ। আশা করি যারা সমাজ ও জগৎ সম্পর্কে কিছুমাত্র ধারণা রাখেন, তারা এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে দ্বিমত করবেন না।

বলা বাহুল্য, একটি মুসলিম জাতির জন্য এমন একটি সিলেবাস মেনে নেওয়া এবং চলতে দেওয়ার ন্যূনতম অবকাশ শরীয়তে নেই। প্রত্যেক মুসলিমের ফরয দায়িত্ব, সামর্থ্য অনুযায়ী বয়কট, অসহযোগিতা, আন্দোলন, বাধা প্রদান ইত্যাদির মতো যেকোনো উপায়ে তা বন্ধ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আরও বড় দায়িত্ব এসব কুফর শিরকের উদ্ভাবক, আমদানিকারক, বাস্তবায়নকারী এবং জোরপূর্বক মুসলিমদের উপর প্রয়োগকারী শাসক শ্রেণিকে উৎখাত করে রাষ্ট্রীয়ভাবে শরীয়াহ আইন ও শরীয়াহ সম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা। শাসক শ্রেণিতে থাকা মুসলিম দাবিদার, আলেম সম্প্রদায়, সমাজের কর্ণধার এবং এই সিলেবাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের দায়িত্ব এখানে সবচেয়ে বেশি।

এই বিষয়ে আরও দেখুন, ২৪৭ নং ফাতওয়া ‘প্রচলিত সহশিক্ষা পদ্ধতিতে মেডিক্যাল শিক্ষা গ্রহণের হুকুম কি?

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৯-১২-১৪৪৪ হি.

১৮-০৭-২০২৩ ঈ.

Related Articles

Back to top button