বিবিধফাতওয়া  নং  ১৯৪

সাধারণ মাসআলা-মাসায়েল জানার জন্য কি যেকোনো আলেমের ওপরই আস্থা রাখা যাবে?

সাধারণ মাসআলা-মাসায়েল জানার জন্য কি যেকোনো আলেমের ওপরই আস্থা রাখা যাবে?

সাধারণ মাসআলা-মাসায়েল জানার জন্য কি যেকোনো আলেমের ওপরই আস্থা রাখা যাবে?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

আমরা কি আমাদের পারিবারিক বিভিন্ন মাসআলা-মাসায়েল এবং অন্যান্য সাধারণ মাসআলা-মাসায়েল জানার জন্য আমাদের আশেপাশে থাকা যে কোনো আলেমের ওপরই আস্থা রাখতে পারি? তাঁদের কাছে জিজ্ঞেস করেই জেনে নিতে পারি? না, এক্ষেত্রে কোনো মূলনীতি আছে? অনুগ্রহপূর্বক জানালে অনেক উপকৃত হবো।

প্রশ্নকারী:

মুহাম্মাদ হাসান

 

উত্তর:

একজন আলেম থেকে শরীয়তের বিধান নেয়া এবং এক্ষেত্রে তার উপর আস্থা রাখার বুনিয়াদ দুটি।

এক. যে বিষয়ের বিধান তার থেকে নিব, সে বিষয়ে তার যথাযথ ইলম থাকা কিংবা ফিলহাল না থাকলেও তা অর্জন করার মতো যোগ্যতা থাকা।

দুই. এই পরিমাণ তাকওয়া ও সততার অধিকারী হওয়া, যার ফলে তিনি জিজ্ঞাসিত বিষয়ে যথাযথ না জেনে বা অন্য কোনো কারণে ভুল নির্দেশনা দিবেন না, ইলমী আমানতের খেয়ানত করবেন না।

উক্ত দুটি বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর; যিনি যে বিষয়ে বেশি বিজ্ঞ, সে বিষয়ে তাঁর শরণাপন্ন হওয়া কাম্য; যদিও প্রথমোক্ত দুটি বিষয় নিশ্চিত হলে যে কোনো আলেমকেই যে কোনো বিষয় জিজ্ঞেস করার সুযোগ রয়েছে। যেমন মনে করুন, আমার সামনে দু’জন আলেম আছেন। দু’জনই প্রথমোক্ত দুটি মানদণ্ডে উত্তীর্ণ এবং আস্থাভাজন। তবে একজন শরঈ অর্থনীতিতে বিজ্ঞ, আরেকজন শরঈ হুদূদ-কিসাসে বিজ্ঞ। সুতরাং আমার যদি হুদূদ-কিসাস সম্পর্কিত মাসআলা জানার প্রয়োজন হয়, তাহলে উত্তম হবে এবিষয়ক বিজ্ঞজনকে জিজ্ঞেস করা, আর যদি অর্থনীতির মাসআলা জানার দরকার হয়, তাহলে উত্তম হবে অর্থনীতি বিষয়ক বিজ্ঞজনকে জিজ্ঞেস করা; যদিও মূল মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হওয়ায় দুইজনের যাকে ইচ্ছা, তাকেই যে কোনো মাসআলা জিজ্ঞেস করার সুযোগ আছে।

সুতরাং যেসব স্থানীয় হকপন্থী আলেম শরীয়তের অন্যান্য বিষয়দিতে এই দুটি বিন্দুতে আস্থাভাজন, তাদের থেকে এসব বিষয়ের ইলম নিতে এবং এক্ষেত্রে তাদের উপর আস্থা রাখতে সমস্যা নেই; যদিও পরিবেশ পরিস্থিতি ও মিডিয়ার অপপ্রচার ইত্যাদি কারণে জিহাদ ও মুজাহিদদের ব্যাপারে তাদের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। বরং শরীয়তের যেসব বিষয় বাস্তবতার সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেসব বিষয়ে যেখানকার ঘটনা, সেখানকার আলেমদের শরণাপন্ন হওয়াই কাম্য এবং অনেক ক্ষেত্রে জরুরি।

উল্লেখ্য, আলেমদের শরণাপন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে উপরে যা উল্লেখ করা হল, তা-ই এবিষয়ে শরীয়তের মূলনীতি। পক্ষান্তরে আমাদের অনেকের মধ্যে একটি ভুল প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কেউ যদি কোনো অঙ্গনে বড় হন, বিখ্যাত হন, তাকেই আমরা সবকিছুর মানদণ্ড বানিয়ে নেই এবং সবকিছুতে তার শরণাপন্ন হওয়ার চেষ্টা করি। যেমন, একজন ওয়াজের অঙ্গনে খ্যাতি অর্জন করলেন কিংবা মিডিয়ায় বিশেষ কোনো বিষয়ে খ্যতি অর্জন করলেন। তো আমরা মনে করি, তিনি বড় ও বিখ্যাত, তাঁর ভক্ত, ফলোয়ার ও দর্শক হাজার হাজার। তিনি ভালো জানবেন। সুতরাং তাঁকেই মাসআলা জিজ্ঞেস করতে হবে। অথচ তিনি উপরোক্ত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ না হওয়ায় তার কাছে মাসআলা জানতে চাওয়া জায়েযই নয়।

একইভাবে অনেক ভাই, বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে কোনো আলেমের দুর্বলতা পরিলক্ষিত হলে তাকে সম্পূর্ণই পরিহার করেন। উক্ত দু’টি প্রান্তিকতাই শরীয়তে পরিত্যাক্ত।

-দেখুন ইরশাদুল মুবতাদী ইলা কাওয়ায়িদিস সা’দী- শায়েখ আবু মুহাম্মদ আলমাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ, পৃ. ৪; আসইলাতু মিম্বারিত তাওহিদ, প্রশ্ন নং ১৪৮৪, ১০০৩

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০২-০২-১৪৪৩ হি.

১০-০৯-২০২১ ইং

আরও পড়ুনঃ

হক্কানি আলেম-ওলামাকে গালিগালাজ করলে কি স্ত্রী তালাক হয়ে যায়?

Related Articles

Back to top button