ব্যবসা ও ক্রয় বিক্রয়:ফাতওয়া  নং  ২৫৭

মেয়েদের খোলামেলা অশ্লীল পোশাক বিক্রি করার হুকুম কী?

 

প্রশ্নঃ

আমার এক আত্মীয় অনলাইনে পোশাক বিক্রি করেন। তিনি মেয়েদের পোশাকও বিক্রি করেন। ছেলেদের পোশাকের চেয়ে মেয়েদের পোশাকই তার বেশি বিক্রি করতে হয়। তবে মেয়েদের ওই পোশাকগুলোর বেশির ভাগই হয় খোলামেলা ও অশ্লীল। এসব পোশাক বিক্রি করা কি তার জন্য জায়েয হবে?

প্রশ্নকারী- আবু জামিল

উত্তরঃ

মেয়েদের জন্য যে সকল পোশাক পরিধান করা জায়েয নেই, তা বিক্রি করাও জায়েয নেই। কেননা এ ধরনের পোশাক বিক্রি অন্যায় কাজে সহায়তার শামিল। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ (2). المائدة

“তোমরা সৎকর্ম ও তাক্বওয়ায় পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দ কর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ আযাব প্রদানে কঠোর।” (সূরা মায়েদা ০৫ : ০২)

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া (রহ) বলেনঃ

كل لباس يغلب على الظن ان يستعان بلبسه على معصية فلا يجوز بيعه و خياطته لمن يستعين به على المعصية و الظلم. –شرح العمدة في الفقه لشيخ الإسلام ابن تيمية (3/ 318)

“প্রত্যেক এমন পোশাক, যার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয় যে, এটি পরিধান করে গুনাহের কাজে সহযোগিতা নেয়া হবে, তাহলে এমন ব্যক্তির কাছে তা বিক্রি করা এবং এমন ব্যক্তিকে তা সেলাই করে দেয়া জায়েয নয়, যে এটির মাধ্যমে গুনাহ ও জুলুমের কাজে সহযোগিতা নেবে।” (শারহুল উমদা ৩/৩১৮)

লোহা, তামা ইত্যাদির মতো যেসব ধাতুর আংটি পরা নাজায়েয, এসবের ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে হাসকাফি (রহ)(১০৮৮ হি.) বলেনঃ

فإذا ثبت كراهة لبسها للتختم ثبت كراهة بيعها وصيغها لما فيه من الاعانة على ما لا يجوز، وكل ما أدى إلى ما لا يجوز لا يجوز. -الدر المختار شرح تنوير الأبصار وجامع البحار (ص: 654)

“যখন সাব্যস্ত হলো আংটিরূপে এগুলো পরা নাজায়েয, তখন এগুলো বিক্রি করা এবং বানানোও নাজায়েয। কেননা, এতে নাজায়েয কাজে সহযোগিতা হয়। আর নাজায়েয পর্যন্ত নিয়ে যায়, এমন সব কিছুই নাজায়েয।” (আদদুররুল মুখতার ৬৫৪)

অবশ্য কারো ব্যাপারে যদি প্রবল ধারণা হয়, তিনি উক্ত পোশাকের নাজায়েয ব্যবহার করবেন না, যেমন কেউ পূর্ণ শরঈ পর্দা পালন করেন, শুধু স্বামীর সামনে খোলামেলা পোশাক পরেন, তাহলে তার কাছে এধরনের পোশাক বিক্রি করতে অসুবিধা নেই। তবে তা অবশ্যই বিজাতিদের শিয়ার বা পুরুষের সদৃশ হতে পারবে না।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-১০-১৪৪৩ হি.

০৭-০৫-২০২২ ঈ.

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

Related Articles

Back to top button