ফাতওয়াহুদূদ-কিসাস-তাযিরফাতওয়া  নং  ৩৩২

ব্যক্তিগতভাবে ব্যভিচারের শাস্তি প্রদান করা যাবে কি?

ব্যক্তিগতভাবে ব্যভিচারের শাস্তি প্রদান করা যাবে কি?

ব্যক্তিগতভাবে ব্যভিচারের শাস্তি প্রদান করা যাবে কি?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্নঃ

কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কে জানতে পারে এবং স্ত্রী যার সাথে পরকীয়া করেছে, সেই ব্যক্তি যদি স্বামীকে তাদের বিশেষ মুহূর্তের অন্তরঙ্গ ছবি পাঠিয়ে অপমানিত ও হেয় প্রতিপন্ন করে এবং সেই ঘটনার সাক্ষীও থাকে, তাহলে উক্ত স্ত্রী এবং পরকীয়াকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তে শাস্তির হুকুম কী? কেউ যদি গোপনে ব্যক্তি উদ্যোগে তাদেরকে শাস্তি দিতে চায়, তাহলে তা কি পারবে?

প্রশ্নকারী- শেখ হাসান

উত্তরঃ 

بسم الله الرحمن الرحيم

কোনো বিবাহিত নারী বা পুরুষের যিনার ‘হদ’ তথা শরীয়ত নির্ধারিত শাস্তি হচ্ছে, ‘রজম’ বা পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা। এটা শরীয়তের সুস্পষ্ট ও সর্বসম্মত বিধান। হাদীসে এসেছে,

قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَهُوَ جَالِسٌ عَلَى مِنْبَرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: “إِنَّ اللهَ قَدْ بَعَثَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْحَقِّ، وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ، فَكَانَ مِمَّا أُنْزِلَ عَلَيْهِ آيَةُ الرَّجْمِ، قَرَأْنَاهَا وَوَعَيْنَاهَا وَعَقَلْنَاهَا، فَرَجَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ، فَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ: مَا نَجِدُ الرَّجْمَ فِي كِتَابِ اللهِ فَيَضِلُّوا بِتَرْكِ فَرِيضَةٍ أَنْزَلَهَا اللهُ، وَإِنَّ الرَّجْمَ فِي كِتَابِ اللهِ حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى إِذَا أَحْصَنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ، إِذَا قَامَتِ الْبَيِّنَةُ، أَوْ كَانَ الْحَبَلُ، أَوِ الِاعْتِرَافُ “. –صحيح البخاري (8/168 رقم الحديث: 6829 ط. دار طوق النجاة) صحيح مسلم: (3/ 1317 رقم الحديث: 1691 دار إحياء التراث العربي – بيروت) وقال الحافظ في “فتح الباري” لابن حجر (12/ 148 ط. دار الفكر) “قوله: “والرجم في كتاب الله حق” أي في قوله تعالى:{أو يجعل الله لهن سبيلا} فبين النبي صلى الله عليه وسلم أن المراد به رجم الثيب وجلد البكر“.

“উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বরে বসা অবস্থায় বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্য (দ্বীন) দিয়ে প্রেরণ করেছেন এবং তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয়ের মধ্যে রজমের আয়াত রয়েছে। আমরা সে আয়াত পড়েছি, স্মরণ রেখেছি এবং হৃদয়ঙ্গম করেছি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন। তাঁর পরে আমরাও রজম করেছি। আমি আশঙ্কা করছি, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি একথা বলবে, ‘আল্লাহর কসম! আমরা তো আল্লাহর কিতাবে রজমের আয়াত পাচ্ছি না।’ ফলে তারা এমন একটি ফরয বর্জনের দরুন পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। নিশ্চয়ই রজম আল্লাহর কিতাবে রয়েছে এবং তা সত্য। তা ওই ব্যক্তির উপর অবধারিত, যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর যিনা করবে, চাই সে পুরুষ হোক বা নারী; যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি বিদ্যমান থাকবে।” –সহীহ বুখারী: ৬৮২৯; সহীহ মুসলিম: ১৬৯১;

আরও দেখুন, শরহু মুসলিম: ১১/১৯২ দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবী; কিতাবুল আসল: ৭/১৪৩ দারু ইবনি হাযম, বৈরুত; আল-মাবসূত: ৯/৩৬ দারুল মারেফা, বৈরুত; আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস: ৫/৯৭ দারু ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবী; আল-বাহরুর রায়িক: ৫/০৮ দারুল কিতাবিল ইসলামী; আল-ফাতাওয়াল হিন্দিয়া: ২/১৪৫; রদ্দুল মুহতার: ৪/১০ দারুল ফিকর, বৈরুত

তবে উলামায়ে কেরামের মতে এই বিধান কার্যকর করার অধিকার একমাত্র রাষ্ট্রের।

ইমাম ইবনে রুশদ আল-হাফিদ রহ. (৫৯৫ হি.) বলেন,

وأما من يقيم هذا الحد فاتفقوا على أن الإمام يقيمه، وكذلك الأمر في سائر الحدود. -بداية المجتهد ونهاية المقتصد (4/ 228)‘ دار الحديث – القاهرة ‘الطبعة: بدون طبعة

“এই (মদপানের) হদ কে বাস্তবায়ন করবে, এই ব্যাপারে  কথা হচ্ছে, সকলে একমত যে, (এই) হদ ইমাম (তথা রাষ্ট্রপ্রধান) বাস্তবায়ন করবেন। (অন্য) সকল হদ বাস্তাবায়নের বিষয়েও একই কথা।” -বিদায়াতুল মুজতাহিদ: ৪/২২৮ দারুল হাদীস, কায়রো

আরও দেখুন, আল-মুসান্নাফ, ইবনু আবি শাইবাহ: ৬/৪৭৬ হাদীস নং: ১০২৯৭; আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস: ৫/৯৯ দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবী; আল-ইখতিয়ার: ৪/৮৭ মাতবাআতুল হালাবী, কায়রো; ইলাউস সুনান: ৯/৪৫০০ দারুল ফিকর, বৈরুত; আল-বাহরুর রায়িক: ৫/১০ দারুল কিতাবিল ইসলামী; আল-হিদায়া: ২/৩৪২ দারু ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবী; ফাতহুল কাদীর: ৫/২৩৫ দারুল ফিকর; বাদায়িউস সানায়ে: ৯/২২৬ দারুল হাদীস কায়রো; তাবয়ীনুল হাকায়িক: ৩/১৭১ আল-মাতবাআতুল কুবরা, আল-আমিরিয়্যাহ, বোলাক, মিসর; বিদায়াতুল মুজতাহিদ: ৪/২২৮ দারুল হাদীস, কায়রো; আত-তাফসীরুল কাবীর, ইমাম রাযী: ১১/৩৫২ দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবী; তাফসীরুল কুরতুবী: ১২/১৬১ দারুল কুতুবিল মিসরিয়্যাহ; মাওসুওয়াতুল ইজমা: ৯/২৪৮ দারুল ফযিলাহ, সৌদি; মাওসুওয়াহ ফিকহিয়্যাহ কুয়েতিয়্যাহ: ৫/২৮০ ও ১৪/৭২ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত

অবশ্য কোনো কোনো আলেম বলেছেন, যখন রাষ্ট্রপ্রধান অবহেলাবশত শরীয়তের বিধান প্রতিষ্ঠা করবেন না কিংবা দারুল ইসলামে একক কোনো ইমাম বা সুলতান বিদ্যমান থাকবে না; বরং মুসলিমরা ইমাম ও সুলতানবিহীন খণ্ড খণ্ড বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে পড়বে, তখন যদি মুসলিম সমাজের উলামা-সুলাহাদের তা বাস্তবায়ন করার এবং নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা থাকে, তাহলে তারাও এই বিধান কার্যকর করতে পারবে। ইমাম ইবনুল ফারাস মালেকী রহ. (৫৯৭ হি.) বলেন,

وإذا لم يكن إمام فالظاهر من المذهب أن الرعية لا تقيم الحدود. وذكر أبو الحسن أنه إن أفضى إقامة الحدود من صلحاء الناس إلى هرج وفتنة لم يجز وإن لم يفض جاز.- أحكام القرآن لابن الفرس (3/ 329) دار ابن حزم، بيروت، الطبعة: الأولى، 1427 هـ – 2006 م

“মাযহাবের (আলেমদের বক্তব্য) থেকে বুঝে আসে, ইমাম না থাকলে জনগণের জন্যে হদ বাস্তবায়নের অনুমতি নেই। তবে আবুল হাসান রহ. বলেছেন, যদি সমাজের সৎ লোকেরা হদ প্রতিষ্ঠা করলে ফিতনা-ফাসাদ হয় তাহলে তা জায়েয নয়; পক্ষান্তরে ফিতনা-ফাসাদ না হলে, তাদের জন্য হদ প্রতিষ্ঠা করা জায়েয।” -আহকামুল কুরআন লি ইবনিল ফারাস: ৩/৩২৯; আরও দেখুন, মাজমুউল ফাতাওয়া: ৩৪/১৭৬, মাজমাউল মালিক, ফাহাদ

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,

وكذلك لو شاركوا الإمارة وصاروا أحزابا لوجب على كل حزب فعل ذلك في أهل طاعتهم فهذا عند تفرق الأمراء وتعددهم وكذلك لو لم يتفرقوا؛ لكن طاعتهم للأمير الكبير ليست طاعة تامة؛ فإن ذلك أيضا إذا أسقط عنه إلزامهم بذلك لم يسقط عنهم القيام بذلك؛ بل عليهم أن يقيموا ذلك؛ وكذلك لو فرض عجز بعض الأمراء عن إقامة الحدود والحقوق أو إضاعته لذلك: لكان ذلك الفرض على القادر عليه. وقول من قال: لا يقيم الحدود إلا السلطان ونوابه. إذا كانوا قادرين فاعلين بالعدل. كما يقول الفقهاء: الأمر إلى الحاكم إنما هو العادل القادر فإذا كان مضيعا لأموال اليتامى؛ أو عاجزا عنها: لم يجب تسليمها إليه مع إمكان حفظها بدونه وكذلك الأمير إذا كان مضيعا للحدود أو عاجزا عنها لم يجب تفويضها إليه مع إمكان إقامتها بدونه. والأصل أن هذه الواجبات تقام على أحسن الوجوه. فمتى أمكن إقامتها من أمير لم يحتج إلى اثنين ومتى لم يقم إلا بعدد ومن غير سلطان أقيمت إذا لم يكن في إقامتها فساد يزيد على إضاعتها فإنها من ” باب الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر ” فإن كان في ذلك من فساد ولاة الأمر أو الرعية ما يزيد على إضاعتها لم يدفع فساد بأفسد منه. والله أعلم. – مجموع الفتاوى (34/ 176) مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف، المدينة النبوية، المملكة العربية السعودية عام النشر: 1416هـ/1995م

এমনিভাবে (একক কোনো নেতৃত্ব না থেকে) নেতৃত্বে যখন বহুজন অংশীদার থাকে এবং নেতৃস্থানীয়রা বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে, তাহলে প্রত্যেক দলের উপর আবশ্যক, স্ব-স্ব অনুসারীদের মধ্যে তা (হুদুদ) বাস্তবায়ন করা। এটি হচ্ছে তখনকার বিধান, যখন আমীর একাধিক হবে এবং তারা পরস্পর দ্বিধাবিভক্ত থাকবে।

একইভাবে যদি তারা পরস্পর দ্বিধাবিভক্ত না-ও হয়, কিন্তু প্রধান আমীরের প্রতি তাদের পূর্ণ আনুগত্য নেই, তাহলে এক্ষেত্রে জনসাধারণের উপর জবরদস্তি তা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব হতে আমীর যদিও অব্যাহতি পাবেন, কিন্তু  জনসাধারণের উপর থেকে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব মওকুফ হবে না; বরং তাদের জন্য আবশ্যক তা বাস্তবায়ন করা।

তেমনিভাবে যদি কোনো আমীর হুদুদ বাস্তবায়ন ও (জনসাধারণের প্রাপ্য) অধিকার নিশ্চিত করতে অক্ষম হয়ে পড়েন কিংবা ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা না করেন, তাহলেও সক্ষমদের উপর এই ফরয বাস্তবায়নের দায়িত্ব বর্তাবে।

আর ইমামদের মধ্যে যারা বলেছেন, ‘সুলতান এবং তাঁর নায়েব ছাড়া অন্য কেউ হুদুদ কায়েম করতে পারবে না’ তা ওই সময় প্রযোজ্য, যখন তাঁরা তা বাস্তবায়নে সক্ষম এবং ইনসাফের সাথে তা করছেনও। যেমন ফুকাহায়ে কেরাম (কোনো কোনো ক্ষেত্রে) বলে থাকেন, ‘এই বিষয়ের দায়িত্ব শাসকের’ কথাটি এমন শাসকের জন্য, যিনি ন্যায়বান ও বাস্তবায়নে সক্ষম। পক্ষান্তরে তিনি যদি ইয়াতীমদের সম্পদ বিনষ্টকারী হন কিংবা তা সংরক্ষণে অক্ষম হন, তাহলে তার মাধ্যম ছাড়াই সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে ওই সম্পদ তার হাতে সমর্পণ করা আবশ্যক নয়। একইভাবে আমীর যদি হুদুদ বিনষ্টকারী হন (তথা সক্ষমতা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না করেন) কিংবা তা বাস্তবায়নে অক্ষম হন, তাহলে তার মাধ্যম ছাড়াই তা বাস্তবায়ন সম্ভব হলে তার নিকট তা ন্যস্ত করা আবশ্যক নয়।

(এক্ষেত্রে শরীয়তের) মূলনীতি হল, এসব ফরয বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে সম্ভাব্য সর্বোত্তম পন্থায়। সুতরাং যখন তা এক আমীর দিয়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হয় তখন দুজনের প্রয়োজন নেই। আর যখন সুলতানের বাহির থেকে এবং একাধিক আমীর ছাড়া তা বাস্তবায়ন সম্ভব না হয়, তখন বাস্তবায়ন করতে গেলে যে ফিতনা হবে তা যদি বাস্তবায়ন না করার ফিতনার চেয়ে বেশি না হয়, তাহলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। কেননা তা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের অন্তর্ভু্ক্ত। …… ওয়াল্লাহু আলাম।” -মাজমুউল ফাতাওয়া: ৩৪/১৭৬, মাজমাউল মালিক ফাহাদ

এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে গোপনে যিনার ‘হদ’ কার্যকর করার সুযোগ শরীয়তে নেই। -আত-তাফসীরুল কাবীর, ইমাম রাযী: ১১/৩৫২ দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবী; আদ্দুররুল মুখতার: ৪/১১ দারুল ফিকর; আল-মাওসুওয়াতুল ফিকহিয়্যাহ: ৪/১৪৭ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত

তাছাড়া হদের জন্য যিনা যেভাবে প্রমাণিত হতে হয়, যেভাবে সাক্ষীদের প্রত্যক্ষ দর্শন জরুরি, যেভাবে সাক্ষ্য প্রদান করতে হয়, সাক্ষীর সংখ্যা ইত্যাদির মতো অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যেগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে একজন বিজ্ঞ আলেমের পক্ষেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর হদ কার্যকর করা যাবে কি না। যে কারও পক্ষে তা বুঝাও সম্ভব নয়, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও নেই।

তবে হ্যাঁ, যে ক্ষেত্রে এই জাতীয় অপরাধীরা হদের উপযুক্ত নয়, অথবা উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও অক্ষমতা কিংবা অন্য কোনো কারণে তার উপর হদ কার্যকর করা যাচ্ছে না; অথচ কোনো না কোনো স্তরে তার অপরাধ প্রমাণিত, সে ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে আলেম উলামা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ এমন কিছু তাযীর বা শাস্তি প্রদান করবেন, যাতে সে ভবিষ্যতে এমন অন্যায় কর্ম থেকে নিবৃত থাকে। -আল-বাহরুর রায়িক: ৫/৪৬ আল-মাকতাবুল ইসলামী; মিরকাতুল মাফাতীহ: ৬/২৩৮০ দারুল ফিকর, বৈরুত; বাদায়িউস সানায়ে: ৯/২৪২ দারুল হাদীস কায়রো; রদ্দুল মুহতার: ৪/৬৬ দারুল ফিকর; মাজমাউল আনহুর: ১/৬১১ দারু ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবী; আল-মাওসুওয়াতুল ফিকহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যাহ: ১২/২৮০ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত

আল্লামা যফর আহমদ উসমানী রহ. (১৩৯৪ হি.) এর ফাতাওয়া সংকলন ‘ইমদাদুল আহকামে’ এসেছে,

اس شخص پر تعزیر کا حکم جس پر عورت نے زنا کی تہمت لگائی ہو اور مرد منکر ہو

شخصے با زنے منکوحہ زناء کرد، بعد ازاں زن میگوید کہ فلاں بامن زناکردہ است لیکن آں شخص انکار میکند دریں صورت او را  سیاسۃً ہیچ سزا دادن شرعاً چہ حکم داد؟

الجوا ب

محض عورت کے کہنے سے مرد پر سیاسۃً تعزیر نہیں ہوسکتی بلکہ اگر قاضی کی رائے میں قرائن اُخر سے وہ متہم کے درجہ میں ہوجائے تو تعزیراً کچھ سزا دی جاسکتی ہے مگر قاضی آجکل کہاں، البتہ بعض قوموں میں پنچایت کا زور ہوتا ہے تو پنچایت اس بارہ میں بمنزلۂ قاضی کے ہے اگر وہ مسائل شرعیہ سے باخبر ہوں یا کسی عالم سے پوچھ کر عمل کرتے ہوں۔ واللہ اعلم                                                                                                                     حررہ الاحقر ظفراحمد عفا عنہ

البتہ صورت مسئولہ میں عورت اگر دعوے اکراہ کا نہ کرے توعورت یقینا مستحق عقوبت ہے۔ اگر حاکم اسلام کے روبرو ہو تو وہ عقوبت حد زنا ہے بشرائطہا اور اگر غیر حاکم کے روبرو ہو تو حدود شرعیہ کے اندر جس قدر تعزیز اس کے قدرت میں ہو۔                                                                                                 اشرف علی امداد الاحكام : (6/346  ط. زكريا (

 

“ওই ব্যক্তিকে তাযীর করার বিধান, যার বিরুদ্ধে কোনো নারী যিনার অভিযোগ করে, কিন্তু সে অস্বীকার করে

প্রশ্ন: এক ব্যক্তি এক বিবাহিতা নারীর সাথে যিনা করে। পরে সেই নারী দাবি করে, অমুক আমার সাথে যিনা করেছে, কিন্তু সেই ব্যক্তি অস্বীকার করে। এমতাবস্থায় তাকে কোনো শাস্তি দেয়ার হুকুম কী?

উত্তর: শুধু মহিলার দাবির কারণে ওই ব্যক্তিকে তাযীর করা যাবে না; বরং যদি অন্যান্য সূত্রে কাজীর নিকট সে অভিযুক্ত বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে তাযীরস্বরূপ কিছু শাস্তি দিতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে তো (শরয়ী) কাজী নেই। অবশ্য কোনো কোনো এলাকায় পঞ্চায়েতের ক্ষমতা থাকে। তো পঞ্চায়েত যদি শরয়ী মাসআলা সম্পর্কে অবগত হয় কিংবা তারা কোনো আলেম থেকে জিজ্ঞাসা করে আমল করে তবে তারা এক্ষেত্রে কাজীর মতো (তাযীর করতে পারবে)”।

এই ফাতাওয়া হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ.-এর সম্মুখে পেশ করা হলে তিনি তাতে আরেকটু সংযুক্ত করে বলেন,

“(ফাতাওয়ায় যা বলা হয়েছে তা তো ঠিক আছে) তবে প্রশ্নোক্ত সূরতে যদি মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ না করে তবে সে নিশ্চয়ই শাস্তির উপযুক্ত। যদি সে শরয়ী কাজীর নিকট (যিনার বিষয়টা) স্বীকার করে তবে শর্তসাপেক্ষে তার উপর যিনার হদ আসবে, আর অন্য কারও নিকট স্বীকার করলে যার নিকট স্বীকার করবে তার যতটুকু তাযীর করার ক্ষমতা থাকবে, ততটুকু করবে।” -ইমদাদুল আহকাম: ৬/৩৪৬ যাকারিয়া বুক ডিপো, ভারত

মুফতী শফী রহ. (১৩৯৬ হি.) এর ফাতাওয়া সংকলন ‘ইমদাদুল মুফতীনে’ এসেছে,

)سوال 815) بادشاهت انگريزي مين احكام شرعيه كا اجرا تو نهيں هو سكتا ليكن  اگر  كسي رئيس كي ذريعه سے بعض امور ميں كوئي قاضي لوگون كوں سزادے سكے… مثلا كوئي ڈارھي منڈواتا هے يا كوئي نماز نهيں  پڑھتا  ہے تو اس كي لئےكيا حكم هے … اگر كوئي شخص نےزنا كيا تو حدود شرعي تو لگا نهيں سكتے تعزيراً  اس كے كتنے كوڑے مارے جائيں؟

جواب: اگر كوئي شخص تعزير دينے پر قادر هو تو وه هندوستان ميں بحالت موجوده بھي شرعا تعزير د‌ے سكتا هے اور قاعده تعزير كا يه ہے كه اس كي كوئي خاص صورت شرعا معين نهیں هوتي بلكه محض حاكم اور قاضي كے صوابديد پر موقوف هو تي ہے قاضي جو سزا جرم اور مجرم كي حيثيت كے موافق مناسب سمجھے وه ديدے خواه درّے لگانا هو يا قيد كرنا يا زباني زجر و توبيخ كرنا كوينكه لوگوں كے احوال مختلف ہيں كسي کو ادنى سي تنبيه كافي هو جاتي ہے اور كسي كے لۓ  درے بھي كافي نهيں هوتے اس لۓ  يه معامله قاضي كي راۓ پر مبني ہے صرف يه شرط ہے كه اگر درے يا كوڑے لگائے جائيں تو انتاليس سے زائد نه ہوں اور كوڑے  يا درے مارنے كى صورت تفصيل یہ ہے کہ اگر تھوڑے سے كوڑے مارنے هيں تو ايك هي جگه مارے جائيں تمام بدن پر پھيلاۓ نه جائيں اور اگر زياده كوڑے مارنے ہے تو پھيلا ديۓ جائیں–(امداد المفتين: ص: 752 -753 ط. زكريا(

“(প্রশ্ন: ১৮১৫) ইংরেজ শাসন ব্যবস্থায় তো শরয়ী আইন জারী করা সম্ভব না; কিন্তু কোনও নেতার মাধ্যমে যদি কিছু বিষয়ে কোন কাজী লোকদের সাজা দেয়; …. যেমন: যে ব্যক্তি দাড়ি কাটে অথবা যে ব্যক্তি সালাত আদায় করে না; তাহলে তার কী হুকুম? যদি কোনো ব্যক্তি যিনা করে তো শরয়ী হদ তো কায়েম করা সম্ভব না; তাযীর করার জন্য তাকে কত দোররা মারা যাবে?

উত্তর: যদি কেউ তাযীর করতে সক্ষম হন, তাহলে হিন্দুস্থানের বর্তমান পরিস্থিতিতেও তিনি শরয়ী তাযীর করতে পারবেন। তাযীরের ক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, শরীয়তে তাযীরের সুনির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি নির্ধারিত নেই; বরং তা বিচারক ও কাজীর বিবেচনাধীন থাকে। কাজী অপরাধ ও অপরাধীর অবস্থা অনুযায়ী যে শাস্তি উপযুক্ত মনে করবেন, তাই প্রদান করবেন। তা হতে পারে বেত্রাঘাত, বন্দী করা, মৌখিক ধমক কিংবা তিরষ্কার। কেননা মানুষের অবস্থা নানারকম হয়ে থাকে। কারও ক্ষেত্রে হালকা সতর্কীকরণই যথেষ্ট হয়, আবার কারও ক্ষেত্রে বেত্রাঘাতেও কাজ হয় না। তাই এই বিষয়টি কাজীর সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভরশীল। শর্ত শুধু একটিই, যদি বেত বা চাবুক দ্বারা প্রহার করা হয় তা যেন উনচল্লিশটির বেশি না হয়। আর বেত্রাঘাত করার নিয়ম হলো, অল্প কয়েকবার প্রহার করলে শরীরের একই স্থানে মারবে, সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে মারবে না। বেশি পরিমাণ হলে সারা শরীরে ছড়িয়ে মারবে।” -ইমদাদুল মুফতীন, ‍পৃ: ৭৫২-৭৫৩ যাকারিয়া বুক ডিপো

ইমাম আবুল হাসান আত-তুসুলী আল-মালেকী রহ. (১২৫৮ হি.) বলেন,

إذا تعذّرت إقامة الحدود، ولم تبلغها الاستطاعة، وكانت الاستطاعة تبلغ إلى إيقاع تعزير ينزجر به: تنزّلت أسباب الحدود منزلة أسباب التعزيرات، فيجري فيها ما هو معلوم في التعزير”. –أجوبة التسولي عن مسائل الأمير عبد القادر في الجهاد )ص: 153 ط. دار الغرب الإسلامي الطبعة: الطبعة الأولى – 1996(

“যদি সামর্থ্য না থাকার কারণে হদ কায়েম করা অসম্ভব হয়, তবে যদি তাযীর করার ক্ষমতা থাকে, যার মাধ্যমে অপরাধী (অপরাধ থেকে) বিরত থাকবে, তাহলে (তাযীর করা হবে এবং তখন) হুদুদ ওয়াজিব হওয়ার কারণগুলো তাযীর ওয়াজিব হওয়ার কারণ হয়ে যাবে। তাই তখন তাযীর উপযোগী অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শাস্তির বিধান, হদের উপযোগী অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে জারী হবে।” –আল-আজভিবাতুত তুসুলী আন মাসায়িলিল আমীর আব্দুল কাদির ফিল জিহাদ, পৃ: ১৫৩ দারুল গারবিল ইসলামী

তবে সর্বাবস্থায় তাযীরের পরিমাণ অবশ্যই ‘হদ’ থেকে কম হতে হবে। নুমান বিন বাশির রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,

من بلغ حدا في غير حد فهو من المعتدين”. رواه البيهقي في السنن الكبرى:17184 دار الكتب العلمية، بيروت – لبنان: 8/567 الطبعة: الثالثة، 1424 هـ – 2003 م وقال: والمحفوظ هذا الحديث مرسل.

“হদ ছাড়া যে ব্যক্তি হদ পরিমাণ শাস্তি দেয়, সে সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত।” –আস-সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী: ১৭১৮৪

আরও দেখুন, বাযলুল মাজহুদ: ৯/৩৮৫ মারকাযুশ শায়েখ আবুল হাসান আলী আন-নদভী; রদ্দুল মুহতার: ৪/৬০ দারুল ফিকর; আল-বাহরুর রায়িক: ৫/৪৪ দারুল কিতাবিল ইসলামী; ফাতহুল কাদীর: ৫/৩৪৮ দারুল ফিকর; আল-মাওসুওয়াতুল ফিকহিয়্যাহ: ১২/২৬৫ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত

এখানে আরেও যে বিষয়টি জানা জরুরি, তা হচ্ছে, কেউ যদি কারও প্রতি যিনার অভিযোগ আরোপ করে, কিন্তু শরীয়তের দৃষ্টিতে যেভাবে যিনারত অবস্থায় প্রত্যক্ষদর্শী চারজন সাক্ষীর মাধ্যমে তা প্রমাণ করা জরুরি, সেভাবে প্রমাণ করতে না পারে, তখন উল্টো তার উপর ‘হদ্দে কাযাফ’ তথা অপবাদের হদ হিসেবে ৮০টি বেত্রাঘাত অবধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً وَلَا تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً أَبَدًا وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ (4)} -النور: 4

“যারা সতী-সাধ্বী নারীদেরকে অপবাদ দেয়, তারপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি চাবুক মারবে এবং তাদের সাক্ষ্য কখনও গ্রহণ করবে না। তারা নিজেরাই তো ফাসেক।” -সূরা নূর: ০৪

অবশ্য যিনার অভিযোগ যদি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর প্রতি হয়, তখন যথাযথ সাক্ষ্য পেশ করতে না পারলে, এই অভিযোগ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর জীবন যাপন করা যেহেতু কঠিন ও স্পর্শকাতর, তাই এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে শরীয়তে ‘লিআনে’র বিধান রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلَّا أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ أَرْبَعُ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ (6) وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ (7) وَيَدْرَأُ عَنْهَا الْعَذَابَ أَنْ تَشْهَدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ (8) وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ (9)} [النور: 6 – 9]

“যারা নিজেদের স্ত্রীদেরকে অপবাদ দেয়, আর নিজেরা ছাড়া তাদের কোনো সাক্ষী না থাকে, এরূপ কোনো ব্যক্তিকে যে সাক্ষ্য দিতে হবে তা এই যে, সে চারবার আল্লাহর কসম করে বলবে, সে (স্ত্রীকে দেওয়া অভিযোগের ব্যাপারে) অবশ্যই সত্যবাদী। এবং পঞ্চমবার বলবে, আমি যদি (আমার দেওয়া অভিযোগে) মিথ্যুক হই, তবে আমার প্রতি আল্লাহর লানত হোক। আর স্ত্রী হতে (ব্যভিচারের) শাস্তি রদ করার উপায় এই যে, সে চারবার আল্লাহর কসম করে সাক্ষ্য দেবে, (কথিত অভিযোগে) তার স্বামী মিথ্যাবাদী। আর পঞ্চমবার বলবে, সে সত্যবাদী হলে আমার প্রতি আল্লাহর গযব পড়ুক।” -সূরা নূর: ৬-৯

উল্লেখ্য, এ হচ্ছে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পরের কথা। পক্ষান্তরে অপরাধ সংঘটনকালে কারও সামনে পড়লে, সামর্থ্য সাপেক্ষে যেকোনো মুসলিম তাকে নিবৃত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে। এটা নাহী আনিল মুনকারের অন্তর্ভুক্ত এবং এটা সামর্থ্যবান সকল মুসলিমের দায়িত্ব।

ইমাম ইবনে আবেদিন শামী রহ. (১২৫২ হি.) বলেন,

ويقيمه كل مسلم حال مباشرة المعصية أي التعزير الواجب حقا لله تعالى؛ لأنه من باب إزالة المنكر، والشارع ولى كل أحد ذلك حيث قال – صلى الله عليه وسلم – “من رأى منكم منكرا فليغيره بيده، فإن لم يستطع فبلسانه”. بخلاف الحدود لم يثبت توليتها إلا للولاة، وبخلاف التعزير الذي يجب حقا للعبد بالقذف ونحوه فإنه لتوقفه على الدعوى لا يقيمه إلا الحاكم. -الدر المختار وحاشية ابن عابدين (4/ 65 دار الفكر-بيروت ‘ الطبعة: الثانية، 1412هـ – 1992م(

“যে তাযীর আল্লাহর হক তা অপরাধ সংঘটনকালে প্রত্যেক মুসলিম বাস্তবায়ন করবে। কেননা তা নাহী আনিল মুনকারের অন্তর্ভুক্ত। আর শরীয়ত প্রত্যেককে মুনকার দূরীভূত করণের দায়িত্ব দিয়েছে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ মুনকার দেখলে হাত দ্বারা তা প্রতিহত করবে; তা না পারলে মুখ দ্বারা করবে।’ পক্ষান্তরে হুদুদ বাস্তবায়নের দায়িত্ব শুধু শাসকবর্গের। তেমনি যে তাযীর বান্দার হক যেমন অপবাদ ইত্যাদির শাস্তি তা যেহেতু কাজীর দরবারে বিচার চাওয়ার উপর মওকুফ তাই কাজী ছাড়া অন্য কেউ তা বাস্তবায়ন করতে পারবে না।” -রদ্দুল মুহতার: ৪/৬৫; আরও দেখুন, আল-বাহরুর রায়িক: ৫/৪৫ দারুল কিতাবিল ইসলামী; আল-ফাতাওয়াল হিন্দিয়া: ২/১৬৮ দারুল ফিকর, বৈরুত; মাজমাউল আনহুর: ১/৬০৯ দারু ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবী; ফাতহুল কাদীর: ৫/৩৪৫ দারুল ফিকর; তাবয়ীনুল হাকায়িক: ৩/২০৮ আল-মাতবাআতুল কুবরা, আল-আমিরিয়্যাহ, বোলাক, মিসর; আল-মাওসুওয়াতুল ফিকহিয়্যা: ১৪/৭২ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত

এই হলো যিনার শাস্তি সম্পর্কে খুবই সংক্ষিপ্ত কিছু ধারণা। আশা করি এতোটুকুই একথা বুঝার জন্য যথেষ্ট যে, যিনার শাস্তি এবং তা প্রয়োগের বিষয়টি হালকা ও সহজ কোনো বিষয় নয়; বরং তা অত্যন্ত জটিল ও গুরুতর একটি বিষয়, সার্বিক বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণ করে যার সঠিক সিদ্ধান্ত কেবল একজন বিজ্ঞ আলেমের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব; সাধারণ মানুষের পক্ষে তা আদৌ সম্ভব নয়।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

আরও পড়ুনঃজিহাদের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করার হুকুম কী?

Related Articles

Back to top button