হজ-ওমরাফাতওয়া  নং  ১১

মৃত পিতার জন্য কি নফল হজ করা যাবে?

মৃত পিতার জন্য কি নফল হজ করা যাবে?

মৃত পিতার জন্য কি নফল হজ করা যাবে?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

আমার মৃত পিতার জন্য কি আমি নফল হজ করতে পারব, যদি তিনি মৃত্যুর আগে হজ করার ওসিয়ত না করে যান?

হামজা ইউসুফ

 

উত্তর:


بسم الله والصلاة والسلام على رسول الله، وعلى آله ومن والاه أما بعد

আপনার পিতার জীবদ্দশায় তাঁর উপর হজ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও যদি তিনি হজ আদায় না করে থাকেন এবং হজ করার ওসিয়তও না করে যান, তাহলে আপনার জন্য উচিত হবে, আপনার নিজ খরচে তাঁর পক্ষ থেকে হজ আদায় করে দেয়া। হাদীস শরিফে এসেছে,

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ – رضى الله عنه – قَالَ بَيْنَا أَنَا جَالِسٌ عِنْدَ
رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذْ أَتَتْهُ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ إِنِّى تَصَدَّقْتُ عَلَى أُمِّى بِجَارِيَةٍ وَإِنَّهَا مَاتَتْ – قَالَ – فَقَالَ « وَجَبَ أَجْرُكِ وَرَدَّهَا عَلَيْكِ الْمِيرَاثُ ». قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ كَانَ عَلَيْهَا صَوْمُ شَهْرٍ أَفَأَصُومُ عَنْهَا قَالَ « صُومِى عَنْهَا ». قَالَتْ إِنَّهَا لَمْ تَحُجَّ قَطُّ أَفَأَحُجُّ عَنْهَا قَالَ « حُجِّى عَنْهَا ». -صحيح مسلم: 2753

“…হযরত বুরাইদা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসা। এক মহিলা এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার মা’কে একটি বাঁদি দান করেছিলাম। আমার মা ইনতিকাল করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বাঁদি দান করার সওয়াব তোমার জন্য অবধারিত হয়ে গেছে। মিরাস হিসেবে আবার তুমি বাঁদিটির মালিকানা ফিরে পেয়েছ। মহিলা বললেন, তাঁর এক মাসের রোযা রয়ে গেছে, আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে তা আদায় করে দেবো? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ তার পক্ষ থেকে রোযা রেখে দাও। মহিলা বললেন, তিনি কখনো হজ করেননি। আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে হজ করে দিব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, তুমি তাঁর পক্ষ থেকে হজ করে দাও।” -সহীহ মুসলিম: ২৭৫৩। আরো দেখুন:- মুসনাদুল বাযযার: ৬৮৯১; আলমু’জামুল আওসাত: ১০০; রদ্দুল মুহতার: ৪/১৬, যাকারিয়া বুক ডিপো।

আর যদি আপনার পিতার উপর হজ ফরজ না হয়ে থাকে, তাহলেও আপনি তাঁর জন্য ইসালে সওয়াবের নিয়তে নফল হজ করতে পারেন। ইমাম ইবনু নুজাইম রহিমাহুল্লাহ (৯৭০হি.) বলেন,


والأصل فيه أن الإنسان له أن يجعل ثواب عمله لغيره … صوما أو
صدقة …أو حجا أو عمرة أو غير ذلك اهـ.
-البحر الرائق: 3/105 زكريا

“এক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, মানুষের জন্য নিজের আমলের সওয়াব অন্যকে দান করে দেয়ার বৈধতা রয়েছে। চাই তা … সিয়াম, সদকা, … হজ, উমরা ইত্যাদি যাই হোক না কেন।” –আলবাহরুর রায়েক: ৩/১০৫। আরো দেখুন:- বাদায়েউস সানায়ে: ২/৪৪৫; যাকারিয়া বুক ডিপো।

والله سبحانه وتعالى أعلم، وعلمه أتم وأحكم

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি ‍উফিয়া আনহু

৩রা রমজান, ১৪৪১ হি.

২৭ এপ্রিল, ২০২০ ইং

আরো পড়ূন
হজের অর্থ জিহাদে খরচ করলে কি দায়মুক্ত হওয়া যাবে?

সময়মতো হজ করিনি, এখন করণীয় কী?

Related Articles

Back to top button