সালাতফাতওয়া  নং  ২৭৯

নারীদের জন্য কি নামাযে চুল ছেড়ে রাখা জরুরি?

নারীদের জন্য কি নামাযে চুল ছেড়ে রাখা জরুরি?

নারীদের জন্য কি নামাযে চুল ছেড়ে রাখা জরুরি?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন: 

আমার বোন বলছে, সে এক কিতাবে পড়েছে, ‘মহিলারা নামায আদায়কালে তাদের চুল দুই দিকে ছেড়ে দিবে, যেন চুলও রুকু-সিজদা করতে পারে’। কিন্তু তার নাকি চুল ছেড়ে রাখলে বেশ কষ্ট হয়। এখন তার জানার বিষয় হল, সে চুলগুলো বেণী করে দুই দিকে ছেড়ে দিবে, না খোঁপা করে রাখতে পারবে?

প্রশ্নকারী- ইয়াহইয়া আল মাহদী

উত্তর: 

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

মহিলাদের জন্য নামাযে চুল ছেড়ে রাখা, বেণী করে রাখা,খোঁপা বেঁধে রাখা; সবকটিরই সুযোগ আছে। যার যেভাবে সুবিধা, সে সেভাবেই রাখতে পারবে। তবে চুল যেভাবেই রাখুক, সম্পূর্ণ চুল ঢেকে রাখতে হবে। চুল যাতে বের না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মহিলারা নামাযে চুল ছেড়ে রাখবে মর্মে কেউ যদি কিছু লিখে থাকেন, সম্ভবত নিম্নোক্ত হাদীসের কারণে লিখে থাকতে পারেন,

عن ابن عباس رضي الله عنهما، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْظُمٍ، وَلَا أَكُفَّ ثَوْبًا وَلَا شَعْرًا». (أخرجه البخاري: 816 ، ومسلم:490 واللفظ له(

“আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে সাতটি অঙ্গের ওপর সিজদা করার নির্দেশ করা হয়েছে এবং নামাযে কাপড় ও চুল না গুটাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”–সহীহ বুখারী: ৮১৬, সহীহ মুসলিম: ৪৯০

তবে এ হাদীসে বিবৃত নিষেধাজ্ঞাটি পুরুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মহিলারা এ হাদীসের আওতাভুক্ত নয়। তাই ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, পুরুষের জন্য (বাবরী) চুল বেণী পাকিয়ে বা খোঁপা বেঁধে নামায পড়া মাকরুহ; নারীদের জন্য নয়।

হাদীসের একটি বর্ণনায় স্পষ্ট করেই পুরুষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ: ” نَهَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ وَرَأْسُهُ مَعْقُوصٌ “. –مسند أحمد ط الرسالة (39/ 279)، الرقم: 23856، قال محققو المسند: صحيح لغيره. اهـ

“আবু রাফে’ (রাযি) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষ লোককে চুল বাঁধা অবস্থায় নামায পড়তে নিষেধ করেছেন।”–মুসনাদে আহমাদ: ২৩৮৫৬

ইমাম শাওকানি (রহ) বলেন,

قال العراقي: وهو مختص بالرجال دون النساء لأن شعرهن عورة يجب ستره في الصلاة، فإذا نقضته ربما استرسل وتعذر ستره فتبطل صلاتها. اهـــ (نيل الأوطار: 2/393 ط. دار الحديث(

“ইমাম ইরাকি (রহ) বলেছেন, (হাদীসের নিষেধাজ্ঞাটি) পুরুষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মহিলারা এ হুকুমের আওতাভুক্ত নয়। মহিলাদের চুল সতরের অন্তর্ভুক্ত এবং নামাযে তা ঢেকে রাখা ফরজ। সে খোঁপা/বেণী খুলে ফেললে, চুল ঝুলে পড়ার আশংকা রয়েছে, এতে সেটা ঢেকে রাখা কষ্টকর হবে। আর (চুল বের হয়ে গেলে) তার নামাযটাই বাতিল হয়ে যাবে।-নাইলুল আওতার: ২/৩৯৩

-আরও দেখুন: আসনাল মাতালিব: ১/১৬৩; মাআরিফুস সুনান: ৩/৪৭০; তুহফাতুল আহওয়াযি: ২/৩২৬

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১০-০১-১৪৪৪ হি.

০৯-০৮-২০২২ ঈ.

আরো দেখুনঃ

মুসলিম বন্দীরা কীভাবে নামায আদায় করবেন?

Related Articles

Back to top button