সিয়াম:ফাতওয়া  নং  ৩৭০

একজনের রোযা কি আরেকজন রাখতে পারে?

একজনের রোযা কি আরেকজন রাখতে পারে?

একজনের রোযা কি আরেকজন রাখতে পারে?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

কয়েক মাস আগে আমার আব্বা ইন্তিকাল করেছেন। এক রমযানে তিনি অসুস্থতার কারণে ১০টি রোযা রাখতে পারেননি। পরে ওগুলো কাজা করেছেন কিনা, তা আমাদের জানা নাই। সতর্কতাবশত কিছুদিন আগে আমি আব্বার পক্ষ থেকে ১০টি রোযা কাজা রাখি। এখন আমার জানার বিষয় হলো, আমার কাজা রাখার ফলে আব্বার পক্ষ থেকে আদায় হবে কি না? যদি না হয় তাহলে এখন আমাদের করণীয় কী?

যদি ফিদিয়া দিতে হয়, তাহলে ১০টি রোযার ফিদিয়া বর্তমান সময়ের হিসেবে কত টাকা আসবে? এবং তা কোথায় দেওয়া আমাদের জন্য সর্বোত্তম হবে?

 

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

المحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

আপনার রোযাগুলো আপনার আব্বার কাজা রোযার জন্য যথেষ্ট হবে না। জুমহুর ফুকাহায়ে কেরামের মতে একজনের রোযা অপরজনের জন্য যথেষ্ট নয়। বিষয়টি গ্রহণযোগ্য সূত্রে একটি হাদীসেও বর্ণিত হয়েছে। -আসসুনানুল কুবরা লিননাসায়ী: ২৯৩০

বরং এ রোযাগুলোর জন্য ফিদইয়া আদায় করতে হবে। প্রত্যেকটি রোযার বদলে একটি করে ফিদইয়া দিতে হবে।

ফিদইয়া হলো প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে এক সাদাকাতুল ফিতর পরিমাণ, যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়া।

তা যদি আটা অথবা গম দিয়ে পরিশোধ করা হয়, তাহলে ১ কেজি ৬৩৫ গ্রাম আটা কিংবা গম অথবা তার মূল্য আদায় করতে হবে। বর্তমান (২৬-৩-২৩ ইং) বাজারে গমের মূল্য, ৪৫ টাকা কেজি। সে হিসেবে একটি ফিদইয়ার মূল্য হবে, ৭৩ টাকা। আর খোলা আটার মূল্য, ৬৫ টাকা কেজি। সে হিসেবে একটি ফিদইয়ার মূল্য হবে, ১০৬ টাকা।

আর যদি খেজুর, যব, কিশমিশ দিয়ে পরিশোধ করা হয়, তাহলে ৩ কেজি ২৭০ গ্রাম অথবা তার মূল্য আদায় করতে হবে।

উপর্যুক্ত বস্তুসমূহের মধ্যে যে কোনো একটি দিয়ে আদায় করলেই ফিদইয়া আদায় হয়ে যাবে। অবশ্য সামর্থ্যের ভিতরে সবচেয়ে দামিটা দিয়ে আদায় করা উত্তম।

ফিদইয়া দেওয়ার সবচেয়ে উত্তম জায়গা হলো, নিজের গরীব আত্মীয়-স্বজন। এতে ফিদইয়া আদায়ের পাশাপাশি আত্মীয়তার হকও আদায় হবে। -সূরা বাকারা ০২:২১৫, আহকামুল কুরআন-জাসসাস: ১/৩৯৯,

তবে যাদেরকে আপনি যাকাত দিতে পারবেন না, তাদেরকে ফিদইয়াও দেওয়া যাবে না। তারা হলেন, স্বামী/স্ত্রী, মা-বাবা, ও তাদের উর্ধ্বতন ব্যক্তি এবং সন্তান ও তাদের অধ্বস্তন ব্যক্তিবর্গ। এরা গরীব হলেও যাকাত-ফিতরা, ফিদইয়া, কাফফারা ইত্যাদির মতো ওয়াজিব সাদাকাসমূহ দেওয়া যাবে না। -রদ্দুল মুহতার: ২/৩৪৬

এ ছাড়া গরীব মুজাহিদ ও গরীব তালিবে ইলমদেরকেও দেওয়া যেতে পারে। এতে আপনি ফিদইয়া আদায়ের পাশাপাশি ইলম ও জিহাদের পথে দানের সাওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।

আরও জানার জন্য দেখুন: ‘নামায-রোযার ফিদিয়ার টাকা কি জিহাদের ফাণ্ডে দেওয়া যাবে?’ শিরোনামের ফতোয়াটি,

লিংক: নামায-রোযার ফিদিয়ার টাকা কি জিহাদের ফাণ্ডে দেওয়া যাবে?

فقط. والله تعالى اعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৯-১৪৪৪ হি.

২৮-০৩-২০২৩ ঈ.

Related Articles

Back to top button