হালাল-হারাম:ফাতওয়া  নং  ২৫৫

প্রচলিত জমি বন্ধকের পদ্ধতি বৈধ হওয়ার কি কোন উপায় আছে?

প্রচলিত জমি বন্ধকের পদ্ধতি বৈধ হওয়ার কি কোন উপায় আছে?

প্রচলিত জমি বন্ধকের পদ্ধতি বৈধ হওয়ার কি কোন উপায় আছে?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্ন:

আমাদের দেশে জমি বন্ধকের যে পদ্ধতি প্রচলিত আছে, তা বৈধ হওয়ার কি কোন উপায় আছে? বিস্তারিত জানালে অনেক উপকৃত হবো।

প্রশ্নকারী- মোহাম্মদ তাহের

উত্তর:

আমাদের দেশে জমি বন্ধকের প্রচলিত পদ্ধতি হল, কারো অর্থের প্রয়োজন হলে তিনি জমি বন্ধক রেখে কারো থেকে ঋণ নেন। যতদিন পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করতে না পারেন, ততদিন ঋণদাতা তার জমি ভোগ করেন। এটা পরিষ্কার সুদ। ঋণের মোকাবেলায় ঋণ গ্রহীতা থেকে কোনো ধরনের উপকার গ্রহণ করাই সুদ।

উক্ত কারবারটিকে সুদমুক্ত করার জন্য কেউ কেউ একটি বাহানা আবিষ্কার করেছেন। তারা নামমাত্র জমির ভাড়া পরিশোধ করে মনে করেন, কারবারটি সুদমুক্ত হয়ে গেছে। যেমন ধরুন, কেউ এক বিঘা জমি বন্ধক দিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করলেন। পাঁচ বছর পর ঋণ গ্রহীতা যখন ঋণ পরিশোধ করে জমি ফেরত নেন, তখন ঋণদাতা জমির ভাড়া বাবদ প্রতি বছরের জন্য এক-দুইশ টাকা করে কেটে অবশিষ্ট টাকা ফেরত নেন।

বস্তুত এতেও কারবারটি সুদমুক্ত হয় না। কারণ এখানে বাস্তবে আলাদা কোনো ইজারা চুক্তি হয় না; বরং জমি ভোগ করার শর্তেই ঋণ দেয়া হয় এবং ঋণের সুবিধা পাওয়ার কারণেই জমির মালিক নামমাত্র সামান্য অর্থ ভাড়া হিসেবে গ্রহণ করতে সম্মত হয়।

হ্যাঁ, কারো যদি টাকার প্রয়োজন হয় এবং তার কাছে জমি থাকে, তাহলে উক্ত জমির মাধ্যমে টাকার প্রয়োজন পূরণের বৈধ ব্যবস্থা শরিয়তে আছে। তার জন্য ঋণ বা বন্ধকি চুক্তি করা যাবে না। বরং শুরু থেকে জমি ভাড়া দেয়ার চুক্তি করতে হবে। মনে করুন, একজনের নিকট এক বিঘা জমি আছে। তার পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রয়োজন। উক্ত জমিটির বার্ষিক ন্যায্য ভাড়া হচ্ছে দশ হাজার টাকা। তাহলে সে পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া দিয়ে ভাড়া বাবদ পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে জমির চুক্তিকৃত ভাড়া যদি ন্যায্য ভাড়া থেকে সামান্য কম-বেশি হয়, তাতেও অসুবিধা নেই। তারপর মেয়াদ শেষে জমির মালিককে জমি ফেরত দিতে হবে, অর্থদাতা কোনো অর্থ ফেরত পাবেন না।

তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি তারা উভয়ে ইজারা চুক্তি ভঙ্গ করতে সম্মত হন কিংবা অন্য কোনো শরঈ কারণে ইজারা চুক্তি শেষ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়াকে; চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদের ভাড়া ফেরত দিতে হবে। যেমন উপরোক্ত উদাহরণে তিন বছর পর চুক্তি ভঙ্গ হলে বাকি দুই বছরের বিশ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে। -মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ১৫০৬৮, ১৫০৬৯; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ২১০৭৭; বাদায়েউস সানায়ে: ৬/১৪৬; রদ্দুল মুহতার: ৬/৪৮২;  আলফুলকুল মাশহুন ফি মা ইয়াতাআল্লাকু বিনতিফায়িল মুরতাহিনি বিলমারহুন, আব্দুল হাই লখনবি: ৩৬-৩৭; ইলাউস সুনান: ১৮/৬4; ইমদাদুল আহকাম: ৬/৯৫

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-১০-১৪৪৩ হি.

০৭-০৫-২০২২ ঈ.

আরো পড়ুনঃ ব্যাংক থেকে হোম লোন নিয়ে বাড়ি করা কি বৈধ হবে?

Related Articles

Back to top button