বিবিধফাতওয়া  নং  ৩১৫

কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুর ব্যাপারে করণীয় কী?

কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুর ব্যাপারে করণীয় কী?

কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুর ব্যাপারে করণীয় কী?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

প্রশ্নঃ

পথে কুড়িয়ে পাওয়া বস্তু বা টাকার ব্যাপারে করণীয় কী? এর মালিককে খুঁজে না পেলে বা খোঁজার মতো পরিবেশ না থাকলে সেই বস্তু বা টাকা কি জিহাদের ফাণ্ডে সদকা করে দেওয়া যাবে?

প্রশ্নকারী- ওসমান গণি

ঠিকানা- গাজীপুর সদর

উত্তরঃ 

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا ومصليا ومسلما

কুড়িয়ে পাওয়া বস্তু আমানত। তা যদি এতো ক্ষুদ্র হয়, যা মানুষ সাধারণত খোঁজ করে না এবং ফিরে পাওয়ার চিন্তা করে না, তাহলে গরীবকে সাদাকা করে দিবে। পক্ষান্তরে তা যদি মূল্যবান হয়, তাহলে তা মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। প্রাপ্তিস্থান, মসজিদের সামনে, বাজার, স্টেশন, চা-কফির দোকান ও অন্যান্য জনসমাগম স্থল; যেখানে ঘোষণা দিলে মালিকের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে হয়, সেখানে ঘোষণা দিবে। বর্তমান যামানায় পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচার করা যেতে পারে।

মালিককে পাওয়া গেলে তার কাছে হস্তান্তর করবে। অন্যথায় তার ওয়ারিশদের কাছে হস্তান্তর করবে। যথেষ্ট পরিমাণ খোঁজাখুঁজি ও প্রচার করার পরও যদি মালিক না পাওয়া যায় এবং পাওয়া যাবে না বলে প্রবল ধারণা হয় (পাওয়া জিনিসের ধরন, পরিমাণ ও মূল্যমান অনুযায়ী এ সময়টি কম বেশ হতে পারে), তাহলে কয়েকটি অবকাশ আছে।

এক. তা নিজের কাছে আমানত হিসেবে রেখে দিতে পারে, যাতে কোনো সময় মালিক পাওয়া গেলে ফিরিয়ে দেওয়া যায়।

দুই. মূল মালিকের পক্ষ থেকে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো গরীবকে সাদাকা করে দিতে পারে, যাতে মূল মালিক তার সম্পদ ফিরে না পেলেও দানের সওয়াব পেয়ে যান।

তিন. প্রাপক যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে সে নিজেও তা ব্যবহার করতে পারবে। গরীব আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে।

চার. মুসলিমদের জনকল্যাণমূলক কোনো কাজেও ব্যয় করতে পারবে। চাইলে জিহাদের পথেও সাদাকা করতে পারবে।

তবে সর্বাবস্থায় পরবর্তীতে কখনো মূল মালিক বা তার ওয়ারিশদের কারো হদিস পাওয়া গেলে তাকে জানাতে হবে যে, তাদের পাওয়া বস্তু বা অর্থ সাদাকা করা হয়েছে বা ভোগ করা হয়েছে। যদি তারা তাতে সন্তুষ্ট থাকেন তো ভালো, অন্যথায় তাদেরকে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে। প্রাপক দানের সওয়াব পেয়ে যাবেন।

ইমাম বুখারী (রহ) বর্ণনা করেন,

اشترى ابن مسعود جارية والتمس صاحبها سنة فلم يجده وفقد فأخذ يعطي الدرهم والدرهمين وقال اللهم عن فلان فإن أتى فلان فلي وعلي وقال هكذا فافعلوا باللقطة، وقال ابن عباس نحوه -صحيح البخاري، كتاب الطلاق،  باب حكم المفقود في أهله وماله؛ ط. دار طوق النجاة؛ قال الحافظ ابن حجر رحمه الله تعالى: وقد وصله سفيان بن عيينة في جامعه رواية سعيد بن عبد الرحمن عنه، وأخرجه أيضا سعيد بن منصور عنه بسند له جيد أن بن مسعود اشترى جارية الخ قوله “وقال بن عباس نحوه” وصله سعيد بن منصور من طريق عبد العزيز بن رفيع عن أبيه. اهـ فتح الباري 9\430-431

“ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি বাঁদি খরিদ করলেন। (মালিক মূল্য না নিয়েই চলে গেল)। তিনি এক বছর পর্যন্ত তাকে খোঁজ করলেন, কিন্তু সন্ধান পেলেন না। অজ্ঞাতই থেকে গেলো। তখন তিনি এক দিরহাম দুই দিরহাম করে দান করতে লাগলেন আর বলতে থাকলেন, ‘হে আল্লাহ! (এ দান) অমুকের পক্ষ থেকে। যদি সে (কোনো সময়) এসে পড়ে (এবং মূল্য নিতে চায়) তাহলে দানের সওয়াব আমি পাবো, আর মূল্য পরিশোধের দায়িত্ব আমারই থাকবে’। তিনি বলেন, ‘কুড়িয়ে পাওয়া মালের ব্যাপারেও তোমরা এমনটিই করবে’। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুও এমন কথা বলেছেন।” –সহীহ বুখারী, কিতাবুত তালাক, বাব: হুকমুল মাফকুদ ফি আহলিহি ওয়া মালিহি

والله سبحانه وتعالى أعلم

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৭-০৫-১৪৪৪ হি.

০২-১১-২০২২ ঈ.

আরও পড়ুনঃ ঋণ প্রদানে অক্ষম ব্যক্তি কি আল্লাহর কাছে ধরা পড়বে?

Related Articles

Back to top button