হেবা-মীরাস-অসিয়তফাতওয়া  নং  ২৬৩

মিরাস সূত্রে পাওয়া হারাম সম্পদের হুকুম কী?

মিরাস সূত্রে পাওয়া হারাম সম্পদের হুকুম কী?

মিরাস সূত্রে পাওয়া হারাম সম্পদের হুকুম কী?

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

 

প্রশ্নঃ

বাবা হারাম পথে অর্থ উপার্জন করে থাকলে তার মৃত্যুর পর সন্তানের জন্য মিরাস সূত্রে পাওয়া সেই সম্পদ ভোগ করা কি জায়েয হবে?

প্রশ্নকারী- সাজিদ

উত্তরঃ

মিরাস সূত্রে পাওয়া হারাম সম্পদের বিধান

মায়্যিতের রেখে যাওয়া হারাম সম্পদ তার সন্তান বা অন্য কোনো ওয়ারিস ভোগ করতে পারবে না। হারাম সর্বাবস্থায়ই হারাম। মায়্যিতের জন্য যেমন তা হারাম ছিল, ওয়ারিসদের জন্যও হারাম। ওয়ারিসদের কর্তব্য, হারাম অংশটুকু প্রকৃত মালিককে, কিংবা মালিক না পাওয়া গেলে মালিকের ওয়ারিসদের নিকট ফিরিয়ে দেয়া। যতক্ষণ মূল মালিক বা মালিকের ওয়ারিসদের পাওয়া যাবে, ততক্ষণ ভিন্ন কোনো সুযোগ নেই। মূল মালিক বা

ওয়ারিসদের পরিচয় জানা না থাকলে বা খুঁজে বের করা সম্ভবপর না হলে, ওই সম্পদ সওয়াবের নিয়ত ব্যতীত শুধু হারামের দায়ভার থেকে মুক্তির উদ্দেশ্য মূল মালিকের পক্ষ হতে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত গরিবদের মাঝে সাদাকা করে দিতে হবে কিংবা মুসলিমদের জনকল্যাণমূলক কোনো কাজে বা জিহাদের কাজে ব্যয় করতে হবে। যাতে মালিক তার সম্পদ না পেলেও এর সওয়াবটুকু পেয়ে যান। মায়্যিতের ওয়ারিসদের মধ্যে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত গরীব অসহায় কেউ থাকলে প্রয়োজন পরিমাণ সেও রাখতে পারবে।

পক্ষান্তরে ওয়ারিসরা যদি এ হারাম সম্পদ নিজেরাই ভোগ করে, মালিক বা তার ওয়ারিসদের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা না করে, তাহলে এ হারামের দায়ে আখিরাতে তাদেরকেও পাকড়াও করা হবে।

ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.)- এর মাজমুউল ফাতাওয়ায় এসেছে,

وسئل: عن رجل مراب خلف مالا وولدا وهو يعلم بحاله. فهل يكون المال حلالا للولد بالميراث؟ أم لا؟ .

فأجاب: أما القدر الذي يعلم الولد أنه ربا فيخرجه إما أن يرده إلى أصحابه إن أمكن وإلا تصدق به. –مجموع الفتاوى (29/ 307)

“ইবনে তাইমিয়া রহ.কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এক সুদখোর ব্যক্তি কিছু সম্পদ ও সন্তান রেখে মারা গেছে। সন্তান তার পিতার সুদ খাওয়ার বিষয়টি জানত। সন্তানের জন্য মিরাস হিসেবে এ সম্পদ হালাল হবে কি?

তিনি উত্তর দেন, যতটুকু পরিমাণ সুদের বলে সন্তানের জানা আছে, ততটুকু পরিমাণ পৃথক করে ফেলবে। সম্ভবপর হলে মূল মালিকদের ফিরিয়ে দেবে। অন্যথায় সাদাকা করে দেবে।” -মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৯/৩০৭

ইবনে আবিদীন রহ. (১২৫২ হি.) বলেন,

وإن علم الوارث دين مورثه والدين غصب أو غيره فعليه أن يقضيه من التركة، وإن لم يقض فهو مؤاخذ به في الآخرة، وإن لم يجد المديون ولا وارثه صاحب الدين ولا وارثه فتصدق المديون أو وارثه عن صاحب الدين برئ في الآخرة. –الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (4/ 283)، كتاب اللقطة

“ওয়ারিসদের যদি জানা থাকে যে, আত্মসাৎ বা অন্য কোনো দেনা মায়্যিতের ঘাড়ে ছিল, তাহলে তাদের কর্তব্য; মায়্যিতের রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে তা পরিশোধ করে দেয়া। পরিশোধ না করলে আখিরাতে তাদেরকেও পাকড়াও করা হবে।

যদি দেনাদার বা তার ওয়ারিসরা পাওনাদার বা তার ওয়ারিসদের না পায়, তাহলে দেনাদার বা তার ওয়ারিসরা পাওনাদারের পক্ষ থেকে সাদাকা করে দিলে আখিরাতে দায়মুক্ত হয়ে যাবে।” –রদ্দুল মুহতার: ৪/২৮৩

এ ব্যাপারে আরো দেখুন-

ফতোয়া নং ১৫৯ : বান্দার হক ফিরিয়ে না দিয়ে দান করে দিলে কি দায়মুক্ত হওয়া যাবে?

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৩ হি.

২৯-০৬-২০২২ ঈ.

Related Articles

Back to top button